بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহ্‌র নামে শুরু করছি
সংকলকঃ আব্দুল্লাহ্ মাহমুদ (হাফিজাহুল্লাহ্)

০১. পরিপূর্ণভাবে ওযু করা। রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “যে-ব্যক্তি পরিপূর্ণভাবে ওযু করে, তার পূর্বের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়। ফলে তার সালত এবং মাসজিদে গমন, নফল হিসেবে বিবেচিত হয়।” (সহীহ মুসলিম, হা. ২২৯)

০২. ওযু-পরবর্তী দুই রাকা‘আত সালাত। রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “যে-ব্যক্তি অতি উত্তমভাবে ওযু করে এমনভাবে দুই রাকা‘আত সালাত আদায় করে, যাতে দুনিয়াবি কোনো চিন্তা আসে না, তাহলে তার পূর্বের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়।” ( সহীহুল বুখারী, হা.৬৪৩৩ ; সহীহ মুসলিম, হা.২২৬ )

০৩. রুকু থেকে দাঁড়িয়ে দু‘আ পাঠ। রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “ইমাম যখন ‘সামি‘আল্লা-হু লিমান হামিদা’ বলে, তখন তোমরা ‘আল্লাহম্মা রব্বানা- লাকাল হামদ’ বলো। কেননা যার বলা ফেরেশতাদের বলার সাথে মিলে যায়, তার পূর্বের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়।” (তিরমিযি, হা. ২৬৭; সহীহ)

০৪. সূরা ফাতিহা শেষে ‘আমীন’ বলা। রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “ইমাম যখন আমীন বলে, তখন তোমরা আমীন বলো। কেননা যার আমিন ফেরেশতার আমিন সাথে মিলে যায়, তার পূর্বের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়।” ( সহীহুল বুখারী, হা. ৭৮০ ; সহীহ মুসলিম, হা. ৪১০)

০৫. খাবার শেষে দু‘আ পাঠ করা। রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “যে-ব্যক্তি খাবার শেষে বলল, ‘আলহামদু লিল্লা-হিল্লাযী আত্ব‘আমানী হাযাত্ত্ব‘আমা ওয়া রযাক্বানীহি মিন গইরি হাওলিম মিন্নী ওয়া লা- কুওওয়াতিন’ তার পূর্বের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়।” (তিরমিযি, হা. ৩৪৫৮; হাসান )

০৬. পোশাক পরিধানের দু‘আ পাঠ করা। রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “যে-ব্যক্তি পোশাক পরিধানের সময় বলে, ‘আলহামদু লিল্লা-হিল্লাযী কাসা-নী হাযা- ওয়া রযাক্বানীহি মিন গইরি হাওলিম মিন্নী ওয়া লা- কুওওয়াতিন’ তার পূর্বের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়।” (আবূ দাউদ, হা. ৪০২৩; হাসান)

০৭. রমাযানের সিয়াম পালন করা। রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “যে-ব্যক্তি ঈমানের সাথে নেকীর আশায় রমাযানের সিয়াম পালন করে, তার পূর্বের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়।” ( সহহুল বুখারী, হা. ২০১৪ ; সহীহ মুসলিম, হা. ৭৫৯)

০৮. রমাযানে ক্বিয়াম তথা তারাবীর সালাত আদায় করা। রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “যে-ব্যক্তি ঈমানের সাথে নেকীর আশায় রমাযানে ক্বিয়াম তথা তারাবীর সালাত আদায় করে, তার পূর্বের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়।” ( সহহুল বুখারী, হা.২০১৪ ; সহীহ মুসলিম, হা. ৭৫৯ )

০৯. লাইলাতুল ক্বদরে ইবাদত করা। রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “যে-ব্যক্তি ঈমানের সাথে নেকীর আশায় লাইলাতুল ক্বদরে ইবাদত করে, তার পূর্বের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়।” ( সহহুল বুখারী, হা. ২০১৪ ; সহীহ মুসলিম, হা. ৭৫৯)

১০. হজ্ব সম্পাদন করা। রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “যে-ব্যক্তি হজ্ব সম্পাদন করে এবং এতে অন্যায়-অশ্লীল কথা ও কাজ করা থেকে বিরত থাকে, তার পূর্বের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়।” (তিরমিযি, হা. ৮১১; সহীহ)

১১. আযানের দু‘আ পাঠ করা। রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “যে-ব্যক্তি আযানের সময় বলে, ‘ওয়া আনা আশহাদু আন লা- ইলাহা ইল্লাল্ল-হু ওয়াহ্দাহু লা- শারীকা লাহ, ওয়া আন্না মুহাম্মাদান ‘আবদুহু ওয়া রাসূলুহ, রযীতু বিল্লা-হি রব্বা-, ওয়া বি মুহাম্মাদি রসূলা-, ওয়া বিল ইসলা-মি দ্বীনা-’ তার পূর্বের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়।” (সহীহ মুসলিম, হা. ৩৮৬ )

১২. ইস্তিগফার পাঠ করা। রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “যে-ব্যক্তি ‘আস্তাগ্ফিরুল্লাহাল আ‘যীমাল্লাযী লা- ইলা-হা ইল্লা- হুয়াল হায়য়ুল ক্বয়্য়ূমু ওয়া আতূবু ইলাইহি’ পাঠ করে, আল্লাহ তা‘য়ালা তাকে মাফ করে দেন। যদিও সে যুদ্ধের মাঠ থেকে পলায়ন করার মত জঘন্য পাপ করে।” (তিরমিযি হা. ৩৫৭৭, সহীহ )

১৩. ফরয-সালাত পরবর্তী তাসবীহ, তাহমীদ ও তাকবীর পাঠ করা। রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “যে-ব্যক্তি প্রত্যেক ফরয সালাতের পর ৩৩ বার সুবহা-নাল্লা-হ, ৩৩ বার আলহামদুলিল্লা-হ, ৩৩ বার আল্লাহু আকবার বলে—এই হলো ৯৯ বার – এবং ১০০ বার পূর্ণ করবে ‘লা- ইলা-হা ইল্লাল্লাহ, ওয়াহ্দাহু লা- শারীকা লাহু, লাহূল মুলকু ওয়া লাহূল হামদু , ওয়া হূওয়া ‘আলা কুল্লি শায়য়িন ক্বদীর’—এর মাধ্যমে, তার পূর্বের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়; যদিও তা সমুদ্রের ফেনা পরিমাণ হয়।” (সহীহ মুসলিম, হা. ৫৯৭ )

১৪. ১০০ বার ‘সুবহা-নাল্লা-হি ওয়া বিহামদিহি’ পাঠ করা। রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “যে-ব্যক্তি ‘সুব্হানাল্লা-হি ওয়া বিহাম্দিহি’ দিনে ১০০ (এক্শ) বার পাঠ করে, আল্লাহ তা’আলা তার সমুদ্রের ফেনারাশি পরিমাণ গুনাহ মাফ করে দেন।” (সহীহ বুখারী হা. ৬৪০৫)

১৫. ‘লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ, ওয়াল্লাহু আকবার, ওয়া লা- হাওলা ওয়া লা- কুওওয়াতা ইল্লা-বিল্লাহ’ পাঠ করা। রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “যে-ব্যক্তি ‘লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ, ওয়াল্লাহু আকবার, ওয়া লা- হাওলা ওয়া লা- কুওওয়াতা ইল্লা-বিল্লাহ’ পাঠ করবে, আল্লাহ তা’আলা তার সমুদ্রের ফেনারাশি পরিমান গুনাহ মাফ করে দেবেন।” (তিরমিযি, হা. ৩৪৬০; হাসান)

১৬. ফজরের সালাতের পর ১০০ বার ‘সুবহা-নাল্লা-হ’ এবং ১০০বার ‘লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ’ পাঠ করা। রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “যে-ব্যক্তি ফজরের সালাতের পর ১০০ বার ‘সুবহা-নাল্লা-হ’ এবং ১০০ বার ‘লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ’ পাঠ করে, তার পূর্বের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়; যদিও তা সমুদ্রের ফেনা পরিমাণ হয়।” (নাসায়ী, হা. ১৩৫৪, সহীহ)

১৭. বিছানায় দু‘আ পাঠ করা। রাসূল (সা) বলেছেন, “যে-ব্যক্তি বিছানায় ‘লা- ইলা-হা ইল্লাল্লাহ, ওয়াহ্দাহু লা- শারীকা লাহ, লাহূল মুলকু ওয়া লাহূল হামদু , ওয়া হূওয়া ‘আলা কুল্লি শায়্য়িন ক্বদীর, লা- হাওলা ওয়া লা- কুওওয়াতা ইল্লা-বিল্লাহ, সুবহা-নাল্লা-হ, ওয়াল হামদুলিল্লা-হ, ওয়া লা- ইলা-হা ইল্লাল লাহূ, ওয়াল্লাহু আকবার’ পাঠ করে, তাঁর সমস্ত গুনাহ মাফ করা দেওয়া হয়। যদিও তার গুনাহ সমুদ্রের ফেনার চেয়েও বেশি হয়।” (ইবনু হিব্বান, হা. ৫৫২৮, সহীহ)

১৮. পরস্পর সাক্ষাতে সালাম দিয়ে মুসাফাহা করা। রাসূল (সা) বলেছেন, “দুজন মুসলমান পরস্পর মিলিত হয়ে মুসাফাহা করলে পরস্পর বিচ্ছিন্ন হওয়ার পূর্বেই তাদের ক্ষমা করে দেওয়া হয়।” (আবূ দাউদ, হা. ৫২১২, সহীহ)

একটু চেষ্টা করলে আমরা উপরোক্ত আমলগুলো খুব সহজেই করতে পারি। এতে আমাদের অতিরিক্ত সময়ও লাগবে না।

সত্যের সন্ধানে প্রতিদিন প্রতিক্ষণ, আমাদের এই পথ চলা সব সময় ইসলামিক পোস্ট পেতে বিজিট করুন ইসলামিক সাইট www.OurislamBD.Com

11 thoughts on "যে সব ছোট আমল পূর্বের সমস্ত গুনাহ মিটিয়ে দেয়।"

  1. MD Shakib Hasan Contributor says:
    ভাই আপনি এতোদিন কই ছিলেন ।অসাধারণ পোষ্ট
    1. M.Rubel Author Post Creator says:
      ধন্যবাদ ভাই। দোয়া করবেন সব সময় এর কোম ইসলামিক পোস্ট দিতে পারি।
  2. Esrafil Islam Emon Contributor says:
    অসাধারন! জাযাকাল্লাহ,আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এত সুন্দর পোস্ট করার জন্য, এইরকম আরও পোস্ট চাই
    1. M.Rubel Author Post Creator says:
      দোয়া করবেন সব সময় এর কোম ইসলামিক পোস্ট দিতে পারি।
  3. Ultimate Arzu Contributor says:
    ইসলাম বিষয়ক এমন আরো বিভিন্ন তথ্য দ্বারা আমাদের অবগত করার জন্য আপনাকে আহ্ববান জানাচ্ছি। ধন্যবাদ !
    1. M.Rubel Author Post Creator says:
      পোষ্টের কমেন্টে যদি আপনার সাড়া দেন এবং মতামত শেয়ার করুন তাহলে এরকম ইসলামিক পোস্ট দিতে আগ্রহ বাড়বে এবং কি ভালো লাগবে।
  4. Parves888 Contributor says:
    ধন্যবাদ। আল্লাহ্ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দান করুন। আমাদেরকেও এই আমল গুলো সঠিকভাবে করার তৌফিক দান করুন। (আমিন)
    1. M.Rubel Author Post Creator says:
      আমিন
  5. Ultimate Arzu Contributor says:
    hmm. pashe asi
  6. Nazmul Huda Contributor says:
    gd.pashe aci

Leave a Reply