আসসালামু আলাইকুম। 

আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালোই আছেন।

প্রতিদিনের মতো আপনাদের সামনে আমি আবারও নতুন একটি পোস্ট নিয়ে হাঁজির হয়েছি। আমরা আপনাদের কথা মাথায় রেখেই নিত্যনতুন পোস্ট নিয়ে আসি। আজকেও ব্যতিক্রম নয়।

আমার এই পোস্ট গুলো পড়লে আপনি কম্পিউটার সম্পর্কে সকল কিছু জানতে পারবেন। কম্পিউটারের অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক বিভিন্ন কার্যক্রম, কম্পিউটার ইন্টারেটের ইতিহাস ও ব্যবহার সম্পর্কে সম্যক ভাবে জানতে পরবেন। তো আর কথা না বাড়িয়ে সরাসরি মূল পোস্টে চলে যায়।

আজকে এই পোস্টের মাধ্যমে আমরা তথ্য ও প্রযুক্তর গ্লোবাল ভিলেজ সম্পর্কে বিস্তারিত সকল কিছু আলোচনা করবো।

বিশ্বগ্রামের ধারণা (Concept of Global Village) 

আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতিতে এবং দ্রুত যোগাযোগের সুবিধার ফলে পৃথিবী ছোট হয়ে আসছে। আমরা এখন অতি অল্প সময়ের মধ্যেই পৃথিবীর কোথায় কী ঘটছে তাৎক্ষণিকভাবে জানতে পারি।

পৃথিবীর দেশগুলোকে যেন গ্রামের পরিবারের সমন্বয় বলে মনে হয়। এমনকি তারা তাদের সুখ-দুঃখ পাশাপাশি প্রতিবেশীর মতো বিনিময় করছে। যদি কোনো দেশ সমস্যায় পড়ে, পার্শ্ববর্তী দেশগুলো তার সাহায্যে দ্রুত এগিয়ে আসছে।

আমরা আমাদের অনুভূতিকে স্বল্প সময়ের মধ্যে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের মানুষের কাছে পৌঁছাতে পারছি। পৃথিবীব্যাপী স্বয় সময়ে এই যোগাযোগ সুবিধার ফলেই বিশ্বকে একটি গ্রাম হিসেবে তুলনা করা হচ্ছে। এজন্য বর্তমান বিশ্বকে গ্লোবাল ভিলেজ বা বিশ্বগ্রাম বলা হয়। বিভিন্ন সমাজবিজ্ঞানী এবং দার্শনিক বিশ্বগ্রাম সম্পর্কে সংজ্ঞা প্রদান করেছেন।

নিয়ে কয়েক জনের সংজ্ঞা দেওয়া হলো- হারবার্ট মার্শাল মাকলুহান তার The Gutenberg Galaxy: The Making of Typographic Man’ এবং ‘Understanding Media’ বইতে প্রথম বিশ্ব গ্রাম বা গ্লোবাল ভিলেজ এর ধারণা দেন। রোলান্ড রবার্টসন বলেন, “বিশ্বায়ন হচ্ছে বিশ্বের সংকোচন এবং পরস্পর নির্ভরশীলতা।”

মার্টিন আরো বলেন, “বিশ্বায়ন হচ্ছে সামগ্রিক কমিউনিটির মধ্যে সমস্ত মানুষকে নিয়ে আসার প্রক্রিয়া।” এন্থনি গিভেন্স বলেন, “বিশ্বায়ন হচ্ছে বিশ্বব্যাপী সামাজিক সম্পর্কের প্রণাঢ়করণ।”

সুতরাং আমরা বলতে পারি, বিশ্বগ্রাম হচ্ছে এমন একটি সামাজিক বা সাংস্কৃতিক ব্যবস্থা, যেখানে পৃথিবীর সকল প্রান্তের মানুষই একটি  একক সমাজে বসবাস করে এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়া ও তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে তারা সহজেই তাদের চিন্তা চেতনা, অভিজ্ঞতা, সংস্কৃতি-কৃষ্টি ইত্যাদি বিনিময় করতে পারে ও একে অপরকে সেবা প্রদান করে থাকে।

www আবিষ্কারের অনেক পূর্বেই Global Village শব্দের ধারণা পাওয়া যায়। বিশ্বের যেকোন প্রান্তে এখন পাশাপাশি বসে যোগাযোগ হচ্ছে বলে মনে হয়। skype Facebook Myspace এবং Twitter এ কথা বলে মানুষ সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, শিক্ষা-গবেষণার সুযোগ সৃষ্টি করে। মূলত ইলেকট্রনিক টেকনোলজির মাধ্যমে ICT বিশ্বগ্রাম তৈরিতে ক্রমবর্ধমান উন্নতি সাধন করেছে।

এক কথায় বলা যায়- “গ্লোবাল ভিলেজ বা বিশ্বগ্রাম হচ্ছে এমন একটি সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক সংগঠন বা কম্যুনিটি, যেখানে কম্যুনিটির সকল সদস্য ইন্টারনেট তথা যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে সংযুক্ত”।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ক্রমবর্ধমান উন্নতির ফলে বসবাসযোগ্য পৃথিবী ক্রমশ ছোট হয়ে আসছে, যেন একটি গ্রামে পরিণত হচ্ছে। পৃথিবীর সব দেশেই গ্রামের সকল মানুষের মধ্যে পরস্পর সম্পর্ক ও সহযোগিতা বিদ্যমান থাকে। তথ্য প্রযুক্তি উন্নতির কারণে এবং ইন্টারনেটের যথাপযুক্ত ব্যবহারের ফলে বিশ্ব আজ

গ্রামের মতো ছোট হয়ে আসছে। অক্সফোর্ড আমেরিকান ডিকশনারি অনুযায়ী গ্লোবাল ভিলেজ হচ্ছে- “The world Considered a single community linked by telecommunications.” উইকিপিডিয়ার একটি উদ্ধৃতি অনুযায়ী Global Village হচ্ছে “The global village is the sociological and cultural structure”.

বিশ্বগ্রাম প্রতিষ্ঠার উপাদানসমূহ (Elements of establishing Global village)

  • ১. হার্ডওয়্যার বা কম্পিউটার সংশ্লিষ্ট যন্ত্রপাতি, 
  • ২. প্রোগ্রামসমূহ বা সফটওয়্যার, 
  • ৩. ব্যক্তিবর্গের সক্ষমতা, 
  • ৪. ডেটা বা ইনফরমেশন, 
  • ৫. ইন্টারনেট সংযুক্ততা (Internet Connectivity)

১. হার্ডওয়্যার বা কম্পিউটার সংশিষ্ট যন্ত্রপাতি (Hardware):

হার্ডওয়্যার বলতে কম্পিউটারের সমস্ত ফিজিক্যাল ইলেকট্রোনিক কম্পোনেন্টকে বোঝায়। যেমন- বিভিন্ন যন্ত্রাংশ, বিভিন্ন প্রিন্টেড সার্কিট বোর্ড, ডিসপ্লে এবং প্রিন্টার ইত্যাদি।

বিশ্বগ্রামে যেকোন ধরনের যোগাযোগ ও তথ্য আদান-প্রদানের জন্য এটি ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও কম্পিউটারের সাথে মোবাইল ফোন, স্মার্ট ফোন, অডিও ভিডিও রেকর্ডার, ওয়েব ক্যাম, স্যাটেলাইট, রেডিও, টেলিভিশন ইত্যাদি হার্ডওয়্যারের অন্তর্ভূক্ত।

২. প্রোগ্রামসমূহ বা সফটওয়্যার (Software): কম্পিউটারকে কার্যোপযোগী করার জন্য এবং কম্পিউটার দ্বারা কোন সমস্যা সমাধানের জন্য ব্যবহৃত প্রোগ্রামসমূহকে সফটওয়্যার বলে। বিশ্বগ্রাম প্রতিষ্ঠার জন্য হার্ডওয়্যারের পাশাপাশি সফটওয়্যার প্রয়োজন।

সফটওয়্যারের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের অপারেটিং সিস্টেম, ব্রাউজিং সফটওয়্যার, কমিউনিকেটিং সফটওয়্যার প্রোগ্রামিং ভাষা ইত্যাদি।

৩. ব্যক্তিবর্গের সক্ষমতা (Human capacity): গ্রামের উপাদানের মধ্যে ব্যক্তিবর্গের সক্ষমতা অন্যতম। ICT নির্ভর বিশ্বগ্রাম তৈরির জন্য মানুষের সক্ষমতা অত্যাবশ্যক।

৪. ডেটা বা ইনফরমেশন (Data or information):

ডেটা বা উপাত্ত হলো তথ্যের উপাদান। ভেটা হচ্ছে তথ্যের মৌলিক ধারণা যা সালালে বা প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে তথ্য বা ইনফরমেশন তৈরি হয়।

এটি অঙ্ক বর্ণনা, টেক্সট, ইমেজ, অডিও ভিডিও এমনকি গ্রাফও হতে পারে। বিশ্বগ্রাম প্রতিষ্ঠায় ডেটা প্রসেসিং করে মানুষের কল্যাণে তথ্যে পরিণত করা হয়। বিশ্বগ্রাম সৃষ্টিতে ডেটা আদান প্রদান অধিক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

৫. ইন্টারনেট সংযুক্ততা (Internet Connectivity): ইন্টারনেট সংযুক্ততা ছাড়া বিশ্বগ্রাম প্রায় অসম্ভব। সারা পৃথিবী জুড়ে বিস্তৃত পরস্পরের সাথে সংযুক্ত অনেকগুলো কম্পিউটার নেটওয়ার্কের সমষ্টিতে গঠিত ইন্টারনেট বিশ্বগ্রামের ধারণাকে আজ বাস্তবে পরিনত করেছে।

একক সমাজে বসবাস করে এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়া ও তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে তারা সহজেই তাদের চিন্তা চেতনা, অভিজ্ঞতা, সংস্কৃতি-কৃষ্টি ইত্যাদি বিনিময় করতে পারে ও একে অপরকে সেবা প্রদান করে থাকে।

Www আবিষ্কারের অনেক পূর্বেই Global Village শব্দের ধারণা পাওয়া যায়। বিশ্বের যেকোন প্রান্তে এখন পাশাপাশি বসে যোগাযোগ হচ্ছে বলে মনে হয়। skype Facebook Myspace এবং Twitter এ কথা বলে মানুষ সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, শিক্ষা-গবেষণার সুযোগ সৃষ্টি করে।

মূলত ইলেকট্রনিক টেকনোলজির মাধ্যমে ICT বিশ্বগ্রাম তৈরিতে ক্রমবর্ধমান উন্নতি সাধন করেছে। এক কথায় বলা যায় “গ্লোবাল ভিলেজ বা বিশ্বগ্রাম হচ্ছে এমন একটি সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক সংগঠন বা কম্যুনিটি, যেখানে কম্যুনিটির সকল সদস্য ইন্টারনেট তথা যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে  তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ক্রমবর্ধমান উন্নতির ফলে বসবাসযোগ্য পৃথিবী ক্রমশ ছোট হয়ে আসছে, যেন একটি গ্রামে পরিণত হচ্ছে।

পৃথিবীর সব দেশেই গ্রামের সকল মানুষের মধ্যে পরস্পর সম্পর্ক ও সহযোগিতা বিদ্যমান থাকে। তথ্য প্রযুক্তি উন্নতির কারণে এবং ইন্টারনেটের যথাপযুক্ত ব্যবহারের ফলে বিশ্ব আজ গ্রামের মতো ছোট হয়ে আসছে।

অক্সফোর্ড আমেরিকান ডিকশনারি অনুযায়ী গ্লোবাল ভিলেজ হচ্ছে- “The world Considered a single community linked by telecommunications,” উইকিপিডিয়ার একটি উদ্ধৃতি অনুযায়ী Global Village হচ্ছে “The global village is ” cultural structure”.

বিশ্বগ্রাম প্রতিষ্ঠার উপাদানসমূহ (Elements of establishing Global village) 

  • ১. হার্ডওয়ার বা কম্পিউটার সংশ্লিষ্ট যন্ত্রপাতি, 
  • ২. প্রোগ্রামসমূহ বা সফটওয়্যার, 
  • ৩. ব্যক্তিবর্গের সক্ষমতা, 
  • ৪, ডেটা বা ইনফরমেশন, 
  • ৫. ইন্টারনেট সংযুক্তৃতা (Internet Connectivity)

১. হার্ডওয়্যার বা কম্পিউটার সংশিষ্ট যন্ত্রপাতি (Hardware)

: হার্ডওয়্যার বলতে কম্পিউটারের সমস্ত ফিজিক্যাল ইলেকট্রোনিক কম্পোনেন্টকে বোঝায়। যেমন- বিভিন্ন যন্ত্রাংশ, বিভিন্ন প্রিন্টেড সার্কিট বোর্ড, ডিসপ্লে এবং প্রিন্টার ইত্যাদি। বিশ্বগ্রামে যেকোন ধরনের যোগাযোগ ও তথ্য আদান-প্রদানের জন্য এটি ব্যবহৃত না। এছাড়াও কম্পিউটারের সাথে মোবাইল ফোন, স্মার্ট ফোন, অডিও ভিডিও রেকর্ডার, ওয়েব ক্যাম, স্যাটেলাইট, রেডিও, টেলিভিশন ইত্যাদি হার্ডওয়্যারের অন্তর্ভূক্ত।

২. প্রোগ্রামসমূহ বা সফটওয়্যার (Software): কম্পিউটারকে কার্যোপযোগী করার জন্য এবং কম্পিউটার দ্বারা কোন সমস্যা সমাধানের জন্য ব্যবহৃত প্রোগ্রামসমূহকে সফটওয়্যার বলে। বিশ্বগ্রাম প্রতিষ্ঠার জন্য হার্ডওয়্যারের পাশাপাশি সফটওয়্যার প্রয়োজন। সফটওয়্যারের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের অপারেটিং সিস্টেম, ব্রাউজিং সফটওয়্যার, কমিউনিকেটিং সফটওয়্যার, প্রোগ্রামিং ভাষা ইত্যাদি।

৩. ব্যক্তিবর্গের সক্ষমতা (Human capacity): বিশ্বগ্রামের উপাদানের মধ্যে ব্যক্তিবর্গের সক্ষমতা অন্যতম। ICT নির্ভর বিশ্বগ্রাম তৈরির জন্য মানুষের সক্ষমতা অত্যাবশ্যক

৪. ডেটা বা ইনফরমেশন (Data or information): ডেটা বা উপাত্ত হলো তথ্যের উপাদান। ডেটা হচ্ছে তত্ত্বের মৌলিক ধারণা যা সাজালে বা প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে তথ্য বা ইনফরমেশন তৈরি হয়। এটি অঙ্ক বর্ণনা, টেক্সট, ইমো, অডিও ভিডিও এমনকি গ্রাফও হতে পারে। বিশ্বগ্রাম প্রতিষ্ঠায় ডেটা প্রসেসিং করে মানুষের কল্যাণে তথ্যে পরিণত করা হয়। বিশ্বগ্রাম সৃষ্টিতে ডেটা আদান প্রদান অধিক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

৫. ইন্টারনেট সংযুক্ততা ( Internet Connectivity): ইন্টারনেট সংযুক্ততা ছাড়া বিশ্বগ্রাম প্রায় অসম্ভব। সারা পৃথিবী জুড়ে বিস্তৃত পরস্পরের সাথে সংযুক্ত অনেকগুলো কম্পিউটার নেটওয়ার্কের সমষ্টিতে গঠিত ইন্টারনেট বিশ্বগ্রামের ধারণাকে আজ বাস্তবে পরিনত করেছে। 

বিশ্বগ্রামের বিশ্বগ্রাম সৃষ্টির কারণ: বিশ্বগ্রাম প্রক্রিয়ার প্রধান কারণ হচ্ছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির বিস্ময়কর বিকাশ। বিশ্বকে যুক্ত  করার প্রথম প্রতিষ্ঠা শুরু হয়েছিল ঔপনিবেশিক যুগের প্রথম দিকে সারা দুনিয়া জুড়ে টেলিগ্রাফ লাইন স্থাপনের মাধ্যমে।

বিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে কম্পিউটারের উদ্ভাবন ঘটে এবং ১৯৬৯ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তরের উদ্দ্যোগে ARPANET নামক প্রজেক্টের মাধ্যমে শুরু হয় ইন্টারনেটের।

ইন্টারনেট এবং ইন্টারনেট ভিত্তিক যোগাযোগ এখন বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগ মাধ্যম। বিশ্বগ্রামের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ কারণ হচ্ছে বিশ্বের কেন্দ্রের এবং কেন্দ্রের বাইরে কোনো কোনো অঞ্চলে বিশাল বহুজাতিক সংস্থা গড়ে ওঠা। বহুজাতিক সংস্থা তাদের প্রযুক্তি ও ব্যবসায়িক কৌশল এক দেশ থেকে অন্য দেশে প্রসার ঘটায়।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর মার্কিন বহুজাতিক সংস্থাগুলো ইউরোপে উৎপাদন শুরু করে। ১৯৭০ সালের পর ইউরোপীয় সংস্থাগুলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদন শুরু করে। একই সময়ে জাপানী সংস্থাগুলো দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় উৎপাদন শুরু করে।

এভাবে বহুজাতিক সংস্থা অর্থনৈতিক এন্টীভবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

বিশ্বগ্রামের ফলে সমাজে ভালো ও খারাপ উভয় ধরনের প্রভাবই পরিলক্ষিত হচ্ছে। নিচে এদের বর্ণনা দেওয়া হলো; বিশ্বায়নের বৈশিষ্ট্য: বিশ্বায়নের চারটি মূল বৈশিষ্ট্য লক্ষ করা যায়—

  1. ● ভৌগলিক অবস্থানের উর্ধ্বে সামাজিক নতুন বিন্যাস যার মাধ্যমে দূরের মানুষের সাথে তাৎক্ষনিক যোগাযোগ এবং সম্পর্ক স্থাপন সম্ভব। এই সামাজিক সম্পর্কের মধ্যে ক্ষমতার নতুন বিন্যাসও তৈরি হচ্ছে। 
  2. • বিশ্বব্যাপী সামাজিক সম্পর্কের এবং বিনিময়ের ব্যাপ্তি, গভীরতা, গতি এবং প্রভাব ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
  3. • নতুন নেটওয়ার্ক এবং যোগাযোগের ‘এশ্মি’ সৃষ্টি হচ্ছে। অনেক সমাজবিজ্ঞানী একে জ্ঞানভিত্তিক সমাজব্যবস্থা বলে অভিহিত করেছেন। যদিও পশ্চিমা দেশসমূহে এর উৎপত্তি, তথাপি এটি ক্রমশ যোগাযোগ নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ছে।
  4. ● বিশ্বায়ন কোন একমুখী প্রক্রিয় নয়। দুটি বিপরীত বা অনেকের মতে, দ্বান্দ্বিক প্রক্রিয়া এর সাথে জড়িত। এর প্রথমটি হচ্ছে বিশ্বমুখীনতা যার মাধ্যমে বিশ্বের ভিন্ন ভিন্ন সমাজ প্রতিষ্ঠান এবং সংস্কৃতি সমরূপ ধারণ করে। অন্যটি হচ্ছে স্থানিকতা বা ‘Local” যার মাধ্যমে প্রান্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠান এবং সংস্কৃতি গুরুত্ব অর্জন করে এবং শক্তিশালী হয়। এর উদাহরণ হচ্ছে বিলুপ্তপ্রায় ভাষাগুলির প্রতি এখন নতুন করে দৃষ্টিপাত করা হচ্ছে এবং সেগুলোকে সংরক্ষণ করা হচ্ছে।

 বিশ্বায়নের মাধ্যমসমূহ; বিশ্বায়ন কোন সংকীর্ণ ধারণা নয়, এটি একটি বহুমাত্রিক প্রক্রিয়া। এর বহিঃপ্রকাশও বিভিন্নমুখী। বিশ্বায়নের বিকাশে তাই বিভিন্ন ধরনের শক্তির প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ স্পষ্ট। বহুজাতিক সংস্থার মধ্যে রয়েছে জাতিসংঘ, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা, বিশ্বব্যাংক, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল প্রভৃতি। এ সব সংস্থা বিশ্ব অর্থনীতির সম্প্রসারণে পালন করছে ব্যাপক ভূমিকা। তথ্য ও প্রযুক্তির বিকাশ, বিশ্ব যাতায়াত ও যোগাযোগ ব্যবস্থার পরিবর্তনই বিশ্বের সভ্যতা ও জনসমাজে পারস্পরিক নৈকট্য সুদৃঢ় করেছে। আর এসবের ফলে বিশ্বায়ন প্রক্রিয়া হয়েছে জ্বরান্বিত।

বিশ্বায়নের ইতিবাচক সম্ভাবনা; বিশ্বায়ন মানবজাতির প্রয়োজনেই উদ্ভূত এক ব্যাপকভিত্তিক প্রত্যয়। কালের বিবর্তনে মানুষের রুচি মানসিকতার ব্যাপক পরিবর্তন সূচিত হয়েছে, মানুষের চাহিদা ও ব্যাপকতা বৃদ্ধি পেয়েছে বহুলভাবে। আর এ চাহিদা পুরণ কোন এক ক্ষুদ্র জনসমাজের সম্ভব নয়।

বিশেষ করে স্বল্পোন্নত দেশগুলোয় যেখানে সম্পদের তুলনায় চাহিদা অনেক বেশি তাদেরকে বাধ্য হয়েই বিশ্বায়নে অঙ্গীভূত হতে হচ্ছে।

তা ছাড়া পশ্চিমা বিশ্বের উন্নত কলাকৌশল ও প্রযুক্তির বিকাশ ঘটিয়ে এসব দেশও তাদের সহযোগী ভাবতে পারছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে আন্তর্জাতিক পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যয় হ্রাস, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সমৃদ্ধি এবং বৈশ্বিক নেটওয়ার্ক বৃদ্ধির ক্ষেত্রে বিশ্বায়ন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

বৈশ্বিক উৎপাদন বৃদ্ধির সাথে সাথে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য এবং পুঁজির প্রবাহ ব্যাপক হয়েছে। তাই এ দৃষ্টিকোণ থেকে বলা যায় ঊনবিংশ শতাব্দী ও বিংশ শতাব্দী এশিয়া, আফ্রিকা ও ল্যাটিন আমেরিকার দেশগুলোর জন্য বিশ্বায়ন অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন নিয়ে আসবে। এর প্রমাণ, গত চার দশকে এশিয় দেশগুলো বিশ্ব বাজারে তাদের পণ্য বিক্রি করে ব্যাপক প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে।

সংক্ষেপে বিশ্বায়নের ইতিবাচক সম্ভাবনা সমূহ হলোঃ

  • ১. যেকোনো স্থানের সাথে তাৎক্ষণিক ও কার্যকর যোগাযোগ সম্ভব হয়।
  • ২. কম খরচে বিশ্বের যেকোন প্রান্তের লোকের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব।
  • ৩. মনুষ্য শক্তির অপচয় রোধ, কাজের দক্ষতা ও গতি বৃদ্ধি পেয়েছে।
  • ৪. ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটছে এবং লেনদেন সহজতর হচ্ছে।
  • ৫. শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষাগ্রহণ ও প্রদান সহজতর হয়েছে এবং বিভিন্ন গবেষণার ফলাফল সহজে জানা যাচ্ছে।
  • ৬. মানুষের স্বাস্থ্য ও উন্নত চিকিৎসাসেবা পাওয়া সহজতর হয়েছে। 
  • ৭. মানব সম্পদ উন্নয়ন ও সকল ব্যবস্থাপনার খরচ কমে আসছে।
  • ৮. জীবনযাত্রার মান উন্নত হয়েছে। 
  • ৯. আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে ঘরে বসে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা যাচ্ছে।
  • ১০. যেকোন তথ্য ইন্টারনেটে পাওয়া সম্ভব। 
  • ১১. অন লাইন লাইব্রেরি, অন লাইন ইউনিভার্সিটি, ই-বুক, অনলাইন পেপার প্রভৃতি সুবিধা ভোগ করা যাচ্ছে।
  • ১২. সারা পৃথিবী হাতের মুঠোয় এসেছে।

বিশ্বায়নের নেতিবাচক সম্ভাবনা: 

Globalization বা বিশ্বায়ন নয়া ঔপনিবেশিকতাবাদের একটি প্রক্রিয়া বা অর্থনৈতিক কৌশল। উপনিবেশবাদের যুগ শেষ হলেও এখন জলছে বিশ্ব নয়া উপনিবেশ ও সাম্রাজ্যবাদের লগ্নি পুঁজি যুগ। সেদিনকার সাম্রাজ্যবাদী শক্তি আজ আর সৈন্যসামস্ত নিয়ে দেশ দখল করে শাসন ও শোষণ করে না। এখন তারা পুঁজি লগ্নির মাধ্যমে চালায় প্রত্যক্ষ শোষণ ও পরোক্ষ শাসন। বিশ্বায়ন তৃতীয় বিশ্বের জন্য এই শোষণেরই ধারক ও বাহক। তাই বিশ্বায়ন প্রক্রিয়া থেকে তৃতীয় বিশ্বের প্রাপ্তির সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ, অথচ হারাবার ভয় ব্যাপক।

পুঁজিবাদের বিশ্বায়নের বা Globalization এর মোড়কে নব্য সাম্রাজ্যবাদই তাদের ওপর অগাধ রাজত্ব করে যাচ্ছে এবং উন্নত দেশের টিকে থাকতে না পারায় তা দিন দিন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এ পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে না পারলে অনুন্নত দেশগুলোর ভবিষ্যৎ হবে আরো অন্ধকার।

বিশ্বায়নের প্রভাবে অনুন্নত দেশের শিল্প ধ্বংস হতে বাধ্য। কেননা বিদেশী পণ্যের সাথে প্রতিযোগিতায় দেশীয় পণ্য টিকে থাকতে পারবে না। বিশ্বব্যাংকের দেয়া কাঠামোগত সংস্কার নীতি বাস্তাবায়নেও এসব দেশ আরো বেশি সমস্যায় পতিত হবে বলেই অভিজ্ঞ মহলের বিশ্বাস। সুতরাং বলা যায় বিশ্বায়নে অবাধ প্রতিযোগিতায় স্বল্পোন্নত দেশগুলোর অর্থনৈতিক ভবিষ্যৎ অনেকটা অন্ধকারাচ্ছন্ন। উৎপাদিত দ্রব্যের ভোক্তা শ্রেণিতে পরিণত করে চলেছে।

  ফলে অনুন্নত দেশের কলকারখানাগুলো অবাধ প্রতিযোগিতায় সংক্ষেপে বিশ্বায়নের নেতিবাচক সম্ভাবনা সমূহ হলোঃ

  • ১. ইন্টারনেট প্রযুক্তির ফলে অনেক ক্ষেত্রে তথ্যের গোপনীয়তা থাকছে না অর্থাৎ তথ্য চুরি হয়ে যাচ্ছে।
  • ২. সাইবার আক্রমণ বাড়ছে।
  • ৩. ই-কমার্স হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে।
  • ৪. ইন্টারনেটের ফলে সবকিছু সহজলভ্য হওয়ায় যুব সমাজে সামাজিক অবক্ষয়ের সৃষ্টি হচ্ছে। ৫. সবল ও দুর্বলের ব্যবধান বাড়ছে।
  • ৬. ডিজিটাল ডিভাইড দ্রুত বাড়ছে ও অদক্ষরা কর্ম হারাচ্ছে।
  • ৭. বিশ্বায়নের অবাধ প্রতিযোগিতায় স্বল্পোন্নত দেশগুলোর অর্থনৈতিক ভবিষ্যৎ অনেকটা অন্ধকারাচ্ছন্ন।

তো আজ এই পর্যন্তই। 

উপরের আমার এই পোস্টটি লিখতে অনেক নথির এবং ওয়েসাইটের সাহায্য নিতে হয়েছে। যাদের কৃতজ্ঞতা স্বীকার না করলেই নয়। 

সহায়ক,

মোঃ কামরুল হাসান।

1. HSC ict book

2. Wikipedia.com

3. hpe.com

4. history-computer.com

5. civilian 

তো আজ এই পর্যন্তই। আপনাদের জন্যই আমরা নিয়মিত নিত্যনতুন পোস্ট নিয়ে হাঁজির হই। তাই উক্ত পোস্টটি ভালো লাগলে অবশ্যই লাইক দিতে ভুলবেন না। এবং যেকোনো মন্তব্য বা পরামর্শের জন্য কমেন্ট করতে পারেন। পরবর্তীতে নতুন কোনো পোস্ট নিয়ে হাজির হবো ততক্ষণ সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ্য থাকবেন।

ধন্যবাদ

Leave a Reply