উইন্ডোজের পুরোনো সংস্করণ
ব্যবহারকারীদের জোর করে উইন্ডোজ
১০ দিচ্ছে মাইক্রোসফট। ইন্টারনেট
সংযোগ থাকলে উইন্ডোজ ১০
অপারেটিং সিস্টেম কম্পিউটারের
ডাউনলোড হতে শুরু করছে। নতুন সংস্করণ
পাওয়ার জন্য অনুরোধ বা কোনো কিছু
ক্লিক না করলেও ডাউনলোড হয়ে
যাচ্ছে এই সফটওয়্যারটি।

প্রশ্ন উঠেছে,
কেন জোর করে উইন্ডোজ দিচ্ছে
মাইক্রোসফট?

বিশ্লেষকেরা বলছেন, অধিক সংখ্যক
পিসিতে উইন্ডোজ ১০ দেওয়ার মরিয়া
প্রচেষ্টার একটি অংশ হচ্ছে স্বয়ংক্রিয়
ডাউনলোড প্রক্রিয়া। গত বছরের জুলাই
মাসের পর থেকে অনুরোধের
ভিত্তিতে উইন্ডোজ ১০ বিনা মূল্যে
হালনাগাদ করার সুযোগ রেখেছিল
মাইক্রোসফট। কিন্তু চলতি সপ্তাহ
থেকে জোর-জবরদস্তি শুরু করেছে
প্রতিষ্ঠানটি। যাঁরা উইন্ডোজের জন্য
অনুরোধ করছেন না, তাঁদেরও জোর করে
উইন্ডোজ ১০ দিয়ে দিচ্ছে মাইক্রোসফট।

এটা কী ভালো?
উইন্ডোজ ১০-এর বেশ কিছু সুবিধা আছে।
উইন্ডোজের আগের সংস্করণগুলো,
বিশেষ করে উইন্ডোজ ৮-এর চেয়ে
উইন্ডোজ ১০-এ অনেক সুবিধা যুক্ত
হয়েছে। এতে আধুনিক নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা,
একাধিক যন্ত্রে কাজের উপযোগী
ব্যবস্থা রয়েছে। পিসিতে কোনো
অ্যাপ কিনলে তা ফোন ও এক্সবক্সে
ব্যবহার করা যাবে। তবে সমস্যাও আছে।
নতুন অ্যাপ উইন্ডোজ ১০-এর জন্য তৈরি
করা হয়েছে, তাই পুরোনো পিসিতে
নতুন অ্যাপ বা সফটওয়্যার সমর্থন না-ও
থাকতে পারে।

মাইক্রোসফটের কী লাভ?
মাইক্রোসফটের হালনাগাদ সফটওয়্যার
ব্যবহারে সুবিধা আছে। এতে
মাইক্রোসফটের আয় কমে যেতে পারে।
কিন্তু বাস্তবে সফটওয়্যার বিক্রি
থেকে যে আয় আসে, তার ওপর

নির্ভরতা কমাচ্ছে মাইক্রোসফট। এর
পরিবর্তে বিং সার্চ, ওয়ানড্রাইভ
স্টোরেজ ও স্কাইপ কমিউনিকেশন
থেকে অর্থ আয়ের পথ খুঁজছে
প্রতিষ্ঠানটি। উইন্ডোজ ১০
অপারেটিং সিস্টেম এসব অ্যাপ অধিক
ব্যবহারে জোর দেয়। এ ছাড়া
বিজ্ঞাপন ও প্রিমিয়াম ফিচার
বিক্রি করে অর্থ আয় করে।

অ্যাপ নির্মাতাদের উইন্ডোজ ১০-এর জন্য আরও
অ্যাপ তৈরিতে উৎসাহিত করছে
প্রতিষ্ঠানটি। এ ক্ষেত্রে প্রতিদ্বন্দ্বী
অ্যাপলকে অনুসরণ করছে মাইক্রোসফট।

সতর্কতা জরুরি
সিস্টেম হালনাগাদ সব সময়
ঝামেলামুক্ত হয় না। যাঁদের পুরোনো
পিসি, কম গতিসম্পন্ন প্রসেসর, কম
মেমোরি আর কম জায়গা, তাঁদের
সিস্টেম হালনাগাদে সমস্যা হতে
পারে। মাইক্রোসফটের উইন্ডোজ ১০
ইনস্টল হতে পিসির সর্বনিম্ন
কনফিগারেশন পরীক্ষা করে। কিন্তু
সর্বনিম্ন কনফিগারেশনে উইন্ডোজ ১০
চালালে পিসি গতিসম্পন্ন হয় না।
পুরোনো পিসিতে থাকা অনেক
সফটওয়্যার উইন্ডোজ ১০-এর সঙ্গে কাজ
করে না। তখন দরকারি সফটওয়্যারগুলোর
হালনাগাদ করা লাগে। প্রিন্টার,
স্ক্যানারের জন্য আলাদা ড্রাইভার
লাগে।

কীভাবে ঠেকাবেন
উইন্ডোজ ১০-কে মাইক্রোসফট এখন
নিরাপত্তা হালনাগাদ হিসেবে
দেখাচ্ছে। অপশনাল থেকে
সফটওয়্যারটিকে ‘রিকমেনডেড’
হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে।
যাঁরা কম্পিউটারে অটোমেটিক বা
স্বয়ংক্রিয় হালনাগাদ চালু
রেখেছেন, তাঁদের উইন্ডোজ ১০
ডাউনলোড হয়ে যাচ্ছে। এই ডাউনলোড
ও অটোমেটিক আপডেট ঠেকাতে
উইন্ডোজ আপডেটের সেটিংস থেকে
অটোমেটিক আপডেট বন্ধ করে দিন।
মাইক্রোসফট এটাকে অবশ্য নিরুৎসাহিত
করছে। কারণ, মাইক্রোসফট বলছে, এতে
গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা প্যাঁচ ব্যবহারকারী
নাও পেতে পারে।

আপনি যদি বড় কোনো প্রতিষ্ঠানে

কাজ করেন, তবে সিস্টেম ব্যবস্থাপকের
অনুমতি ছাড়া উইন্ডোজ স্বয়ংক্রিয়
হালনাগাদ হতে পারবে না। বড়
প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে মাইক্রোসফট
বিনা মূল্যে উইন্ডোজ ১০ দিচ্ছে না।
২০২০ সাল পর্যন্ত উইন্ডোজ ৭, ২০২৩ সাল
পর্যন্ত উইন্ডোজ ৮-এর জন্য নিরাপত্তা
হালনাগাদ দেবে মাইক্রোসফট। তত
দিনে অবশ্য নতুন ধরনের পিসি বাজারে
চলে আসতে পারে।

অবশ্য যাঁরা উইন্ডোজ ১০ ইনস্টল করতে
চান, তাঁরা মাইক্রোসফট উইন্ডোজ ১০
হালনাগাদ দেখালে তার অনুমতি
দিতে পারেন। উইন্ডোজ ১০ ইনস্টল
করলে ছবি বা অন্য ডকুমেন্টের কোনো
সমস্যা হয় না। তবে নতুন সফটওয়্যারের
কারণে এলোমেলো হয়ে যেতে
পারে। তাই আগেভাগে ফাইল
ব্যাকআপ রাখুন। এ ক্ষেত্রে অনলাইন
স্টোরেজ সেবা যেমন ওয়ানড্রাইভ
কিংবা ড্রপবক্স কাজে লাগাতে
পারেন।

যাঁদের উইন্ডোজ ১০ আপডেট হয়ে
গেছে, তাঁরা কী করবেন?

মনে রাখতে
হবে, প্রায় এক মাস ধরে পুরোনো
সিস্টেমের ব্যাকআপ রেখে দেয়
মাইক্রোসফট। সেটিংসে ‘আপডেট
অ্যান্ড সিকিউরিটি’তে গিয়ে
‘রিকোভারি’ দিলে উইন্ডোজ ৭ বা ৮-
এ ফেরত আসা যাবে। ফাইল ঠিকঠাক
থাকলেও কিছু সফটওয়্যার অকার্যকর হয়ে
যেতে পারে।

ধন্যবাদ


তথ্য প্রযুক্তি সেবায়, আপনাদের পাশে।

…♦ ♦….(ফেসবুকে আমি)..♦…♦.

One thought on "জোর-জবরদস্তি শুরু করেছে মাইক্রোসফট!"

Leave a Reply