সময়ের পরিক্রমায় মোবাইল ফোন এখন এক অতি প্রয়োজনীয় বস্তুতে পরিণত হয়ে পড়েছে। দ্রুত যোগাযোগের ক্ষেত্রে মোবাইল ফোন এখন অপরিহার্য। কারণ, এতে রয়েছে নানা ধরনের সুবিধা। কেউ চাইলেই পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তের মানুষের সঙ্গে মুহূর্তের মধ্যেই যোগাযোগ করতে পারেন মোবাইল ফোনের মাধ্যমে। বস্তুত, মোবাইল ফোনের ব্যবহার বিশ্বকে মানুষের হাতের নাগালে এনে দিয়েছে। এর সবচেয়ে বড় যে সুবিধা তা হলো দ্রুত যোগাযোগ। বর্তমানে স্মার্ট মোবাইল ফোন কথা বলা ছাড়াও ডিজিটাল ক্যামেরা, অডিও-ভিডিও রেকর্ডার, মাল্টিমিডিয়া মেসেজিং, ই-মেইল, ইন্টারনেট ব্যবহার, ভিডিও গেম সুবিধা, উপাত্ত পর্যবেক্ষণ, গান শোনা, টিভি দেখা, ভিডিও দেখা, বারকোড রিডারসহ নানা কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। আর এই ধরনের দরকারি একটি জিনিস চুরি হয়ে গেলে কিংবা হারিয়ে গেলে দুশ্চিন্তার অন্ত থাকে না। পাশাপাশি বেশি দুশ্চিন্তা থাকে যে, কেউ যদি ওই মোবাইল ফোনটির কোনো অপব্যবহার করে থাকে। মোবাইল ফোন হারানোর দুঃখ কেবল ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিই ভালো বলতে পারবেন। মোবাইল ফোন চুরি হলে মনে জাগে, চোর বুঝি মোবাইল ফোনে রক্ষিত সব তথ্য পড়ে ফেললো। আর অপরদিকে চোর ভাবে, চোরাই ফোন বিক্রি করে যদি কিছু কামানো যায়। মোবাইল ফোন চালু রাখা ও বন্ধ রাখার প্রযুক্তি রয়েছে। কিন্তু দূর থেকে মোবাইল ফোন অকেজো করে ফেলার কার্যকর কোনো পদ্ধতি এখন পর্যন্ত নেই। প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো যেমন বসে নেই চুরি ঠেকাতে নিত্য নতুন প্রযুক্তি বা সফটওয়্যার তৈরিতে, তেমনি চোরেরাও প্রতিনিয়ত বের করছে নানান ফন্দি-ফিকির। যদি আপনার মোবাইল ফোন চুরি হয়ে যায়, তাহলে নিম্নোক্ত তিনটি ধাপ অনুসরণ করুন-

১. আপনার মোবাইল ফোনের আইএমইআই (International Mobile Equipment Identity) নম্বর উল্লেখ পূর্বক নিকটস্থ থানায় জিডি করুন। প্রত্যেক ব্যক্তিরই নিজ নিজ মোবাইল ফোনের আইএমআই নম্বর শুরু থেকেই জেনে রাখা প্রয়োজন। উল্লেখ্য, আপনার মোবাইলের “কি” (key) বাটনে গিয়ে *#০৬# চেপে আপনার মোবাইল ফোনের আইএমআই নম্বর জানতে পারবেন। উক্ত নম্বরটি জানার পর উপযুক্ত কোনো জায়গায় লিপিবদ্ধ করে রাখুন, কারণ পরে এটি কাজে লাগতে পারে। 
২. উক্ত জিডির একটি কপিসহ র‌্যাব (RAB) বরাবর অভিযোগ করুন। 
৩. জিডির কপিতে উল্লেখ করা অফিসারের সাথে যোগাযোগ রাখুন এবং তার মাধ্যমে ডিটেকটিভ ব্রাঞ্চ (ডিবি)- এর ট্র্যাকিং টিমের সহায়তা নিন।
অনেক সময় দেখা যায়, আইটিতে দক্ষ ইউজার নিজেই ট্র্যাক করে বের করে ফেলেছেন মোবাইলের অবস্থান। এরকম হলে ডিবির জন্য বসে থেকে লাভ নেই, লোকেশনসহ জিডিতে উল্লিখিত অফিসারের সহায়তা নিয়ে মোবাইল ফোন চোরকে ধরতে এগিয়ে চলুন। দেখা গেছে, থানায় জিডি করে বেশিরভাগ সময়েই ফোন ফেরত পাওয়া যায় না। এর কারণ হচ্ছে, আমাদের ট্র্যাকিং টিম মূলত অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের কেইসগুলোর ক্ষেত্রে প্রাধান্য দিয়ে থাকেন এবং মোবাইল ট্র্যাকিং করেন। খুন, সন্ত্রাস, বড় ধরনের অপরাধ ইত্যাদি সংশ্লিষ্ট মোবাইল ট্র্যাক করাই যেন এদের মূল কাজ। তাই সাধারণ জনগণের ক্ষেত্রে এরা তেমন একটা গুরুত্ব দেওয়ার সময় পান না অথবা গুরুত্ব দিতে চান না। যদিও সকলের ক্ষেত্রেই এই টিমের গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন।

তবুও জিডি করবেন কেন?

১. আপনার মোবাইল ব্যবহার করে কেউ অপকর্ম, অন্যায়-অপরাধ করলে সেগুলো যেন আপনার ঘাড়ে না বর্তায়। আপনার হারিয়ে যাওয়া মোবাইলে সংরক্ষিত তথ্য ব্যবহার করে কেউ যদি অপকর্ম করে, জিডির কপি দেখিয়ে সেটার দায় থেকে আপনি রক্ষা পেতে পারবেন।
২. হঠাৎ জিডির দ্বারা ট্র্যাকিং করে মোবাইল পাওয়া গেলেও যেতে পারে।

সাবধানতা :

 মোবাইল ফোনে এমন কোনো ছবি রাখা ঠিক হবে না, যেটা প্রকাশ হলে আপনার জন্যে সামাজিক এবং অন্যান্য ক্ষতি বয়ে আনতে পারে। অন্তরঙ্গ মুহূর্তে কেউ ওরকম ছবি তুলতে চাইলে সতর্ক থাকুন। কারণ, এ ধরনের ‘ভালোবাসা’ আপনার সারা জীবনের জন্য কাল হয়ে দাঁড়াতে পারে।

8 thoughts on "আইন জানুন আইন মানুন পর্ব ১ : মোবাইল ফোন হারালে বা চুরি হয়ে গেলে কী করবেন?"

    1. Shakil Contributor Post Creator says:
      yeh!!
    1. Shakil Contributor Post Creator says:
      Thanks for your comments
  1. jbriyad Contributor says:
    Amar phn churi hoicilo… GD korar 7 mash por paici.. But taka lagche 5000… Ei taka ta ki sotti e lage oder?
    1. Shakil Contributor Post Creator says:
      Na ভাইয়া,তবে সামান্য কিছু খরচ লাগে 200-300

Leave a Reply