আসসালামু আলাইকুম। 

আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালোই আছেন।

প্রতিদিনের মতো আপনাদের সামনে আমি আবারও নতুন একটি পোস্ট নিয়ে হাঁজির হয়েছি। আমরা আপনাদের কথা মাথায় রেখেই নিত্যনতুন পোস্ট নিয়ে আসি। আজকেও ব্যতিক্রম নয়।

আমার এই পোস্ট গুলো পড়লে আপনি কম্পিউটার সম্পর্কে সকল কিছু জানতে পারবেন। কম্পিউটারের অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক বিভিন্ন কার্যক্রম, কম্পিউটার ইন্টারেটের ইতিহাস ও ব্যবহার সম্পর্কে সম্যক ভাবে জানতে পরবেন। তো আর কথা না বাড়িয়ে সরাসরি মূল পোস্টে চলে যায়।

আজকে এই পোস্টের মাধ্যমে আমরা তথ্য ও প্রযুক্তর গ্লোবাল ভিলেজ সম্পর্কে বিস্তারিত সকল কিছু আলোচনা করবো।

গত পোস্টে অর্থাৎ এই পোস্টের প্রথম পর্বে আমরা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সাথে সম্পর্ক যুক্ত বিশ্বগ্রামের ধারণা, বিশ্বগ্রামের ইতিবাচক ব্যবহার ও নেতিবাচক ব্যবহার সাম্পর্কে জেনেছিলাম।

কেউ যদি এই পোস্টের প্রথম এবং দ্বিতীয় পর্বটি দেখে না থাকেন তাহলে এখানে ক্লিক করে প্রথম পর্ব এবং এখানে ক্লিক করে দ্বিতীয় পর্বটি দেখে নিন অথবা নিচে ক্লিক করে পোস্টটি দেখতে পারবেন।

তথ্য ও প্রযুক্তির বিশ্বগ্রামের ধারণা, ইতিবাচক ব্যবহার, নেতিবাচক ব্যবহার। বিস্তারিত পোস্টে। [পর্বঃ ১]

বিশ্বগ্রামের ধারণার সাথে সংশ্লিষ্ট উপাদার সমূহ এবং এর ব্যবহার সম্পর্কে বিস্তারিত পোস্টে। [পর্বঃ ২]

মূল পোস্ট।

ব্যবসা-বাণিজ্য (Business): 

বর্তমানে অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের অর্ডারিং সিস্টেম কম্পিউটারাইজড। কম্পিউটারাইজড সেলস সিস্টেমের দোকান, গুদামঘর এবং প্রধান অফিস সবই কম্পিউটার নেটওয়ার্কের আওতাভুক্ত। ফলে যেকোনো দ্রব্য দোকান হতে বিক্রির সঙ্গে সঙ্গেই তার যাবতীয় হিসাব এবং স্টকের পরিমাণ সঙ্গে সঙ্গে নির্ণয় করা যাচ্ছে খুব সহজেই। কম্পিউটারাইজড মেশিনের মাধ্যমে বিভিন্ন ফ্যাক্টরিতে দ্রব্যাদি প্যাকেজিং ও লেভেলিং-এর কাজ করা যায়। বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে ই-মেইলের মাধ্যমে তথ্য আদান-প্রদান করা হয়ে থাকে। স্টক একচেঞ্জে শেয়ার কেনা-বেচার ক্ষেত্রেও কম্পিউটার ব্যবহৃত হয়। এখন ইন্টারনেটের সাহায্যে অনেক ব্যবসা-বাণিজ্য চলছে। ফলে ই-কর্মাসের জনপ্রিয়তা বাড়ছে। ই-কমার্স হয়ে উঠছে একুশ শতকের ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রধান মাধ্যম। ব্যাংকের সকল কার্যক্রম এখন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ওপর নির্ভরশীল। ICT-এর কল্যাণে শক্তিশালী ডেটাবেজ ব্যবহার করে অনলাইন ব্যাংকিং ও মোবাইল ব্যাংকিং সুবিধা প্রদান করা সম্ভব হচ্ছে, যার ফলে ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট হোল্ডার যেকোনো ব্রাঞ্চে বসে টাকা লেনদেন করতে পারছে। এমনকি মোবাইল ব্যাংকিং-এর মাধ্যমে ঘরে বসেও ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা ও ব্যবহার করা যাচ্ছে। ICT পণ্য MICR-এর ব্যবহার ব্যাংকে চেক সংক্রান্ত জটিলতা একদম কমিয়ে এনেছে। ATM বুথ থেকে টাকা উত্তোলনও ICT-এর ফসল। ফলে ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার (EFT) ব্যবস্থা এখন হাতের মুঠোয়। শেয়ার মার্কেটের সাথেও ইন্টারনেট সংযুক্ত হয়ে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রেখে ব্যবসা পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির কল্যাণে।

চিত্রঃ ব্যবসা-বাণিজ্যে তথ্যপ্রযুক্তি

ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে তথ্য প্রযুক্তির প্রয়োজন সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হলো:

  1. ♦ তথ্য প্রযুক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে গ্লোবালাইজেশন অর্থাৎ সারা বিশ্বব্যাপি ব্যবসার পরিধি বাড়ানো যায়।
  2. • ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার অপচয় রোধ করে।
  3. ★ তথ্য প্রযুক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে যে কোন কাজে আগের চেয়ে কম সময় লাগে অর্থাৎ এর মাধ্যমে সময়সাশ্রয়ী ব্যবস্থা তৈরি করা যায়।
  4. • তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারে যেকোনো তথ্যের প্রাপ্যতা সহরা হয় বিশেষ করে ইন্টারনেটের মধ্যে প্রযুক্তির কল্যাণে এখন বিশ্বটাকেই পাওয়া যাচ্ছে হতে মুঠোয়। ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ইন্টারনেটের মাধ্যমে তাদের সম্পর্কিত তথ্য জানতে পারে।
  5. তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহারের তাৎক্ষণিক যোগাযোগ সম্ভব ফোন, ইন্টারনেট, ইমেইল, এসএমএস, এমএমএস প্রভৃতি এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ • তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার, প্রশিক্ষণ ও সংশ্লিষ্ট কর্মকান্ডের গতিকে ত্বরান্বিত করে। তথ্য প্রযুক্তির ব্যাপক ব্যবহার ও চর্চার ফলে ক্রমান্বয়ে সর্বক্ষেত্রে দক্ষতা বৃদ্ধি পায়।
  6. ব্যবসায়-বাণিজ্যে লাভজনক প্রক্রিয়া সৃষ্টি করে।
  7. • ই-কমাসের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপি পণ্যের বাজার সৃষ্টি করা যায়।
  8. • কম খরচে জনপ্রিয় বাণিজ্যিক ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপন দিয়ে পণ্যের বিপণন বাড়ানো যায়।
  9. • গ্রাহকরা ঘরে বসেই ইন্টারনেটের মাধ্যমে পছন্দের এবং প্রয়োজনীয় জিনিসের অর্ডার দিতে পারে।
  10. শিল্প প্রতিষ্ঠানে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার মনুষ্যশক্তির অপচয় কমায় তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার প্রতিষ্ঠানগুলোর বিভিন্ন ধরনের ব্যয়কে সংকুচিত করে আর্থিক সাম্রায় ঘটিয়ে থাকে।
  11. মানবসম্পদের উন্নয়ন ঘটায়।
  12. নতুন নতুন চাকরির ক্ষেত্র তৈরি করে। যেমন- সিস্টেম এনালিস্ট, প্রোগ্রামার, ওয়েব ডেভলপার ইত্যাদি।
  13. চাকুরি প্রার্থীরা এখন ঘরে বসেই অনলাইনে বিশ্বের বিভিন্ন নামী দামী প্রতিষ্ঠানে যোগাযোগ করতে পারে।
  14. তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর ই-গভর্নেস চালুর মাধ্যমে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দপ্তর থেকে তথ্য সহায়তা পাওয়া যায়। ফলে দুর্নীতি কমে এবং ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানসমূহ লাভবান হয়ে থাকে।
  15. উন্নত গ্রাহক সেবা প্রদান করা যায়। যেমন- কল স্টোরের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক সেবা দেয়া যায়। 
  16. তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের কারনে প্রতিষ্ঠানে বসেই মানি ট্রান্সজেকশন করা যায়, বিল প্রদান করা যায়।
  17.  • ভিডিও কনফারেন্সির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের দূরবর্তী স্থানের নির্বাহীদের সাথে মিটিং করা যায়। ফলে সময় ও অর্থ বেঁচে যায়।
  18. • প্রতিষ্ঠানের প্রোডাক্টের চাহিদা বুঝা যায় এবং দ্রুত সরবরাহের ব্যবহার করা যায়।

 ইলেক্ট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার (Electronic Fund Transfer):

 ইলেকট্রনিক উপায়ে অর্থ স্থানান্তরের পদ্ধতিকে ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার বলা হয়। এ প্রক্রিয়ায় ইলেক্ট্রনিক উপায়ে ব্যাংকের বিভিন্ন শাখার হিসাবের মধ্যে প্রকৃত অর্থের লেন-দেন না ঘটিয়ে শুধুমাত্র হিসাবের মাধ্যমে অর্থের পরিমাণের সমন্বয় সাধন ও আধুনিকরণ করা হয়। লেনদেন কার্যে সুবিধা ও নিরাপত্তার নিমিতে ব্যাংকে অটোমেটিক টেলার মেশিন (ATM) ব্যবহার করা হয়। গ্রাহক ব্যাংকের লেন-দেনের জন্য চুম্বকালির রেখা বিশিষ্ট ব্যাংক কার্ড বা এটিএম কার্ড ব্যবহার করে থাকেন। এটিএম কার্ড উক্ত মেশিনে ঢুকিয়ে এর ছোট শ্রী-প্যাডের মাধ্যমে পাসওয়ার্ড ও প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়ে অর্থ জমা বা উত্তোলন করা হয়। ব্যবহারকারীর সুবিধার্থে এতে ক্ষুদ্রাকার মনিটর ও প্রিন্টার ব্যবহার করা হয়। এ ব্যবস্থার ফলে কোনো ব্যক্তি, এমনকি নিরাপত্তা ঝুঁকি ছাড়াই দিন রাতে যেকোনো সময় অর্থ স্থানান্তর বা লেন-দেন কার্য সম্পাদন করতে পারে। বর্তমান বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে ব্যাংকের বিভিন্ন শাখার অটোমেটিক টেলার মেশিনগুলোকে যোগাযোগ নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ব্যাংকের কেন্দ্রিয় কম্পিউটারের সাথে সংযুক্ত করা হয়। ফলে ব্যাংকের ফান্ড ট্রান্সফারের ক্ষেত্রে সুবিধা হয়। বর্তমানে বাংলাদেশেও অটোমেটিক ট্রেলার মেশিনের সাহায্যে ব্যাংকে সার্বক্ষণিকভাবে গ্রাহকদের ব্যাংকিং সেবা প্রদান করা সম্ভব হচ্ছে।

ই-কমার্স: 

ইলেকট্রনিক কমার্সকে সংক্ষেপে ই-কমার্স বলা হয়। আধুনিক ডেটা প্রসেসিং এবং কম্পিউটার নেটওয়ার্ক বিশেষত ইন্টারনেটের মাধ্যমে ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে পণ্য বা সেবা বিপণন, বিক্রয়, সরবরাহ ব্যবসা সংক্রান্ত লেনদেন ইত্যাদি কাজ করাই হচ্ছে ই-কমার্স। এটি একটি আধুনিক ব্যবসায়িক পদ্ধতি যেখানে পণ্যের কেনা-বেচা অনলাইন পদ্ধতিতে হয়ে থাকে। ই-কমার্স সাইটে বিভিন্ন পণ্যের বর্ণনা ও দাম দেয়া থাকে। গ্রাহকগণ উক্ত সাইটে প্রয়োজন অনুযায়ী চাহিদাপত্র (Purchase Order) প্রদান করে থাকে এবং ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে মূল্য পরিশোধের ব্যবস্থা করে। অর্থ প্রাপ্তি নিশ্চিত হওয়ার পর বিক্রেতা চাহিদাপত্র অনুযায়ী পণ্য-সামগ্রী ক্রেতার নিকট পৌঁছানোর জন্য নিজস্ব ব্যবস্থাপনা বা অন্য কোনো পরিবহন সংস্থার শরণাপন্ন হয় এবং নির্দিষ্ট সময়ে মালামাল পৌঁছে দেয়। ই-কমার্স করা যায় এ ধরনের অভি পরিচিত কিছু ওয়েবসাইট হলো www.bikroy.com, www.ekhanay.com, www.olx.com.

সংবাদমাধ্যম (News): 

বর্তমানে সংবাদপত্র ইন্টারনেটের মাধ্যমে প্রকাশিত হচ্ছে। কম্পিউটার নেটওয়ার্ক তৈরি করে একটি দেশের প্রতিটি শহর থেকে সংবাদপত্র প্রকাশ করা হচ্ছে। মোবাইল ও টেলিফোনের মাধ্যমে সহজেই বিভিন্ন স্থান থেকে সংবাদ সংগ্রহ করে পত্রিকায় ছাপানো যাচ্ছে এবং সেই সাথে টিভি ও রেডিওতে সম্প্রচার করা হচ্ছে। ইনফরমেশন ও কমিউনিকেশন ব্যবস্থা জোরালো হওয়ার কারণে টিভিতে সরাসরি অনুষ্ঠান সম্প্রচার করা সম্ভব হচ্ছে। ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিভিন্ন ব্লগ বা সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে (ফেসবুক, গুগল প্লাস, ইউটিউব ইত্যাদি) অনেক সংবাদ প্রকাশ পাচ্ছে।

বুলেটিন বোর্ড (Bulletin Board): 

বুলেটিন বোর্ড হলো ইন্টারনেটে বিজ্ঞাপন প্রদানের জন্য ব্যবহৃত ইলেকট্রনিক ব্যবস্থা যা টেলিফোন লাইন এবং উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন কম্পিউটারের সমন্বয়ে গঠিত। বুলেটিন বোর্ডকে সচল রাখার জন্য সার্বক্ষণিকভাবে এর জন্য ব্যবহৃত সাভারকে ইন্টারনেট লাইনের সংগে সংযুক্ত রাখতে হয়। এ ব্যবস্থার সাথে অপেক্ষাকৃত কম ক্ষমতাসম্পন্ন কম্পিউটার সংযুক্ত থাকে যা সার্বক্ষণিকভাবে তথ্য সরবরাহের জন্য প্রস্তুত থাকে। কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বুলেটিন বোর্ডে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংরক্ষিত থাকে। উপযুক্ত সংযোগের মাধ্যমে সেখান থেকে প্রয়োজন মতো তথ্য সংগ্রহ করা যায় এবং নতুন নতুন তথ্য সংযোজন করা যায়। বুলেটিন বোর্ড অনেকটা স্কুল-কলেজের নোটিশ বোর্ডের মতো। বর্তমানে বিভিন্ন ওয়েব পেজের জন্য ব্যবহৃত World Wide Web (WWW) হচ্ছে বুলেটিন বোর্ডের উদারহরণ যা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের ওয়েব পেজগুলোকে সংরক্ষণ এবং প্রদর্শন করার জন্য ব্যবহৃত হয়। বুলেটিন বোর্ড ব্যবহার করে অন্য কম্পিউটারের সাথে যোগাযোগ রক্ষা, তথ্য সরবরাহ ও সংরক্ষণ করার জন্য বিশেষ সফটওয়্যারের প্রয়োজন হয়। ব্যবহারকারীর সংখ্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রত্যেকের আলাদা আলাদা পাসওয়ার্ড দেয়া থাকে এবং বুলেটিন বোর্ডে বিজ্ঞাপন দেয়ার জন্য বাৎসরিক নির্ধারিত হারে ফি প্রদান করতে হয়।

বিনোদন ও সামাজিক যোগাযোগ (Entertainment and Social Communication):

 টেলিভিশন, সিনেমা, ক্যাসেট প্লেয়ার ইত্যাদির বিকল্প হিসেবে কম্পিউটারের ব্যবহার লক্ষ করা যায়। ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা বাড়িতে কম্পিউটারে বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলা উপভোগ করতে পারে। সামাজিক যোগাযোগের জন্য ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের সাইট যথা- ফেসবুক, মাইস্পেস, ইউটিউব, অরকুট ইত্যাদি ব্যবহার করতে পারে। এসব সাইটের মাধ্যমে বন্ধুত্ব তৈরির পাশাপাশি ছবি, ভিডিও ইত্যাদি আপলোড-ডাউনলোড করে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করা যায়। আজকাল ইন্টারনেটে টিভি ও রেডিও চালু হওয়ায় স্ট্রিমিং অডিও-ভিডিও প্রযুক্তির মাধ্যমে দূর-দূরান্তে বসেও টিভি ছাড়াই কম্পিউটারে টিভি দেখা যায়। মোবাইল ফোন, কম্পিউটার ইত্যাদি ব্যবহার করে চ্যাটিং করে সরাসরি নিজের আবেগ, অনুভূতি বিনিময় করা যায়। অনেক সময় ইন্টারনেট থেকে নিজের পছন্দমতো সিনেমা ডাউনলোড করে দেখা যায়। স্কাইপির মাধ্যমে সহজেই কম্পিউটারের মাধ্যমে দূর-দূরান্তে অবস্থিত ঘনিষ্ঠ স্বজনদের সাথে ভিডিওসহ যোগাযোগ করতে পারছে।

চিত্র; বিনোদনে কম্পিউটার

সাংস্কৃতিক বিনিময় (Cultural Exchange):

 তথ্য প্রযুক্তির কল্যাণে বিশ্ব আমাদের হাতের মুঠোয়। সারা বিশ্বের টিভি অনুষ্ঠান আজ ঘরে বসেই দেখা যায়। বিভিন্ন দেশের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দেখে সে দেশের সংস্কৃতি সম্পর্কে সহজেই ধারণা করা সম্ভব হয়। ইন্টারনেটের মাধ্যমেও আমরা বিভিন্নভাবে সাংস্কৃতিক বিনিময় করতে পারি। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির কল্যাণে আমরা প্রাচীন মিসরীয়, ব্যাবিলনীয় সভ্যতা থেকে শুরু করে গ্রিক, রোমান, ভারতীয়, চৈনিক,  কিংবা আমেরিকার মায়া সভ্যতা সম্পর্কে জানতে পারছি। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির কল্যাণে দ্রুত এক দেশের সংস্কৃতি অন্য দেশে অনুকরণ করছে। সাংস্কৃতিক বিনিময়ে ইলেকট্রনিক প্রকাশনার মাধ্যম হিসেবে অডিও-ভিডিও, সিডি, টিউটোরিয়াল, ওয়েবসাইট ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

আধুনিক যুগের সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে গণমাধ্যমকে কেন্দ্র করে। বই, সংবাদপত্র, রেডিও, টেলিভিশন, চলচ্চিত্র বিনির্মাণ করছে আধুনিককালের সংস্কৃতি সাংস্কৃতিক বিশ্বায়নের উৎসে রয়েছে ভোগ্যপণ্য, সংস্কৃতিশিল্প এবং গণমাধ্যমের সাম্রাজ্য। স্টুয়ার্ট হল তার Globalization and Ethnicity’ বইয়ে উল্লেখ করেছেন, আধুনিক প্রযুক্তির ভিত্তিতে গড়ে ওঠা গণসংস্কৃতি ভাষাগত ব্যবধানকে অতিক্রম করে একটি সাধারণ বাচন তৈরি করতে সমর্থ হয়েছে। এখন সংস্কৃতিশিল্প এবং গণমাধ্যমে যে ইমেজ তৈরি করা যায় তা সহজে এবং তাৎক্ষণিকভাবে লক্ষ লক্ষ মানুষের কাছে পৌঁছে যায়।

সাংস্কৃতিক বিশ্বায়নের সাথে দুটি প্রক্রিয়া যুক্ত 

এক, বিশ্বগণমাধ্যম কেন্দ্রিভূত হয়েছে অল্প কিছু ব্যক্তি এবং সংস্থার নিয়ন্ত্রণে। বিশ্বের সাংস্কৃতিক মানদণ্ড অর্থাৎ সারা বিশ্বের মানুষ রেডিও, টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রে কী শুনবে এবং কী দেখবে তা নির্ধারণ করে দিচ্ছে এই প্রতিষ্ঠানগুলো। দুই, এই বিশাল সংস্থাগুলোর সামনে দর্শক ও শ্রোতা শক্তিহীন ও নির্বাক। ষাটের দশকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সময় শিল্পতত্ত্ব অভিন্ন স্বার্থে গণমাধ্যমকে বেছে নিয়েছিল তাদের হাতিয়ার হিসেবে। একে গণমাধ্যম বিশেষজ্ঞ হাবার্ট শিলার ‘গণমাধ্যমে সাম্রাজ্যবাদ হিসেবে বর্ণনা করেছিল। উত্তর-ঔপনিবেশিক যুগে সাম্রাজ্যবাদের বিস্তার ঘটে সাংস্কৃতিক অঙ্গনে। গণমাধ্যম হয়ে পড়ে সাম্রাজ্যবাদের প্রধান হাতিয়ার। তবে সাংস্কৃতিক বিশ্বায়নের পাশাপাশি লাতিন আমেরিকা বা ভারতের মত কোথাও কোথাও স্থানীয় সংস্কৃতি শক্তিশালী হচ্ছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে কেউ কেউ মনে করছেন স্থানীয় সংস্কৃতিকে ধ্বংস করে একক সাধারণ বিশ্বসংস্কৃতি গড়ে উঠার সম্ভাবনা কম।

তো আজ এই পর্যন্তই শেষ করছি, এইটা দ্বিতীয় পর্ব ছিলো। আশা করছি এই পোস্টের খুব শীঘ্রই তৃতীয় অর্থাৎ শেষ পর্ব নিয়ে আসবো।

উপরের আমার এই পোস্টটি লিখতে অনেক নথির এবং ওয়েসাইটের সাহায্য নিতে হয়েছে। যাদের কৃতজ্ঞতা স্বীকার না করলেই নয়। 

সহায়ক,

মোঃ কামরুল হাসান।

1. HSC ict book

2. Wikipedia.com

3. hpe.com

4. history-computer.com

5. civilian 

তো আজ এই পর্যন্তই। আপনাদের জন্যই আমরা নিয়মিত নিত্যনতুন পোস্ট নিয়ে হাঁজির হই।

তাই উক্ত পোস্টটি ভালো লাগলে অবশ্যই লাইক দিতে ভুলবেন না। এবং যেকোনো মন্তব্য বা পরামর্শের জন্য কমেন্ট করতে পারেন। পরবর্তীতে নতুন কোনো পোস্ট নিয়ে হাজির হবো ততক্ষণ সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ্য থাকবেন।

ধন্যবাদ

Leave a Reply