লাইসেন্সিং গাইডলাইনের শর্ত পূরণ না করেই নতুন পয়েন্ট অব প্রেজেন্স (পপ) স্থপানের অনুমতির জন্য আবেদনে মিথ্যা তথ্য সরবরাহ করেছে আমরা টেকনোলোজিস। আইআইজি অপারেটরটির কাছে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা চেয়ে চিঠি দিয়েছে বিটিআরসি। একই সাথে বিটিআরসির ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড অপারেশনস বিভাগের সিনিয়র সহকারি পরিচালক নাহিদুল হাসান স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, যে সব স্থানে পপ স্থাপানের অনুমতি দেয়া হয়েছে সে গুলো স্থাপন করা হয়েছে কি না তাও সরজমিন পরিদর্শন করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানাবে বিটিআরসি। আইআইজি গাইড লাইন ২০১১ অনুসারে – শর্ত অমান্য এবং ভুল তথ্য দেয়ার জন্য প্রতিষ্ঠানটির লাইসেন্স বাতিল বা প্রশাসনিক জরিমানার বিধান রয়েছে। গাইডলাইনের অনুচ্ছেদ ৩০-এর জি(৭) অনুসারে লাইসেন্সের যে কোন শর্তভঙ্গ করলে লাইসেন্স স্থগিত, বাতিল কিংবা জরিমানার মুখোমুখি করার বিধানের কথা বলা আছে। বিটিআরসি বলছে, আমরা টেকনোলোজিস এমন একটি জায়গায় পপ স্থাপন করতে চায় যেখানে ন্যাশনাল টেলিকম মনিটরিং সিস্টেম নেই।  বিটিআরসি তাদের চিঠিতে বলছে, আমরা টেকনোলোজিস গাজীপুর, যশোর, বরিশাল, রাজশাহী, খুলনা, মময়নসিংহ ও কুমিল্লায় পপ স্থাপানের অনুমতি চেয়েছে। আইআইজি লাইসেন্সিং গাইডলাইনের শিডিউল-২ এর ২.০১ ধারা অনুসারে প্রতিটি আইআইজি প্রাথমিকভাবে ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, সিলেট, বরিশাল, রাজশাহী, গোপালগঞ্জ, রংপুর, ময়মনসিংহ, কুমিল্লা এবং বগুড়াতে নেটওয়ার্ক স্থাপন করতে হবে।  বর্তমানে আমরা টেকনোলোজিস পপ স্থান করেছে ১২টি। তবে এখানেও গোপালগঞ্জ নিয়ে একটি ভুল তথ্য দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। বিটিআরসিতে আবেদন করা চিঠিতে বলা হয়েছে ৪৩, গেঞ্জিপট্টি গোপালগঞ্জে তাদের পপ রয়েছে। তবে এটি সঠিক নয় বলে বিটিআরসি চ্যালেঞ্জ করার পর ঠিকানাটি বদলে দেবার কথা বলেছে আমরা নেটওয়ার্ক। সেটিও তারা করেনি বলে বিটিআরসির চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে। এদিকে বিটিআরসি তাদের আবেদন করা ঢাকা, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, খুলনা ও কুমিল্লায় পপ স্থাপানের অনুমতি দিলেও গাজীপুর ও যশোরে পপ স্থাপানের অনুমতি দেওয়া হয়নি।  নাম প্রকাশে অনুচ্ছিক বিটিআরসির একজন শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, ‘এখন নতুন করে তারা কী কারণে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা মনিটরিং সিস্টেমের পরিকল্পানার বাইরের এলাকায় পপ স্থাপন করতে চায় তা আমাদের বোধগম্য নয়। তাই বিষয়টি বিশ্লেষন করা হচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এটা ঝুঁকিপূর্ণ। তাই আমরা এর অনুমতি দিইনি।’ এ বিষয়ে অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানটি কোন মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। তবে আমরা টেকনোলজিসের প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা (সিওও) শারফুল আলম বলেন, ‘আমরা পপ বানাবো। অনুমতি দিবে বিটিআরসি। এটা নিয়ে আপনাদের মাথা ব্যথা কেন?’ এর আগেও প্রতিষ্ঠানটি অনিয়মে জড়িয়েছিল। আমরা টেকনোলোজিসকে বিটিআরসির গত বছরের ১৯ আগস্ট পাঠানো এক চিঠিতে বলা হচ্ছে, আমরা টেকনোলোজিস লিমিটেড প্রতিষ্ঠানটি আপস্ট্রিম ব্যান্ডউইথ ক্যাপাটিসির ৮ জিবির তথ্য কমিশনকে না জানিয়েই ব্যবহার করছে। এটা কবে থেকে ব্যবহার করা যাচ্ছে সে তথ্যও নিয়ম মত বিটিআরসির কাছে জানানোর কথা থাকলেও সেটিও করেনি আমরা টেকনোলোজিস লিমিটেড। বিটিআরসির একজন সিনিয়র অফিসিয়াল জানান, ‘দীর্ঘদিন ধরে (নভেম্বর ২০১৪ থেকে) তারা ৮ জিবি ব্যান্ডউইথ ব্যবহার করছে। আমরা যতটুকু ট্র্যাক করতে পেরেছি এটা অবৈধ ভিওআইপিরি কাজে ব্যবহৃত হয়ে থাকতে পারে।’

Leave a Reply