আসসালামু আলাইকুম।

আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালোই আছেন।
প্রতিদিনের মতো আপনাদের সামনে আমি আবারও নতুন একটি পোস্ট নিয়ে হাঁজির হয়েছি। আমরা আপনাদের কথা মাথায় রেখেই নিত্যনতুন পোস্ট নিয়ে আসি। আজকেও ব্যতিক্রম নয়। আমার এই পোস্ট গুলো পড়লে আপনি কম্পিউটার সম্পর্কে সকল কিছু জানতে পারবেন। কম্পিউটারের অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন কার্যক্রম সম্পর্কে সম্যক জানতে পরবেন। তো আর কথা না বাড়িয়ে সরাসরি মূল পোস্টে চলে যায়।

আকার, ক্ষমতা ইত্যাদির ভিত্তিতে কম্পিউটারের শ্রেণিবিভাগ (Classify computer depending on size, capability, speed etc.)

কাজের ধরন, প্রকৃতি ও ডাটা প্রসেসিং এর ভিত্তিতে কম্পিউটারকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়—

(ক) অ্যানালগ কম্পিউটার (Analog computer)
(খ) ডিজিটাল কম্পিউটার (Digital computer)
(গ) হাইব্রিড কম্পিউটার (Hybrid computer)

অ্যানালগ কম্পিউটার (Analog computer)

Analogy ইংরেজি শব্দ থেকে Analog কথাটি এসেছে। অ্যানালগ কথার অর্থ হচ্ছে সাদৃশ্য। চাপ, তাপ, তরল প্রবাহ ইত্যাদি পরিবর্তনশীল ডাটার জন্য সৃষ্ট বৈদ্যুতিক তরঙ্গ পরিমাপ করে অ্যানালগ কম্পিউটারের কার্যক্রম পরিচালিত হয় এবং সম্পাদিত ফলাফল মিটার বা কাঁটার সাহায্যে প্রকাশ করে। পেট্রোল পাম্পের জ্বালানি সরবরাহ ও মূল্য নির্ণয়ের কাজে; গাড়ি, উড়োজাহাজ, মহাকাশযান ইত্যাদির গতিবেগ পরিমাপের জন্য অ্যানালগ কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়।

ডিজিটাল কম্পিউটার (Digital computer)

ডিজিট (Digit) শব্দ থেকে ডিজিটাল শব্দের উৎপত্তি। ডিজিটাল কম্পিউটারে বর্ণ, সংখ্যা, সংকেত, প্রতীক ইত্যাদি ইনপুট হিসেবে ব্যবহৃত হয়। ডিজিটাল কম্পিউটার ০ (শূন্য) এবং ১ (এক)—এই দুটি বাইনারি ডিজিট দিয়ে সব ধরনের কাজের প্রক্রিয়াকরণ সম্পাদন করে। ডিজিটাল কম্পিউটার খুবই সূক্ষ্ম ও নির্ভুল ফলাফল প্রদান করতে পারে।

হাইব্রিড কম্পিউটার (Hybrid computer)

অ্যানালগ ও ডিজিটাল—এই দুই শ্রেণির কম্পিউটারের প্রযুক্তির সমন্বয়ে মিশ্র প্রযুক্তিতে তৈরি কম্পিউটারকে হাইব্রিড কম্পিউটার বলে। হাসপাতালের ইনটেনসিভ কেয়ারে এ ধরনের কম্পিউটার ব্যবহৃত হয়। এক্ষেত্রে অ্যানালগ অংশ রোগীর রক্তচাপ, হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া, শরীরের তাপমাত্রা ইত্যাদি উপাত্ত গ্রহণ করে এবং ডিজিটাল অংশে ব্যবহার করার জন্য যথাযোগ্য সংখ্যা সংকেতে রূপান্তর করে তা ডিজিটাল অংশে প্রেরণ করে। ডিজিটাল অংশ প্রাপ্ত তথ্যের উপর ভিত্তি করে রোগীর অবস্থা প্রকাশ করে। –

আকার ও ক্ষমতার ভিত্তিতে কম্পিউটারকে চারটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায়

(ক) সুপার কম্পিউটার (Super computer)

(খ) মেইনফ্রেম কম্পিউটার (Mainframe computer)

(গ) মিনি কম্পিউটার (Mini computer)

(ঘ) মাইক্রোকম্পিউটার (Microcomputer)।
নিম্নে এদের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দেওয়া হলোঃ

সুপার কম্পিউটার (Super computer): 

সুপার কম্পিউটার সবচেয়ে শক্তিশালী, দ্রুতগতিসম্পন্ন এবং ব্যয়বহুল। আকৃতিগত দিক হতে সর্ববৃহৎ এ শ্রেণির কম্পিউটারগুলোর তথ্য সংরক্ষণ ক্ষমতা, কার্যসম্পাদনের বা তথ্য প্রক্রিয়াকরণের গতি অবিশ্বাস্য রকমের। সূক্ষ্ম বৈজ্ঞানিক গবেষণা, বিপুল পরিমাণ তথ্যবিশ্লেষণ, নভোযান, জঙ্গী বিমান এবং ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ন্ত্রণ, মহাকাশ গবেষণা, পরমাণু চুল্লি ইত্যাদি ক্ষেত্রে সুপার কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়। CRAY-I, CYBER-205 ইত্যাদি সুপার কম্পিউটারের উদাহরণ।
চিত্র : CRAY-১ সুপার কম্পিউটার 

মেইনফ্রেম কম্পিউটার (Mainframe_computer)

মেইনফ্রেম কম্পিউটার একটি বড় কম্পিউটার, যার সাথে অনেকগুলো ছোট কম্পিউটার যুক্ত করে একসাথে শতাধিক লোক কাজ করতে পারেন। এ ধরনের কম্পিউটারে একাধিক প্রক্রিয়াকরণ অংশ থাকে। বড় বড় প্রতিষ্ঠান এ ধরনের কম্পিউটার ব্যবহার করে থাকে। ব্যাংক, বিমা, অর্থলগ্নীকারী প্রতিষ্ঠান এবং বৈজ্ঞানিক কর্মতৎপরতা পরিচালনা, নিয়ন্ত্রণ, বিশ্লেষণ এবং মূল্যায়নের জন্য মেইনফ্রেম কম্পিউটার ব্যবহৃত হয়। UNIVAC 1100/01, IBM-4341 ইত্যাদি কম্পিউটার এ শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত।
চিত্রঃ মেইনফ্রেম কম্পিউটার

মিনি কম্পিউটার (Mini computer)

 মেইনফ্রেম কম্পিউটারের চেয়ে আকারে ছোট এ কম্পিউটার টার্মিনালের মাধ্যমে একসাথে অনেক ব্যবহারকারী ব্যবহার করতে পারে। সাধারণত শিল্প, গবেষণা, ব্যাংকিং কার্যক্রমে এ ধরনের কম্পিউটার ব্যবহৃত হয়। উদাহরণ- – P * D * P – 8 , MS / 34 NCR S/9290, PDPII ইত্যাদি।
চিত্রঃ মিনি কম্পিউটার

মাইক্রোকম্পিউটার (Microcomputer)

মাইক্রোকম্পিউটার হচ্ছে মাইক্রোপ্রসেসর দিয়ে তৈরি সর্বাপেক্ষা ব্যবহৃত কম্পিউটার সাধারণত একজন লোক একটি মাইক্রোকম্পিউটার ব্যবহার করতে পারেন বলে একে পার্সোনাল কম্পিউটার বা পিসি-ও বলা হয়। এ ধরনের কম্পিউটার তুলনামূলকভাবে দামে কম, সহজে বহনযোগ্য এবং রক্ষণাবেক্ষণ সহজ হওয়ার ফলে ব্যবহারকারীদের মাঝে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। ব্যক্তিগত, ব্যবসায়িক, দাপ্তরিক, সরকারি, বিনোদনমূলক কর্মকাণ্ডে মাইক্রোকম্পিউটারের ব্যবহার উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। IBM PC, Apple Machintosh ইত্যাদি মাইক্রোকম্পিউটারের উদাহরণ।
চিত্রঃ মাইক্রোকম্পিউটার

নিচে কম্পিউটারের শ্রেণীবিভাগ টেবিল আকারে দেখানো হলোঃ

কম্পিউটার
অ্যানালগ ডিজিটাল হাইব্রিড
সুপার কম্পিউটার মেইনফ্রেম কম্পিউটার মিনি কম্পিউটার মাইক্রো কম্পিউটার
সুপার মাইক্রোকম্পিউটার ডেস্কটপ কম্পিউটার ল্যাপটপ কম্পিউটার
পিডিএ নোটবুক
টেবিলঃ কম্পিউটারের শ্রেণীবিভাগ।
তো আজ এই পর্যন্তই। 
উপরের আমার এই পোস্টটি লিখতে অনেক নথির এবং ওয়েসাইটের সাহায্য নিতে হয়েছে। যাদের কৃতজ্ঞতা স্বীকার না করলেই নয়। 
সহায়ক,
মোঃ কামরুল হাসান।
1. Wikipedia.com
2. hpe.com
3. history-computer.com
4. chessprogramming
তো আজ এই পর্যন্তই। পরবর্তীতে নতুন কোনো পোস্ট নিয়ে হাজির হবো ততক্ষণ সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ্য থাকবেন।

ধন্যবাদ।




6 thoughts on "কম্পিউটারের বিভিন্ন শ্রেণিবিভাগ, কাজের ধরণ, প্রকৃতি ও ডাটা প্রসেসিং এর ভিত্তিতে। বিস্তারিত পোস্টে।"

  1. BIPLOB Contributor says:
    Valo Laglo…..
    1. Akash_Ahmed4555 Contributor Post Creator says:
      ধন্যবাদ।
  2. Najim Contributor says:
    খুব সুন্দর পোস্ট ,দোয়া করি আরো ভালো কিছু লিখবেন ভবিষ্যতে।

    ধন্যবাদ

    1. Akash_Ahmed4555 Contributor Post Creator says:
      Welcome

Leave a Reply