বিশাল এক হ্যাকারের বাজার।

আন্ডারগ্রাউন্ড ওই বাজারে কম দামে
ভাড়া পাওয়া যায় হ্যাকার। এ
হ্যাকাররা কম খরচে ভাড়ায় হ্যাক করে
দিতে পারে ই-মেইলসহ গুরুত্বপূর্ণ
অ্যাকাউন্ট। সম্প্রতি সাইবার
নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান ডেল
আন্ডারগ্রাউন্ড হ্যাকার মার্কেটস
রিপোর্ট নামের একটি প্রতিবেদন
প্রকাশ করেছে, যাতে
আন্ডারগ্রাউন্ডের ওই হ্যাকার বাজার
সম্পর্কে তথ্য উঠে এসেছে।

আন্ডারগ্রাউন্ড হ্যাকার
মার্কেটপ্লেসের বর্তমান ট্রেন্ড
বিবেচনায় ধরে ডেল সিকিউর
ওয়ার্কসের বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা
হয়েছে, ডার্ক ওয়েবের জগতে ব্যবসা
ফুলেফেঁপে উঠছে। সাইবার
নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠানটির তৃতীয়
বার্ষিক প্রতিবেদনে জানানো হয়,
হ্যাকাররা ব্যবসা বাড়াচ্ছে।
নিজেকে সৎ, বিশ্বাসযোগ্য ও
পেশাদার বিশেষ তুলে ধরতে
বিজ্ঞাপনও দিচ্ছে। ব্যবসার
পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের অবৈধ
সামগ্রী ও সেবা সাশ্রয়ী খরচে
দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে।

৫ এপ্রিল ডেলের প্রকাশিত ওই
প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতিষ্ঠানটির
সিসকো ইনটেল টিম নামের দুটি
বিশেষজ্ঞ দলের কাছ থেকে প্রাপ্ত
তথ্য বিশ্লেষণ করে এ প্রতিবেদন তৈরি
করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বিশ্বের

বিভিন্ন মার্কেটপ্লেস ও ফোরামের
হ্যাকারদের তথ্য সংগ্রহ করেন।

ডেলের গবেষণায় দেখা গেছে, কারও
ই-মেইল হ্যাক করার বা ডিজিটাল
পরিচয় বের করে দেওয়ার ক্ষেত্রে খরচ
কমিয়ে দিচ্ছে হ্যাকাররা। তবে
ব্যাংক অ্যাকাউন্টসংক্রান্ত তথ্য,
পাসপোর্ট, সামাজিক যোগাযোগের
প্রোফাইল হ্যাকিংসহ অন্যান্য সেবা
হ্যাকিংয়ের খরচ বাড়াচ্ছে তারা।
ডেলের প্রতিবেদনে জানানো হয়,
অন্যান্য বাজারের মতো হ্যাকিংয়ের
বাজারও চাহিদা ও সরবরাহের ওপর দাম
বাড়া-কমার বিষয়টি নির্ভর করে।
হ্যাকার ভাড়া থেকে শুরু করে আর্থিক
লেনদেনের পুরো বিষয়টি অনলাইনে
সম্পন্ন হয়।

সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা
দাবি করেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের কোনো
নাগরিকের ব্যক্তিগত কোনো ই-মেইল
অ্যাকাউন্ট, জিমেইল, ইয়াহু, হটমেইল
প্রভৃতি হ্যাক করতে ১২৯ মার্কিন ডলার
করে দাবি করে হ্যাকাররা। করপোরেট
মেইল অ্যাকাউন্ট হ্যাক করতে দাবি
করে ৫০০ ডলার। রাশিয়ান ইমেইল
অ্যাকাউন্ট হ্যাক করতে দাবি করে ৬৫
থেকে ১০৫ ডলার। কোনো কম্পিউটার
ব্যবহারকারীর আইপি ঠিকানা হ্যাক
করতে দাবি করে ৯০ ডলার।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক কোনো ব্যক্তির
ফেসবুক, টুইটারসহ সামাজিক
যোগাযোগের অ্যাকাউন্ট হ্যাক করতে
দাবি করে ১২৯ ডলার। এদিকে রিমোট
অ্যাকসেস ট্রোজান (র্যাট) নামের
ক্ষতিকর সফটওয়্যার বিক্রি করে মাত্র
পাঁচ থেকে ১০ ডলারে। এ ক্ষতিকর
সফটওয়্যার ব্যবহার করে দূর থেকে

কম্পিউটারের নিয়ন্ত্রণ নিতে পারে
সাইবার দুর্বৃত্তরা। ডিডস আক্রমণে
ঘণ্টাপ্রতি অর্থ দাবি করে তারা।
ঘণ্টা, দিন বা সপ্তাহ ধরে খরচ পরে পাঁচ
থেকে ৫৫৫ মার্কিন ডলার পর্যন্ত।
হ্যাকিং শেখার টিউটোরিয়াল ২০
থেকে ৪০ মার্কিন ডলারে কেনা-
বেচা হয়।

ডেলের প্রতিবেদনে জানানো হয়, এ
বছর আন্ডারগ্রাউন্ড বাজারে এটিএম
স্কিমার নামের একটি যন্ত্রের
চাহিদা ছিল সবচেয়ে বেশি। যন্ত্রটি
ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ডের
ম্যাগনেটিক স্ট্রাইপ থেকে গোপন
ইলেকট্রনিকসের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ
করে নিতে পারে। নতুন থ্রিডি
প্রিন্টেড সংস্করণসহ এ ধরনের যন্ত্রের
দাম ১ হাজার ৭৭৫ মার্কিন ডলার।

গ্রাহকদের আকৃষ্ট করতে বিভিন্ন ধরনের
প্রতিশ্রুতি দেয় হ্যাকাররা। গ্রাহক
সন্তুষ্টির জন্য পরীক্ষামূলক হ্যাকিং বা
সক্ষমতা প্রমাণের জন্য ঘণ্টাভিত্তিক
কাজেও রাজি হয় তারা। অনেক সময় ২৪
ঘণ্টা গ্রাহকসেবার প্রতিশ্রুত দেয়
তারা। তথ্যসূত্র: আইবিটাইমস

Leave a Reply