TRICKBD তে সবাইকে স্বাগতম জানাই। অনেকদিন পর আর্টিকেল লিখতে বসলাম। শিরোনাম এবং থাম্বনেইল দেখে হয়তো বুঝতে পেরেছেন আজকে আমি তুলে ধরতে চলেছি অনলাইন পেইড সার্ভে করে ইনকাম করার expectations বনাম বাস্তবতা নিয়ে। যারা ভালোমতো রিসার্চ না করে অনলাইনে ip কিনতে চলেছেন কিংবা হাজার হাজার টাকা ইনকাম করার স্বপ্ন দেখছেন আজকের লেখাটি তাদের জন্য। মনে রাখবেন,
টাকা ইনকাম সহজ নয়। যদি সহজ হতো কেউ গরীব থাকতো না
Online Paid Survey কি?
বিভিন্ন কোম্পানি যেমন ফুড ডেলিভারি সার্ভিস,সুপারশপ, বিভিন্ন নামিদামি গ্যাজেট কোম্পানি তাদের প্রোডাক্ট রিলিজ করার আগে এবং রিলিজ করার পরে তারা কাস্টমারদের ফিডব্যাক নিয়ে থাকে। তাদের পন্যটি ভালো কিনা, কাস্টমারদের পছন্দ হয়েছে কিনা কিংবা আপকামিং প্রোডাক্ট গুলো তাদের অডিয়েন্স বা ভোক্তারা কিভাবে গ্রহন করবে এইসব বিষয়ে অনলাইনে জরিপ করে থাকে। অনলাইন জরিপের উপর তারা তাদের প্রোডাক্টের ইনকাম, আয় ইত্যাদি সম্পর্কে রিসার্চ করে এবং কিভাবে প্রোডাক্ট আরো আকর্ষনীয় করা যায় সে সম্পর্কে কাজ করে। এইসব কাজের জন্য তারা গড়ে 30 cent-1.5 dollar প্রদান করে থাকে প্রতিটি সার্ভে সেশনে।
Paid survey ওয়েবসাইট
কোম্পানির তাদের অডিয়েন্সদের কাছ থেকে সার্ভে বা জরিপ করার জন্য paid survey ওয়েবসাইটে ধর্না দিয়ে থাকে। জনপ্রিয় কয়েকটি সাইট হলো tulona, ipsos-isay, Swagbucks,Ysense,Freecash ইত্যাদি।এসব ওয়েবসাইট কোম্পানি থেকে ফান্ড নিয়ে ওয়েবসাইট ইউজারদের কাছ থেকে সার্ভে আদায় করে থাকে।কিন্তূ সব ওয়েবসাইট ইউজাররাই সার্ভে পায় না। কোম্পানি এসব সার্ভে সাইটকে বেশ কিছু শর্ত বা ক্রাইটেরিয়া দেয় যেগুলো পূরন হলেই কেবল ঐসব পেইড সার্ভে ইউজাররা সার্ভে পায় অন্যথাই সার্ভে বা জরিপে কাজ পায় না।
বাংলাদেশ থেকে কি করা যায় ঐসব সার্ভে?
না, বাংলাদেশ থেকে করা যায় না। কেবল usa,uk এর অন্তর্ভুক্ত নাগরিকদের কাছ থেকেই সার্ভে গ্রহন করা হয়।(অন্য কান্ট্রিতেও হয় কিন্তু খুবই কম)
তাহলে বাংলাদেশ থেকে করে কিভাবে?
সার্ভে কাজের জন্য আপনার দরকার
২.usa/uk এর আইপি
৩.usa/uk এর নম্বর ভেরিফিকেশন
৪.usa/uk এর একজন পার্সনের ফুল ডিটেইলস এবার আসি এসব সার্ভে কাজ করার বাস্তবতা নিয়ে। যারা সার্ভে করে মাসে ১৫-২০ হাজার ইনকাম করতে চান তাদের জন্য দুসংবাদ
১.একাউন্ট ব্যান issue
সার্ভে কাজে একাউন্ট ব্যান একটা খুবই রেগুলার ইস্যু। দেখা যাচ্ছে আপনি ৪-৫ ডলার করেছেন ৬ দিনে তারপর হঠাৎই দেখবেন আপনার একাউন্ট ব্যান হয়ে গেছে কোনো একটা রুল ভঙ্গ কিংবা আপনার বাংলাদেশ লোকেশন রিভিল হওয়ার জন্য।সাথে আপনার সব পরিশ্রম যাবে পানিতে।
২. সার্ভে কাজে কোয়ালিফাই না হওয়া issue
সার্ভে কাজে কোম্পানির একটা নির্ধারিত ক্রাইটেরিয়া থাকে। দেখা গেল আপনি সে ক্রাইটেরিয়ার যোগ্য কিনা এটা চেক করার জন্য survey site আপনাকে একটা Qualify সার্ভে দিল।যদি সে সার্ভেতে একাউন্ট খোলার সময়কার তথ্যের সাথে মিল না থাকে তাহলে আপনাকে কোয়ালিফাই করবেই না। আর সবকিছু ঠিকঠাক থাকলেও ক্রাইটেরিয়া পূরন না হলে আপনাকে disqualify করবে। মাঝখান দিয়ে আপনার সব পরিশ্রম ও সময় নষ্ট।
৩.সার্ভে করার ERROR ISSUE
সবকিছু যদি ঠিকমতো পূরন হয় এবং সার্ভে কাজে কোয়ালিফাই হন তাহলে আপনাকে সার্ভে দিবে। সার্ভেতে বেশ কিছু ট্রিকি প্রশ্ন করা হবে। ধরুন আপনি ১০টা কোম্পানির পন্যের মধ্যে A,B কোম্পানির প্রোডাক্ট কিনেন। এরপর প্রায় 50-60 টার মতো question আসবে এবং শেষে আবার প্রশ্ন রিপিট হবে আপনি ঐ ১০টার মধ্যে A,B কোম্পানির প্রডাক্ট নেন কিনা। যদি শুরুর উত্তর আর শেষ উত্তর মিল না থাকে তাহলে সর্বনাশ। আপনাকে সার্ভে থেকে বের করে দিবে।মাঝখান দিয়ে আপনার ৫০-৬০ টা question এর পরিশ্রমের ফল পাবেনই না বরং সময়,পরিশ্রম অপচয় হবে।দেখা দিবে রাগ, ক্ষোভ..
৪.উইথড্রয়াল ইস্যু
Survey উইথড্র সাধারনত ৫-১৫ ডলারে শুরু হয় ওয়েবসাইট ভেদে। এইসব উইথড্র দিতে দিতে দেখা যাবে account banned ইস্যু কিংবা নায্বার ভেরিফিকেশন error ইস্যু। তবে নিয়মমতো চালালে এসব হবে না। কিন্তু খুবই পরিশ্রম করতে হয় ঐ ৫-১৫ ডলার ইনকামে। গড়ে ৩৫-৫০ টা সার্ভেটে কোয়ালিফাই হতে হবে যা খুবই লম্বা একটা প্রসেস।
৫.সার্ভে রাউটার issue
দেখা গেল আপনি একাউন্ট তৈরির সময় জব দিলেন ফুল টাইম। এখন আপনি যদি ঐ জব টাইমে সার্ভে করতে আসেন তাহলে সার্ভে রাউটার আটকাতে পারে।সার্ভে রাউটারের কাজ সার্ভেতে কোয়ালিফাই করা। আবার পরপর বেশকিছু error input দিলে সার্ভে রাউটার আপনাকে temporary block দিবে অর্থাৎ ঐ সার্ভে রাউটারে আপনি বেশ কিছু সময় কাজ করতে পারবেন না। এমন কয়েকটি সার্ভে রাউটার হলো bitlab,cpx-research,Cint, spectrum survey ইত্যাদি।
এবার আসি বাংলাদেশের আইপি ব্যাবসা নিয়ে
বেশকিছু ব্যাঙের ছাতার মতো গজানো ফেসবুক গ্রূপ এবং ইউটিউব চ্যানেল আইপি ব্যাবসা করে থাকে। ১৫০০-৩০০০ পর্যন্ত যেতে পারে গ্রুপভেদে। তারা নানা মুখরোচক বিজ্ঞাপন দিয়ে মানুষদের ফাদে ফেলে। তারা আইপি দেয় মাসিক হিসাবে কিন্তূ শর্ত দেয় daily ip নিতে হবে। তারা গ্রুপে নানা payment এর স্ক্রিনশট দেয় যা মূলত তাদেরই দালাল। তারা নিন্ম মানের ip দিয়ে থাকে যেগুলোতে account ban issue,survey issue যোগ হয়। মাসশেষে দেখা যায় ২০০০ টাকার আইপি কিনে মেম্বাররা আয় করতে পেরেছে মাত্র ৫০০-৭০০ টাকা। বাকিগুলো সব তাদের পকেটে।
উপসংহার
আজকের পোস্টটিতে বাস্তবতা তুলে ধরলাম। আমার উদ্দেশ্য সার্ভে কাজে ডিমোটিভেট করা নয় বরং সার্ভে করে ১০-২০ হাজার টাকা ইনকাম করার স্বপ্ন যারা দেখছে তাদের সচেতন করা।
আপনাদের সকলেরই ফিডব্যাকের আশায় থাকলাম। যৌক্তিক positive কিংবা negative ফিডব্যাক উভয়ই গ্রহনযোগ্য।
14 thoughts on "অনলাইন পেইড সার্ভে: Dark Reality এবং বাংলাদেশে ip ব্যাবসা"