[কথা দিয়েছিলাম যে ২০তম পোস্টের ভেতর টেলিকাইনোসিস নিয়ে আলোচনা করবো তাই সময়ের ব্যতিচার হওয়ায় বিলম্ব স্বীকার করে ক্ষমার চোখে দেখার অনুরোধ রইলো; আপাতত ২১তম পোস্ট করা হলো, ২০ তম পোস্টেই পাবেন টেলিকাইনোসিস]

প্রথমেই বলে নিই যে আমার এই লেখাটি পড়ে আপনি সত্যি সত্যিই আমেরিকা যেতে পারবেন না তবে লেখাটির শেষ পর্যন্ত পড়লে নিশ্চিত বাংলাদেশে থেকেই ঘরে বসে আপনি আমেরিকার যাওয়ার আফসোস ঘুচাতে পারবেন এবং আমেরিকার মতোনই একটা স্মার্ট লাইফ লীড করতে পারবেন।

স্বপ্নের আমেরিকা আসলে কতোটুকু বাস্তব?
ইনশাল্লাহ আগামী বছরের শুরুর দিকে কোন একটা সময় আমি আমেরিকার ম্যারিল্যান্ড (রিলেটিভের নিকট) চলে যাবো; বলতে পারেন প্রবাসী জীবন আরকি। তো আসুন সেই স্বপ্নরাজ্য আমেরিকা আসলে কতোটুকু বাস্তব আর কতোটুকু কল্পনার রং মেশানো সেটাই বিচার করি….
আমেরিকা আসলে কি?? বিশ্বাস করুন…আমেরিকা স্পেশাল কিচ্ছু না, একটা বিশাল আয়তনের দেশ (সকল স্টেটের সমন্বয়) মাত্র। যেখানে বাংলাদেশের মতোই মানুষেরা খাবার খায়, বাচ্চারা পড়াশোনা করে, কর্মজীবীরা রোজ নিয়ম করে সকাল বিকাল অফিস করেন আবার রাতের খাবার খেয়ে বালিশে মাথা রেখেই অক্কা পান আইমিন ঘুমিয়ে পড়েন।
তাহলে তফাত’টা কোথায়?
তফাতটা হলো চিন্তাধারায়, কথা- বার্তায়,জীবনযাপন আর মোস্ট ইম্পরট্যান্ট’লি পকেটের টাকায়!
কিন্তু আপনি যদি দেশে বসেই আমেরিকার মতোন ঐরকম একটা ফিচার আর সুযোগ সুবিধা পান তাহলে কি আমেরিকার যাবার দুঃখ ঘুচবে না??!

আজ থেকে এখন থেকেই বদলে ফেলুন নিজেকে!
সবার আগে এটা বিশ্বাস করুন “একজন আমেরিকান আর একজন বাংলাদেশীর মাঝে ফিজিকাল কোন তফাত নেই” যতেটুকু পার্থক্য সেটা হলো সাইকোলজিক্যাল [রং ফর্সাকারী ফেরার এন্ড লাভলী ক্রিমের বিজ্ঞাপন বাদে]।
মনে করুন আপনি আপনার গার্লফ্রেন্ডকে আদর করে ডাকেন “বাবু” সেখানে একজন আমেরিকান ছেলে হলে তার জিএফ’কে বলতো “হেই বেবি” তাইতো??
বাবু আর বেবী যেটাই হউক ভাষার অর্থে কোন তফাত নেই ; তফাতটা হলো মাথা আর মনের মানসিকতা’তে!
তাইবলে আমি আবার আপনাকে “বাবুর বদলে বেবী” বলা শেখাচ্ছি না, আমি আপনাকে চিন্তা চেতনায় স্মার্ট হওয়া শেখাচ্ছি মাত্র।
আমাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো আমাদের মনে; আমরা সবকিছুই নেগেটিভ করে দেখতে বা চিন্তা করতে পছন্দ করি অথচ আমাদের সকলের উচিত সর্বদায় পজেটিভ ইনটেনশন থাকা।
মনে করুন কাল আপনার এক্সাম আর এখনো পুরো বই পড়া বাকি, আপনি তো এক প্রকার ভাগ্য মেনেই নিয়েছেন যে আপনি ফেইল করবেন। অথচ আপনি যদি শুধুমাত্র পজেটিভ ইনটেনশন নিয়ে সারারাত দুঃশ্চিন্তা করার পরিবর্তে মাত্র একটি পাতাও পড়তেন তাহলেও আপনার ভেতর নূন্যতম হলেও কিছু জ্ঞান ঢুকতো…তাতে হয়তো আপনি এক্সামে পাশ করতেন না সত্য তবে নিশ্চিত নিজের মনের স্যাটিসফেকশনে লেটার মার্ক পেতেন!সুতরাং আজ থেকে যেকোনো বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা করবেন তবে দুঃশ্চিন্তা করবেন না।

আমরা খুব অলস প্রকৃতির খরগোশ যারা এক পা এগিয়েই দুই পা এলিয়ে বিশ্রান্ত নিতে পছন্দ করি; আমাদের উচিত দিনের শতভাগ সময়কে কাজের মাঝে নিজেকে উজার করে দেওয়া তাহলেই একটা সময় সফলতা আসবে, শুধুমাত্র রাত’কেই বিশ্রাম নেবার জন্য বরাদ্দ রাখুন।
আমাদের আত্মসম্মান খুবই কম আর ইগো সবচেয়ে বেশী; এটা আমাদের জন্য সবচেয়ে ক্ষতিকর!
কোন একটা মেয়ে আপনার প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছে তো আপনি বারবার ভালোবাসার অযুহাতে তার নিকট নানাভাবে নিজেকে জাহির করছেন….মেয়েটা বারবার ঠোট ভেটকিয়ে আপনাকে অবজ্ঞা করছে আর আপনি সেটাকে ভালোবাসা জন্য সেক্রিফাইস ভাবছেন!
হেই ড্যুড…ইউ ডোন্ট ডুয়িং এন্যি সেক্রিফাইস, ইউ হ্যাভ জাস্ট স্লাউটার ইউর সেল্ফ রেস্পেক্টশন!
ইগো হলো আরেকটা মহামারি রোগ যেটা ক্যান্সার এর মতোই আপনাকে তিলে তিলে শেষ করে দিবে, আপনি টেরও পাবেন না; যখন টের পাবেন তখন আর কিছুই করার থাকবে না।
একটা সিম্পল উদাহরণ দিই….মনে করুন আপনি ফেসবুকে ফটো আপলোড করেছেন আর কোন একটা বন্ধু কমেন্ট করলো LOL সেটা দেখেই তো মেজাজ খারাপ। তাকে দেখা হলেই বলবেন যে “তুই আমার ছবিতে ফালতু কমেন্ট করস ক্যান? তুই আর আমার আইডিতে আইব্যি না” কিংবা খুব রাগ হলে ব্লকও মেরে দিবেন তাইতো? এমনি একটা ঘটনা ঘটেছিলো সেই সমসয় ফেসবুকে বাজে কমেন্ট করা নিয়ে স্কুল মেয়েদের মাঝে হাতাহাতি-মারামারি হয়েছিলো এবং সেটা ভাইরালও হয়ে যায়।
সুতরাং এমন সস্তা ইগো বাদ দিন নয়তো ইমোশনে হাবুডুবি খেয়ে আর যাই হউক সফলতার সমুদ্র পাড় হতে পারবেন না।
প্রতিহিংসা পরিহার করতে শিখুন; যেমন একটা মেয়ে হয়তো আপনাকে রিফিউজ করেছে বা ব্রেকআপ হয়েছে এবার তাকে বাস্তবে/ভার্চুয়ালে পচাবেন তাইতো? আচ্ছা না হয় পচাইলেন তাতে কি হবে…বড়জোর তাতে মেয়েটির মন হতে ভালোবাসা না হলেও নূন্যতম সম্মানটুকুও চলে যাবে, সবচেয়ে বড় ক্ষতি তো আপনারই!! সুতরাং হিংসার আগুন আজই মন থেকে নিভিয়ে ফেলুন।

মনে রাখবেন আমেরিকান মানেই যে তারা ১০০ তে ১০০ এমন নয় বরং তাদের মাঝেও রয়েছে উশৃঙ্খলতা আর স্থূলতা: তবে আমি শুধু তাদের চিন্তা চেতনাড মতোই আপনাকে স্মার্ট আর উদার হতে বলছি।
এতে করে হয়তো আপনি আমেরিকা চলে যেতে পারবেন না তবে একজন আমেরিকান মানুষের মতোই উন্নত লাইফ লীড করতে পারবেন।

আপনারা হয়তো জানেন যে দুবাই খুব ধনীদের একটা দেশ যেখানে আমোদ প্রমোদ আর বিলাসিতায় ডুবে থাকে সাদা সাদা জুব্বা পড়া আরাবিয়ান’রা; সেখানে একটা কথা আছে যে “তুমি এতো টাকা ইনকাম করো যেন তাতে দুবাই কিনতে পারে”। ঠিক তেমনি নিজেকে এমন করে গড়ে তুলুন যেন “আমেরিকা স্বয়ং আপনাকে তাদের সিটিজেনস করতে আগ্রহী হয়”!

ফাদার এডভান্স সন!
আমরা অনেক সময় কাউকে রাগ করে বলি “বাপের আগে হাটা পোলা” ঠিক এমনই আপনাকে হতে হবে; তবে বাবা মায়ের অবাধ্য হয়ে নয় বরং চিন্তা চেতনাতে এডভান্স হতে হবে। আপনার বাবা হয়তো ব্যাংকের ক্যাশিয়ার, আপনি যদি ভাবেন যে আপনিও ক্যাশিয়ার জব করবেন তাহলে আপনি বড়জোর কেরানী হতে পারবেন। বাবার চিন্তা চেতনার মাঝে নিজেকে আবদ্ধ রাখবেন না, বাবা হয়তো আপনাকে ডাক্তার বানাতে চায় আর আপনি হতে চান ক্রিকেটার; তাই বাবাকে সম্মানের সহিত আপনার স্বপ্নের কথা বোঝান এবং সেই স্বপ্নের পথে এগিয়ে যান।

টাকা ছাড়া কি ক্যামনে কি??
উপরের এতোসব বকবক করে লাভ নেই যদিনা আপনি টাকা উপার্জন করতে পারেন, তাই আপনি ছাত্র অবস্থাতেই টাকা উপার্জন করতে লেগে পড়ুন। আপনি ক্লাস এইটে থাকলে ক্লাস ফাইভের বাচ্চা টিউশানি করান। আপনার বন্ধুরা মিলে আড্ডাতে ১০ টাকার চা -টা না খেয়ে সেই টাকা দিয়ে একটা প্রজেক্ট তৈরী করুন ।
বারেক সাহেব( বারাক ওবামা) এর মেয়ে যদি স্টুডেন্ট হয়েও ফাস্টফুডের দোকানে চাকুরী করতে পারে তাহলে আপনি কেন পারবেন না? আপনার আর সফলতার মাঝের তফাত হলো এই ইগো; এটাকে অতিক্রম করতে শিখুন।
কল্পনা করুন একটা সময় টাটার মতোন কোম্পানিও শুধুমাত্র একটা ড্রিম থেকে শুরু করেছিলো আর আজ তারা কোটি কোটি টাকার মালিক!
আপনি হয়তো জেনে অবাক হবেন যে গত কয়েক বছরের ১০০ মিলিওন এর মতোন ওয়েবসাইট তৈরী হয়েছে; তাহলে ভেবে দেখুন তো দিনে সংখ্যার অনুপাতে কতোগুলা ওয়েবসাইট তৈরী হয়েছে??!!
আপনিও চাইলে ওয়েব ডেভলপিং শিখতে পারেন আর তাতে ক্যারিয়ার গড়তে পারেন।

হয়তো প্রথম ৭/৮ মাস শিখতে হবে তারপর ইনকাম করতে পারবেন, এই ৭/৮ মাস সময়টা ইনভেস্ট করতে পারলে পুরো লাইফটাই তো গড়ে যাবে, তাহলে ক্ষতি কিসে?!
আপনার আর একজন আমেরিকান ছেলের মাঝের তফাত কতোটা জানেন? আপনি হয়তো ১০ মেগাবাইট কিনে গুগলে গিয়েই লিখেন “…….new video download” অথচ সেই একই সময় একটা আমেরিকান ছেলে গুগল সার্ফিং করে “how to learn….” কি শিখবে সেটা গুরুত্বপূর্ন নয় বরং আপনি যখন মেমরী কার্ডে ভিডিও ডাউনলোড করবেন তখন ছেলেটি তার মাথাতে নলেজ ডাউনলোড করবে…দ্যাটস দ্যা ডিফারেন্স!!
মনে রাখুন আপনি টাকার পিছে ছুটে কখনো টাকার ছোয়া পাবেন না, আপনি জ্ঞানের পিছে ছুটেন টাকায় আপনার পিছে ছুটবে!

অনেক বকবক করলাম, তবে এতোসব বকবকের কোন দাম নেই যদিনা আপনি এগুলো নিজের লাইফে খাটাতে না পারেন ; হয়তো আপনি চাইলেই ভাগ্যতে ডিভি লটারী জিততে পারবেন না তবে চাইলেই আমেরিকান হাই ক্লাস লাইফ লীড করতে পারবেন… আল্লাহ প্রমিস।
আর সবশেষে সফলতার মহান এবং মহৎ সূত্র বলে দিচ্ছি আর তা হলো “সালাত”

আগামী পর্বে ফেসবুক আইডি হ্যাকিং ও টেলিকাইনোসিস নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করবো।

ফেসবুকে আমি→ নিশান আহম্মেদ নিয়ন

আল্লাহ হাফেজ

26 thoughts on "নিয়নবাতি [পর্ব-২১] বিনামূল্যে আমেরিকা যেতে চান? ঘরে বসেই হউক স্বপ্ন পূরন!"

    1. Nishan Ahammed Neon Author Post Creator says:
      ধইন্যো+
  1. Shadin Contributor says:
    অনেক সুন্দর, ভাইয়া।
    আসলে ব্যাপারটাই এমনই।
    1. Nishan Ahammed Neon Author Post Creator says:
      Thanks to comment
  2. MrPsycho Contributor says:
    আপনি আসলেই অসাধারণ ভাই।
  3. Maruf Contributor says:
    আচ্ছা ভাই আমি আসলে ওয়েব ডেভেলপ নিয়ে তেমন অভিজ্ঞ না ।

    আপনি কি আমাকে বলবেন যে । কিভাবে ওয়েব ডেভেলপ শুরু করতে পারি বা কোন ওয়েব থেকে । বিস্তারিত না তবে মোটামুটি বললেই হবে আশা করি

    1. Hasan Mehedi Contributor says:
      W3 schools, mozila development(may b) এখানে শিখার অনেক কিছু আছে।
    2. Kuntal Roy Contributor says:
      আপনি আইটি বারির টিউটোরিয়াল কিনে দেখতে পারেন। ফ্রিতে কম্পলিট গাইডলাইন পাওয়া অসম্ভব।
  4. Rimon814 Contributor says:
    ভাই,
    মনোযোগ এর ডাউনলোড লিনক টা দিতে পারবেন?
    সফলতার জন্য এটাই আমার আগে দরকার………
  5. শিক্ষনীয় পোস্ট দিতে আপনার ক্লোন পাওয়া অসম্ভব।গত কমেন্টের রিপ্লাইতে “হ্যাটস অন” করতে বলেছিলেন।
    তাই আমি আজ হ্যাটস অন করলাম?
  6. Sajeeb Contributor says:
    সুন্দর
  7. Risun02 Contributor says:
    আমেরিকা যেতে কত লাগবে তাহলে?
  8. Mir Mohit Champ Author says:
    পড়ে খুব ভালো লাগলো।
  9. Rifat forazi Contributor says:
    আপনার কথা গুলো অনেক ভালো লাগে
  10. Hasan Mehedi Contributor says:
    কানাডা বা আমেরিকার নাম্বার দিয়ে কিভাবে ফেসবুক আডি খোলা যাবে? যেগুলা অনলাইনে পাওয়া যায়। এটা নিয়ে একটা পোস্ট দিলে ভালো হবে
  11. hasibalislam2000 Contributor says:
    vai fb te request accept e na korle id link deyar dorkar ki? btw it was a very good post
  12. hasibalislam2000 Contributor says:
    vai fb te request accept e na korle id link deyar dorkar ki? btw it was a very good post
  13. Nayeemur Rahman Contributor says:
    2nd time comment korlam apnar Post a.
    Khub valo likhechen onek kichu shikhte parlam .
    nije Poribrton a onek kaje lagbe thanks………?
  14. ????? Contributor says:
    Really good post

Leave a Reply