প্রধান মেমরি আবার দুই ধরনের, যথা—
♦ প্রধান মেমরি (Main memory/Primary memory) : যে স্মৃতির সাথে ALU-এর প্রত্যক্ষ সংযোগ থাকে, তাকে প্রধান মেমরি বলে। অত্যন্ত দ্রুত গণনা করতে সক্ষম ALU-এর সঙ্গে প্রত্যক্ষ সংযোগ থাকায় প্রধান মেমরিকেও অত্যন্ত দ্রুতগতিসম্পন্ন হতে হয়। যে-সব তথ্য ও নির্দেশ সর্বদা প্রয়োজন, তাদের প্রধান মেমরিতে রাখা হয়। এ ছাড়া ALU যখন যেই গণনা করে তার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য ও নির্দেশ সহায়ক স্মৃতি থেকে এনে সাময়িকভাবে প্রধান মেমরিতে রাখা হয়। গণনা শেষ হওয়ার পর তাদের আবার সহায়ক স্মৃতিতে সরিয়ে দেওয়া হয়। প্রধান মেমরি তিন ধরনের, যথাঃ
অভ্যন্তরীণ স্মৃতি (Internal memory) মাইক্রোপ্রসেসরের মধ্যে থাকে। ALU প্রথমে এরই সাথে যোগাযোগ করে। মুখ্য বহিঃস্থ স্মৃতি দু’প্রকার, যথা- র্যাম ও রম (RAM and ROM)। এটি মাইক্রোপ্রসেসরের বাহিরে মাদারবোর্ডের উপর বসানো কতকগুলো চিহ্ন। কোন প্রোগ্রাম বা তথ্য ALU-তে আসার আগে র্যাম (RAM) – G আসে, অতঃপর র্যাম (RAM) অথবা রম (ROM) হতে অভ্যন্তরীণ স্মৃতিতে আসে। ALU-এর অপারেশন শেষে অভ্যন্তরীণ স্মৃতি হয়ে র্যাম (RAM) বা বাহিরের কোনো ডিভাইসে যায়। রিড রাইট মেমরি (Read Write Memory)-তে ডাটা র্যাম (Data RAM)-এর মতো পড়া এবং লেখা উভয়ই সম্ভব। তবে এটি একটি স্থায়ী মেমরি।
♦ সহায়ক মেমরি (Secondary memory/Auxiliary memory) : কম্পিউটারের কার্যক্ষেত্র বিস্তৃত করার জন্য সহায়ক মেমরি ব্যবহার করা হয়। এটি এক্সটারনাল বা সেকেন্ডারি মেমরি হিসেবেও পরিচিত। সহায়ক মেমরিতে মূলত প্রক্রিয়াকরণের ফলাফল এবং কিছু প্রয়োজনীয় প্রোগ্রাম সংরক্ষণ করা হয়। এটি অধ্বংসাত্মক, পরিবর্তনযোগ্য এবং অনুকারী বড় ধরনের কাজে মুখ্য মেমরি ছাড়াও অতিরিক্ত জায়গার ব্যবস্থা করা হয় সহায়ক মেমরির মাধ্যমে। এটির ধারণক্ষমতা মুখ্য মেমরির তুলনায় অনেক বেশি। এখানে ডাটা ও নির্দেশ শুধু সংরক্ষণ করা যায়। প্রক্রিয়াকরণের কোনো কাজ এটিতে সংগঠিত হয় না। মুখ্য মেমরির তুলনায় এটি ধীরগতিসম্পন্ন। এখানে উল্লেখ্য, কম্পিউটারে প্রক্রিয়াকরণের কাজ মুখ্য মেমরিতে সংঘটিত হয় এবং সঞ্চয়ের কাজ সহায়ক মেমরিতে হয়। চৌম্বক টেপ (Magnetic Tape), ফ্লপি ডিস্ক (Floppy disk), হার্ডডিস্ক (Hard disk), চৌম্বক ড্রাম (Magnetic drum) ইত্যাদি সহায়ক মেমরির অন্তর্ভুক্ত। সহায়ক মেমরিতে সেসব তথ্য ও নির্দেশই থাকে, যা বর্তমান মুহূর্তে গণনার জন্য প্রয়োজন না হলেও কিছুক্ষণের মধ্যেই প্রয়োজন হয়। ALU-এর সঙ্গে প্রত্যক্ষ সংযোগ না থাকায় এর গতি কিছু কম, তবে গতি খুব কম হলেও চলবে না। কারণ সহায়ক ও মুখ্য মেমরির মধ্যে সর্বদা তথ্য ও নির্দেশ চলাচল করে।
সহায়ক মেমরির সঞ্চয় ক্ষমতা মুখ্য মেমরির চেয়ে অনেক বেশি হতে হয়। কারণ এর মধ্যে নিকট ভবিষ্যতে গণনার প্রয়োজন এমন সব তথ্য ও নির্দেশই থাকে। মুখ্য মেমরির চেয়ে এর গতি কম বলে বিট পিছু খরচও কম। ফলে সঞ্চয় ক্ষমতা বেশি হলেও সহায়ক মেমরি অমিতব্যয়ী হয় না। এটির অ্যাক্সেস সময় মিলিসেকেন্ড।
♠ নিম্নে প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি মেমরির পার্থক্য দেওয়া হলোঃ
প্রাইমারি মেমরি (Primary Memory) | সেকেন্ডারি মেমরি (Secondary Memory) |
(i) যে স্টোরেজ ডিভাইস এর প্রোগ্রাম সরাসরি মাইক্রোপ্রসেসর দ্বারা এক্সিকিউট হয় সে স্টোরেজ ডিভাইসকে প্রাইমারি/মেইন মেমরি বলে। | (i) যে সমস্ত স্টোরেজ ডিভাইস-এর গতি ধীর এবং প্রচুর পরিমাণ ডাটা, ফাইল, প্রোগ্রাম জমা রাখা যায়, সে সমস্ত ডিভাইসকে সেকেন্ডারি মেমরি বলা হয়। |
(ii) এই মেমরির সাথে এ.এল.ইউ (ALU)-এর সাথে সংযোগ থাকে। | (ii) এই মেমরির সাথে এ.এল.ইউ (AL.U)- এর সাথে সরাসরি সংযোগ থাকে না। |
(iii) র্যাম (RAM) ও রম (ROM) হলো প্রাইমারি মেমরি। | (iii) হার্ডডিস্ক, ফ্লপি ডিস্ক হলো সেকেন্ডারি মেমরি। |
(iv) এটি স্থায়ী মেমরি। | (iv) এটি স্থায়ী মেমরি। |
র্যাম (RAM): র্যাম এর পূর্ণ অর্থ Random Access Memory. মাদারবোর্ডর সাথে সরাসরি সংযুক্ত যে স্মৃতিতে পঠন এবং লিখন লুটি কাজই সম্পন্ন করা যায়, সে স্মৃতিকে র্যাম স্মৃতি বলা হয়। এটি একটি অস্থায়ী মেমরি। আমরা যে ডাটাগুলো ইনপুট করি তা প্রথমে স্ল্যামে জমা হয়। এরপর প্রসেসর র্যাম থেকে ডাটা নিয়ে প্রসেস করে, আবার র্যামে দিয়ে দেয়। এরপর আমরা মনিটরে দেখতে পাই। কম্পিউটার অফ করলে সকল ডাটা মুছে যায়। র্যাম-এর ধারণক্ষমতা বর্তমানে 16 গিগাবাইট বা তদূর্ধ্বে হতে পারে।
রম (ROM): রম এর পূর্ণ অর্থ Read Only Memory; প্রধান স্মৃতির এই অংশটি স্থায়ী, অপরিবর্তনীয় ও অধ্বংসাত্মক। কম্পিউটার তৈরি করার সময় এই স্মৃতিতে কিছু প্রোগ্রাম ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। কম্পিউটার বন্ধ করলেও এই স্মৃতিতে রক্ষিত কোনো তথ্য মুছে যায় না। এটি একটি পঠন স্মৃতি। কম্পিউটার অন করার সাথে সাথে রম প্রত্যেকটি হার্ডওয়্যার চেক করতে থাকে এবং হার্ড ডিস্ক হতে অপারেটিং সিস্টেম এনে কাজের পরিবেশ সৃষ্টি করে। যদি কোনো হার্ডওয়্যার না পায় তবে তা সংকেত দিয়ে থাকে।
♦নিচে র্যাম ও রমের মধ্যে পার্থক্য দেয়া হলোঃ
র্যাম (RAM) | রম (ROM) |
(i) RAM-এর পূর্ণরূপ হচ্ছে Random Access Memory. | (i) ROM এর পূর্ণরূপ হচ্ছে Read Only Memory |
(ii) RAM – এ ডাটা (data) রিড ও রাইট উভয়ই করা যায়। | (ii) ROM এর তথ্য শুধুমাত্র পড়া যায়। |
(iii) এটি একটি ভোলাটাইল মেমরি (Volatile memory) | (iii) এটি নন-ভোলাটাইল মেমরি (Non-volatile memory) |
(iv) RAM কে অস্থায়ী মেমরি (Temporary memory) বলে। | (iv) এটি স্থায়ী মেমরি (Permanent memory) হিসাবে হিসাবে ব্যবহার করা হয়। |
ভাইরাস ও অ্যান্টিভাইরাস (Virus and Antivirus) : কম্পিউটারের পরিভাষায় ভাইরাস (VIRUS) শব্দের পূর্ণরূপ ভাইটাল ইনফরমেশন রিসোর্সেস আন্ডার সিজ (Vital Information Resources Under Seize), যার অর্থ গুরুত্বপূর্ণ উৎসগুলো বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। কম্পিউটার ভাইরাসের নামকরণ করেছেন প্রখ্যাত গবেষক ফ্রেড কোহেন (Fred Chohen).
অ্যান্টিভাইরাস (Antivirus) হলো এক ধরনের প্রোগ্রাম, যা কম্পিউটারকে ভাইরাসমুক্ত করে, কম্পিউটারের ভাইরাস বিশিষ্ট ফাইল বা প্রোগ্রাম ব্যবহারকালে সংকেত প্রদান করে এবং কম্পিউটারকে ভাইরাসের আক্রমণ হতে রক্ষা করে। মোটকথা, কম্পিউটার ভাইরাস থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য অ্যান্টিভাইরাস প্রোগ্রাম ব্যবহার করা হয়। নিত্যনতুন ভাইরাস সৃষ্টির পাশাপাশি এসব ভাইরাসসমূহকে চিহ্নিত করার জন্য অ্যান্টিভাইরাসসমূহও আপডেট করা হচ্ছে। উদাহরণ- ড. সলোমন (Dr. Solomon) অ্যান্টিভাইরাস প্রোগ্রাম, ম্যাকফি (McAfee) অ্যান্টিভাইরাস প্রোগ্রাম। বর্তমানে অনেক অ্যান্টিভাইরাস প্রোগ্রাম রয়েছে।
♣ কম্পিউটারের ভাইরাস, অ্যান্টিভাইরাস এবং কম্পিউটার সিকিউরিটির বিষয় বস্তু অনেক ব্যাপক। এক পোস্টে সকল বিষয় তুলে ধরা সম্ভাব না। অনেকক্ষণ লেগেছে আজকের এই পোস্টটি লিখতে।
You must be logged in to post a comment.
অনেক সুন্দর হয়েছে।
ধন্যবাদ।
আচ্ছা বুঝলাম! আর অনেক সুন্দর
Thank you
GOOD POST
Good