আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহু। আজকে আমরা দারুন একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো এবং সেটি হলঃ ওয়েবসাইটের ডোমেইন এবং হোস্টিং কি? বা ডোমেইন-হোস্টিং কাকে বলে? কেন ওয়েবসাইটের জন্য ডোমেইন-হোষ্টিং প্রয়োজন হয়। কোন জিনিসের কোন কাজ? এই বিষয়গুলো নিয়ে step-by-step বিস্তারিত আলোচনা করব।
মাধ্যমে আপনারা সহজেই ডোমেইন-হোস্টিং সম্পর্কে বিস্তারিত বুঝতে পারবেন সহজেই। একটি ওয়েবসাইটের জন্য ডোমিন এবং হোস্টিং খুবই গুরুত্বপূর্ণ জিনিস। বলা যায় ওয়েবসাইট তৈরি করার পর সেটাকে টিকিয়ে রাখার জন্য, ডোমেইন এবং হোস্টিং খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং জনপ্রিয়তা প্রকাশ পায়। আর কথা না বাড়িয়ে চলুন বন্ধুরা, এখন আমরা বিস্তারিত জেনে নিই ডোমেইন এবং হোস্টিং সম্পর্কে।
ডোমেইন কি? ডোমেইন কাকে বলে? কেন ওয়েবসাইটের জন্য, ডোমেইন প্রয়োজন?
ডোমাইন একটি ওয়েবসাইটের নাম। উদাহরণস্বরূপ, www.google.com এখানে google.com হলো ডোমেইন । তাছাড়া এই ডোমেইন একটি ওয়েবসাইট বানানোর জন্য প্রথমেই দরকার হয়ে থাকে। অনলাইনে বিভিন্ন রকম ডোমেইন রয়েছে। আপনার ওয়েবসাইটের নাম পরিবর্তন করে জনপ্রিয় এবং দারুন লুক দিতে পারে এই ডোমেইন। অনেক ধরনের ডোমেইন নেম রয়েছে।
যেমনঃ
.com
.org
.net
.info
.xyz ইত্যাদি।
আগেই আমরা জেনেছি, একটি ওয়েবসাইটের জন্য ডোমেইন অবশ্যই প্রয়োজন। এখন আপনার ওয়েবসাইটের জন্য এই ডোমেইন ক্রয় করতে হবে। যদি আপনি একটি ওয়েবসাইট নিয়ে কাজ করতে চান তাহলে। আমাদের বাংলাদেশে আপনি এই ডোমেইন গুলো পাবেন ৫০০ থেকে ১০০০ টাকার ভিতরে সহজেই পেয়ে যাবেন। এই ডোমেইন ক্রয় করার জন্য তাদেরকে পে করতে হয় কার্ড এর মাধ্যমে।
কিন্তু আপনি যদি নতুন ব্লগিং করতে চান আর কোন ধরনের পে করার কার্ড না থাকে। চিন্তার কোন কারণ নেই, কেননা বাংলাদেশের অনেক ওয়েবসাইট রয়েছে যারা কিনা বিকাশ, রকেট, নগত এর মাধমে ডোমাইন রেজিস্ট্রেশন করতে দেয়। অর্থাৎ আপনারা ওয়েবসাইট এর ডোমেইন ক্রয় করার জন্য, বিকাশ রকেট নগদ ইত্যাদি একাউন্টের মাধ্যমে পে করতে পারবেন। এবং ডোমেইন ক্রয় করে সহজে আপনার ওয়েবসাইটে যোগ করতে পারবেন।
ওয়েব হোস্টিং কি ? ওয়েব হোস্টিং কাকে বলে? ওয়েব হোস্টিং কেন ওয়েবসাইটের জন্য প্রয়োজন?
ওয়েবসাইটের হোস্টিং হল নির্দিষ্ট পরিমাণ জায়গা। বুঝতে পারেননি? সমস্যা নেই চলুন একটু খোলাখুলি আলোচনা করি! ধরুন এখন আপনি একটি বাড়ি তৈরি করবেন। আর এখন এই বাড়ি বানাতে ভাত তৈরি করতে হলে, প্রথমেই আপনার প্রয়োজন হবে জমি। এই জমি ছাড়া আপনি বাড়ি তৈরি করতে পারবেন না। ঠিক এ কারণেই এখন আপনাকে কিনতে হবে একটি জমি। যেহেতু একটি বাড়ি তৈরি করতে অবশ্যই জমি প্রয়োজন হয়। তেমনি ভাবে এদিকে একটি ওয়েবসাইট বানাতে হলেও,,,
আপনাকে আপনার ওয়েবসাইটি রাখার জন্য একটি জমি ক্রয় করা লাগবে। এবং আপনার এই জমিকেই বলা হয় ওয়েব হোস্টিং। আপনারা হয়তো অনেকে বলতে পারেন হোস্টিং কেনো প্রয়োজন হবে? সত্যিকার অর্থে আসলে ওয়েবসাইটের ডাটা গুলো স্টোর করার জন্য একটি স্পেস খুবই দরকার। ঠিক এ কারণেই আপনার ওয়েবসাইটের জন্য অবশ্যই হোস্টিং প্রয়োজন। আপনি যদি একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে চান তাহলে, এই ওয়েব হোস্টিং সম্পর্কে আপনার বিস্তারিত নলেজ থাকা প্রয়োজন।
সাধারণত ওয়েব হোস্টিং ৫ প্রকারের হয়ে থাকে।শেয়ার হোস্টিং (Share Hosting) কি?
এতক্ষণ হয়তো আপনারা জেনে গিয়েছেন কোন হোস্টিং ক্রয় করার জন্য টাকা খরচ করতে হয়। করুন এখন আপনার কাছে পর্যাপ্ত পরিমাণ টাকা নেই। এখন আপনার কাছে যদি পর্যাপ্ত পরিমান অর্থ না থাকে তাহলেও আপনারা চাইলেই শেয়ার হোস্টিং নিতে পারেন। এই শেয়ার হোস্টিং সাধারণতঃ হোস্টিং টি অন্য আর এক জন এর সাথে শেয়ার করে নিতে হয়। তবে প্রাথমিক অবস্থায় শেয়ার হোস্টিং নিলে কোনো সমস্যা হবে না।
তবে আপনি যদি এই হোস্টিং দিতে চান তাহলে অবশ্যই নেয়ার পূর্বে এটা খেয়াল রাখবেন যে কাদের আপনি হোস্টিং কিনেছেন? যাদের কাছ থেকে আপনি হোস্টিং টি কিনছেন তারা আপনাকে সার্ভিস কেমন দিচ্ছে? বোন আপ-টাইম কেমন? মানি-ব্যাক গ্যারান্টি আছে না কিনা? ইত্যাদি বিষয় খেয়াল রাখা উচিত।
এখন যদি আপ-টাইম ৯৯.৯৫ এর নিচে হয় তাহলে তাদের থেকে হোস্টিং নিবেন না। কেননা আমাদের বাংলাদেশে ১০০০ থেকে ৩০০০ ভিতরে শেয়ার হোস্টিং পাওয়া যায় ভালো মানের।
ওয়ার্ডপ্রেস হোস্টিং (WordPress Hosting)কি?
উপরোক্ত আলোচনার শেয়ার হোস্টিং থেকে ওয়ার্ডপ্রেস হোস্টিং বেশি ভালো। কিন্তু মাথায় রাখবেন এই ওয়াডপ্রেস হোস্টিংও একপ্রকার শেয়ার হোস্টিং। তবে এই ওয়াডপ্রেস হোস্টিং শেয়ার হোস্টিং থেকে বেশি ফাস্ট এবং সিকিউর। তাছাড়া এটি অপ্টিমাইজড। ঠিক এই কারনে আপনার ওয়েবসাইটটি হবে ফাস্ট। এবং সার্ভার ডাউন হওয়ার মতো কোন চান্স থাকবেনা। কিন্তু একটা দিকে মাথায় রাখবেন যে, আপনি এখানে শুধু ওয়ার্ডপ্রেসের ই স্ক্রিপ্ট ব্যাবহার করার সুযোগ পাবেন।
অন্যান্য কোনই স্ক্রিপ্ট ব্যবহার করতে পারবেন না আপনার ওয়েবসাইটে। তবে হ্যাঁ অন্যান্য হোস্টিং এর চেয়ে ওয়ার্ডপ্রেস হোস্টিং এর দাম একটু বেশি হয়ে থাকে বটে। আমাদের এই বাংলাদেশ ওয়ার্ডপ্রেস হোস্টিং এর দাম ১৫০০ থেকে ৪০০০ টাকার ভিতরে পেয়ে যাবেন সহজেই। তবে হ্যাঁ ক্রয় করার সময় যাচাই-বাছাই এবং বিশ্বস্ত ও জনপ্রিয় কোম্পানি থেকে ক্রয় করবেন আশা করি।
ক্লাউড হোস্টিং (Cloud Hosting) কি?
আপনার ওয়েবসাইটের এক সময় না এক সময় প্রচুর পরিমাণে ট্রাফিক বেড়ে যাবে নিশ্চয়ই। আর এই ট্রাফিক যখন দেখবেন যে আপনার ওয়েবসাইটের বৃদ্ধি পেয়েছে। যখন আপনার ওয়েবসাইট আর লোদ নিতে পারছে না। ঠিক তখনি আপনার ক্লাউড হোস্টিং এর প্রয়োজন হবে। আর এই ক্লাউড হোস্টিং”” হোস্টিং টি অন্যান্য হোস্টিং থেকে অনেক বেশি ফাস্ট কাজ করে থাকে। তার কারন হল ফাইলগুলো থাকবে ক্লাউডে অর্থাৎ ইন্টারনেটে। এই হোস্টিং কি ক্রয় করার নির্দিষ্ট কোন অ্যামাউন্ট নেই। তবে আপনি যেভাবে কাজ করবেন সেভাবেই ভাড়া দিয়ে যেতে হবে আপনাকে।
ভিপিএস হোস্টিং (VPS Hosting) কি?
আপনার ওয়েবসাইট টি যখন জনপ্রিয় হয়ে উঠবে তখন আপনি এই হোস্টিং টি নিতে হবে। নিতে হবে বলেছে নাওয়াই বাধ্যতামূলক তা কিন্তু নয়। আপনার ওয়েবসাইটের প্রয়োজন মেটাতে এই হোস্টিং কি প্রয়োজন হতে পারে। ভিপিএস হোস্টিং এই হোস্টিং টি ওয়ার্ডপ্রেস হোস্টিং থেকেও বেশি লোড নিতে পারে। তাছাড়া আরো অন্যান্য সুবিধাও এই হোস্টিং দিয়ে থাকে।
ঠিক এ কারণেই আপনার ওয়েবসাইটটি ও হয়ে উঠবে খুবই দ্রুত বা দ্রুততর। আর এই ভিপিএস হোস্টিং বিল প্রতি মাসে মাসে দিতে হয়। আর এই ভিপিএস হোস্টিং এর দাম হচ্ছে ৪০০০ থেকে ৬০০০ টাকার মধ্যে। এই ভিপিএস হোস্টিং ক্রয় করার পূর্বে অবশ্যই যাচাই-বাছাই করে ক্রয় করবেন। কারণ অনলাইনে অনেক প্রতারক রয়েছে যারা কম টাকার লোভ দেখিয়ে আপনাকে প্রচারণায় ফেলতে পারে।
ডেডিকেটেড হোস্টিং (Dedicated Hosting)কি?
আপনারা হয়তো অনেকেই ডেডিকেটেড হোস্টিং এর নাম শুনে থাকতে পারেন। এই ডেডিকেটেড হোস্টিং এ আপনার কোনো বাধ্যবাধকতা থাকবে না। যেমন অন্যান্য হোস্টিং এ আপনাকে একটি বিল্ডিং এর একটা রুম ধার দেয়া হচ্ছিলো বটে। বা রুমের একটি অংশ আপনি ক্রয় করে আপনার ওয়েবসাইটে যেতেন। কিন্তু এই ডেডিকেটেড হোস্টিং এখানে আপনি পুরো একটি বিল্ডিং পেয়ে যাচ্ছেন অতি সহজে।
আর আপনার ওয়েবসাইটে যতই ট্রাফিক আসুক না কেনো কোনো সমস্যাই আপনাকে তার জন্য পড়তে হবে না। তবে এটা মাথায় রাখা উচিত, এই ডেডিকেটেড হোস্টিং এর দামটা একটু বেশি। আমাদের এই ছোট্ট দেশেও ডেডিকেটেড হোস্টিং এর জন্য প্রতি মাসে ১৫০০০ থেকে ২৫০০০ টাকা পর্যন্ত দিতে হয়। প্রিয় বন্ধুরা আপনারা যদি এই হোস্টিং বিক্রয় করে আপনার ওয়েবসাইট চালাতে চান তাহলে, অবশ্যই বিশ্বস্ত এবং জনপ্রিয় কোন কোম্পানির সাথে চুক্তি করে হোস্টিং ক্রয় করবেন আশা করি।
আর্টিকেল এর শেষ কথা
বন্ধুরা, আজকের এই ছোট্ট আর্টিকেল থেকে আমরা শিখতে অথবা জানতে পারলাম যে, ওয়েবসাইটের ডোমেইন এবং হোস্টিং কি? এবং এই ডোমেইন হোস্টিং কাকে বলে? ওয়েবসাইটের কোন কাজে প্রয়োজন হয়? দাম সহ বিস্তারিত আলোচনা করেছি। যদি আর্টিকেলটি ভালো লাগে অবশ্যই লাইক দিয়ে উৎসাহ দিবেন। আর্টিকেল সম্পর্কিত কোন প্রশ্ন অথবা মতামত থাকলে কমেন্ট এর মাধ্যমে জানাতে ভুলবেন না।
যারা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে কাজ করে টাকা ইনকাম করতে চান । এবং বিকাশ নগদ রকেট একাউন্টের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করতে চান তাদের জন্য বিশ্বস্ত ওয়েবসাইটঃ ওয়েব সাইটে প্রবেশ করুন
আমাদের আজকের আর্টিকেলটি করার জন্য সবাইকে অসংখ্য অসংখ্য ধন্যবাদ। আজকের আর্টিকেলটি এ পর্যন্তই দেখা হবে আবার অন্য কোন আর্টিকেলে অন্য কোন সময়। সবাই ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন এবং নিরাপদে থাকুন। এই আশা ব্যক্ত কামনা করে বিদায় নেব আজকের এই আর্টিকেল থেকে, আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ।
4 thoughts on "ওয়েবসাইটের ডোমেইন হোস্টিং কি? কেন ওয়েবসাইটের জন্য ডোমেইন-হোষ্টিং প্রয়োজন? (বিস্তারিত)"