fbookফেসবুক ব্যবহারকারীদের বিপদে
ফেলতে নানা রকম কৌশল নিয়ে
এগিয়ে যাচ্ছে সাইবার দুর্বৃত্তরা।
ফেসবুকে তারা এমন সব পোস্ট করে যা
দেখে প্রলুব্ধ হয়ে অনেকেই ক্লিক
করে বসেন তাতে। প্রযুক্তি সম্পর্কে
ভালো জানেন এমন অনেকেও ফেসবুক
স্ক্যাম বা সাইবার দুর্বৃত্তদের পাতা
ফাঁদে পা দিয়ে তাঁদের
কম্পিউটারে অনাকাঙ্ক্ষিত
সফটওয়্যার ডাউনলোড করে ফেলেন।
টেলিগ্রাফ অনলাইনের এক খবরে এ
তথ্য জানানো হয়েছে।
রোমানিয়ার সাইবার নিরাপত্তা
সেবাদাতাপ্রতিষ্ঠান
বিটডিফেন্ডার সম্প্রতি ফেসবুকের
জনপ্রিয় স্ক্যামগুলো নিয়ে একটি
গবেষণা করেছে এবং শীর্ষ পাঁচটি
স্ক্যাম সম্পর্কে তথ্য প্রকাশ করেছে। গত
দুই বছর ধরে এই স্ক্যামগুলো ব্যবহার করে
আসছে সাইবার দুর্বৃত্তরা।
বিটডিফেন্ডারের গবেষকেরা
জানিয়েছেন, স্ক্যামগুলো অনেক
পুরোনো হলেও প্রচলিত এই
স্ক্যামগুলোতে ক্লিক করে অনেকেই
তাঁদের ব্যক্তিগত তথ্য চুরি ও
কম্পিউটারে ম্যালওয়্যারের
আক্রমণের মতো সমস্যার মুখে
পড়েছেন।
প্রোফাইল কে দেখছে?
ফেসবুকের প্রোফাইল কে কে
দেখছেন তা জানার আগ্রহ থাকে
অনেকেরই। আর মানুষের এই আগ্রহ বা
কৌতূহলকে কাজে লাগায় সাইবার
দুর্বৃত্তরা। এ কাজে তারা যে
স্ক্যামটি ব্যবহার করে তার নাম ‘গেস
হু ভিউড ইওর প্রোফাইল?’ ফেসবুকে
জনপ্রিয় স্ক্যামগুলোর মধ্যে এই
পুরোনো স্ক্যামটিই এখনো শীর্ষে
রয়েছে। এই স্ক্যামটি জনপ্রিয় স্ক্যাম
হিসেবে ৪৫.৫০ শতাংশ দখল করে
রেখেছে। এ ক্ষেত্রে একটি বিষয়
মাথায় রাখতে হবে আর তা
হচ্ছেফেসবুক ব্যবহারকারীদের
প্রোফাইল কে দেখছে সেই তথ্য
ফেসবুক সরবরাহ করে না বা অন্য
কোনো অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমেও

তা দেখা সম্ভব নয়।
ফেসবুকের ডিজলাইক বাটন
বিটডিফেন্ডারের তালিকা
অনুযায়ী জনপ্রিয় স্ক্যাম হিসেবে
২৯.৩৫ শতাংশ দখল করে রেখেছে
ফেসবুকের বিভিন্ন ফিচার বিষয়ক
স্ক্যামগুলো। ফেসবুকে নতুন কোনো
বাটন এসেছে কিংবা ফেসবুকের নতুন
কোনো ফিচারের নামে লিংক
পোস্ট করে দুর্বৃত্তরা যার মাধ্যমে
ব্যবহারকারীরমধ্যে তা দেখার
কৌতূহল তৈরি হয়। এরপর সেই লিংকে
ক্লিক করে বসলেই তা থেকে
ম্যালওয়্যার ছড়াতে পারে। ফেসবুকে
ডিজলাইক বাটন কিংবা কোনো
প্রোফাইল পেজ তৈরির সুবিধা
দেওয়ার মতো লিংকে তাই ক্লিক
করা থেকে সাবধান থাকা উচিত।
উপহারের লোভ
ডিজনিল্যান্ড ভ্রমণের সুযোগ
কিংবা গুরুত্বপূর্ণ কোনো খেলার
টিকিটের লোভ দেখিয়ে ফেসবুকে
বিভিন্ন লিংক পোস্ট করা হয়। এ
ধরনের লিংকে ক্লিক করা হলে তা
থেকে ম্যালওয়্যার আক্রমণের শিকার
হওয়ার আশঙ্কা থাকে। গবেষকদের
পরামর্শ হচ্ছে, বিনা মূল্যে ফেসবুকের
টি-শার্ট বা অন্য কোনো উপহার
সামগ্রী দেওয়ার লোভ দেখিয়ে
আপনাকে কোনো লিংকে ক্লিক
করতে বলা হলে তা থেকে বিরত
থাকবেন। জনপ্রিয় স্ক্যাম হিসেবে
ফেসবুকে এ ধরনের উপহারসামগ্রী
দেওয়ার স্ক্যামগুলো ১৬.৫১ শতাংশ
দখল করে রেখেছে।
রিয়ান্না সেক্স টেপ
ফেসবুকে বিভিন্ন তারকাকে নিয়ে
স্ক্যাম রয়েছে। এ ধরনের স্ক্যাম
ফেসবুকে ৭.৫৩ শতাংশ জনপ্রিয়।
মাইলি সাইরাস, কিম কারদাশিয়ান
কিংবা রিয়ান্নাকে নিয়ে
ফেসবুকে অসংখ্য স্ক্যাম রয়েছে। নতুন
ও পুরোনো অনেক স্ক্যাম লিংক
আপনাকে বোকা বানাতে পারে।
মনে রাখবেন, ফেসবুকে রিয়ান্নার
সেক্স ভিডিও নিয়ে যত লিংক
পাবেন সব ভুয়া। তাইএতে ক্লিক
করবেন না।
ফেসবুকে তারকাদের যৌন ভিডিওর
আড়ালে
নির্যাতনের ভিডিও
ফেসবুকে কোনো শিশুকে নির্যাতন,
পাশবিকতা, মাথা কেটে ফেলা
কিংবা কোনো অদ্ভুত প্রাণীর
ভিডিও লিংক পোস্ট করে
ব্যবহারকারীকে বিরক্ত ও তাতে
ক্লিক করার জন্য প্রলুব্ধ করা চেষ্টা
করে দুর্বৃত্তরা। এ ধরনের স্ক্যাম ০.৯৩
শতাংশ জনপ্রিয়।
বিটডিফেন্ডারের এই তালিকার
বাইরে আরও বেশ কয়েকটি স্ক্যাম
আপনাদের বোকা বানাতে পারে।
সেগুলোর মধ্যে রয়েছে প্রোফাইল
দেখার পরিসংখ্যান, ফেসবুকের থিম
পরিবর্তনের মতো কিছু স্ক্যাম।
চাই সাবধানতা
বিটডিফেন্ডারের প্রধান
নিরাপত্তা পরিকল্পক ক্যাটালিন
কসোই জানিয়েছেন, ফেসবুক
নেটওয়ার্কে এ ধরনের স্ক্যাম ছড়িয়ে
পড়া প্রতিরোধ করতে সাধ্যমতো
চেষ্টা করে যাচ্ছে। ফেসবুকের
চেষ্টার পাশাপাশি সব ফেসবুক
ব্যবহারকারীকেই তাঁদের নিজ
থেকে সাবধান হতে হবে। এ
ধরনেরসন্দেহজনক লিংকে ক্লিক করা
বা ভিডিও দেখার ক্ষেত্রে সচেতন
থাকতে হবে।
ফেসবুক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সাইবার
দুর্বৃত্তদের দৌরাত্ম্যে এ ধরনের
স্ক্যাম পুরোপুরি সরিয়ে ফেলা সম্ভব
হয় না। ব্যবহারকারীদের সচেতনতা ও
প্রচেষ্টা থাকা দরকার। ফেসবুক
থেকে শুরু করে সাধারণ গণমাধ্যমেও
ব্যবহারকারীদের এই বিষয়ে শিক্ষা
দেওয়া প্রয়োজন। এ ছাড়া বিভিন্ন
প্রতিষ্ঠান নিজস্ব কর্মীদের উন্নত
নিরাপত্তা অভ্যাস গড়ে তুলতে এ
বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করতে
পারে।

 

ফেসবুকে আমি…

One thought on "ফেসবুক ব্যবহারকারীদের বিপদে ফেলতে ৫টি কৌশল!"

Leave a Reply