পৃথিবীর ওপরের কক্ষপথে লেজার রশ্মির সাহায্যে একটি যোগাযোগব্যবস্থা বা নেটওয়ার্ক চালু করেছে ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থা (ইএসএ)। এর মাধ্যমে স্যাটেলাইটে তোলা ছবি ২০ মিনিটের মধ্যে পৃথিবীতে পাঠানো সম্ভব হবে।

ইএসএ প্রথম দফায় ওই নেটওয়ার্কের আওতায় টেলিযোগাযোগের জন্য কাজাখস্তানের বৈকনুর থেকে একটি কৃত্রিম উপগ্রহ (স্যাটেলাইট) গতকাল শনিবার উৎক্ষেপণ করেছে।

স্যাটেলাইটটি মহাকাশযানের তোলা পৃথিবীর ছবি ওই নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ভূপৃষ্ঠে পাঠাবে। এতে বন্যা ও ভূমিকম্পের মতো বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ সম্পর্কে আরও দ্রুত জানা যাবে। ফলে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নেওয়া আরও সহজ হবে।

প্রচলিত ব্যবস্থায় পৃথিবী পর্যবেক্ষণ স্যাটেলাইটগুলোর তোলা ছবি ভূপৃষ্ঠে পৌঁছাতে কয়েক ঘণ্টা সময় লাগে। কারণ, একটি গ্রহীতা ডিশ অ্যান্টেনার পাশ দিয়ে যাওয়ার সময়ই মহাকাশযান তার তোলা ছবিগুলো পাঠাতে পারে। আর প্রতি ৯০ মিনিটে পৃথিবী প্রদক্ষিণ করার সময় মাত্র ১০ মিনিটের জন্য ওই অ্যান্টেনার দেখা মেলে।

ইএসএ সম্প্রতি পৃথিবী পর্যবেক্ষণের জন্য দুটি স্যাটেলাইট চালু করেছে। এগুলোতে আলোকচিত্র পাঠানোর সরঞ্জাম যুক্ত রয়েছে। এগুলো লেজার নেটওয়ার্কের আওতায় নতুন স্যাটেলাইটটির সাহায্যে তথ্য-উপাত্ত সরবরাহ করতে পারবে।
ইএসএর অংশীদার এয়ারবাস ডিফেন্স অ্যান্ড স্পেস পরীক্ষা করে দেখেছে, স্যাটেলাইটে ছবি তোলার ২০ মিনিটের মধ্যে সেগুলো নতুন নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট লোকজনের কাছে পাঠানো সম্ভব হবে। ফলে দূষণের নানা ঘটনা বা অবৈধভাবে মাছ ধরা বা সমুদ্রে চোরাচালান ইত্যাদি পর্যবেক্ষণের ক্ষেত্রে সময় বাঁচবে এবং সময়মতো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগও বাড়বে।

ইএসএর টেলিযোগাযোগ শাখার পরিচালক মাগালি ভেসিয়ের বলেন, উত্তর মেরু এলাকায় কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ নৌপথে ভারী বরফপ্রবাহের কারণে জাহাজ চলাচলে বিঘ্ন হয়। স্যাটেলাইটের পর্যবেক্ষণের তথ্য-উপাত্ত সেখানে দুই দিন পরে পৌঁছালে বলতে গেলে কোনো কাজেই লাগে না। নতুন নেটওয়ার্কের মাধ্যমে এ সমস্যার সমাধান হবে।
ইএসএর প্রকল্প ব্যবস্থাপক মাইকেল উইটিং বলেন, তাঁরা এ নেটওয়ার্ক গড়ার জন্য ১০ বছরের বেশি সময় ধরে কাজ করছেন। এ ব্যবস্থায় প্রতি সেকেন্ডে ১ দশমিক ৮ গিগাবাইট পর্যন্ত তথ্য-উপাত্ত পাঠানো সম্ভব।
Source Post: HamWap.Com

Leave a Reply