গুগল প্লেস্টোরে নানা ধরনের বৈচিত্র্যময় কাজের জন্য থাকা লক্ষাধিক অ্যাপস অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীরা নিজেদের স্মার্ট ডিভাইসে ইনস্টল করে ব্যবহার করছেন।অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমে চলা স্মার্টফোন বা ট্যাবলেট কম্পিউটারের চাহিদার বাড়ার পাশাপাশি কিছু বিপত্তিতেও পড়ছে গ্রাহক। তবে কিছু কৌশল অবলম্বন করলে অ্যান্ড্রয়েডনির্ভর ডিভাইসেরকাজের দক্ষতা আরো বাড়ানো যায়। আপনার অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসটি সম্পর্কে জানাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আপনার ডিভাইসটির ধারণক্ষমতা কত, এর অপূর্ণতা কী? এসব জানা খুব দরকার। কারণ, আপনি যে ফিচার বা অ্যাপস ব্যবহার করছেন, সেটা আপনার ডিভাইসটির জন্য বাড়তি বোঝা হয়ে দাঁড়াচ্ছে কি না, সেটা বুঝতে ডিভাইসটির খুঁটিনাটি আপনাকে জানতে হবে।যদি আপনি নিয়মিত অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমকে হালনাগাদ না করে থাকেন, তবে অবশ্যই সেটা করে নিন। গুগল এখন অ্যান্ড্রয়েডের নতুননতুন সংস্করণ বের করছে, যার প্রতিটিই আগের সংস্করণ থেকে উন্নত ও দ্রুততর। সর্বশেষ অ্যান্ড্রয়েড সংস্করণে থাকলে আপনার অ্যান্ড্রয়েড সেট আগের থেকে ভালো কাজ করবে। আপনার অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসের সিস্টেম আপডেট অপশনে গিয়েঅ্যান্ড্রয়েডের সর্বশেষ সংস্করণে হালনাগাদ করে নিতে পারবেন।অ্যাপস স্টোর থেকে কোনো অ্যাপস ইনস্টল করলে সঙ্গে সঙ্গেই সেটি আপনার ফোনের কিছু জায়গা দখল করবে। একই সঙ্গে সেটি চালু রাখতে সেটের প্রসেসরকে ব্যস্ত রাখবে। অ্যান্ড্রয়েড সেটের যত বেশি জায়গা অ্যাপস দিয়ে পূর্ণ করে রাখবেন অথবাঅ্যাপসটি যতটা প্রসেসরকে ব্যস্ত রাখবে, সেটের কাজ ততটা খারাপ হতে থাকবে, যা সেটটিকে ধীরগতির করে ফেলবে। এ জন্য এমন অ্যাপস ফোনে ইনস্টল করে রাখবেন না, যেগুলোর কোনো প্রয়োজন নেই।যেসব অ্যাপস আপনি সচরাচর ব্যবহার করেন না, সেসব অ্যাপস নিষ্ক্রিয় করে রাখুন। এতে সেটের প্রসেসরের ওপর চাপ কমবে। অ্যান্ড্রয়েডে পারফরম্যান্স অ্যাসিস্ট্যান্ট নামের একটি ফিচার আছে, যেটিতে গিয়েঅপ্রয়োজনীয় অ্যাপসগুলো ডিজঅ্যাবল করে রাখতে পারবেন। পরবর্তী সময়ে প্রয়োজনের সময় সেগুলোকে আবার এনাবলকরে ব্যবহার করতে পারবেন।আপনার অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসের অ্যাপসগুলো নিয়মিত হালনাগাদ করুন। অ্যান্ড্রয়েডের অ্যাপস স্টোর গুগল প্লে থেকে অ্যাপস নির্মাতারা নিয়মিত আপডেট দিয়ে থাকেন। এতে অ্যাপসগুলো সহজে ব্যবহারের উপযোগী এবং নতুন ফিচার যুক্ত করে।ডিভাইসের তথ্য বা অ্যাপস সংরক্ষণেরজন্য দ্রুতগতির মেমরি কার্ড ব্যবহার করুন। বাজারে অ্যান্ড্রয়েড সেটের জন্য ২ গিগা থেকে ৩২ গিগাবাইটের মেমোরি কার্ড পাওয়া যায়।মেমোরি কার্ড কেনার সময় লক্ষ রাখুন, এটি উচ্চগতিসম্পন্ন কিনা। যদি আপনার অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসটির পারফরম্যান্স বাড়াতে চান, তাহলে অবশ্যই ক্লাস ৬ কিংবা ক্লাস ১০ মানের মেমোরি কার্ড ব্যবহার করুন।উইজেট কোনো অ্যাপস নয়। কিন্তু এগুলো অ্যান্ড্রয়েড সেটে চালু থাকে, যখন থেকে এগুলো সক্রিয় করে দেয়া হয়। সাধারণত স্মার্টফোন ব্যবহারকারীরা আবহাওয়ার খোঁজখবর,গুরুত্বপূর্ণ তারিখ মনে রাখার কিংবা ব্লুটুথ ও জিপিএসের উইজেট মুঠোফোনের হোম স্ক্রিনে রেখে দেন। একসঙ্গে অনেক উইজেট চালু রাখলে সেগুলো সেটের ব্যাটারি ও প্রসেসরেরওপর চাপ সৃষ্টি করে, যা আপনার অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসটির পারফরম্যান্স দুর্বল করে দেয়।অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইস ব্যবহারকারীরা অনেকেই লাইভ ওয়ালপেপার ফিচারটি পছন্দ করেন। কিন্তু এটি অ্যান্ড্রয়েড সেটের প্রসেসরের ওপর প্রভাব ফেলে, যা আপনার সেটের ব্যাটারি দ্রুত নিঃশেষকরে।সিংক অবশ্যই একটি ভালো ফিচার, যা আপনাকে অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসের বিভিন্ন ফিচারের আপডেটের খোঁজখবর দেবে এবং ব্যাকআপ করে রাখবে। কিন্তু সিংক অপশন চালু রাখলে এটা নিয়মিত আপনাকে নোটিফিকেশন পাঠাবে এবং বাইরের সার্ভারের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করবে। যেমন আপনি যদি জিমেইলের সিংক অপশন অন করে রাখেন, তবে এটি পাঁচ মিনিট পর পর স্বয়ংক্রিয়ভাবে জিমেইল অ্যাকাউন্ট চেক করে আপনাকে সর্বশেষআপডেট জানাবে। আপনি প্রতিনিয়ত ইমেইলের আপডেট জানতে না চাইলে ্বন্ধ রাখতে পারেন। এটি আপনার অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করে। এ সমস্যা সমাধানে সিংক সেটিংসে গিয়ে পছন্দের অ্যাপসগুলোর সিংক অপশন চালু রেখে বাকিগুলো বন্ধ করে দিতে পারেন।অ্যান্ড্রয়েড সেটে আমরা অজান্তেই অনেক অ্যানিমেশন চালু করে রাখি, যাসেটের ব্যাটারি ও প্রসেসরের ওপর অতিরিক্ত ভার দিয়ে দেয়। যদি আপনি অ্যান্ড্রয়েড সেটের পারফরম্যান্স নিয়ে সন্তুষ্ট না থাকেন, তবে অ্যানিমেশন বন্ধ করে দিলে খুব দ্রুত সেটের পারফরম্যান্স সন্তোষজনক অবস্থায় পাবেন।বেশির ভাগ অ্যাপসের ডাটা হিসেবে স্টোরেজে অতিরিক্ত জায়গা নেয়। এর ফলে আপনার অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসে একটু বেশি অ্যাপ ইনস্টল করা থাকলে এমন অ্যাপ ডাটা সম্মিলিতভাবে ফোনেরস্টোরেজের বড় অংশ দখল করে নিতে পারে। বিশেষ করে গেম খেললে প্রচুর অ্যাপ ডাটা জমা হয়। এসব অ্যাপ ডাটার দু’টি অংশ থাকে যার একটি ক্যাশ ডাটা এবং অন্যটি স্টোরড ডাটাহিসেবে প্রদর্শিত হয়। এর মধ্যে ক্যাশ ডাটা হলো ওই অ্যাপের টেম্পোরারি ডাটা, যার পরিমাণ অল্প হলেও সব অ্যাপের ক্যাশ ডাটা ডিলিট করে দিলে বেশ বড় পরিমাণের স্টোরে সাশ্রয় ঘটবে।এসব নির্দেশনা অনুসরণ করতে পারলে অ্যাপসগুলো আপনার অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসগুলোকে নয়, বরং আপনি নিজেই অ্যাপসগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন।
Share: