বাংলাদেশ ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর অধীনস্থ ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমির উদ্যোগে ফ্রি কম্পিউটার প্রশিক্ষণ এর আয়োজন করা হয়েছে। আসলে এই একাডেমিটি মূলত গড়ে তোলা হয়েছিল শুধুমাত্র ইমাম ও মুয়াজ্জিনদের প্রশিক্ষণ প্রদানের উদ্দেশ্যে। কিন্তু বর্তমান এই ডিজিটাল যুগে এসে এই প্রতিষ্ঠানটি ডিজিটালের সাথে তাল মিলিয়ে হাফেজ, ইমাম, মাদ্রাসা ছাত্র ও বেকার যুবকদের আইটি সেক্টরের সাথে পরিচয় ও দক্ষ করে তুলতে এবং বেকারত্ব দূর করার লক্ষ্যে কম্পিউটার কোর্স সহ আরো বেশকিছু কোর্সে প্রশিক্ষণ প্রদান করে থাকে তাও আবার ফ্রিতে। যা মোটামুটি প্রতি বছরেই করে থাকে। মূলত আজকে আমরা এই বিষয় নিয়েই আলোচনা করব।

হাফেজ, ইমাম, মাদ্রাসা ছাত্র ও বেকার যুবকদের ফি ছাড়া কম্পিউটার কোর্সে ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ

গত ২১/০৭/২০২২ইং তারিখে ইমাম প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের পরিচালক জনাব মোঃ আনিসুজ্জামান সিকদার স্বাক্ষরিত একটি বিজ্ঞপ্তি গত ২৫শে জুলাই দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকায় প্রকাশ হয়। যাতে উল্লেখ করা ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রথম কোর্স হিসেবে ২ মাস ব্যাপী ফ্রি কম্পিউটার প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে এবং প্রশিক্ষণ শেষে সরকারিভাবে সনদপত্র বা সার্টিফিকেট প্রদান করা হবে। এখন আপনাদের মধ্যে যারা এই কম্পিউটার বিষয়ে ফ্রিতে কোর্স করতে আগ্রহী তারা এটির বিস্তারিত জানতে নিচের দিকে পড়া চালিয়ে যান।

প্রশিক্ষণের স্থান এবং কেন্দ্রঃ

প্রশিক্ষণ আপনাকে নির্দিষ্ট কিছু স্থান থেকে গ্রহণ করতে হবে। স্থানগুলি হচ্ছে ঢাকা, চট্টগ্রাম, বরিশাল, খুলনা, রাজশাহী, সিলেট ও দিনাজপুর। এইসব স্থানের ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমিগুলোতে মূলত কম্পিউটার বিষয়টা প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। এখন আপনি আপনার সুবিধামত নিকটস্থ যেকোনো কেন্দ্রে প্রশিক্ষণ গ্রহণের জন্য আবেদন করতে পারেন।

প্রশিক্ষণের বিষয়সমূহঃ

কম্পিউটারের উপর এখানে কিছু নির্ধারিত বিষয় নিয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। বিষয়গুলি হচ্ছে বেসিক কম্পিউটার, গ্রাফিক্স ডিজাইন, অ্যাডোবি ফটোশট, ইলোস্ট্রেটর, ফ্রিল্যান্সিং, মার্কেটপ্যালেস, এবং কনসালটেন্সি।

আবেদনের প্রক্রিয়াঃ

আপনাকে উক্ত ফ্রি কম্পিউটার কোর্সের জন্য স্বহস্তে বা নিজ হাতে লিখিত একটি আবেদন বা দরখাস্ত লিখতে হবে। তারপর তা আপনি উপরোল্লিখিত যে কেন্দ্রে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে চান সে কেন্দ্রে গিয়ে জমা দিয়ে আসতে হবে। উল্লেখ্য আপনি হয়তো বলতে পারেন যে আমি কোন ফরমেটে আবেদন কপিটি লিখবো? আসলে এইরকম কোনো দিকনির্দেশনা কতৃপক্ষের কাছ থেকে দেওয়া হয়নি। তাই আপনি সাধারণ যেকোন আবদনের ফরমেট ফলো করে লিখতে পারেন। আমি এখানে ভর্তির আবেদনের একটা লিখিত ফরমেট দিচ্ছি এখানে আপনি শুধু আপনার যা যা পরিবর্তন করার প্রয়োজন পড়ে সেগুলো পরিবর্তন করে নিবেন। অথবা সরাসরি আপনার নিকটস্থ ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমি এর অফিসে গিয়ে যোগাযোগ করে এই বিষয়ে জেনে নিতে পারেন।

আমি আবেদনের জন্য যে দরখাস্তের নমুনাটি দিয়েছি সেটিতে আপনাকে যা যা পরিবর্তন করতে হবে তা হলো প্রথমত আপনি যে তারিখে আবেদনটি লিখবেন সেই দিনের তারিখ দিবেন। আপনি যে কেন্দ্রে আবেদন করবেন সে কেন্দ্রে কি পরিচালক আছেন নাকি উপ-পরিচালক আছেন তা আপনাকে জানতে হবে এবং তা স্ক্রিনশটে চিহ্নিত (১) অংশে লিখতে হবে। তারপর আপনি কোন কেন্দ্রে করবেন সে কেন্দ্রের নাম স্ক্রিনশটের চিহ্নিত (২) অংশে লিখবেন। তারপর আপনার নাম স্ক্রিনশটের চিহ্নিত (৩) অংশে লিখবেন। তারপর আপনার শিক্ষাবর্ষটি লিখে দিবেন স্ক্রিনশটের চিহ্নিত (৪) অংশে। তারপর স্ক্রিনশটে চিহ্নিত (৫) অংশে আপনার নামটি পুনরায় লিখবেন। তারপর আপনাকে উপজেলা এবং জেলার নাম স্ক্রিনশটের চিহ্নিত (৬) অংশে লিখবেন। উল্লেখ্য এর এখানে আপনার যদি কম্পিউটার থাকে এবং বেসিক ব্যবহার জেনে থাকেন তাহলে এই বাক্যটি রাখবেন অন্যথায় মুছে দিবেন। আর সংযুক্তির ব্যাপারটি আপনি যা যা দরখাস্তের সাথে জমা দিবেন সেগুলো সংযুক্তির এখানে লিখবেন। মনে রাখবেন আমি আপনাকে আবারও বলছি এই দরখাস্তটি কিন্তু হাতে লিখতে হবে কম্পিউটার কম্পোজ না।

আবেদনের যোগ্যতাঃ

  • নূন্যতম আপনাকে দাখিল পাশ বা সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। আর আপনি যদি কোরআনে হাফেজ হয়ে থাকেন তাহলে সেক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতা শিথিলযোগ্য হিসেবে বিবেচিত হবে।
  • আপনার অবশ্যই কম্পিউটার পরিচালনার বেসিক জ্ঞান থাকতে হবে। আর যদি আপনার পার্সোনাল কম্পিউটার থেকে থাকে তাহলে আপনাকে বাছাইতে অগ্রাধীকার দেওয়া হবে।

প্রয়োজনীয় বিষয়সমূহ ও কাগজপত্রঃ

  • আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র এবং শিক্ষাগত যোগ্যতার সকল সনদপত্র বা সার্টিফিকেটের সত্যায়িত করা ফটোকপি লাগবে।
  • আপনি যদি ছাত্র হয়ে থাকেন তাহলে আপনার প্রতিষ্ঠানের প্রধানের কাছ থেকে এবং আপনি যদি একজন ইমাম হয়ে থাকেন তাহলে পৌরসভা/ইউনিয়ন অথবা কাউন্সিলর/মেম্বার এর কাছ থেকে ছাত্র বা ইমামতি করার প্রমাণ স্বরূপ একটি প্রত্যয়নপত্রের সত্যায়িত ফটোকপি লাগবে।
  • আপনার নিজের পাসপোর্ট এবং স্ট্যাম্প সাইজের ০১ (এক) কপি সত্যায়িত ছবি লাগবে।

ভর্তির সময় করণীয়ঃ

  • বাছাইপর্বে মনোনিতে হলে আপনাকে নিবন্ধন ফি হিসেবে ৫০০ টাকা দিতে হবে।
  • ভর্তির সময় ১০০০/- (এক হাজার) টাকা জামানত বাবদ লাগবে। যা পরবর্তীতে কোর্স যদি সফলভাবে সম্পন্ন করতে পারেন তখন আপনার কোর্সের সনদপত্র বা সার্টিফিকেটের সাথে ফিরিয়ে দেওয়া হবে।

সুবিধাসমূহঃ

আপনি যদি সফলভাবে কোর্স সম্পন্ন করতে পারেন তাহলে কোর্স শেষে আপনাকে সরকারিভাবে একটি সনদপত্র বা সার্টিফিকেট প্রদান করা হবে।

প্রশিক্ষণের মেয়াদকালঃ

আগস্ট মাসের ২১/০৮/২০২২ইং রোজঃ রবিবার থেকে শুরু হয়ে অক্টোবর মাসের ১৯/১০/২০২২ইং রোজঃ বুধবার অর্থাৎ ০২ (দুই) মাস পর্যন্ত চলবে।

আবেদনের তারিখঃ

বিজ্ঞপ্তির তারিখ থেকে শুরু করে আগামী ১৬/০৮/২০২২ইং রোজঃ মঙ্গলবার পর্যন্ত আবেদন করতে পারবেন। আর এর পরবর্তী দিন অর্থাৎ ১৭/০৮/২০২২ইং রোজঃ বুধবার সকল আবেদনকারীর দরখাস্ত যাচাই-বাছাই করা হবে।

তো এই ছিলো আমার আজকের টপিকের মূল বিষয়বস্তু। এখন আপনি যদি আবেদন করতে আগ্রহী হয়ে থাকেন আর উপরের শর্তাবলীর আওতায় পড়েন তাহলে দেরি না করে আবেদন করে ফেলুন।

আপনাদের সুবিধার্থে আমি আমার টিপস এন্ড ট্রিকসগুলি ভিডিও আকারে শেয়ার করার জন্য একটি ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করেছি। আশা করি চ্যানেলটি Subscribe করবেন।

সৌজন্যে : বাংলাদেশের জনপ্রিয় এবং বর্তমান সময়ের বাংলা ভাষায় সকল গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ক টিউটোরিয়াল সাইট – www.TutorialBD71.blogspot.com নিত্যনতুন বিভিন্ন বিষয়ে টিউটোরিয়াল পেতে সাইটটিতে সবসময় ভিজিট করুন।

Leave a Reply