মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে সবার আগে কবুল হয় মায়ের দোয়া বা বদ দোয়া। মা’কে কোরআনে ‘উফ’ শব্দটি পর্যন্ত না বলার জন্য বলা হয়েছে। বনী ইসরাঈলের যুগে এক মায়ের বদ দোয়ায় একজন আল্লাহর ওলীকে সাধারণ মানুষদের নিকট লাঞ্চিত হতে হয়েছিল। ঘটনাটি থেকে আমাদের শিক্ষা নেওয়া উচিত। সেই গল্পটি নিম্নরূপ:

সে সময় জুরাইজ নামে একজন নেককার ও বুযুর্গ ব্যক্তি ছিলেন। তিনি সর্বদা এক নির্জন বাড়িতে ইবাদতে মাশগুল থাকতেন। একদিন তাঁর মা তাঁর সাথে সাক্ষাৎ করার জন্য আসে। তখন তিনি নামায আদায় করছিলেন। মা তাঁকে ডাকলেন, হে জুরাইজ!

তিনি মনে মনে বললেন, হে আল্লাহ! একদিকে আমার মা, অপরদিকে আমার নামায, এই বলে তিনি নামাযে মশগুল হয়ে গেলে। তাঁর মা এসে ডাক দিলেন, জুরাইজ!তিনি আবারও চিন্তা করলেন, হে আল্লাহ!

একদিকেআমার মা, অপরদিকে আমার নামায কি করে মার সাথে কথা বলি। তারপর তিনি নামাযে ব্যস্ত হয়ে গেলেন। তাঁর মা আগের দিনের মত ফিরে যান।তৃতীয় দিনও মা এসে দেখেন, জুরাইজ নামায আদায়করছে। তিনি ডাক দিলেন, হে জুরাইজ! তিনি মনে মনে বললেন; হে আল্লাহ!একদিকে আমার মা, অপরদিকে আমার নামায। নামাযের মধ্যে কি করে জবাব দিই। তিনি চুপ রইলেন, অতঃপর নামাযে ব্যস্ত হয়ে গেলেন। এতে তাঁর মা মনে খুব কষ্ট পেলেন এবং রাগান্বিত হয়ে বদ দু’আ করলেন, হে আল্লাহ! চরিত্রহীন ব্যভিচারী নারীর চেহারা না দেখিয়ে তাকে মৃত্যু দিও না। এ বদ দু’আ করে নিরাশ হয়ে তিনি সেখান থেকে চলে যান।

ইতোমধ্যে বনী ইসরাঈলের লোকদের মাঝে জুরাইজ ও তাঁর ইবাদত বন্দেগীর কথা আলোচনার বিষয়ে পরিণত হয়। এমন সময় এক অনিন্দ সুন্দরী ব্যভিচারী মহিলা লোকদেরকে বললো, তোমরা যদি মনে করো, তাহলে আমি তাঁকে কাজে ফাঁসিয়ে দিই।মহিলা জুরাইজের বাড়িতে উপস্থিত হলো এবং তাঁকে অপকর্মের আহ্বান করে। কিন্তু জুরাইজ তার প্রতি বিন্দুমাত্র দৃষ্টিপাত করেননি।

সে জুরাইজ থেকে নিরাশ হয়ে জুরাইজের খানকায় যাতায়াত করত। মহিলাটি এক রাখালের কাছে গিয়ে নিজেকে উপস্থাপন করে। রাখাল তার ষড়যন্ত্রের শিকার। মহিলাটি গর্ভবতী হয়ে একটি বাচ্চা প্রসব করে। আর প্রচার করতে থাকে, বাচ্চাটি জুরাইজের কারণে ভূমিষ্ঠ হয়েছে। মহিলাটির এ অপপ্রচার শুনে লোকজন জুরাইজের প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁর খানকার সামনে জড়ো হয়। তাঁকে বাড়ি থেকে টেনে হেঁচেড়ে বের করে খানাকাটি ভেঙ্গে ফেললো এবং তাঁকে প্রচণ্ড মারধর করে।

জুরাইজ তাদের জিজ্ঞেস করলেন, কি হয়েছে তোমাদের? তারা বলল, তুমি এ নষ্টা ব্যভিচারিনী মহিলার সাথে ব্যভিচার করেছো।আর তোমার মাধ্যমে তার একটি সন্তানও ভূমিষ্ট হয়েছে। তিনি লোকদেরকে বললেন, ঠিক আছে, শিশুটি কোথায়, তাকে নিয়ে এসো। তাকে আনা হলো। তিনি বললেন, তোমরা আমাকে ছেড়ে দাও, আমি দু রাকাআত নামায আদায় করি।

নামায শেষ করে তিনি নবজাতক শিশুটির পেটে খোঁচা মেরে জিজ্ঞেস করলেন, বল, তোর বাবা কে? শিশুটির জবান খুলে যায়। সে বললো, ওমুক রাখালআমার বাবা। একথা শুনে জুরাইজের প্রতি লোকদের ভক্তি-শ্রদ্ধা আরো বেড়ে যায়, তারা তাঁকে চুমু দেওয়া শুরু করে, তাঁর কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করে এবং বললো, তোমার বাড়িটি আমরা সোনা দিয়ে নির্মাণ করে দেব। তিনি বললেন, না, তার প্রয়োজন হবে না। যেভাবে ছিল সেভাবে মাটি দ্বারা নির্মাণ করে দাও। তাই করা হলো।সূত্র: আমাদের সময়।

10 thoughts on "মায়ের অভিশাপে সুন্দরী মেয়ের ফাঁদে পড়েছিলেন আল্লাহর এক ওলি!"

  1. Avatar photo mdAsraf Contributor says:
    nice post
  2. Avatar photo WapmasterArif Contributor says:
    রেফারেন্স সহকারে এরকম পোস্টগুলো দেয়ার চেষ্টা করবেন
    1. Avatar photo M.Rubel Author Post Creator says:
      ok via
  3. Maxtan Contributor says:
    জাজাকাল্লাহ খাইর 🙂 আমল করার তৌফিক দান করুক আল্লাহ সুবাহানু তায়ালা 🙂
  4. Mahbub Subscriber says:
    gd post…
    1. Avatar photo M.Rubel Author Post Creator says:
      ধন্যবাদ
  5. mahamud79 Contributor says:
    khub shundor kahini…..
    1. Avatar photo M.Rubel Author Post Creator says:
      ধন্যবাদ

Leave a Reply