মহাসমুদ্রের তলায় এতোটাই প্লাস্টিক ছড়িয়ে পড়েছে যে একেকটা মহাসাগরকে বলা হচ্ছে – প্লাস্টিক সুপ।
অস্ট্রেলিয়ার সংসদের উদ্যোগে পরিবেশের ওপর চালানো এক গবেষণায় মহাসমুদ্রে প্লাস্টিকের দূষণের ভয়াবহতাকে তুলে ধরা হয়েছে ঠিক এই একটি উপমা দিয়েই।
গবেষকরা বলছেন, শুধুমাত্র অস্ট্রেলিয়ার জলসীমার ভেতরেই, চোখে দেখা যায় প্লাস্টিকের এরকম বর্জ্যের সংখ্যা সাড়ে তিন হাজার কোটি।
এছাড়াও আছে প্লাস্টিকের অগণিত আরো বহু কোটি আবর্জনা যা চোখে দেখা যায় না।
সমুদ্রে জীব ও প্রাণীদের ওপর গবেষণা করেন এরকম একজন মেরিন বায়োলজিস্ট বেন জোন্স। তিনি বলছেন, মহাসাগরে ছড়িয়ে পড়া প্লাস্টিকের এসব টুকরো শুধু সামুদ্রিক প্রাণীর জন্যেই ক্ষতিকর নয়, মানুষের স্বাস্থ্যের জন্যেও হুমকি হয়ে উঠছে।
“প্লাস্টিকের কখনো ক্ষয় হয় না। আমরা যখন আমাদের আশেপাশে প্লাস্টিকের জিনিসপত্র ছুড়ে ফেলি সেগুলো ভেঙে ছোট ছোট টুকরায় পরিণত হয়। আর এসব প্লাস্টিক মহাসমুদ্রে অক্ষত অবস্থায় থেকে যায় কোটি কোটি বছর। প্লাস্টিকের এসব ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কণা পরিবেশের জন্যে এখন বড়ো ধরনের এক সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।”
তিনি বলেন, “একটা উদাহরণ দেওয়া যাক- যুক্তরাষ্ট্রে যতো মাছ আছে তার ৫০ শতাংশের পেটের ভেতরেই প্লাস্টিক পাওয়া যাবে। একই কথা প্রযোজ্য ইন্দোনেশিয়ার বেলাতেও। আর এভাবেই আমাদের খাদ্যচক্রের ভেতরে প্লাস্টিক ঢুকে পড়েছে।”
বিজ্ঞানীরা বলছেন, প্লাস্টিকের ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র যেসব কণা কসমেটিক্স এবং টুথপেস্টে ব্যবহার করা হয়, সেগুলোকে গিলে খাচ্ছে মাছ এবং পরে সামুদ্রিক মাছ খেয়ে সেগুলোকে শরীরে নিচ্ছে মানুষ। আর সেটা মানুষের শরীরে কাজ করছে বিষের মতো।
সমুদ্রে ছড়িয়ে পড়া এসব প্লাস্টিক পরিষ্কারের কাজ করছে অস্ট্রেলিয়ার একটি দাতব্য সংস্থা- টাঙ্গারোয়া ব্লু ফাউন্ডেশন। সংস্থাটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক হেইডি টেলর। বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, মানুষই এই সমস্যা সৃষ্টি করেছে। এখন মানুষকেই এর সমাধান করতে হবে।
“মূল কথা হচ্ছে, মহাসমুদ্রে যা কিছু আছে, সেটা অস্ট্রেলিয়ার আশেপাশেই হোক, কিম্বা পৃথিবীর যেকোনো দেশেই হোক, কথা হচ্ছে মানুষের আচার আচরণের কারণেই এসব ছড়িয়ে পড়েছে। পরিবেশের জন্যে এটা এখন অনেক বড়ো একটা সমস্যা। ভবিষ্যতেও যে খুব দ্রুত এই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে তা নয়। তবে এই সমস্যার একটা সহজ সমাধান আছে।”
তিনি বলেন, এজন্যে মানুষের আচার আচরণের মধ্যে শুধু একটা পরিবর্তন আনতে হবে।
মহাসমুদ্রে প্লাস্টিকের এই দূষণ নিয়ে শুনুন বাংলাদেশে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমুদ্র বিজ্ঞানী সাইদুর রহমান চৌধুরীর সাক্ষাৎকার:
ব্রেইন ব্যাঙ্ক। শুনতেই চমকে ওঠার মতো। হ্যাঁ, ব্রিটেনে এরকম দশটি ব্রেইন ব্যাঙ্কের একটি নেটওয়ার্ক আছে। এখানে মানুষের মস্তিষ্ক রাখা আছে গবেষণার জন্যে। মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিলের উদ্যোগে এসব মস্তিষ্ক সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করা হয়।
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, মানুষের মস্তিষ্কে বিশেষ কি আছে যা এই পৃথিবীর আর সবকিছু থেকে আমাদেরকে আলাদা করেছে? বিজ্ঞানীদের মতে পৃথিবীতে যতো প্রাণী আছে তার মধ্যে মানুষের মস্তিষ্কই সবচে জটিল। বিবিসির ফার্গুস ওয়ালশ মানুষের মস্তিষ্ক দেখতে গিয়েছিলেন এরকমই একটি ব্যাঙ্ক- ব্রিস্টল ব্রেইন ব্যাঙ্কে।
তিনি বলছেন, প্রত্যেক বছর এরকম কয়েকশো মস্তিষ্ক এসব ব্যাঙ্কে দান করা হয়, মেডিকেলের গবেষণার জন্যে।
মানুষের এই মস্তিষ্কের ওজন গড়ে দেড় কিলোগ্রামের বা দেড় কেজির মতো। মানব দেহের যে মোট ওজন তার মাত্র দুই শতাংশ এই মস্তিষ্কের ওজন।
মানব দেহের যে শক্তি তার কুড়ি শতাংশ থাকে এই মস্তিষ্কের ভেতরে। থাকে ১০ হাজার কোটি নার্ভ সেল বা নিউরন। একেকটি নিউরনের আছে ১০ হাজার সংযোগ বা কানেকশন।
তার অর্থ একটি মস্তিষ্কের মধ্যে থাকে এক হাজার ট্রিলিয়ন সংযোগের একটি নেটওয়ার্ক। যেকোনো সুপার কম্পিউটারের নেটওয়ার্কের চেয়ে অনেক বেশি জটিল মানুষের মস্তিষ্কের এই নেটওয়ার্ক।
ব্রেনের মধ্যে বিদ্যুতও থাকে। ২০ ওয়াটের। খুব হালকা একটি ডিম লাইটের মতো। আছে কমান্ড সেন্টার। মস্তিষ্কের একেক অংশ একেক কাজে ব্যবহৃত হয়- কোনো অংশ ভাষার কাজে। কোনটি আবেগের জন্যে। স্মৃতির জন্যেও আছে আলাদা অংশ।
জীব বিজ্ঞান আর মানুষের বিবর্তনের জন্যে মস্তিষ্কের মতো আর কিছুই নেই এই পৃথিবীতে।
এটা একটা মাস্টারপিস। বিজ্ঞান সম্পর্কে আমরা কতো কি জানি, কতো কি আমরা আবিষ্কারও করেছি। কিন্তু মানুষের এই মস্তিষ্ক ঠিক কিভাবে কাজ করে, এবং কখনো কখনো কেনো বিগড়ে যায় বা কাজ করে না, এতোদিনে আমরা তার খুব সামান্যই জানতে পেরেছি।