*বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম*
কি হবে আগামী বিশ্ব পর্ব
–শাফিউল আলম
খাবার শুরু করতেই কতোয়াল উপস্থিত । মাওলানা উসমান খেতে থাকলেন । বৃষ্টিতে ভিজে গেছে পুরো শরীর ! জেলখানায় নেই কোন ছাদ যে তাকে ঠান্ডা পানি থেকে বাচাবে । একত , অসুস্থ শরীর তার উপর জেলখানার অবস্থা খু্বই খারাপ । মাটির মেঝে প্রায় কাদা কাদা অবস্থা ! সামনে শুধু একটি টেবিল আর ২ টি চেয়ার ছাড়া কিছু নেই ।
হয়ত শুয়েও থাকা হবে না ! যেভাবে বৃষ্টি শুরু হয়েছে , তাতে বোঝা যায় আজ আর ঘুম হবে না ! মাওলানা উসমান ছিলেন ঈমানজাগ্রত করা একজন ইসলামিক মাইন্ড জাগ্রতকরণ এক বিশেষ অস্ত্র এর আউটপুট । রাজধানী থেকে যাযাবরটাইপের লোক দের পায়ের এলাকা পর্যন্ত মাত্র ২ বছরে তার হাতে হাত রেখে অনেক অমুসলিম মুসলমান হয়েছে ।
তার এক হুংকারে বহিরবিশ্বে মুসলমানদের উপর অত্যাচার নীপিরণ যে কোন প্রকার ইসলামের প্রতি অবমান্যনা হলে তিনি নিজের দেশেই দাড়িয়ে বলতেন “তোমরা কি মনে করো আমরা সুচো ইদুরের পা’চাটা মুর্তাদ দের পায়ের নিচে পরে থাকার জন্য আমরা মুসলমান জমীনে আর্বিভুত হয়েছি ? কি হয়েছে তোমাদের ? কোন মুসলমানের গায়ে হাত দিলে আমরা চুপ থাকবোনা । আমি আমার দেশে যেমন বাঘের মত গর্জে উঠি , প্রয়োজন যদি হয় আন্ত্রজার্তিক পর্যায়ে বাঘ নয় আমি সিংহের মত গর্জিয়ে উঠব , !
তার বলা প্রতিটা বাক্য যেন মুসলমানদের নতুন রক্ত এক্সচেন্জ হয়ে যেত । মাত্র কয়েকদিন আগেই তিনি আলোচনা রেখেছিলেন , বিশেষ কিছু বিষয় নিয়ে । আলোচনাটি রাখার ১ সপ্তাহ তিনি গভীর রাত্রে, বক্তব্য রেখে বাড়ী ফেরার পথে ….মাত্র ঘোড়ার গাড়ি চড়ে আসছিলেন । হটত দস্যূ টাইপের কিছু লোক তাকে গ্রেফতার করে মাথায় সজোড়ে আঘাত দেয় ৩ টি…… আর মুখ চেপে ধরে রুমাল দিয়ে ।
অনুমান করা হয় , রুমালে নাকে শূংগানোর মত কিছু ছিল । যার মাধ্যমে তিনি জ্ঞ্যান হারিয়ে অজ্ঞানের সাগরে চলে যায় । আর তারপরেই তিনি চোখ খুলে দেখেন তিনি হসপিটালে ।
মাওলানা উসমান -তার প্লেটে পানি দিয়ে ভরে গেছে । রুটি ভিজে গেছে । তার উপর গুড় ছিল তাও বৃষ্টির পানিতে ভিজে সরবত হয়ে গেছে । তবুও ধের্য্য ধরে একটি রুটি খাচ্ছেন । কারণ , তার অভ্যস নেই খাবার অপচয় করা । পুরো রুটি না খেতে পারলে সেটা আলাদা বিষয় । তবে তার খাওয়ার মত শক্তি শরিরে নেই । তবে ক্ষুধা আছে এর কারণ তিনি ২ দিন যাবত অজ্ঞান হয়ে ছিলেন । রুটি অনেক কষ্টে খেয়ে ফেললেন । এবার পানি কোথায় পাবেন ?
এত কষ্ট তার !
আকাশ দিকে তাকালেন । দেখলেন আকাশ থেকে সজোরে বৃষ্টি পরছে । হা করে বৃষ্টির বিশুদ্ধ পানি খাওয়ার চেষ্টা করলেন কিন্তু এ পানি দিয়ে কিছুই হবে না । হটাত , কতোয়াল বলল “আপনার পানি” !
মাওলানা উসমান মনে মনে ভাবলো যেটিউ যখন তার দরকার সঠিক ভাবে সে সেটি পাচ্ছে । কিছুক্ষন থ, মেরে পানির দিকে তাকিয়ে থাকলো । ভাবতে লাগলো । মহান আল্লাহ পা’ক এমন কোন বিচরণশীল জীব নাই যার রিযক এর দায়ীত্ব তিনি নেন নাই । তাহলে আমার মত সামান্য একজন ক্ষূধার্ত মজলুমের প্রয়োজনীয় পানি কি আল্লাহর অফূরন্ত ভান্ডার থেকে হবে না ? এইটি মনে মনে ভেবেই পানির কাসার গ্লাস হাতে নিলো । ঢক ঢক করে গিলে ফেলল এরপর তিনি বললেন “আলহামদু লিল্লাহিল্লাজি আত্বআমানি হাজাত ত্বাআমা ওয়া রাযাক্বানিহি মিন গাইরি হাওলিম মিন্নি ওয়া লা কুউওয়াতিন।” !
এবার তার হুশ হল কতোয়াল দাড়িয়ে আছেন । সামনে দিকে তাকালেন । দেখলেন, কতোয়াল দাড়িয়ে আছে ছাতির নিচে হাতে মর্শাল নিয়ে তার খাওয়া দেখছিলো । গভীর ধ্যানে তাকিয়ে ছিল সে , কে ই বা জানে কতক্ষন যাবত সে দাড়িয়ে । মাওলানা উসমান তাকে দেখে সম্মান প্রদর্শনের জন্য দাড়িয়ে গেলেন । মাওলানা উসমানের শরীর ভিজে নিজের গেন্জি দেখার উপক্রম হয়ে গেছে । তার সুন্দর পোশাক , সুন্দর দাড়ি যেন ছিল সব কিছু সাজামানা ।
কতোয়াল সাহেব ভিতরে আসলেন এবং একটু জড়েই বললেন: দাড়োয়ান এখানে পলিব্যাগ দিয়ে বৃষ্টি আটকানোর ব্যবস্থা করে দাও !
তার এক বাক্য বলা সইল না ! মুহূর্তের মধ্যেই ৪ টি দাড়োয়ান এসে পলিথিন দিয়ে ঘড়টির চারপার্শে আটকিয়ে দিল । এখন আর পানি মাওলানা উসমান এর শরীরে পরছেনা । কতোয়াল ছাতির ডাট টিপে বন্ধ করলেন । এবার মাওলানা উসমান এর সামনে থাকা অতিরিক্ত চেয়ার টেনে, ঠিক মাওলানা উসমান এর বিপরীত পার্শে টেবিল এর সামনে বসলো কতোয়াল । এক পার্শে মাওলানা উসমান আরেক পার্শে কতোয়াল । কেও নেই আশেপার্শে । পুরো জেলখানা নিস্তব্ধ । বাকি আসামীরা ঘুমে মাতাল ।
কতোয়াল এবার মাওলানা উসমানের দিকে সরাসরি তাকিয়ে বললেন: নাম কি ?
মাওলানা উসমান তার দিকে তাকালেন আর হাত টেবিলের উপর রাখলেন । স্ট্রীট বললেন: উসমান !
কতোয়াল ভুরু কুচকালো বলল: উসমান রা: নামে একজনেই নাম শুনেছিলাম । ২য় আপনার নাম শুনলাম । কোথায় বাড়ি ?
মাওলানা উসমান: রাজধানীতেই ।
কতোয়াল: জেলে আসার কারণ ?
মাওলানা উসমান এবার মুচকি হাসি দিল , মনে হল রহস্যময় জগতের সেরা মুল নায়ক । তিনি বললেন: সে কারণ তো আপনাদের মুখ থেকে শুনবো । আমি নিরঅপরাধ মজলুম । আমি নিজেও জানিনা আমি কেন এসেছি ।
কতোয়াল একটু অবাক হল । এ আবার কেমন কথা আসামি নিজেই জানেনা কোন অপরাধে সে আসলো । কতোয়াল একটু হতভম্ব হয়ে বলল: দেশদ্রোহী কাজের মামলা আছে আপনার বিরুদ্ধে ! কি করেছেণ ? আপনার পরিচয় আমার কাছে ক্লিয়ার না । শুধু শুনলাম , আপনি একজন নতুন আসামী । কি করেন আর পেশাগত কাজ কি ?
মাওলানা অসমান নিজেই এখন অবাক হয়ে গেলেন । মনে হয় আগের স্টেপে তার হাসী টা বোকামী । তাকে চিনতে পারেনা এমন লোক কতোয়াল পর্যায়ের দায়ীত্বে আছে এটি বেশ অবাক লাগলো । তিনি বললেন: আমি মাওলানা উসমান ।
কথাটি শোনা মাত্রই কতোয়ালের হটাত মুখ দিয়ে ফু বের হয়ে গেল নিজের অনিচ্ছায় এই ফু তে তার মর্শাল নিভে গেল । আর এখন শুধু মাওলানা ওসমান এর ঘড়ের মর্শাল ঐ তখন থেকে জলেই আছে যা অনেক্ষন থেকেই আলোকিত করেছে ঘরটি ।
অবাক হয়ে গেলেন কতোয়াল । পার্শে থাকা দু’জন সৈন্যর হাত থেকে বন্দুক পরে গেল । কতোয়াল বলল: কিহ ?
মাওলানা উসমান বুঝতেই পারেনি কতোয়াল ইমোশনালে মোডে পরে অবাক হয়ে গেছে । তিনি আবারোও বললেন: হ্যা আমি মাওলানা উসমান !
সৈন্য গুলো তখন মাটিতে বসে পরলো । আর কতোয়াল দাড়িয়ে গেল । বলল: আপনি মাওলানা উসমান ?
উসমান: হ্যা !
কতোয়াল বুঝেনি এতক্ষনে যে আসলে এই জেলখানা সে কার সামনে বসে আছে । তার সন্দেহ হল । তিনি তার হাতে থাকা পত্রিকা বের করে টেবিল এর উপর রাখলেন । এবং দেখলেন বড় করে একটি হেডলাইন প্রথম পাতাতেই ! যেখানে লিখা আছে “মাওলানা উসমান নিখোজ , রাষ্ট্র বাহীনি খুজে বেরাচ্ছে তাকে”!
এবং সেখানে মাওলানা উসমান এর ছবি দেওয়া আছে । কিন্তু সেই ছবীর সাথে তার চেহারার কোন মিল মনে হল না । তিনি তার দুই সৈন্য কে ডাকলেন । বললেন: দেখ তো ভালো ভাবে পত্রিকায় দেওয়া মাওলানা উসমান আর আমাদের সামনে বসে থাকা ভদ্রলোকে চেহারা কি এক ?
সবাই খুব ভালোভাবে দেখলো কিন্তু বুঝা গেল না চেহারা কি আসলেই মিল না অমিল । সবাই ভ্যাবাচেকা খেয়েছে । মাওলানা উসমান বললেন: কতোয়াল সাহেব আমাকে চিনতে পাচ্ছেন না ?
কতোয়াল এবার একটু শক্ত হল বলল স্ট্রীট ভাবে : না ! কি আপনার পরিচয় উল্টা পাল্টা বাদ দিয়ে সরাসরি বলুন !
মাওলানা উসমান এবার মুচকি হাসী দিলেন । তার রহস্যময় হাসীর কাছে রাজা-বাদশার বুদ্ধি হার মানায় ঠিক সেই মানের রহস্যবোঝা গেল কিছুটা তার স্ট্যাইল । উনি মাথার ব্যান্ডেজ টেনে খুলে ফেললেন । এরপর তার লম্বা টুপি মাথায় পরলেন । কালো মোটা ফ্রেমের চশমা চোখে পরলেন । কাধের উপর সেই সুলতানী রুমাল বিছিয়ে দিলেন । যেটা নেমে গেল হাটু পর্যন্ত দেখতে কালো রংগের । মাওলানা উসমান বললেন: কতোয়াল সাহেব চিনতেপাচ্ছেন ?
কতোয়ালের গায়ের পশম খাড়া হয়ে গেল । সৈন্য গুলো সেখানে দাড়িয়ে । পত্রিকার সাথে মিলিয়ে দেখলো ঠিক হুবহু মিলে গেল সেই চেহারা । কতোয়াল খুব ভালো ভাবে দেখলো একদম মিলে গেল । তিনি কিছু টা অবাক হলেন । এবার আবার বসলেন । এবার তার মস্তিস্ক হয়ে গেল রাজা বাদশাহর মত ! তিনি মনে মনে ভাবলেন মাওলানা উসমান কেন এখানে ? অথচ, সরকারী বাহীনি তাকে প্রচার করছে সে নিখোজ !
কতোয়াল বলল:- আপনি কোন অপরাধে এখানে ?
উসমান:- আমি নিজে জানিনা ।
কতোয়াল:- আমি নিজের চোখ কে বিশ্বাস করবো নাকি পত্রিকাকে বিশ্বাস করবো ? সরকারী পত্রিকা প্রচার করতেছে আপনি নিখোজ অথচ, আপনি আমার সামনে জেলখানায় ।
উসমান পত্রিকাটিতে অনেক আগেই নজর রেখেছে , কিন্তু তার সে বিষয়ে বিন্দুমাত্র কোন অনুভুতি জাগেনী । কারণ তার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার এবং মিথ্যামামলা এবার নতুন নয় । তিনি বললেণ: জলন্ত উসমান আপনার সামনে দাড়িয়ে আছি । অস্ত্র দিয়ে আমাকে দিখন্ডিত করে আমার শরীর থেকে রক্ত বের করে চেক করতে পারেন আমি কি আসলেই মানুষ নাকি কোন জ্বীণ ।
কতোয়াল একটু চুপ থেকে আবার বলল: আপনি বেশ ১ সপ্তাহ আগে একটি ভবিষ্যতবাণীর কথা বলেছেন মনে আছে ?
উসমান কতোয়ালের মুখের কথা কেড়ে নিয়ে বলল: গজওয়ায়ে হিন্দ !
কতোয়াল যেন আসামী কে জিজ্ঞাসাবাদ করার কথা ভুলেই গেছে যখন সে মাওলানা উসমান কে চিনতে পেরলো । সে বলল: কি সেই ভবিষ্যতবাণী ।
মাওলানা উসমান উঠে দারালো , বলল: কতোয়াল সাহেব ৮৫০ বছর আগে শাহ নেয়ামত উল্লাহ রহ: কিছু ভবিষ্যত বাণী লিখে গেছেন । ধারণা করা হয় , তিনি আল্লাহ সোবহানাহু ওয়া তায়ালার পক্ষ থেকে ইলহাম পেয়ে এই ভবিষ্যত বাণী গুলো লিখে গেছেন । তার সামাণ্য কিছু জিনিষ শুধু বলেছিলাম মাত্র ১ সপ্তাহ আগে । তাতেই তো আপনাদের রাজা-বাদশাহর সাকরাতুল মাউত শুরু হয়ে গেছিল । আমাকে গ্রেফতার না করলে তাদের ঘুম হয় না । দেশে এক শ্রেনীর মূর্তাদ শ্রেণীর লোক আর কিছু প্রকাশ্য নাস্তিক লেগেছে আমার বিরুদ্ধে যাতে আমাকে গুম ফেলা হয় , হাজার হাজার মুসলমান সত্য ইতিহাস যেন না জানতে পারে । সামান্য কয়েকলাইন বলেছি মাত্র তাতেই আমি জেলে ভরলাম আর সরকারী মিডিয়া প্রচার করতেছে আমি নিখোজ ! একই কথা আপনি আমাকে প্রশ্ন করলেন কি সেই ভবিষ্যত বাণী ,,,, এখন আমি যদি আপনাকে বলি সেকেন্ড টার্গেট আপনি কি আমাকে ফাসির কাষ্টে জুলাবেন ? নাকি জল্লাদ দিয়ে গর্দান সিরচ্ছেদ করাবেন কোনটি ?
কতেয়াল অনেক কষ্টই পেল উসমান এর কথা শুনে । তিনি তার হাত উচু করে , ২ টা চুটকি ফুটালেন …. সৈন্য ২ টি ঘর ছেড়ে প্রস্থান করলো ! কতোয়াল বললেন: মাওলানা উসমান আমি মুসলমান ঘড়ের সন্তান ! আপনি আমাকে দলিলভিত্তিক বুঝাবেন সেই ভবিষ্যত বাণীগুলো । আমি শুনতে রাজি । এত টুকু নিশ্চিত থাকুন আপনাকে আমি ফাসির কাষ্টে বা জল্লাদের হাতে দিব না ।
মাওলানা উসমান বললেন: কতোয়াল সাহেব আমি যদি ভবিষ্যত বাণী গুলো তুলে ধরার অপরাধে জল্লাদের হাতে পরি আমার কপাল সত্যই ভালো হবে , আমি শাহাদতের দরজা খোলা পাবো । তাতে পরকাল নিয়ে আমার চিন্তা থাকবেনা । কিন্তু এই বিশাল জনসমূদ্র কে আমি একজন আলেম হয়ে এই ভবিষ্যত বাণী গুলো না জানিয়ে দিতে পারি তাহলে আমার জীবন আমার কাছে বৃথাই গণ্য হবে ।
কতোয়াল বলল: আপনি আমাকে বিশ্বাস করতেপারেন । আমি বিশ্বাসঘাতকতা করব না । আমাকে বলুন কি সেই ভবিষ্যত বাণী ।
মাওলানা উসমান বললেন:- হিন্দুস্থানের সাথে আমাদের একটি যুদ্ধ হবে । যার কথা রাসূলে কারীম সা: নিজেই বলে গেছেন । শাহ নেয়ামত উল্লাহ সাহেবের কথা না হয় বাদই দিলাম ।
কতোয়াল এবার আকষ্মিক হয়ে বললেন: কিহ ? হিন্দুস্থান মানে ?
মাওলানা উসমান: পাশ্ববর্তী দেশ ভারত ।
কতোয়াল:- বলেন কি ? মাথা তো ঠিক নাই ! কি সেই হাদীস ? নাকি বানোয়াট করছেণ ?
মাওলানা উসমান মুচকি হাসলেন ! বললেন:- ফাস আলু আহালাজজীকরি ইনকুংতুম লা তা’ লামুন “যে বিষয়ে তোমার জানা নেই সে বিষয়ে যারা জানে তাদের থেকে জেনে নাও” সূরা নাহল,৪৩ নাম্বার আয়াত ।
কতোয়াল অবাক হয়ে গেল ! মনে মনে ভাবলো মাল তো , ওয়াজের মন্চে যেভাবে রেফারেন্স দেয় সেভাবে আমার সামনেও দেওয়া শুরু করেছে । কতোয়াল বলল:- আমি জানতে চাই কি সেই ভবিষ্যতবাণী ! আমাকে জানান !
মাওলানা উসমান বললেন: ভারতের সংগে আমাদের দেশের একটি যুদ্ধ হবে । যে যুদ্ধের কথা আল্লাহ রসুল সা: নিজেই বলে গেছেন। হাদীস টি আপনি কোথায় পাবেন জানেন ?
কতোয়াল: কোথায় ?
মাওলানা উসমান: সূনানু নাসাঈ শরীফ ৩য় খন্ড এর ৩২১ পৃষ্ঠায় ৩১৭৪ নং হাদীস প্রকাশণী: ইসলামীক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ , হাদীসটি তে বলা আছে,
“আবু হুরায়রা রা: থেকে বণিত । তিনি বলেন: রাসুলুল্লাহ সা: আমাদেরকে হিন্দুস্থানের জিহাদের (ভারত অভিযানের) ওয়াদা দিয়েছিলেন । যদি আমি তা (ঐ যুদ্ধের সুুযোগ) পাই , তা হলে আমি তাতে আমার জান মাল ব্যয় করব । আর যদি আমি তাতে নিহত হই , তাগলে আমি শহীদের মধ্যে উত্তম সাব্যস্ত হব । আর যদি আমি ফিরে আসি , হা হলে আমি হব আযাদ বা জাহান্নাম হতে মুক্ত আবূ হুরায়রা ।”
কতোয়াল শোনা মাত্র লাফ দিয়ে উঠলো । বলল: কিহ ?
মাওলানা উসমান মাথা নেড়ে সম্মতি দিল হ্যা !
কতোয়াল বলল; আমাদের দেশের কথা কোথায় থেকে এল ?
উসমান: কতোয়াল সাহেব আপনি ত ইতিহাস ও জানে না দেখতেছি । আমাদের বাংলাদেশ আগে ভারতের সংগে ছিল । ইংরেজদের জামানায় এটি ভাগ করে দেওয়া হয় । তা ছাড়া আমরা ভারতের মদ্ধেই ছিলাম ।
কতোয়াল: ও হ্যা ! জানি কিন্তু এগুলো এত ভাবিনি ।
উসমান: আপনার যদি বিশ্বাস না হয় যে , আমি সুনানু নাসাই এর, এভিডেন্স ভুল দিচ্ছি….যা হাদিসে নেই এসব যা আমি বলছি, তাহলে এই লিংক এ চলে জান সুনানু নাসাই ডাওনলোড করে দেখুন ।
https://www.mediafire.com/file/efw5cshy5rzhxey/sunanenasaisharif-part-03.pdf/file
কতোয়াল মুহুর্তের মধ্যে এটির সত্যতা যাচাই করলেন ! ওমা সে কি ! সত্যই মিলে গেল । ইসলামিক ফাউন্ডেশন লিখা ! এটা তো তারই দেশের ।
কতোয়াল একটি একটি করে বাক্য পরলো নিজে নিজে । আর মাওলানা লক্ষ্য করলো তার গায়ের পশম খাড়া হয়ে গেল ।
মাওলানার মুখের দিকে তাকাতেই মাওলানা উসমান বললেন: কতোয়াল সাহেব আলেমদের ঘুম আপনাদের মত বিল্ডিং বাড়িতে হয় না । বিবি নিয়ে আরামচে আপনারা ঘুমান আমাদের তা হয় না । আমাদের চিন্তায় রাতে ঘুম আসেনা ।দাড়িয়ে যায় তাহাজ্জুদে ! আমাদের দু:খ জাতি শুনলে তবে তো বুঝবে । খামুখা গরুর মত ভ্যবানী দিয়ে হাদীয়া ৫০০ টাকা নিয়ে তো লাভ নেই ।
কতোয়াল সাহেব আবার বইটির দিকে তাকালো । দেখলো সে ঠিকই পরেছে সে । মোটেও ভূল পরেনাই । তিনি ঠিকই পরলেন । তিনি বললেন: আপনাকে অবিশ্বাস করতে পারি কিন্তু আল্লাহ রসূল সা: এর হাদীস কিভাবে অশ্বিকার করবো ! কখন হবে সেই যুদ্ধ ?
উসমান: খুবই নিকটে । শাহ নিয়ামত উল্লাহ সাহেবের সেই ভবিষ্যত বাণীতে সেই শাসকের প্রথম অক্ষর ও শেষের অক্ষর দেয়া আছে । আমি আমার মাহফিলে এতদূর বলিই নাই তার আগেই গ্রেফতার হয়েছি ।
কতোয়াল: আপনার নিরাপত্তা আমি দিবো আমাকে বলুন সেই শাসকের নাম কি ?
উসমান মৃদ্যূ হেসে বলল: জনাব ! এক রাত্রেই সব ভবিষ্যতবাণী শুনলে হজম করতে পারবেন না । আমি চাইনা আপনার রাতের ঘুম নষ্ট হোক । আপনারা এগুলো সজ্য করতে পারবেন না ।
কতোয়াল সাহেব মরিয়া হয়ে গেলেন । আবার বললেন: না সাহেব ! আমি জানতে চাই মেহেরবাণী করে বলুন ।
উসমান: তার আগে শাহ নেয়ামত উল্লাহ অনেক ভবিষ্যত বাণী বলেছে । প্রথম বিশ্ব যুদ্ধ হবে সেটি তিনি ৮৫০ বছর আগেই বলে দিয়েছেন । কতজন মরবেন তাও বলে দিয়েছেন । কত বছর পর আবার ২য় বিশ্ব যুদ্ধ হবেন তাও বলে দিয়েছেন । এগুলো সেই ভবিষ্যতবাণী বলে দেওয়া হয়েছে সেই কিতাবের মদ্ধ্যে । এসমস্ত বই আমার ঘরে যে ঘরে, আমি রিসার্চ করি সেখানে আছে ।
কতোয়াল বেশ চিন্তায় পরে গেল । ভাবলো “করছে কি ! এতদিন এত নামায এত হজ্জ এত কিছু করলাম এত বই পরলাম অথচ, এগুলো পেলাম না !
মাওলানা উসমান তিনি বললেন: কতোয়াল সাহেব আপনি যা মনে মনে ভাবছেন তার উত্তর হল: আপনারা যেসব আলেমদের চারপার্শে চলাফেরা করেন তারা দরবারী আলেম । এরা সল্প মূল্যে নিজেদের বিত্রি করাইতে চায় নিজেদের ঈমান । এজন্য হক্ব জেনেও তা প্রচার করেনা ।
কতোয়াল: তাহলে এত কিছু যদি ৮০০ বছর আগেই বলে থাকে তাহলে বিশ্বের মানুষ জেনে যুদ্ধ করল কেন ১ম ও ২য় বিশ্ব যুদ্ধ ?
উসমান বলল: সাহেব ! কোরআন শরিফ সত্য ছিল আছে এবং থাকবে , এটা জেনেও আবু জাহেল কেন বিরুধীতা করেছিল ?
কতোয়াল ভাবলো লোকটা সত্যই একটা মিরাকল ! বলল: Thats Cleared ! কিন্তু ভবিষ্যত বাণী গুলো না শুনা পর্যন্ত আমি যেতে চাচ্ছিনা ।
উসমান বলল: সাহেব , আমি জানি ! আজকের মনে আপনি নিশ্চিন্তে শুয়ে পরুন পরে যদি দেখা হয় , এ বিষয়ে আপনার সাথে আমি আলোচনা করবো । আমার আল্লাহ পা’ক আমাকে ডাকছে ।
কতোয়াল অবাক হয়ে গেল । সে অবাক হয়ে বলল: আল্লাহ ডাকছে মানে ?
মাওলানা উসমান তার এক হাত খোলা আসমান এর দিকে শাহাদত আংগুল উচু করে ধরলো । আর সাথে সাথে জেলখানার উচু মাটির মিনার থেকে মুয়াজ্জিন আজান দিতে লাগলো “আল্লাহ হুয়াকবার আল্লাহ হুয়াকবার”
কতোয়ালের মনে হয় কলিজা গলার কাছে চলে এলো । হাত টা উসমান উচু করে ছিল , আজান শুরু হওয়ার আগে, তার ঠিক পরেই আজান শুরু হল । আজান শেষ হলে মাওলানা তার জবাব দিয়ে দরুদ শরীফ এবং আজানের দোয়া পরা শেষ করে বললেন: আজ ফজরের ওয়াক্ত হয়েছে মেহেরবাণী করে আমাকে নামাজের স্থান দেখিয়ে দিন ।
কতোয়াল বলল: আপনি হাত তোলার পর কেন আজান শুরু হল সেটা বলুন ?
মাওলানা বললেন: নিয়মিত নামাজ পরতে শুরু করুন নিজেই বুঝতে পারবেন মুয়াজ্জিন কোন সময় আজান দিচ্ছে আর আল্লাহ পা’ক নামাজের জন্য কোন সময় আপনাকে ডাকতেছে ।
কতোয়াল মনে হয় তার নিচ থেকে মাঠি ভেংগে গেল । মাথায় আকাশ ভেংগে পরলো । তার ঈমান সে নষ্ট করেছে যৌবণে নামায না আদায় করে । কতোয়ালের আগে মাওলানা উসমান হাটতে লাগলো । স্লো মশানে কতোয়াল ভাবতে লাগলো এই মানুষ কে আমরা কারাগারে রেখে দিয়েছি কোন উদ্দেশ্য । যার কথায় মানুষ কুলি মজুর , টোকায় , মুসলিম , অমুসলিম রাজা-বাদশা হাজারো লাখো জনতা যার কথা শুনার জন্য বসে থাকে ঘন্টার পর ঘন্টা বিরক্ত নেই । ঠিক তেমনই কতোয়ালেরও মনে হয় নাই কথন এশার পর আসলো আর কখন , ফজরের ওয়াক্ত হয়ে গেল ।
—————————————————-চলবে———————————————————————————————————————–
বি:দ্র: সম্মানীত প্রাণ-প্রিয় ভাই ও েবোনেরা , একটি পর্ব লিখতে অনেক কষ্ট হয় । যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে কমেন্ট করে ..পরবর্তী পর্ব লিখার আশ্শাষ দিন । আল্লাহ হাফেজ !
কেউ কি msbangla.info সাইটের থিম এর নাম বলতে পারবেন???
আর এটা কি প্রিমিয়াম নাকি ফ্রি…???
site link— https://www.msbangla.info
কেউ কি msbangla.info সাইটের থিম এর নাম বলতে পারবেন???
আর এটা কি প্রিমিয়াম নাকি ফ্রি…???
site link— https://www.msbangla.info