বর্তমান যুগটি হলো তথ্য প্রযুক্তির যুগ। এসময়ে রাজ করতেছে অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম। মানুষ প্রয়োজনীয় সকল কাজ অ্যান্ড্রয়েড ফোন থেকেই করে থাকে। তেমনি করে কোন কিছু নোট করার ক্ষেত্রেও এর বিকল্প নয়। প্লে স্টোরে অসংখ্য নোট অ্যাপ্লিকেশন পাওয়া যায়। এমনিকি প্রতিনিয়ত নতুন নতুন অ্যাপ তৈরি হচ্ছে যেগুলো একাধিক ফিচারে ঠাসা। এমনই একটি নোট অ্যাপ হলো “CountablePad”।
কাউন্টাবলপ্যাড হলো একটি জাপানি ডেভেলপারের তৈরি একটি নোট অ্যাপ। অ্যাপটি প্রকাশ করা হয় এবছরের মার্চ মাসে। তাই অ্যাপ টি সম্পর্কে খুব বেশি মানুষ জানে না। কিন্তু এই রিভিউ এর মাধ্যমে এই অ্যাপ সম্পর্কে জানতে পারবেন।
আমি সাধারণত কোন অ্যাপ ডাউনলোড করি ডাউনলোড সংখ্যা দেখে। রেটিং খুব একটা দেখিনা। তবে এগুলোর থেকে বেশি যা লক্ষ করি তা হলো অ্যাপ এর কোয়ালিটি এবং ইউজার ইন্টারফেস। আর সত্যি কথা বলতে এই অ্যাপটির ডিজাইন/ইউজার ইন্টারফেইস আমাকে একেবারে মুগ্ধ করেছে।
অ্যাপ টির বৈশিষ্ট্য
- অ্যাপটির ডিজাইন অনেক চমৎকার। গুগলের তৈরি অ্যাপ গুলোর ডিজাইন যেমন ম্যাটেরিয়াল এই অ্যাপটিও ঠিক সেই রকমই।
- নোট অ্যাপ হলেও অ্যাপটি প্রধানত শব্দ, ক্যারেক্টার ইত্যাদি কাউন্ট বা গননা করার জন্য ব্যবহৃত হয়।
- শব্দ এবং ক্যারেক্টার এর সাথে সাথে এই অ্যাপটি দিয়ে প্যারাগ্রাফ এবং বাক্য কাউন করা যায়। যেগুলো অ্যাপ এর সেটিংস থেকে চালু করতে হয়।
- কেখার সময় যদি কখনো ভুল হয় তার জন্য আছে আনডু এবং রিডু। যেমন কোন এক প্যারাগ্রাফ ভুলকরে কেটে দিলে সেটা আনডু থেকে ফিরিয়ে আনার সুযোগ থাকছে।
- বিভিন্ন নোট আলাদা আলাদা কালারে শ্রেনীবদ্ধ করে রাখার ফিচার তো আছেই।
- আছে গুগল ড্রাইভে ব্যাকআপ করে রাখার সুবিধা। যেটা আমার কাছে আনেক কুল লেগেছে। এর ফলে নাকে তেল দিয়ে ঘুমান যায়। কোনভাবে ফোন খারাপ হয়ে গেলে কিংবা এক্সিডেন্টলি অ্যাপ আন-ইন্সটল হয়ে গেলেও কষ্টে লেখা নোটগুলো থাকতেছে একেবারে আস্ত।
- বর্তমান সময়ে নাইট মোড একটা ট্রেন্টে পরিনত হয়েছে। আর নাইট মোড থাকবেনা এমনটা তো হতেই পারে না।
তো উপরে আমি দরকারি সকল ফিচার সম্পর্কে বলে ফেলেছি। তবে ভবিষ্যতে আরো ভালোভালো ফিচার আসতে পারে। কারন অ্যাপটির ডেভেলপার অনেক সক্রিয়। অ্যাপটির ডেভেলপার এর কাছথেকে যে কোন সাপোর্ট খুব সহজেই পাওয়া যায়।
আমার পার্সোনাল অভিজ্ঞতা
অ্যাপটি সম্পর্কে আমার পার্সনাল অভিজ্ঞতা মোটামোটি দারুন বলা যায়। যখন আমি প্রথমবার অ্যাপটি ইন্সটল করি তখন সেই তা কিবোর্ড এর ওয়ার্ড সাজেশন সাপোর্ট করছিল না, যেটা দ্রুত লেখার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তাই আমি নিরাস হয়ে এ সম্পর্কে ডেভেলপার কে একটা মেইল করলাম। আশা করেছিলাম কোন কাজ হবে না কিন্তু! একদিন পরে মেইলের রিপ্লাই পেয়ে তো আমি অবাক। এর পরে যখন আরো ভালো ভাবে কথা হলো তখন ডেভেলপার সেটা ঠিক করে দিল।
এরই মধ্যে ডেভেলপার একটি নতুন ফিচার নিয়ে আসল। সেটা হচ্ছে সেনটেন্স কাউন্টার। অর্থাৎ কতগুলো বাক্য লিখেছি তা কাউট করবে। কিন্তু বাংলা ভাষায় সেটা ঠিক ভাবে কাজ করছিল না। তখন আমি ডেভেলপার কে আরেকটা রিকুয়েষ্ট করলাম যে বাংলা ভাষার জন্য এটা ঠিক করুন। এবং বললাম যে দারি(।) এর মাধ্যমে বাংলা বাক্যের শেষ হয়। তো ডেভেলপার কিছু দিন পরে সেটাও ঠিক করে দিল।
অ্যাপটি আমি ব্লগ/আর্টিকেল/রিভিউ লিখার কাজে ব্যবহার করে থাকি। এমনকি এখন আপনি যে রিভিউটি পরেছেন তা এই অ্যাপটি দিয়েই লিখতেছি।
আমার রেকমেন্ড করা কিছু সেটিংস অপশন
এখানে আমি কিছু সেটিংস এর অপশন চালু ও বন্ধ সম্পর্কে বলব যেগুলো ডিফল্ট ভাবে চালু থাকছে না। এবং এই সেটিংস এর অপশন গুলো আপনার অ্যাপ ব্যবহার এর অভিজ্ঞতা আরো কিছুটা বাড়াতে সহায়তা করবে। নোট: একেক জনের পছন্দ একেক রকম, এখানে আমি আমার পছন্দ অনুসারে রেকমেন্ড করেছি। তো, সবার আগে অ্যাপ এর সেটিংসে প্রবেশ করুন। তারপর…
- কাউন্ট বাইট অপশন টি বন্ধ করে দিতে পারেন। এটা আমার কাছে বন্ধ করে রাখাটাই বেটার মনে হয়েছে। তবে আপনি যদি দেখতে চান আপনার লেখা টেক্স এর সাইজ কত তবে রেখে দিতে পারেন।
- এবার একটু নিচে নেমে সেনটেনস কাউন্ট অপশন টি চালু করে দিন। এতে আপনি কতটি বাক্য লিখেছেন তা দেখতে পাবেন।
- সেনটেনস কাউন্টার এর নিচে পাংচুয়েশন মার্ক অপশনে ক্লিক করুন এবং দারির (।) চেকবক্স টি চেকড করুন। ডিফল্ট ভাবে এটা থাকে না।
- এরপরে প্যারাগ্রাফ কাউন্ট এর অপশনটি এনাবল করুন। এতে আপনি কতটি প্যারাগ্রাফ লিখেছেন তা দেখতে পাবেন।
আশা করি অ্যাপটি সম্পর্কে ভালো ধারনা দিতে পেরেছি। তো, অ্যাপটি প্লে স্টোর থেকে ডাউনলোড করতে এখানে ক্লিক করুন। এবং অ্যাপ টির সকল সুযোগ সুবিধা উপভোগ করুন।
এরকম আরো রিভিউ এর জন্য আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন। ধন্যবাদ।
App এর মতো আপনার লেখাও ম্যাটেরিয়াল !??