খর চৈত্রের গরম এ বছর মাত্রা
ছাড়াচ্ছে। চারদিকে অসুস্থ হচ্ছে
মানুষ। খুব ছোট শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধ,
বাইরে দীর্ঘ সময় কাজ করেন—এমন
ব্যক্তি বা স্থূলকায় ব্যক্তি, মানসিক
রোগী এবং হৃদ্রোগ, ডায়াবেটিস ও
কিডনি রোগে আক্রান্ত মানুষেরা
বেশি ঝুঁকির মধ্যে আছেন।
পরিবেশের তাপমাত্রা বেশি বাড়লে
শরীরে পানিশূন্যতা, হিট ক্রাম্প,
অবসাদ, হিটস্ট্রোক ইত্যাদি সমস্যা হতে
পারে। গরমে ঘামের মাধ্যমে প্রচুর লবণ
ও পানি হারায় আমাদের ত্বক। এই
পানির ঘাটতি পূরণ না করলে
পানিশূন্যতা হতে পারে। এর লক্ষণ
হিসেবে মাথা ঝিমঝিম করে,
ক্লান্তি লাগে, মেজাজ খারাপ হয়,
প্রস্রাবের রং গাঢ় হয়ে যায়। এ রকম
পরিস্থিতিতে বারবার পানি পান
করতে হবে। আর শসা, লেবু-পানি, ডাব
উচিত। অ্যালকোহল, চা-কফি বরং
এড়িয়ে যাওয়া ভালো। কেননা,
এগুলো শরীরে পানিশূন্যতা বাড়ায়।
সরাসরি রোদ ও গরমের মধ্যে কাজ
করলে অনেক সময় হাত-পায়ের
মাংসপেশি খুব ব্যথা করে বা খিঁচে।
এ রকম হলে কাজ বন্ধ করে ঘরের ঠান্ডা
জায়গায় পা ছড়িয়ে বসুন, হাত-পায়ে
মালিশ করুন অথবা আইসপ্যাক বা ঠান্ডা
পানিতে কাপড় ভিজিয়ে সেটা
শরীরে বুলিয়ে দিন। অল্প অল্প করে
বারবার পানি বা ফলের রস পান করুন।
সম্ভব হলে গোসল করুন।
শরীর থেকে বেশি পানি ও লবণ
হারালে শারীরিক অবসাদে আক্রান্ত
হতে পারেন। এতে মাথা ঘোরে,
শিরা দুর্বল হয়ে পড়ে বা বুক ধড়ফড় করে
এবং মাথাব্যথা ও বমিও হতে পারে।
এরই পরবর্তী ধাপের নাম হিটস্ট্রোক। এর
ফলে দেহের তাপমাত্রা বেড়ে গিয়ে
৪০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড অবধি উঠতে
পারে। ত্বক ঘামে ভেজার বদলে বরং
শুকনো খটখটে হয়ে যায়, রোগী
হারিয়ে ফেলতে পারে। এটি একটি
মেডিকেল ইমার্জেন্সি এবং আক্রান্ত
ব্যক্তিকে দ্রুত হাসপাতালে নিতে
হবে। তার আগে রোগীকে ঠান্ডা
স্থানে নিয়ে গায়ের জামাকাপড়
খুলে পাখা দিয়ে বাতাস করতে হবে,
ভেজা কাপড় দিয়ে শরীর স্পঞ্জ করলে
এবং বগলে ও কুঁচকিতে আইসপ্যাক দিলে
ভালো হয়। রোগীর চেতনা থাকলে
মুখে একটু একটু পানি দিন, নয়তো জোর
করে পানি গেলানোর দরকার নেই।
হিটস্ট্রোক থেকে মৃত্যুও হতে পারে।
তাই এ বিষয়ে সতর্ক থাকা উচিত।