Assalamualikumসবাই কেমন আছেন…..? আশা করি সবাই ভালো আছেন । আমি আল্লাহর রহমতে ভালোই আছি ।আসলে কেউ ভালো না থাকলে TrickBD তে ভিজিট করেনা ।তাই আপনাকে TrickBD তে আসার জন্য ধন্যবাদ ।ভালো কিছু জানতে সবাই TrickBD এর সাথেই থাকুন ।

আজকে আমরা আপনাদের মাঝে কোরআনে আলো এ পর্বে ১টি গুরুত্বপূর্ণ কিছু হাদিস নিয়ে আসলাম। এই হাদিসে মদীনার পথে পর্ব ১ জানতে পারবো। ঘটনাটি অনেক বড় তাই সবটুকু লিখতে পারিনি। পরের টুকু পরবর্তী পর্বে দেওয়া হবে ইনশাআল্লাহ।

মদীনার পথে পর্ব ১

রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) মক্কার কুরাইশদের অত্যাচার-নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে সেখান থেকে অন্যত্র হিজরতের জন্য আল্লাহর নির্দেশের অপেক্ষায় থাকেন। অবশেষে আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্দেশ আসলে তিনি আবূবকর (রাঃ)-কে সাথে নিয়ে মদীনার পথে রওয়ানা হন। পিছনে শত্রু, সামনে বন্ধুর পথ। এমতাবস্থায় আল্লাহর উপর সুদৃঢ় আস্থা ও নিশ্চিন্ত ভরসা রেখে সম্মুখে অগ্রসর হন। অবশেষে পৌঁছে যান মনযিলে মাকছূদে। এদিকে রাসূলের আগমন বার্তা শুনে এতদিন যারা ছিল অপেক্ষমান, তাদের প্রতীক্ষার প্রহর শেষ হয়। মদীনায় বয়ে যায় আনন্দের বান। মদীনার পথে রাসূল (ছাঃ)-এর বিপদসংকুল দীর্ঘ সফরের বর্ণনা সম্পর্কে এ হাদীছ।-

নবীপত্নী আয়েশা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আমার মাতা-পিতাকে কখনো ইসলাম ছাড়া অন্য কোন দ্বীন পালন করতে দেখিনি এবং এমন কোন দিন কাটেনি যেদিন সকালে কিংবা সন্ধ্যায় রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)আমাদের বাড়িতে আসেননি। যখন মুসলমানগণ অতিষ্ঠ হয়ে পড়লেন, তখন আবূবকর (রাঃ)হিজরত করে আবিসিনিয়ায় যাওয়ার জন্য বের হ’লেন। শেষে ‘বারকুল গিমাদ’ পৌঁছলে ইবনু দাগিনার সাথে তাঁর সাক্ষাৎ হয়। সে ছিল তার গোত্রের নেতা। সে বলল, হে আবূবকর! কোথায় যাচ্ছেন? উত্তরে আবূবকর (রাঃ) বললেন, আমার স্ব-জাতি আমাকে বের করে দিয়েছে। তাই আমি মনে করছি, পৃথিবীতে ঘুরে বেড়াব এবং আমার প্রতিপালকের ইবাদত করব।

ইবনু দাগিনা বলল, হে আবূবকর! আপনার মত ব্যক্তি (দেশ থেকে) বের হ’তে পারেন না এবং আপনাকে বের করেও দেয়া যেতে পারে না। আপনি তো নিঃস্বদের জন্য উপার্জন করে দেন, আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করেন, অক্ষমদের বোঝা নিজে বহন করেন, মেহমানদের আপ্যায়ন করে থাকেন এবং সত্য পথের পথিকদের বিপদাপদে সাহায্য করেন। সুতরাং আমি আপনাকে আশ্রয় দিচ্ছি, আপনাকে যাবতীয় সহযোগিতার ওয়াদা করছি। আপনি ফিরে যান এবং নিজ শহরে আপনার রবের ইবাদত করুন।আবূবকর (রাঃ) ফিরে আসলেন। তাঁর সঙ্গে ইবনু দাগিনাও আসল। ইবনু দাগিনা বিকাল বেলা কুরাইশের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের কাছে গেল এবং তাদেরকে বলল, আবূবকরের মত লোক দেশ থেকে বের হ’তে পারে না এবং তাকে বের করেও দেয়া যায় না। আপনারা কি এমন ব্যক্তিকে বের করবেন, যিনি নিঃস্বদের জন্য উপার্জন করেন, আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করেন, অক্ষমের বোঝা নিজে বহন করেন, মেহমানদের আপ্যায়ন করেন এবং ন্যায়ের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকার কারণে বিপদ আসলে সাহায্য করেন। ইবনু দাগিনার আশ্রয়দান কুরাইশরা মেনে নিল এবং তারা ইবনু দাগিনাকে বলল, তুমি আবূবকরকে বলে দাও, তিনি যেন তাঁর রবের ইবাদত তাঁর ঘরে করেন। ছালাত সেখানেই আদায় করেন, ইচ্ছা মাফিক কুরআন তিলাওয়াত করেন। কিন্তু এর দ্বারা আমাদের যেন কষ্ট না দেন। আর এসব ব্যাপার যেন প্রকাশ্যে না করেন। কেননা আমরা আমাদের মেয়েদের ও ছেলেদের ফিতনায় পড়ে যাওয়ার ভয় করি। ইবনু দাগিনা এসব কথা আবূবকর (রাঃ)-কে বলে দিলেন। সে মতে কিছুকালআবূবকর (রাঃ) নিজের ঘরে তাঁর রবের ইবাদত করতে লাগলেন। ছালাত প্রকাশ্যে আদায় করতেন না এবং ঘরেই কুরআন তিলাওয়াত করতেন। এরপর আবূবকরের মনে খেয়াল জাগল। তাই তিনি তাঁর ঘরের পার্শ্বেই একটি মসজিদ তৈরী করে নিলেন। এতে তিনি ছালাত আদায় করতে ও কুরআন পড়তে লাগলেন। এতে তাঁর কাছে মুশরিকা মহিলা ও যুবকরা ভীড় জমাতে লাগল। তারা আবূ বকর (রাঃ)-এর একাজে বিস্ময়বোধ করত এবং তাঁর দিকে তাকিয়ে থাকত। 

আবূবকর (রাঃ) ছিলেন অধিক ক্রন্দনকারী ব্যক্তি, তিনি যখন কুরআন পড়তেন তখন তাঁর অশ্রু সামলিয়ে রাখতে পারতেন না। এ ব্যাপারটি মুশরিকদের নেতৃস্থানীয় কুরাইশদের ভীত করে তুলল এবং তারা ইবনু দাগিনাকে ডেকে পাঠাল। সে আসলে তারা তাকে বলল, তোমার আশ্রয় প্রদানের কারণে আমরাও আবূবকরকে আশ্রয় দিয়েছিলাম এই শর্তে যে, তিনি তাঁর রবের ইবাদত তাঁর ঘরে করবেন। কিন্তু সে শর্ত তিনি ভঙ্গ করেছেন এবং নিজ গৃহের পাশে একটি মসজিদ তৈরী করে প্রকাশ্যে ছালাত ও তিলাওয়াত শুরু করেছেন। আমাদের ভয় হচ্ছে, আমাদের মহিলা ও সন্তানরা ফিতনায় পড়ে যাবে। কাজেই তুমি তাঁকে নিষেধ করে দাও। তিনি তাঁর রবের ইবাদত তাঁর গৃহের ভিতর সীমাবদ্ধ রাখতে চাইলে, তিনি তা করতে পারেন। আর যদি তিনি তা অমান্য করে প্রকাশ্যে তা করতে চান, তবে তাঁকে তোমার আশ্রয় প্রদান ও দায়-দায়িত্ব ফিরিয়ে দিতে বল। আমরা তোমার আশ্রয় দানের ব্যাপারে বিশ্বাসঘাতকতা করা অত্যন্ত অপসন্দ করি। আবার আবূবকরকেও এভাবে প্রকাশ্যে ইবাদত করার জন্য ছেড়ে দিতে পারি না।

আয়েশা (রাঃ) বলেন, ইবনু দাগিনা এসে আবূ বকর (রাঃ)-কে বলল, আপনি অবশ্যই জানেন যে, কী শর্তে আমি আপনার জন্য ওয়াদাবদ্ধ হয়েছিলাম। আপনি হয় তাতে সীমিত থাকবেন, অন্যথা আমার যিম্মাদারী আমাকে ফেরৎ দিবেন। আমি একথা মোটেই পসন্দ করি না যে, আমার সাথে চুক্তিবদ্ধ এবং আমার আশ্রয়প্রাপ্ত ব্যক্তির প্রতি আমার বিশ্বাসঘাতকতার অপবাদ আরববাসীর নিকট প্রকাশিত হোক। আবূবকর (রাঃ) তাকে বললেন, আমি তোমার আশ্রয় তোমাকে ফিরিয়ে দিচ্ছি। আমি আমার আল্লাহর আশ্রয়ের উপর সন্তুষ্ট আছি। এ সময় নবী করীম (ছাঃ) মক্কায় ছিলেন। নবী করীম (ছাঃ) মুসলমানদের বললেন, আমাকে তোমাদের হিজরতের স্থান (স্বপ্নে) দেখানো হয়েছে। সে স্থানে খেজুর বাগান রয়েছে এবং তা দু’টি পাহাড়ের মাঝে অবস্থিত। এরপর যাঁরা হিজরত করতে চাইলেন, তাঁরা মদীনার দিকে হিজরত করলেন। আর যাঁরা হিজরত করে আবিসিনিয়ায় চলে গিয়েছিলেন, তাঁদেরও অধিকাংশ সেখান হ’তে ফিরে মদীনায় চলে আসলেন। আবূবকর (রাঃ)ও মদীনায় যাওয়ার প্রস্ত্ততি নিলেন। তখনরাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাঁকে বললেন, তুমি অপেক্ষা কর। আশা করছি আমাকেও অনুমতি দেয়া হবে। আবূবকর (রাঃ) বললেন, আমার পিতা আপনার জন্য কুরবান হোক! আপনিও হিজরতের আশা করছেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ। তখন আবূবকর (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর সাহচর্য পাওয়ার জন্য নিজেকে হিজরত হ’তে বিরত রাখলেন এবং তাঁর নিকট যে দু’টি উট ছিল এ দু’টিকে চার মাস পর্যন্ত বাবলা গাছের পাতা খাওয়াতে থাকেন।

ইবনু শিহাব উরওয়াহ (রাঃ) সূত্রে আয়েশাহ (রাঃ) হ’তে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, ইতিমধ্যে একদিন আমরা ঠিক দুপুর বেলায়আবূবকর (রাঃ)-এর ঘরে উপবিষ্ট ছিলাম। এমন সময় এক ব্যক্তি এসে আবূবকরকে খবর দিল যে, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) মাথা আবৃত অবস্থায় আসছেন। সেটা এমন সময় ছিল যে, এ সময় তিনি পূর্বে কখনো আমাদের এখানে আসেননি।আবূবকর (রাঃ) তাঁর আসার কথা শুনে বললেন, আমার মাতাপিতা তাঁর প্রতি কুরবান হোক। আল্লাহর কসম! তিনি এ সময় নিশ্চয়ই কোন গুরুত্বপূর্ণ কারণেই আসছেন। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) পৌঁছে অনুমতি চাইলেন। তাঁকে অনুমতি দেয়া হ’ল। ঘরে প্রবেশ করে নবী করীম (ছাঃ)আবূবকরকে বললেন, এখানে অন্য যারা আছে তাদের বের করে দাও।

আবূবকর (রাঃ)বললেন, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! আমার পিতামাতা আপনার প্রতি কুরবান হোক! এখানে তো আপনারই পরিবার। তখন তিনি বললেন, আমাকেও হিজরতের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।আবূ বকর (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! আমার পিতামাতা আপনার জন্য কুরবান হোক! আমি আপনার সফরসঙ্গী হ’তে ইচ্ছুক।রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, ঠিক আছে।আবূবকর (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! আমার পিতামাতা আপনার জন্য কুরবান হোক! আমার এ দু’টি উট হ’তে আপনি যে কোন একটি নিন।

রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, তবে মূল্যের বিনিময়ে। আয়েশা (রাঃ) বলেন, আমরা তাঁদের জন্য যাবতীয় ব্যবস্থা অতি দ্রুত সম্পন্ন করলাম এবং একটি থলের মধ্যে তাঁদের জন্য খাদ্যসামগ্রী গুছিয়ে দিলাম। আমার বোন আসমা বিনতে আবূবকর (রাঃ) তার কোমরবন্ধের কিছু অংশ কেটে সে থলের মুখ বেঁধে দিলেন। এ কারণেই তাঁকে ‘জাতুন নেতাক’ (কোমরবন্ধ ওয়ালী) বলা হ’ত। আয়েশা (রাঃ)বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ও আবূবকর (রাঃ)ছাওর পর্বতের একটি গুহায় আশ্রয় নিলেন। তাঁরা সেখানে তিনটি রাত অবস্থান করলেন।আব্দুল্লাহ ইবনু আবূবকর (রাঃ) তাঁদের পাশেই রাত্রি যাপন করতেন। তিনি ছিলেন একজন তীক্ষ্ণ বুদ্ধিসম্পন্ন তরুণ। তিনি শেষ রাত্রে ওখান হ’তে বেরিয়ে মক্কায় রাত্রি যাপনকারী কুরাইশদের সঙ্গে মিলিত হ’তেন এবং তাঁদের দু’জনের বিরুদ্ধে যে ষড়যন্ত্র করা হ’ত তা মনোযোগ দিয়ে শুনতেন ও স্মরণ রাখতেন। যখন অাঁধার ঘনিয়ে আসত তখন তিনি সংবাদ নিয়ে তাঁদের উভয়ের কাছে যেতেন। আবূবকর (রাঃ)-এর গোলাম আমির ইবনু ফুহাইরাহ তাঁদের কাছেই দুধালো বকরীর পাল চরিয়ে বেড়াত। রাতের কিছু সময় চলে গেলে পরে সে বকরীর পাল নিয়ে তাঁদের নিকটে যেত এবং তাঁরা দু’জন দুধ পান করে আরামে রাত্রিযাপন করতেন। তাঁরা বকরীর দুধ দোহন করে সাথে সাথেই পান করতেন। তারপর শেষ রাত্রে আমির ইবনু ফুহাইরাহ বকরীগুলি হাঁকিয়ে নিয়ে যেত। এ তিন রাতের প্রতি রাতে সে এমনই করল।

রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ও আবূবকর (রাঃ) বনী আবদ ইবনু আদি গোত্রের এক ব্যক্তিকে মজুরীর বিনিময়ে ‘খিররীত’ (পথ প্রদর্শক) নিযুক্ত করেছিলেন। দক্ষ পথপ্রদর্শককে ‘খিররীত’ বলা হয়। আছ ইবনু ওয়ায়েল আস-সাহমী গোত্রের সাথে তার বন্ধুত্ব ছিল। সে ছিল কাফির কুরাইশদের ধর্মাবলম্বী। তাঁরা উভয়ে তাকে বিশ্বস্ত মনে করে তাঁদের উট দু’টি তার হাতে দিয়ে দিলেন এবং তৃতীয় রাত্রের পরে সকালে উট দু’টি ছাওর গুহার নিকট নিয়ে আসার প্রতিশ্রুতি গ্রহণ করলেন। আর সে যথাসময়ে তা পৌঁছে দিল। আর আমির ইবনু ফুহাইরাহ ও পথপ্রদর্শক তাঁদের উভয়ের সঙ্গে চলল। প্রদর্শক তাঁদের নিয়ে উপকূলের পথ ধরে চলতে লাগল।

আশা করি সকলের ভালো লেগেছে। আর সবাই আমল করার চেষ্টা করবেন।

আমাদের ফেসবুক group এ জয়েন হতে পারেন এখানে প্রতিদিন ইসলামিক সম্পর্কে পোষ্ট করা হয় কোরআনের আলো

??পোষ্টি কেমন লাগলো কমেন্ট করে জানাবেন। এবং লাইক দিবেন ??

11 thoughts on "??[কোরআনের আলো পর্ব ১২]এসো কোরআন ও হাদিসে আলোকে জীবনের পরিচালনা করি??"

  1. Mr.TD420 Contributor says:
    Alhamdulillah Shikkhoniyo post korte thakun! ????
    1. MD Shakib Hasan Contributor Post Creator says:
      ইনশাআল্লাহ ❤
    1. MD Shakib Hasan Contributor Post Creator says:
      ?
    1. MD Shakib Hasan Contributor Post Creator says:
      Thank You ❤
  2. XR SABBIR KHAN Contributor says:
    Chaliye jan vai
    1. MD Shakib Hasan Contributor Post Creator says:
      ইনশাআল্লাহ
  3. Sakib Contributor says:
    ads er jonno ar trickbd te aste mon cay na,iman er khoti hocce onek ads dekhe,
    1. XR SABBIR KHAN Contributor says:
      Hmm right bro
    2. MD Shakib Hasan Contributor Post Creator says:
      Hmmm

Leave a Reply