আসসালামু আলাইকুম।
আসা করি সবাই অনেক ভালো আছেন।
আজ আমি এখানে পৃথিবীর কয়েকটা জানা অজানা ঘটনা/ জায়গার বর্ণনা তুলে ধরবো। আসা করি আপনাদের ভালো লাগবে।
আজকের বিষয় কি কি নিয়ে কথা বলতে যাচ্ছি…
১–ছেলে মেয়ে বাবা-মায়ের মতো দেখতে হয় কেনো?
২–আমাদের খিদে পায় কেনো?
৩–অনেক পুরুষের মাথায় টাক দেখা যায় কিন্তু মহিলাদের মাথায় টাক পড়েনা কেনো?
৪–আমরা সপ্ন দেখি কেনো?
৫–মানুষ নাক ডাকে কেনো?
=>ছেলে মেয়ে বাবা-মায়ের মতো দেখতে হয় কেনো?
আমাদের কোষের মধ্যে যে ক্রোমোজোম আছে তার মধ্যে আবার থাকে জীন। জিন তৈরি হয় আবার নিউক্লিক এসিড দিয়ে। এর নাম ডি-অক্সিরাইবোনিউক্লিক এসিড। এ জীবই বংশগত বৈশিষ্টের ধারক অ বাহক। অন্যন্য বংশগত বৈশিষ্টের মতো চেহারার প্রতিচ্ছবি, গায়ের রঙ, চোখ অ চুলের রঙ উচ্চতার পরিমাপ ইত্যাদি এই জিনের মধ্যেই বর্তমান থাকে ও বংশ পরম্পরায়য় এ জিন গুলো একজন থেকে অরেকজন এর মধ্যে পৌছে যাই। বাবা মায়ের প্রজনন কোষ দুটি যখন নিষিক্ত হয় তখন তাদের চেহারাগত বৈশিষ্ট্য গূলো ক্রোমোজোমের মাধ্যমে সন্তানের মধ্যে চলে আসে। কারন সন্তানের ২৩ জোড়া ক্রোমোজোম তৈরি হয় বাবা ও মায়ের ২৩ টি করে ক্রোমজোমের মিলনে। তাই সন্তানন কখনো বাবা আবার কখনো মায়ের মতো দেখতে হয়ে থাকে। বাস্তব ক্ষেত্রে এ সাদৃশ্য নির্ভর করে নিজের উপর। যে জিনটির বৈশিষ্ট্য সন্তানের মধ্যে প্রকাশিত হয় তাকে ‘প্রকট বৈশিষ্টের জীন’ আর যেটির বৈশিষ্ট্য অপ্রকাশিত থাকে তাকে ‘প্রচ্ছন্ন বৈশিষ্টের জীন’ বলা হয়। ছেলে বা মেয়ের প্রতিটি বৈশিষ্ট্য একটি বাবা ও একটি মায়ের জীন নিয়ন্ত্রণ করে। যখন বাবার জীনটি কোনো বৈশিষ্ট্য প্রকাশিত (প্রকট জীন) হয় তখন তাদের দেখতে বাবার মতো হয়। আবার জিনটি যে ক্ষেত্রে প্রকাশিত হয় সে ক্ষেত্রে মায়ের জীনটি অপ্রকাশিত(প্রচ্ছন্ন জিন) থাকে। আবার মায়ের জীনটি প্রকট হলে বাবার জিনটি প্রচ্ছন্ন থাকে অ সন্তান মায়ের মতো দেখতে হয়। অনেক সময়ে বাবা মায়ের কোষের মধ্যকার কিছু কিছু জিনি যাদের বৈশিষ্ট্য প্রচ্ছন্ন অবস্থায় আছে। তা ছেলে ও মেয়েদের মধ্যে প্রকাশিত হয়ে ওঠে। তখন কিন্তু ছেলে-মেয়ে বাবা-মা কারো মতোই দেখতে হয় না।
=>আমাদের খিদে পায় কেনো?
অনেকক্ষণ আমাদের না খেলেই খিদে পাই। খিদের কথা জানিয়ে দেয় তাকেই আমরা বলি ‘খিদে পাওয়া’ । আমাদের মস্তিকের এক বিশেষ অংশের নাম ‘হাইপোথ্যালামাস’ এখানে আছে ভোজন কেন্দ্র যা খিদের অনুভূতি জাগায়। ভোজন কেন্দ্রকে পরিচালনা করে হাইপোথ্যালামাসের আএ একটি অংশ যার নাম ‘পরিতৃপ্তি কেন্দ্র’ । পরিতৃপ্তি কেন্দ্র ভোজন কেন্দ্রের কাজ-কর্ম দেখাশুনা করে, অর্থাৎ যখন খিদে পাওয়া দরকার, কতটা খাওয়া দরকার এসব কাজ তার নিয়ন্ত্রনে থাকে।
শরিরে খাবারের ঘাটতি দেখা দিলে রক্তের শর্করা বা কার্বোহাইড্রেটের পরিমান কমে যায়। রক্তে শর্করা কম থাকলে পরিতৃপ্তি কেন্দ্র ভোজন কেন্দের ওপর থেকে বিধি-নিষেধ তুলে নেয়। ভোজন কেন্দ্রে উত্তেজনা বাড়ে, আমাদেরও খিদের অনুভূতি আসে। খাবার পরে রক্তের শর্করা বেড়ে যায়। পকস্থলির মধ্যে খাবারের পরিমান নির্দিষ্ট পরিমানে পোঁছালে পরিতৃপ্তি কেন্দ্র ভোজন কেন্দের উপরে বিধিনিষেধ চাপায়। ভোজন কেন্দের উত্তজনা তখন কমে। আমাদেরও খিদে চলে যায় ।
ভোজন কেন্দ্র থেকে নার্ভ দিয়ে খিদের খবর পোঁছায় লালাগ্রন্থি অ পাকস্থলিতে। ফলে পাকস্থলীর পেশির সংকোচন বাড়ে। একে বলে ক্ষুধা সংকোচন। আর লালা-গ্রন্থি অ পাকস্থলীর পাচক রস বেশি করে বের হয়। খিদে পাওয়া আমাদের জন্ম গত অনুভূতি। শিশু বা বোশ-বুদ্ধিহীন মানুষও খিদে পেলে কষ্ট পায়, কান্না শুরু করে। আবার শরীরের চাহিদা ছাড়াও ভালো খাবার দেখলে বা তেমন গন্ধ নাকে এলে অনেক সময়ে খিদেটা চাড়া দিয়ে ওঠে। আবার কেউ যদি কেউ একই সময়ে খাবার খান, তবে তার ঐ সময়েই খিদে পাবে।
=>অনেক পুরুষের মাথায় টাক দেখা যায় কিন্তু মহিলাদের মাথায় টাক পড়েনা কেনো?
পুরুষদের ক্ষত্রে মূলত ‘ইন্ড্রোজেন’ নামক হরমোনের অতিরিক্ত ক্ষরণই মাথায় টাক পড়ার জন্যে দায়ি। মহিলাদের ক্ষেত্রে ‘ইস্টোজেন’ নামক হরমনের কম ক্ষরনের ফলে মহিলাদের হালকা ভাবে মাথার চুল উঠে যেতে পারে। অন্যদিকে বিবাহিত মহিলাদের ক্ষেত্রে সহবাসের পরম মুহূর্তে শরীরে দ্বিগুণ পরিমানে ইন্ড্রোজেন হরমন তৈরি হয়। এর প্রভাবে তাদের মাথার কেষ উজ্জল কালো বর্ণ ধারন করে এবং শরীরে তক কমল ও মসৃণ হয়। এছাড়া চলের গড়ায় পুষ্টীর অভাব, মাথার ত্বকে অপরিমিত রক্তসঞ্চালন বা স্নায়ুর গোলযোগের জন্যেও মাথার চুল ঝরে যেতে পারে।
=>আমরা সপ্ন দেখি কেনো?
যখন শরীর ভালো থাকে না এবং মনও খারাপ থাকে, তখনি আমরা বেশি সপ্ন দেখি। কিন্তু কেনো? ঘুমের মধ্যে যখন চোখের মনি নড়া চড়া করে- সে সময়টাই সপ্ন দেখার সময়। আবার এ পর্যায়ে ঘুমটাও থাকে পাতলা একটূ জোরে শব্দ হলে তা ভেঙে যায়। কোনো জায়গায় জ্বালা যন্ত্রনা বা হজমের গন্ডগল হলে শরীরের বিভিন্ন স্নায়ু মারফত শারিরিক অস্বস্তির খবরটা পোঁছে যায় মস্তিস্কে। এ অবস্থায় ঘুম আসতে চায় না বা ঘুম এলেও তা বারবার ভেঙে যায়। খেয়াল করলে দেখা যাবে, ঘুমানোর সময়ে চোখে আলো পড়লে বা রেডিও জোরে বাজতে থাকলে ঘুমানোর অসুবিধা হয়। এর কারন ঘুমের জন্যে মস্তিস্কে বাইরের উদ্দিপক থেকে মুক্ত রাখতে হবে। এখন শারীরি অস্বস্তির সময়ে ঘুমটা পাতলা থাকে বলে এ সময়ে চোখের পণি নড়াচড়া করে। ফলে ঘন ঘন সপ্ন দেখাটাই স্বাভাবিক। উঠকন্ঠা, উদ্বেক বা মানসিক অবসাদের সময়ও একই ঘটনা ঘটে। এ সময়েও ঘুম গাড় হয় না এবং পাতলা ঘুমের জন্যেই দেখে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত মানুষটি।
=> মানুষ নাক ডাকে কেনো?
যখন কারো নাক ডাকে তখন তাকে লক্ষ্য করলে দুটো জিনিস দেখতে পাওয়া যায়। যে নাক ডাকছে সে চিত হয়ে শুয়ে আছে আর গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। গভীর ঘুমের সময়ে শ্বাস-প্রশ্বাস খুব গভীর হয়। চিত হয়ে থাকার সময়ে আমাদের জিভ গলবিলের ভেতর ঢুকে যায়। ফলে বাতাসের পথ সংকির্ন হয়ে আসে। গভীর ভাবে শ্বাস নেওয়ার সময়ে বাতাস ঐ সংকির্ন পথে ঢুকতে বাধা পায়। ফলে বাতাসের বেগ আরো বেড়ে যায়। তালুর পেছোনে যে নরম তালু আছে বাতাসের চাপে তাতে কম্পন হয়। এর ফলে যে শব্দের সৃষ্টি হয় তাকেই ‘নাসিকা গর্জন’ বা ‘নাক ডাকা’ বলে।
গভির ভাবে ঘুমানোর সময়ে যদি কেউ নাক ডাকে দেখা গেছে পাশ ফিরিয়ে দিলেই তার নাক ডাকা বন্ধ হয়ে যাবে। তার কারন পাশ ফেরা অবস্থায় জিভ স্বাভাবিক জায়গায় চলে আসে। যার ফলে বাতাসের পথও অনেক প্রশ্বস্থ হয়ে যায়। ঘুমের গভিরতা কমে যাওয়ায় শ্বাস-প্রশ্বাসও অগভীর আর অনিয়মিত হয়ে পড়ে। তাই তখন আর নাক ডাকে না।
আপনাদের যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে এই রকম আরো আর্টিকেল আপনাদের সামনে নিয়ে আসবো।
আল্লাহ হাফেজ।
ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন, অন্যকে সুস্থ রাখবেন।
আজ বুঝলাম
hahaha