তিন শ্রেণীর লোকের সাথে আল্লাহ তা‘আলা ক্বিয়ামতের দিন কথা বলবেন না ৷
চলুন যানা যাক আল্লাহ তায়ালা কোন কোন তিন ব্যক্তির সাথে কিয়ামতের কঠিন দিবসে কথা বলবেন না ৷
এই প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন,
ثَلاَثَةٌ لاَ يُكَلِّمُهُمُ اللهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَلاَ يَنْظُرُ إِلَيْهِمْ وَلاَ يُزَكِّيْهِمْ وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ، قَالَ أَبُو ذَرٍّ خَابُوْا وَخَسِرُوْا مَنْ هُمْ يَا رَسُوْلَ اللهِ قَالَ الْمُسْبِلُ وَالْمَنَّانُ وَالْمُنَفِّقُ سِلْعَتَهُ بِالْحَلِفِ الْكَاذِبِ.
‘তিন শ্রেণীর লোকের সাথে আল্লাহ তা‘আলা ক্বিয়ামতের দিন কথা বলবেন না, তাদের প্রতি দৃষ্টি দিবেন না এবং তাদেরকে পবিত্রও করবেন না। আর তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।
আবু যার (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহর রাসূল (সাঃ)! কারা ধ্বংসপ্রাপ্ত ও ক্ষতিগ্রস্ত? তিনি বললেন, টাখনুর নীচে কাপড় পরিধানকারী, উপকার করে খোটা প্রদানকারী এবং ঐ ব্যবসায়ী যে মিথ্যা কসম করে তার পণ্য বিক্রি করে’।
[মুসলিম হাদিস নং-১০৫; মিশকাত হাদিস নং-২৭৯৫]
০১~ টাখনুর নীচে কাপড় পরিধানকারী
টাখনুতো সবাই বুঝি ৷ কিনতু আজ কাল সুধু নয় বরং কোরআন নাযিল হবার আগে থেকেই চলে আসছে, টাখনুর নীচে কাপড় বা প্যান্ট পড়া ৷ বর্তমানে সোসাইটিতে টাখনুর নিচে পড়া একধরনের স্টাইল হিসাবে বেছে নিয়েছে যুবক-পুরুষরা ৷ টাখনুর নীচে কাপড় পরিধানকারীকে সাবধান করে দিয়েছেন নবীজি (সাঃ) ৷
টাখনুর নিচে কাপড় পরিধানের ভয়াবহ শাস্তি অপে অপেক্ষা করছে কাল কেয়ামতের দিনে ৷
টাখনুর নিচে কাপড় পরিধানের ভয়াবহ শাস্তি
مَا اَسْفَلَ مِنَ الْكَعْبَيْنِ مِنَ الْاِزَارِ فِي النَّارِ- অর্থাৎ টাখনুর নিচে কাপড় পরিধানকারী পুরুষ জাহান্নামী। সুতরাং টাখনুর নিচে কাপড় পরিধানকারী ব্যক্তিদের সতর্ক করে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অনেক হাদিস রয়েছে। যার কয়েকটি জাগো নিউজে তুলে ধরা হলো-হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করে বলেন, ’লুঙ্গির যে অংশ টাখনুর নিচে থাকবে তা আগুনে প্রজ্জলিত হবে। (বুখারি)রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, পুরুষের শরীরের যে কোনো পোশাক টাখনুর নিচে ঝুলে পড়া হারাম। পোশাক যদি টাখনুর নিচে ঝুলে যায়, তাহলে টাখনুর নিচের ঐ অংশকে জাহান্নামের অংশ বলে ধরা হল। (বুখারি)
০২~ উপকার করে খোটা প্রদানকারী
উপকার করে খোটা প্রদানকারী তাকেই বলে, যে বিপদের সময় সাহায্য করেছিল কিনতু সেই কথা বার বার বলে বেড়াই অথবা যে ব্যক্তি কোন দুর্বল ব্যক্তির উপকার করার পর তা বার বার উল্লেখ করে লজ্জা দেয় বা খোটা দেয় তাকেই উপকার করে খোটা প্রদানকারী বলে ৷
বর্তমান গ্রাম-গঞ্জে, সহর-তলিতে সবজায়গায় উপকার কারি উপকার করার পর তা বার বার উল্যেখ করে নিজেকে সুপার হেরো ভাবে ৷ কিনতু সে নিজেও জানেনা এটা করার জন্য তার জন্য সেই দিবসে কি সাস্তি অপেক্ষা করছে ৷
বাংলাদেশে এই প্রভাব বেশি, উপকার করে খোটা দেওয়া ৷
০৩~ ঐ ব্যবসায়ী যে মিথ্যা কসম করে তার পণ্য বিক্রি করে
এই কসম কাটা আজকাল ব্যবসায়ীর প্রধান হাতিয়ার হয়ে উঠেছে ৷ কসম না কাটলে ওদের বিক্রিতে লাভ হয় না ৷
ক্রয়-বিক্রয়ে মিথ্যা কসম অত্যন্ত ঘৃণিত একটি কাজ। তাই মিথ্যা কসম পরিহার করা উচিত। আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, আমি রাসূল (সাঃ)-কে বলতে শুনেছি,اَلْحَلِفُ مُنَفِّقَةٌ لِلسِّلْعَةِ مُمْحِقَةٌ لِلْبَرَكَةِ ‘কসম খাওয়ায় মালের কাটতি বাড়ায়, কিন্তু বরকত কমে যায়’।[মুত্তাফাক্ব আলাইহ, আবু দাঊদ হাদিস নং-৩৩০২; মিশকাত হাদিস নং-২৭৯৪।]
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) আরো বলেছেন,إِيَّاكُمْ وَكَثْرَةَ الْحَلِفِ فِى الْبَيْعِ فَإِنَّهُ يُنَفِّقُ ثُمَّ يَمْحَقُ‘ব্যবসায় অধিক কসম খাওয়া থেকে বিরত থাক। এর দ্বারা মাল বিক্রি বেশী হয়, কিন্তু বরকত কমে যায়’।『মুসলিম, মিশকাত হাদিস নং-২৭৯৩』
আমরা যেন সবসময় টাখনুর উপরে কাপড় পরিধান করতে পারি, আমরা সবাই সতর্ক থাকবো আমাদের কাপড় যেন টাখনুর নিচে না যায় ৷ সেইসাথে খেয়াল রাখব, আমরা কাউকে মিথ্যা কসম দিয়ে ফেললাম না তো! সাবধান কখনো ভুলক্রমেও মিথ্যা কসম কাউকে দেবেন না এর শাস্তি অনেক যন্ত্রণাদায়ক ৷ অনেক অসহায় বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজনদের কে উপকার করার পরে তা উল্লেখ করা যাবেনা উল্লেখ করাই হলো খোটা দানকারী বলে ৷ খোটা দান কারী শাস্তি অনেক ভয়াবহ ৷ তাই বলবো কাউকে কখনো সাহায্য করার পরে সেটা বলে তাকে লজ্জা দেওয়া যাবে না এটা ইসলাম ধর্ম ৷
কেউ কখনো যদি উপড়ের তিনটি কাজ করে থাকেন তাহলে আল্লাহর কাছে মাফ চান ৷ আল্লাহ অসিম দয়ালু রহমানির রহিম ৷
আল্লাহ তা’আলা যেন আমাদের প্রতি নারাজ না হয় কাল কেয়ামতের দিনে (আমিন) ৷
যদি পোস্টটি ভালো লাগে তাহলে আমার সাইটটি ঘুরে দেখুন একবার ☞ hmvai.com
খোদা হাফেজ ৷
2 thoughts on "কেয়ামত দিবসে আল্লাহ যে তিন ব্যক্তির সাথে কথা বলবেন না জেনে নিন খুব গুরুত্বপূর্ণ"