ব্রিটিশ বিজ্ঞানীরা এমন এক যন্ত্র
তৈরি করছেন, যেটি পর্দায় প্রচারিত
ছবির দৃশ্যপটে নিয়ে যাবে দর্শককে।
দেখার পাশাপাশি ঘ্রাণ, স্বাদ এবং
স্পর্শের অনুভূতি পাওয়া যাবে!
টেলিভিশনের নতুন প্রজন্মের এই উন্নত
সংস্করণকে বলা হচ্ছে ‘ফিলিভিশন’।

বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক এমন এক
কৌশল আবিষ্কার করছেন, যা দর্শকদের
এনে দেবে বৃষ্টির ফোঁটা ছোঁয়ার
অনুভূতি, হু হু করে বাতাস খেলে যাবে
তাঁদের মুখের ওপর দিয়ে। এমনকি
আলট্রাসাউন্ড তরঙ্গ এবং বাতাসের
প্রবাহ সৃষ্টির মাধ্যমে পর্দার দৃশ্যে
আবেগের ওঠানামার অনুভূতিটাও টের
পাবেন দর্শক পর্দার সামনে নিজের
ঘরে বসেই। এমনটাই জানিয়েছেন
সাসেক্স বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক
ম্যারিয়ানা ওব্রিস্ট। ওব্রিস্টের যার
কম্পিউটার হিউম্যান ইন্টারেকশন
ল্যাবে এই গবেষণার কাজটি চলছে।

মূলত পর্দার দৃশ্যের সঙ্গে মিল রেখে,
বাতাসের মধ্য দিয়ে আলট্রাসাউন্ড
তরঙ্গ দর্শকের হাতের বিভিন্ন স্থানে
ফেলে তাঁর দেহে নানা ধরনের
অনুভূতির উদ্দীপনা সৃষ্টি করা হবে।
এভাবেই সৃষ্টি করা সম্ভব হবে বৃষ্টির
ফোঁটা ছোঁয়ার অনুভূতি, আনন্দ কিংবা
বিষাদের অনুভূতিও।

গবেষকেরা দেখতে পেয়েছেন, হাতের বুড়ো আঙুল,
তর্জনী এবং হাতের তালুতে ছোট অথচ

তীক্ষ্ণ বাতাসের প্রবাহ পরিচালন
করে উত্তেজনার অনুভূতি জাগ্রত করা
যায়। আবার হাতের ওপরের পৃষ্ঠ এবং
কনিষ্ঠ আঙুলে উদ্দীপনা দিয়ে দর্শকের
মনে দুঃখের অনুভূতি প্রদান করা যায়।

ওব্রিস্ট বিশ্বাস করেন, পর্দার ছবিতে
যেভাবে অনুভূতির ওঠা-নামা এবং
গাঢ়ত্ব পরিবর্তিত হয়, ঠিক সেভাবে
দর্শকের মনেও অনুভূতির ওঠা-নামা
কিংবা জাগ্রত করা সম্ভব হবে। তিনি
বলেন, ‘যেমন “এসকেপ টু দ্য কান্ট্রি”
অনুষ্ঠানটির কথাই ধরা যাক। সেখানে
আপনি সশরীরে যেতে না পারলেও
গ্রামে যাওয়ার অনুভূতিটা পেতে
পারেন ঘরে বসেই।’

তিনি নয় মাত্রাবিশিষ্ট টিভি উদ্ভাবনের স্বপ্ন
দেখেন, যা দিয়ে পর্দার দৃশ্যে ঘটে
যাওয়া সব ধরনের অনুভূতির ছোঁয়া
দর্শককে দেওয়া সম্ভব হবে। চাইলে এই
অনুভূতিগুলোকে দর্শক নিজের ইচ্ছামতো
নিয়ন্ত্রণও করতে পারবেন। তবে, এমন
অনুভূতিসম্পন্ন টিভি তৈরি করা এত সহজ
নয়, এ কথা স্বীকার করে দ্য কনভারসেশন
ওয়েবসাইটে ড. ওব্রিস্ট লেখেন,
প্রোগ্রামাররা ভালো করেই জানেন,
কেমন করে এমন যন্ত্রের নকশা করা যায়,
যাতে পর্দায় গভীরতা এবং দূরত্ব দুই-ই
দেখা যায়।

মানুষের অনুভূতিকে ছড়িয়ে দেওয়ার
আরেকটি উপায় আছে। পদ্ধতিটি
‘হেপ্টিক প্রযুক্তি’ নামে পরিচিত।
এতে আঙুলের স্পর্শকে কম্পিউটারের
প্রোগ্রামে রূপ দেওয়া হবে। হাতের
বিভিন্ন অংশ বিভিন্ন ধরনের অনুভূতির
বার্তা দেবে। দক্ষিণ কোরিয়ায় এক

সম্মেলনে ড. ওব্রিস্ট তাঁর থিসিস
পেপারে লেখেন, ‘ধরুন, এক দম্পতি
কাজে যাওয়ার আগে খুব করে ঝগড়া
করে বাড়ি থেকে বের হয়েছেন।

মিটিং চলাকালে মেয়েটির হাতে
থাকা ব্রেসলেটের মধ্য দিয়ে এমন
একটি স্পন্দন তাঁর হাতের তালুতে
দেওয়া হলো, যাতে করে তিনি আরাম
বোধ করলেন এবং বুঝতে পারলেন, তাঁর
ভালোবাসার মানুষটি আর তাঁর ওপর
রেগে নেই!’
স্বাদ এবং ঘ্রাণের সঙ্গে স্পর্শের
অনুভূতিটাও যাতে আনা যায়, এ জন্য ড.
ওব্রিস্টকে পাঁচ বছর মেয়াদি এক
প্রজেক্টে ১০ লাখ ডলার অর্থ দিয়েছে
ইউরোপিয়ান রিসার্চ কাউন্সিল।

এমনটি সত্যিই করা সম্ভব হলে
নিঃসন্দেহে প্রযুক্তির জগতে এক
বিরাট বিপ্লব ঘটে যাবে।

ধন্যবাদ


তথ্য প্রযুক্তি সেবায়, আপনাদের পাশে।

…♦ ♦….(ফেসবুকে আমি)..♦…♦.

Leave a Reply