এখনকার দিনে প্রযুক্তির উন্নয়নের অন্যতম শর্ত হচ্ছে, পূর্বের প্রযুক্তির সব তথ্য সংরক্ষণ করা। সাধারণ অর্থে ডাটা সেন্টার বলতে কোনো তথ্যভাণ্ডারকে বোঝায়, যেখানে অনেক তথ্য একটি সংগ্রহস্থলে জমা থাকে।
তথ্য সংরক্ষণ এবং তথ্য প্রদানের দ্রুততা বৃদ্ধির জন্য সরকারি ও বেসরকারিভাবে বিশ্বের অনেক জায়গায় অনেক ডাটা সেন্টার তৈরি করা হয়েছে।
বর্তমানে বিশ্বে শতাধিক ডাটা সেন্টার রয়েছে, তবে বেশির ভাগেরই গড় আয়তন হচ্ছে এক লাখ বর্গফুট, যা আকারে অনেক ছোট। তবে উন্নত দেশগুলোতে তাদের কাজের দ্রুততার জন্য অনেক বৃহত্তম ডাটা সেন্টার তৈরি করেছে। বাণিজ্য এবং তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক ওয়েবসাইট সিবিআর অনলাইন জানিয়েছে বিশ্বের বৃহত্তম পাঁচটি ডাটা সেন্টারের খবরাখবর।
১. রেঞ্জ ইন্টারন্যাশনাল ইনফরমেশন গ্রুপ
অবস্থান : ল্যাংফ্যাং, চীন
আকার : ৬৩ লাখ বর্গফুট
চীনের তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে গত দশকের চেয়ে এখন অনেক বেশি বিনিয়োগ হচ্ছে, চীনের অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবসার দিকে ঝুঁকছে। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং প্রযুক্তিগত উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করতে চীনে কেন্দ্রীয়ভাবে একটি ডাটা সেন্টার তৈরির প্রয়োজন হয়। তখন রেঞ্জ ইন্টারন্যাশনাল ইনফরমেশন গ্রুপ ৬৩ লাখ বর্গফুটের ডাটা সেন্টারটি তৈরি করে। এই ডাটা সেন্টারটি আয়তনে ওয়াশিংটনের পেন্টাগন এবং ১১০টি ফুটবল মাঠের সমান হবে।
২. সুইচ সুপারন্যাপ
অবস্থান : নেভাডা, আমেরিকা

আকার : ৩৫ লাখ বর্গফুট
কৌশলগতভাবে প্রাকৃতিক দুর্যোগ এড়ানোর জন্য এই ডাটা সেন্টার লাস ভেগাসের দক্ষিণ নেভাডায় তৈরি করা হয়েছে। ডাটা সেন্টারটি তৈরি করতে ১০০ কোটি (এক বিলিয়ন) ডলার খরচ হয়। এই ডাটা সেন্টারের ৫০০ মাইল পর্যন্ত অপটিক্যাল ফাইবারের সঙ্গে সংযুক্ত রয়েছে। এই অপটিক্যাল ফাইবার সংযোগটি রেনো, লাস ভেগাস, লস অ্যাঞ্জেলেস এবং সানফ্রান্সিসকোর সঙ্গে সংযুক্ত। ফলে এক প্রদেশ থেকে অন্য প্রদেশে তথ্য প্রদানে সময় লাগবে মাত্র ৭ মিলিসেকেন্ড এবং পাঁচ কোটি ব্যবহারকারী একসঙ্গে ১৪ মিলিসেকেন্ডের ব্যবধানে তথ্য আদান-প্রদান করতে পারবেন।
৩. ডুপোন্ট ফেভ্রোস টেকনোলজি
অবস্থান : ভার্জিনিয়া, আমেরিকা
আকার : ১৬ লাখ বর্গফুট
এই ডাটা সেন্টারটির প্রতিটি রুমে রয়েছে ২৮টি কম্পিউটার এবং একসঙ্গে সাড়ে ১০ হাজার সার্ভার রাখার জায়গা। এই ডাটা সেন্টারটিতে ৪১ দশমিক ৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। এতে মিডিয়াম ভোল্টেজ ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম প্রয়োগ করা হয়েছে।
৪. উটাহ ডাটা সেন্টার
অবস্থান : উটাহ, আমেরিকা
আকার : ১৫ লাখ বর্গফুট
এই ডাটা সেন্টারটিকে অফিশিয়ালি আমেরিকার ইন্টেলিজেন্স কমিউনিটির ন্যাশনাল সাইবার সিকিউরিটি ডাটা সেন্টার বলা হয়। এটি ২০১৪ সালে তৈরি হয় এবং প্রায় দেড়শ কোটি (এক দশমিক ৫ বিলিয়ন) ডলার খরচ হয়। ধারণা করা হয়, এর তথ্য ধারণক্ষমতা হচ্ছে ৩-১২ ইক্সাবাইটস। এই ডাটা সেন্টারটিতে ৬৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়।
৫. মাইক্রোসফট ডাটা সেন্টার
অবস্থান : আইওয়া, আমেরিকা
আকার : ১২ লাখ বর্গফুট
এই ডাটা সেন্টার আইওয়ার পশ্চিমে দেস ময়েনসে অবস্থিত, এটি তৈরিতে খরচ হয় ১১৩ কোটি ডলার। ২০১৪ সালের এপ্রিলে মাইক্রোসফট এ রকম আরেকটি ডাটা সেন্টার তৈরির ঘোষণা দিয়েছিল। নতুন ডাটা সেন্টার নির্মাণ করা হলে বর্তমান ডাটা সেন্টারের মোট আয়তন হবে ৪০ লাখ বর্গফুট। এই ডাটা সেন্টারের ১০ লাখ বর্গফুটের বেশি জায়গাজুড়ে থাকবে সার্ভার। মাইক্রোসফট তার প্রথম ডাটা সেন্টার তৈরি করে ২০০৮ সালে, যা তৈরিতে খরচ হয় ৬৭ কোটি ৭০ লাখ ডলার।

Leave a Reply