Story of a serial killer named Pedro Rodrigues Filho, widely known as ‘Brazilian Dexter’.

আসসালামু আলাইকুম।

অন্যান্য সকল ধর্মাবলম্বী ভাইদের জানাই অনেক-অনেক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।

‘ডেক্সটার’, শব্দটার সাথে অনেকেই হয়তোবা পরিচিত আছেন, আবার অনেকের নিকট এটি পুরোপুরি নতুনও হতে পারে। শব্দটি সবথেকে পরিচিত যে কারণে তা হলো, এটি একটি বহুল জনপ্রিয় আমেরিকান টিভি সিরিজ এর নাম। টিভি সিরিজটি নির্মিত হয়েছে আমেরিকান নাট্যকার ও ক্রাইম জনরাভিত্তিক ঔপন্যাসিক জনাব জেফ লিন্ডসে’র (Jeff Lindsay) বিখ্যাত বই Darkly Dreaming Dexter এর কাহিনীর উপর ভিত্তি করে।

আরো পড়ুনঃ

উক্ত টিভি সিরিজটি হতে দেখা যায় এর মূল চরিত্র ডেক্সটার মরগান দ্বৈত জীবন-যাপন করেন। প্রাকাশ্যে সে মায়ামি মেট্রো পুলিশ ডিপার্টমেন্টের ফরেন্সিক বিভাগে কর্মরত একজন স্বাভাবিক মানুষ। কিন্তু তারই আড়ালে সে একজন ঠান্ডা মাথার সিরিয়াল কিলার! অন্যান্য সিরিয়াল কিলারদের মতো তাঁর হত্যাকান্ডেরও একটা প্যাটার্ন আছে, বেছে বেছে সেসকল খুনীদেরকে হত্যা করা যারা আইনের ফাঁকফোকর গলে ফসকে গেছিলো।

যাইহোক, ‘ডেক্সটার’ নিয়ে এসব বলার কারণ হলো- উক্ত কাল্পনিক গল্পের মতো বাস্তব পৃথিবীতেও এমন একজন সিরিয়াল কিলার ছিলেন যিনি মূলত সমাজের আগাছা নির্মূলে অসংখ্য হত্যাকান্ড ঘটিয়েছিলেন। এজন্য তাঁকে বাস্তবের ‘ডেক্সটার’ বলে আখ্যায়িত করে তাঁর হত্যাকান্ডগুলোকে ‘ভালো’ কাজরূপে বিবেচনা করা হয়।

পুরো নাম পেদ্রো রদ্রিগেজ ফিলহো (Pedro Rodrigues Filho), এছাড়াও অবশ্য তিনি পেদ্রিনহো ম্যাটাডোর (Pedrinho Matador) নামেও পরিচিত। পৃথিবীতে আসার সাথে সাথেই তাঁর কঠিন পরিস্থিতির সঙ্গে বসবাস শুরু হয়। ১৯৫৪ সালে ব্রাজিলের মিনাস গেরাইস (Minas Gerais) নামক স্থানে তাঁর জন্ম। গর্ভে থাকাকালীন সময়ে তাঁর মা তাঁর বাবার দ্বারা মারধোরের শিকার হয়েছিলো, এজন্য তিনি আঘাতপ্রাপ্ত খুলি নিয়ে জন্মগ্রহণ করেন।

পেদ্রো রদ্রিগেজ তাঁর প্রথম খুনটি করেন যখন তিনি মাত্র ১৪ বছর বয়সী ছিলেন, খুন হন তাদের শহরের ভাইস মেয়র। রদ্রিগেজের পিতা স্কুলের গার্ড হিসেবে চাকরিরত ছিলেন। স্কুল থেকে খাবার চুরির অভিযোগে উক্ত ভাইস মেয়র তাকে চাকরিচ্যুত করেছিলো। ফলাফলস্বরূপ রদ্রিগেজ সিটি হলের সামনে একটি শটগান দিয়ে তাঁর সিরিয়াল কিলিং জীবনের সূচনা করেন।

তাঁর জীবনের দ্বিতীয় খুনটি করতেও তিনি বেশি সময় নেননি। সে স্কুলের অন্য একজন গার্ডকে হত্যা করেন যাকে প্রকৃত খাবার চোর হিসেবে ধারণা করা হচ্ছিলো।

এরপর তিনি সাও পাওলো শহরের Mogi das Cruzes এলাকায় পালিয়ে যান। সেখানে তিনি একজন ড্রাগ ডিলারকে হত্যা করেন। এবং মারিয়া অ্যাপারেসিডা অলিম্পিয়া (Maria Aparecida Olympia) নামক এক নারীর প্রেমে পড়েন। কিছু গ্যাং সদস্যদের দ্বারা উক্ত নারীর খুন হওয়ার আগ পর্যন্ত তারা একসাথে শান্তিতে বসবাস করছিলেন।

অলিম্পিয়ার মৃত্যু রদ্রিগেজের পরবর্তী অপরাধের বীজ বপণ করে দেয়। অলিম্পিয়ার হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের খুঁজে খুঁজে প্রত্যেককে নির্যাতন করে খুন করলেন। উক্ত গ্যাং সদস্যদের পাকড়াও করে পৃথিবীর বুক থেকে চিরতরে বিদায় দিতে তিনি যেন এক রক্তাক্ত মিশনে নেমেছিলেন।

তাঁর হত্যাকান্ডের পরবর্তী শিকারও ছিলো প্রতিশোধ আদায়ের জন্য। এবার তাঁর শিকার হলো আপন পিতা, যার জন্য জীবনে তিনি প্রথম খুনটি করেছিলেন। রদ্রিগেজের পিতা একটি চাপাতি দ্বারা কুপিয়ে রদ্রিগেজের মাতাকে হত্যা করেছিলো, এতে সে জেলে আটক হয়। রদ্রিগেজ এজন্য জেলে তাঁর বাবার সাথে দেখা করবার ছুতোয় গিয়ে ২২ বার ছুরিকাঘাতে তাঁর বাবাকে হত্যা করেন।

এবারে হত্যাকান্ডের পরে তিনি সম্পূর্ণ নতুন এক নিদর্শন দেখালেন। তিনি তাঁর বাবার হৃৎপিন্ড বের করে কেটে কেটে চর্বন করছিলেন।

এরপর অবশেষে পেদ্রিনহো ম্যাটাডোরকে ১৯৭৩ সালের ২৪শে মে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর তাঁকে পুলিশ ভ্যানে করে নিয়ে যাওয়ার সময় তাঁর সাথে আরো দুজন অপরাধী ছিলো, যার মধ্যে একজন ছিলো ধর্ষক। জায়গামত পৌঁছে পুলিশরা যখন ভ্যানের দরজা খুললো, তারা দেখলো যে রদ্রিগেজ ইতিমধ্যেই উক্ত ধর্ষককে হত্যা করে ফেলেছে।

১৯৭৩ সালে পেদ্রো রদ্রিগেজ ফিলহো

এটা ছিলো সম্পূর্ণ নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা। কারাগারে প্রেরণের পর সে দেখলো তাঁর চারপাশ জুড়েই অপরাধীদের বিচরণ। বেশ তো! ব্যাপারটা যেন রদ্রিগেজের জন্য আরো সহজ হয়ে উঠলো।

সেখানে রদ্রিগেজ কমপক্ষে ৪৭ জন সহ-বন্দীদের হত্যা করলেন। এতে যারা খুন হয়েছে, রদ্রিগেজের মতানুসারে সবার-ই তাদের অপরাধের জন্য মৃত্যুদণ্ড অবধারিতভাবে প্রাপ্য ছিলো। জিজ্ঞাসাবাদে সে আরো স্বীকার করেন যে, অপরাধীদেরকে হত্যা করে তিনি এক প্রকার রোমাঞ্চকর আনন্দানুভূতি লাভ করেন। তাঁর পছন্দের হত্যা পদ্ধতি সম্বন্ধে বলেন, ছুরিকাঘাতে এবং ব্লেড দ্বারা চিরে হত্যা করতে তাঁর বেশি ভালো লাগে।

প্রাথমিকভাবে তাঁকে ১২৮ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছিলো। পরবর্তীতে জেলে থেকে যে অপরাধগুলো করেন এর জন্য তাঁর সাজা বেড়ে দাঁড়ায় ৪০০ বছরে। কিন্তু ব্রাজিলিয়ান আইনানুসারে ৩০ বছরের বেশি কারাদণ্ড দেয়ার নিয়ম নেই। তাই তাঁকে অতিরিক্ত ৪ বছর আটক থাকতে হয়েছিলো কারাগারের ভেতরের হত্যাকাণ্ড গুলোর জন্য। ২০০৭ সালে সে কারাগার হতে মুক্তি পান।

যদিও তিনি নিজে ১০০ টিরও অধিক হত্যাকাণ্ড সম্পন্ন করেছেন বলে দাবী করেন; তবুও প্রমাণের অভাবে তাঁকে কমপক্ষে ৭০টি খুনের জন্য দায়ী করা হয়, যার মধ্যে তিনি ১০টি খুন করেছিলেন ১৮ বছরে পা দেয়ার পূর্বেই। পেদ্রো রদ্রিগেজ ফিলহো এতোগুলো মানুষ হত্যার জন্য ব্রাজিলে কুখ্যাত হলেও, কারো নিকট তিনি আশীর্বাদস্বরূপ; যেহেতু তিনি বহু অপরাধীদেরকে হত্যা করার মাধ্যমে সমাজের আগাছা দূর করেন। কারাগারে তিনি অন্যান্য মারাত্মক অপরাধীদের নিকট ত্রাস ছিলেন।

এজন্য পেদ্রো রদ্রিগেজ ফিলহো বা পেদ্রিনহো ম্যাটাডোরকে বাস্তবের ‘ডেক্সটার’ বা ‘ব্রাজিলিয়ান ডেক্সটার’ হিসেবে অভিহিত করা হয়।

পোস্টটি ভালো না লাগলে দুঃখিত। কোনো ভুল পেলে দয়া করে জানাবেন, আমি অতি শীঘ্র তা সংশোধন করতে চেষ্টা করব; শুধু-শুধু কমেন্টে নিন্দনীয় ভাষা ব্যবহার করে নিজের বংশ সম্বন্ধে অন্যদেরকে খারাপ কিছু ভাবনার সুযোগ দিবেন না।

My Facebook Profile

ধন্যবাদ।।।

15 thoughts on "‘ব্রাজিলিয়ান ডেক্সটার’-খ্যাত সিরিয়াল কিলারের আদ্যোপান্ত"

    1. Md Rasel Hossain Author Post Creator says:
      ধন্যবাদ।
  1. 《ßHĀØÑ》 Contributor says:
    Good post vaiya
    1. Md Rasel Hossain Author Post Creator says:
      ধন্যবাদ আপনাকে।
  2. MD FAYSAL Contributor says:
    good post
    1. Md Rasel Hossain Author Post Creator says:
      ধন্যবাদ।
  3. VIP Contributor says:
    Nice!
    1. Md Rasel Hossain Author Post Creator says:
      Thanks!
    1. Md Rasel Hossain Author Post Creator says:
  4. Mahamud-Al Mehedi Hasan Contributor says:
    128 bosor 400 bosor agula ki ???edit koren
    1. Md Rasel Hossain Author Post Creator says:
      দুঃখিত, আপনার কথা বুঝলাম না। “১২৮ বছর ৪০০ বছরে” ভুল কোথায়?
    2. Mahamud-Al Mehedi Hasan Contributor says:
      Sheser dike apni likhlen take 128 bosor karadondo dea hoh, abar likhen bere daray 400 bosor 400 bosor pojonto ki manus bace??abar 30 bosorer besi naki karadondo deoa hoyna. Aita ami bujlam na, mone holo apnar typing mistake hote pare.
    3. Md Rasel Hossain Author Post Creator says:
      নাহ, টাইপিং মিসটেক না। এখানে সঠিকই (সোর্স অনুযায়ী) লেখা আছে।

      এখানে মানুষ বাঁচে কিনা তার ওপর ভিত্তি না করে তার অপরাধের পরিমাণের (জেলে প্রবেশের আগে ও পরে) ওপর ভিত্তি করে কারাদণ্ডে শাস্তির বছর নির্ধারণ করা হয়েছিল মোট ৪০০ বছর। আগে যে ১২৮ বছরের শাস্তি দেয়া হয়, ওটা জেলে প্রবেশের আগের অপরাধগুলোর জন্য। জেলে প্রবেশের পরে অপরাধের পরিমাণও বেড়ে যায়, যার কারণে শাস্তির মেয়াদও বেড়ে যায়। এখানে মানুষ বেঁচে থাকে কিনা সেটা মুখ্য বিষয় নয়।

      আশা করি বুঝাতে পেরেছি।

    4. Mahamud-Al Mehedi Hasan Contributor says:
      Oh!akhon bujte pereci, tahole 2007 sale cara pelo kivabe?tar to tahole morar ag pojonto jele tahakr kotha.

Leave a Reply