নির্ধারিত সময়ের প্রায় এক বছর পর পটুয়াখালীর
কলাপাড়ায় চালু হল বাংলাদেশের দ্বিতীয় সাবমেরিন
কেবল ল্যান্ডিং স্টেশন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোববার গণভবন
থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই
স্টেশনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
কলাপাড়া উপজেলার গোড়া আমখোলাপাড়ায় এই
ল্যান্ডিং স্টেশনের মাধ্যমে সাউথইস্ট এশিয়া-
মিডলইস্ট-ওয়েস্টার্ন ইউরোপ (এসইএ-এমই-
ডব্লিউই-৫) আন্তর্জাতিক কনসোর্টিয়ামের
সাবমেরিন কেবল থেকে সেকেন্ডে ১ হাজার
৫০০ গিগাবাইট (জিবি) গতির ইন্টারনেট পাবে বাংলাদেশ।
এর ফলে বাংলাদেশের টেলিকম
কোম্পানিগুলোকে আর বিদেশ থেকে
ব্যান্ডউইথ কিনতে হবে না বলে সরকার আশা
করছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গণভবনে
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ডাক ও টেলিযোগাযোগ
প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম ও টেলি যোগাযোগ
মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি
ইমরান আহমদ উপস্থিত ছিলেন। আর কলাপাড়ায়
ছিলেন শ্যাম সুন্দর সিকদার।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, নব্বইয়ের দশকে
সাবমেরিন কেবল যখন প্রথম দক্ষিণ এশিয়ায় এল,

তখন বিনা খরচে ওই কেবলের সঙ্গে যুক্ত
হওয়ার সুযোগ বাংলাদেশ হারিয়েছিল তখনকার বিএনপি
সরকার প্রস্তাবটি নাকচ করে দেওয়ার কারণে।
কক্সবাজার দিয়ে আসা বাংলাদেশের প্রথম
সাবমেরিন কেবল দিয়ে পুরো বাংলাদেশের চাহিদা
পূরণ হচ্ছে না বলে আওয়ামী লীগ সরকারই
দ্বিতীয় সাবমেরিন কেবলে যুক্ত হওয়ার
উদ্যোগ নিয়েছিল জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন,
“আজ আমাদের সৌভাগ্য যে সেটা উদ্বোধন
করতে পেরেছি।”
বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো সাবমেরিন কেবল
‘সি-মি-ইউ-৪’ এ যুক্ত হয় ২০০৫ সালে, যার মাধ্যমে
২৫০ জিবিপিএস (গিগাবাইট পার সেকেন্ড) ব্যান্ডউইথ
পাওয়া যাচ্ছে।
সি-মি-ইউ-৪ ছাড়াও বাংলাদেশ ছয়টি বিকল্প সাবমেরিন
কেবলের (আইটিসি বা ইন্টারন্যাশনাল টেরিস্ট্রিয়াল
কেবল) সঙ্গে যুক্ত রয়েছে।

বাংলাদেশে ইন্টারনেটের চাহিদা ৪০০ জিবিপিএসের
বেশি। এই ৪০০ জিবিপিএসের মধ্যে ১২০ জিবিপিএস
এতদিন রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি বিএসসিসিএলের
মাধ্যমে আসছিল। বাকি ২৮০ জিবিপিএস আইটিসির
ব্যান্ডউইডথ ভারত থেকে আমদানি করা হচ্ছিল।
২০১৬ সালের শেষ নাগাদ দ্বিতীয় সাবমেরিন
কেবলে যুক্ত হওয়ার কথা থাকলেও বাংলাদেশের
অভ্যন্তরে কেবল স্থাপনের কাজ শেষ না হওয়ায়
তা পিছিয়ে যায়।
বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি লিমিটেড
(বিটিসিএল) ও টেলিফোন শিল্প সংস্থা (টেসিস)
সম্প্রতি এ প্রকল্পের ট্রান্সমিশন লিংকের কাজ
শেষ করে।
দ্বিতীয় সাবমেরিন কেবল স্থাপনে ২০১১ সালের
ডিসেম্বরে চুক্তি করে বাংলাদেশ, ব্যয় ধরা হয়
৬৬০ কোটি টাকা। এ কেবলের মেয়াদ হবে ২০
থেকে ২৫ বছর।
বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল কোম্পানি
লিমিটেডের (বিএসসিসিএল) কর্মকর্তারা বলছেন,
দ্বিতীয় ল্যান্ডিং স্টেশন হওয়ায় এখন একটি
স্টেশনে সমস্যা হলে আরেকটি দিয়ে কাজ
চালানো যাবে।
এছাড়া ট্রান্সমিশন ব্যয় কম হবে বলে
দক্ষিণাঞ্চলের অনেক জেলার মানুষ তুলনামূলক
কম খরচে উচ্চ গতির ইন্টারনেট সুবিধা পাবে।
এছাড়া অতিরিক্ত ব্যান্ডউইথ রপ্তানি করার পরিকল্পনার
কথাও এর আগে জানিয়েছিলেন প্রতিমন্ত্রী তারানা
হালিম।

Leave a Reply