ধরুণ, আপনি একটা প্রজেক্টে বিড করেছেন। এবং ক্লায়েন্ট এসে আপনাকে ম্যাসেজ না করে সরাসরি Award করেছে । কিন্তু আপনি ক্লায়েন্টের প্রজেক্টের আগামাথা কিছু না জেনেই Accept বাটনে ক্লিক করেছেন । প্রজেক্টা ছিলো ৫০০ ডলারের এবং সাথে সাথে আপনার একাউন্ট থেকে ৫০ ডলার গায়েব হয়ে গিয়েছে । এখন আপনি কি করবেন? আজকে মূলত এই বিষয়টা নিয়েই আলোচনা করবো ।

আইডিতে বসার আগেই একটা জিনিস মনে রাখবেন । আপনি যে বিডটা করবেন সেটা কি ফেইক প্রজেকটে নাকি রিয়েল প্রজেক্টে? অবশ্যই রিয়েল প্রজেক্টে বিড করতে হবে? তাহলে কিছু কিছু জিনিস ফলো করবেন আশা করি আপনার বিড বিফলে যাবে না।

ক্লায়েন্টের আইডি ভেরিফাইড

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো এইটা । আপনি যার প্রজেক্টে বিড করছেন তার একাউন্ট ভেরিফাইড কিনা আগে দেখে নিবেন । কিভাবে দেখবেন ক্লায়েন্টের আইডি ভেরিফাইড কিনা? নিচের স্ক্রিনশট লক্ষ্য করুন।

Freelacner.com এ প্রজেক্ট Accept করার আগে এই ব্যাপার গুলো খেয়াল করুন

About the Client

দেখুন লেখা আছে “Identity verified through a Government-issued ID check and a proof of address”

ক্লায়েন্ট তার একাউন্ট KYC ডকুমেন্টস সাবমিটের মাধ্যমে তার একাউন্ট ভেরিফাই করেছে । KYC অথবা Know Your Customer নিয়ে বিস্তারতি পড়তে চাইলে এখানে ক্লিক করুন  এখন আপনার মনে প্রশ্ন আসতে পারে । আপনি কেন এইটা চেক করবেন? মনে করেন আপনি প্রজেক্টের শেষ করে ক্লায়েন্টের কাজ কাজ সাবমিট করেছেন ।

ক্লায়েন্টে আপনার কাজ পছন্দ করেছে । এবং ফ্রিল্যান্সার ডট কমে জমাকৃত মাইলস্টোন রিলিজ করতে যাবে তখন আপনার

ক্লায়েন্ট ফান্ড বা মাইলস্টোন রিলিজ করতে পারছে না। আপনার ক্লায়েন্টের আইডি ভেরিফাই না করলে আপনার মাইলস্টোন রিলিজ করতে পারবে না।

এখন মনে করুন, আপনার ক্লায়েন্ট আইডি ভেরিফাই করতে গেলো । সব ডকুমেন্টস সাবমিট করার পরেও ডকুমেন্টস রিজেক্ট করে দিয়ে আইডী ক্লোজ করে দিলো ।

তাহলে ভেবে দেখুন তো আপনার কাজ এবং টাকা কোনো কিছু পাওয়া যাবে কি? এজন্য সবচাইতে বেশি গুরুত্ব দিতে হয় ক্লায়েন্টের একাউন্ট ভেরিফাইড কিনা সেদিকে।

তবে, আপনি পুরাতন অ্যান্ড এক্সপেরিয়েন্সড ফ্রিল্যান্সার হলে ভুল করবে না। কারণ, তাদের অনেক অভিজ্ঞতা হয়ে গেছে।

পেমেন্ট ম্যাথড ভেরিফাইড

এবার দেখে নিন আপনার ক্লায়েন্টের পেমেন্ট ম্যাথড ভেরিফাইড কিনা। কারণ, অনেক ক্লায়েন্ট আছে ভুয়া প্রজেক্ট ছেড়ে মানুষকে দ্বিধাদ্বন্দে ফেলে দেয় । যদি ক্লায়েন্টের পেমেন্ট ম্যাথড ভেরিফাইড না থাকে তাহলে বিড করে আপনার বিডটা নষ্ট করার দরকার নেই ।

Freelacner.com এ প্রজেক্ট Accept করার আগে এই ব্যাপার গুলো খেয়াল করুন

Payment Method Verified Status

ক্লায়েন্ট ডিপোজিট করেছে?

এবার আসুন এরপরে ধাপে । ক্লায়েন্ট যদি পেমেন্ট ম্যাথড ভেরিফাই না করে থাকে তাহলে অবশ্যই ডিপোজিট করে নাই ।

আর যদি ডিপোজিট না করে থাকে তাহলে পেমেন্ট ম্যাথডও ভেরিফাই করা নাই । :p যাইহোক ডিপোজিট আর পেমেন্ট ম্যাথড ভেরিফিকেশন দুইটা প্রায় একই।

যদি পেমেন্ট ম্যাথড ভেরিফাই করে তাহলে নিশ্চয় ডিপোজিট করেছে । আর যদি ডিপোজিট করে থাকে তাহলে পেমেন্ট ম্যাথড ভেরিফাইড।

নিচের ইমেইজ দেখুন তাহলে বাকিটা ক্লিয়ার হয়ে যাবে।

Freelacner.com এ প্রজেক্ট Accept করার আগে এই ব্যাপার গুলো খেয়াল করুন

Deposit Made

ইমেইল এড্রেস ভেরিফাইড

ইমেইল এড্রেস যদি ভেরিফাই না করে তাহলে কোনো উপরের কোনো স্টেপ সম্পন্ন করতে পারবে না । না পারবে আইডিন্টিটি ভেরিফাই করতে । না পারবে পেমেন্ট ম্যাথড ভেরিফাই করতে অ্যান্ড না পারবে ডিপোজিট । সুতরাং ইমেইল ভেরিফাই করতেই হবে । তানা হলে কোনো কিছুই করতে পারবে না।

Freelacner.com এ প্রজেক্ট Accept করার আগে এই ব্যাপার গুলো খেয়াল করুন

Email Address Verified

আরো পড়ুনঃ ফ্রিল্যান্সার ডট কমের একটা জেনুইন ফেইক প্রোজেক্ট নিয়ে আলোচনা ।

প্রোফাইল ১০০% কমপ্লিট

ক্লায়েন্টের প্রোফাইল ১০০% কমপ্লিট না হলেও সমস্যা হয় না । কারণ, ক্লায়েন্টকে প্রজেক্টে বিড করতে হয় না। এই জন্য ফ্রিল্যান্সার ডটকম ক্লায়েন্টেকে প্রোফাইল কমপ্লিট করার জন্য এতো অনুরোধও করে না । এটা ক্লায়েন্টের ইচ্ছার উপর নির্ভর করে।

Freelacner.com এ প্রজেক্ট Accept করার আগে এই ব্যাপার গুলো খেয়াল করুন

Profile Completed

ফোন নাম্বার ভেরিফাইড

আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ জিনিস সেটা হলো ফোন নাম্বার ভেরিফাইড কিনা দেখে নিবেন । এখন অনলাইনে অনেক VoIP নাম্বার দিয়েও ফোন নাম্বার ভেরিফাই করা যায় । যদিও ফ্রিল্যান্সার এখন ধরে ফেলে । কিন্তু তারপরে অনেক ভুয়া ক্লায়েন্ট আছে যারা মানুষকে ধোকা দেওয়ার জন্য এই সব কাজ করে থাকে।

সুতরাং আপনি ভালো ভাবে সব গুলো দেখে নিয়ে এরপরে প্রজেক্টে বিড করবেন । তানা হলে আপনার মূল্যবান ১টি বিড নষ্ট হতে পারে।

Freelacner.com এ প্রজেক্ট Accept করার আগে এই ব্যাপার গুলো খেয়াল করুন

Phone Number Verified.

ক্লায়েন্ট এনগেজমেন্ট দেখে নিবেন

ক্লায়েন্ট এনগেজমেন্ট দেখে নিবেন । তাহলে ক্লায়েন্টের আচার ব্যবহার কেমন সেটাও বুঝে যাবেন । মনে করেন, ক্লায়েন্ট একটা পল্টিবাজ তাহলে দেখবেন আগে যারা এই ক্লায়েন্টের কাজ করেছে তারা ক্লায়েন্টকে ফিডব্যাকে লিখে দিয়েছে :p ।

প্রজেক্ট নিয়ে উলটা পালটা করলেও ফ্রিল্যান্সার তার ক্লায়েন্টকে ৫স্টার না দিয়ে ১-২-৩ স্টার মারে এবং কেন উলটা পালটা কাজ করেছে সেটাও ফিডব্যাক বক্সে লিখে দেয় । যদি ক্লায়েন্টের প্রফাইলে ১ স্টার দেখেন তাহলে সর্তকর হবেন । কারণ, ক্লায়েন্ট পল্টিবাজ আছে । যাইহোক এইগুলো খেয়াল রাখলেই হবে।

Freelacner.com এ প্রজেক্ট Accept করার আগে এই ব্যাপার গুলো খেয়াল করুন

Client Engagement

সর্বশেষঃ

উপরিউক্ত সব গুলো যদি খেয়াল করেন তাহলে আপনার বিডটা হয়তো নষ্ট হবে না। যদি ক্লায়েন্ট আপনার প্রোপোজাল অথবা আপনার প্রোফাইল দেখে পছন্দ করে তাহলে নিশ্চয় আপনাকে নক করে কাজ নিয়ে কথা বলবে । সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আপনি প্রজেক্ট উইনার হতে পারেন । আশা করি আর্টিকেল পড়ে উপকৃত হয়েছেন। যদি আর্টিকেলটা ভালো লেগে থাকে তাহলে শেয়ার করে বাকিদের পড়ার এবং জানার সুযোগ করে দিতে পারেন । কোনো কিছু জানার থাকলে কমেন্ট সেকশনে প্রশ্ন করতে পারেন ।

আজকের মত এখানেই শেষ করছি দেখা হবে আগামীতে সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ্য থাকুন আল্লাহ্‌ হাফেজ ।

লিখেছেনঃ MH Mamun

Leave a Reply