নিজেকে মেদহীন ঝরঝরে সুন্দর করে
তুলতে কেউ কেউ না বুঝে শুরু করেন কম
খাওয়া। কম খাওয়ায় এবং প্রায়ই না
খেয়ে খেয়ে হয়তো তার ওজন কমছে
ঠিকই। কিন্তু একটি পরিকল্পিত সুষম
খাদ্যতালিকা না হওয়ার ফলে বেশি
দিন ধরে কম খাবারের নিয়ন্ত্রণটা
চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হয় না। তাই বাধ্য
হয়েই আগের খাদ্যাভ্যাসে ফিরে যেতে
বাধ্য হন অনেকেই। এর ফলে শরীরে নানা
রকম ক্ষতিকর প্রভাব পড়তে শুরু করে বলে
জানালেন বারডেম হাসপাতালের প্রধান
পুষ্টিবিদ আখতারুন নাহার আলো।
‘যখন একজন ব্যক্তি কম কম খাওয়ার একটা
চর্চা শুরু করেন, তখন থেকেই পাকস্থলী
কম খাবারেই অভ্যস্ত হয়ে ওঠে। তারপর
আবার যখন বেশি মাত্রায় খাবার গ্রহণ
করা শুরু করলেন, তখন পাকস্থলী আর
বেশি খাবারটা আর গ্রহণ করতে পারবে
না। আবার বেশি খাবার খেতে শুরু করলে
তখন একটা বিরূপ প্রতিক্রিয়া শুরু হয়
শরীরে। হজমশক্তি কমে যাবে। বেশি
খাবার খেলেই বমি বমি ভাব হবে, বমি
হয়ে যাবে, ডায়রিয়া হবে।’ বললেন
আখতারুন নাহার আলো। এর ফলে শরীর
দুর্বল হয়ে পড়বে, শরীরের কর্মক্ষমতা
কমে যাবে, মাথা ঘুরতে থাকবে, চুল পড়ে
যাবে, হাতের নখ সাদা বিবর্ণ হয়ে
হয়ে যাবে। খাবারের প্রতি অনীহা
তৈরি হবে, দৃষ্টিশক্তি কমে যাবে এবং
আগের তুলনায় ওজন আরও বেড়ে যাবে।
এসব সমস্যা জেঁকে বসে শরীরের চাহিদা
অনুযায়ী না খাওয়ার ফলে। আমাদের
বয়স ও শরীরের গঠন অনুযায়ী প্রত্যেকের
খাবারের নির্দিষ্ট চাহিদা রয়েছে। এই
চাহিদা অনুযায়ী খাবার গ্রহণ করা অতি
জরুরি। কম বা বেশি খাবার দুটোই
আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।
খাওয়ার নিয়ন্ত্রণের সময় খেয়াল রাখতে
হবে শরীরের চাহিদা ঠিকমতো মিটছে
কি না। খাবারের সব ধরনের খাদ্য
উপাদান উপস্থিত আছে কি না। খাবারে
প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, খনিজ, আমিষ,
স্নেহ ইত্যাদি সব উপাদান সঠিক মাত্রায়
উপস্থিত থাকলেই কেবল সেটি সুষম খাদ্য
হবে। আগে যেখানে তিনটা রুটি বা এক
প্লেট ভাত খেতেন, সেখানে দুটো বা
দেড়টা রুটি বা হাফপ্লেট ভাত খান।
কারণ, ভাত-রুটিতে ক্যালরির পরিমাণ
বেশি থাকে। যেটুকু খাবার কমিয়ে
দিচ্ছেন, সেটুকু ফলমূল, ফলের রস, সবুজ
শাকসবজি, সালাদ ইত্যাদি খেয়ে পূরণ
করে নিন।
তবে খেয়াল রাখতে হবে, ফলমূল, সবজি,
দুধ যেন কোনোভাবেই বাদ না পড়ে
খাদ্যতালিকা থেকে। প্রোটিন খাওয়া
বাদ দেওয়া যাবে না কিছুতেই, তাহলে
শরীরের কোষগুলোতে পানি জমা হয়ে
সমস্যার তৈরি হবে এবং ওজনও বেড়ে
বেলা একেবারেই না খেয়ে কাটিয়ে
দেন। এটা মোটেও ঠিক নয়। রাতে
পুরোপুরি না খেয়ে ঘুমালে দীর্ঘসময় ধরে
শরীরে কোনো ধরনের খাদ্য উপাদান
ঢুকতে পারে না। এটা স্বাস্থ্যের জন্য
ক্ষতিকর। তাই চেষ্টা করতে হবে কিছু না
কিছু খেয়ে ঘুমাতে হবে এবং দুই-তিন
ঘণ্টার বেশি না খেয়ে থাকা ঠিক হবে
না। প্রচুর পানি পান করুন। নিয়মিত
ব্যায়াম করুন, হাঁটুন, না হয় সাঁতার কাটুন;
এতে শরীর-মন দুই-ই সুস্থ থাকবে।
তাই না জেনে না বুঝে কম খেয়ে বা না
খেয়ে ওজন কমানো নয়। একটি
পরিকল্পিত সুষম খাদ্যতালিকা প্রস্তুত
করে খাদ্য নিয়ন্ত্রণ শুরু করা উচিত।
শরীর-মনের সঙ্গে ভালোভাবে মানিয়ে
যাবে এবং খাদ্য নিয়ন্ত্রণ করা ছেড়ে
দেওয়ার প্রয়োজন হবে না।
শেষে একটা অনুরোধ আমার সাইটে একবার ঘুরে আসবেন Tune4bd.com