নতুন পাওয়ার ব্যাংক কেনাটা আজকাল অনেক সাধারন একটি ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।
কিন্তু বর্তমান বাজারে অনেক নামি দামি কোম্পানির গুলোর ভিন্ন ভিন্ন দামের পাওয়ার ব্যাংক কিনতে পাওয়া যাচ্ছে।
এই অবস্থায় একজন সাধারন ব্যবহারকারী প্রায়শই বিভ্রান্ত হয়ে পরে যে কোনটি কিনবেন!! আর কোনটি না কিনবেন তা নিয়ে।
তাই আজকের এই পোস্টে আমি এমন কিছু পয়েন্ট নিয়ে আলোচনা করবো যাতে সেগুলো অনুসরন করলে আপনার সিদ্ধান্ত নিতে সুবিধা হয়।
পাওয়ার ব্যাংক কেন ব্যবহার করা প্রয়োজন
প্রতিনিয়ত মোবাইল ফোন গুলোর ডিজাইন অনেক স্লিম হয়ে গেছে, কার্যক্ষমতা অনেক বেড়ে গেছে কিন্তু ব্যাটারি লাইফ তেমন ভালো পাওয়া যাচ্ছে না।
আবার আগের তুলনায় মোবাইল ফোন ব্যাবহারের ধরণও অনেক পাল্টে গেছে।
তো এই অবস্থায় আমাদের প্রয়োজন পরে একটি পাওয়ার ব্যাংককের, যাতে আমরা যখন চাই যেখানে চাই আমাদের ফোনকে চার্জ করতে পারি এবং আবার ব্যাবহারের জন্য উপযোগী করে তুলতে পারি।
এছাড়াও এই পাওয়ার ব্যাংক এর ফলে ট্রাভেল করতেও সুবিধা পাওয়া যায়, তাই এর ব্যবহার করা আমাদের প্রয়োজন হয়ে পরে।
পয়েন্ট ১
সবচেয়ে প্রথমে যে পয়েন্ট আসে তা হলো পাওয়ার ব্যাংক এর ক্যাপাসিটি।
এখন বর্তমান বাজারে ১,৫০০ এমএএইচ থেকে শুরু করে ২০-৩০ হাজার এমএএইচ এরও অধিক ক্যাপাসিটির পাওয়ার ব্যাংক কিনতে পাওয়া যায়।
এই অবস্থায় আপনার নিজেকেই নির্ণয় করতে হবে যে আপনি বেশি রিচার্জ সাইকেল চাচ্ছেন নাকি বেশি পোর্টাবিলিটি চাচ্ছেন।
আর এর উপর নির্ভর করে আপনাকে একটি ক্যাপাসিটি পছন্দ করে নিতে হবে।
প্রথমেই একটি কথা আপনাকে পরিষ্কার করে দেই, অবশ্য অনেকে এটির ব্যাপারে ভুল ভেবে থাকেন।
মনে করুন আপনার ফোনের ব্যাটারি ২,৫০০ এমএএইচ এবং আপনার পাওয়ার ব্যাঙ্কের ক্যাপাসিটি ১০,০০০ এমএএইচ।
এর মানে কিন্তু এটা নয় যে আপনি আপনার ফোনকে ৪ রিচার্জ করতে পারবেন।
দেখুন আপনার প্রোডাক্ট টির গায়ে যদি ১০,০০০ এমএএইচ লেখা থাকে তবে এর ক্যাপাসিটি ১০ হাজার এমএএইচ ই হবে, কোম্পানি আপনাকে মিথ্যা কথা বলে না।
কিন্তু যখন আপনার ফোনটিকে চার্জ করেন তখন এর থেকে কিছু এনার্জি লস হয়ে যায়।
এর ফলে মোট ক্যাপাসিটির বাস্তবিকভাবে ৭৫-৯৫% কর্মদক্ষতা পাওয়া যায়।
যদিও কর্মদক্ষতার শতকরা হার নির্ভর করে বিভিন্ন কোম্পানির উপর।
তাই ক্যাপাসিটি বাস্তবিকভাবে কখনো আসল হয় না, হালকা কম হতে পারে।
পয়েন্ট ২
পাওয়ার ব্যাংক কেনার সময় আরেকটি ফিচার আপনার যাচাই করে নেওয়া উচিৎ।
আর সেটি হলো পাস থ্রু চার্জিং (Pass Through Charging) ফিচার।
দেখুন আপনি যখন নতুন একটি পাওয়ার ব্যাংক কেনেন তখন তার সাথে শুধু একটি ইউএসবি ক্যাবল থাকে।
আপনাকে নতুন পাওয়ার অ্যাডাপটার দেওয়া হয় না চার্জ করার জন্য।
কেনো না আপনার ফোনের সাথে তো পাওয়ার অ্যাডাপটার আগে থেকেই থাকে।
আর আপনি যদি কোথাও ঘুরতেও যান এগুলোর সাথে তো আপনি আর দুইটি আলাদা আলাদা পাওয়ার অ্যাডাপটার নিয়ে যাবেন না তাই না?
মনে করুন আপনি পাওয়ার অ্যাডাপটারের সাথে পাওয়ার ব্যাংককে সংযোগ করলেন এবং পাওয়ার ব্যাংকের সাথে আপনার স্মার্টফোনকে ও।
এখন আপনার পাওয়ার ব্যাংককে যদি পাস থ্রু চার্জিং ফিচার থাকে তাহলে কি হবে এই বার দেখুন।
তাহলে প্রথমে আপনার ফোনটি চার্জ হবে বিদ্যুৎ থেকে তারপর আপনার পাওয়ার ব্যাংক চার্জ হবে।
এই ফিচারটি সকল পাওয়ার ব্যাংককে থাকে না।
উদাহরন: মনে করুন আপনি যদি রাতে একসাথে সবগুলো চার্জে লাগিয়ে ঘুমিয়ে যান তবে এই ফিচারটির সাহায্যে সকালে দেখবেন আপনার ফোনটিও ফুল চার্জ হয়ে গেছে এবং আপনার পাওয়ার ব্যাংকের চার্জও ফুল হয়ে গেছে।
তাই এইটা অনেক প্রয়োজনীয় একটি ফিচার, নতুন পাওয়া ব্যাংক কেনার আগে দেখে নিবেন।
পয়েন্ট ৩
এখন কথা বলা যাক পাওয়ার ব্যাংক এর প্রোটেকশন নিয়ে।
মনে রাখবেন আপনি একটি হাই-ক্যাপাসিটি ব্যাটারি বহন করেছেন, সেটা আপনার পকেটে হোক অথবা আপনার ব্যাগে।
তো এই অবস্থায় প্রোটেকশন অনেক বেশি প্রয়োজনীয় হয়ে পরে।
পাওয়ার ব্যাংকের প্রস্তুতকারী বড় কোম্পানি সমূহ আপনাকে মুলত ৪ টি প্রোটেকশন দিয়ে থাকে।
ওভার চার্জিং প্রোটেকশন;
ওভার ভোল্টেজ প্রোটেকশন;
সর্ট সার্কিট প্রোটেকশন;
অধিক মাত্রায় গরম হওয়া থেকে প্রোটেকশন;
(সূত্র:ইন্টারনেট)
এই চারটি প্রোটেকশন যদি আপনার পাওয়ার ব্যাংকটিতে থাকে তবে আপনি নিশ্চিন্তে তা যেখানে খুশি যেভাবে খুশি ব্যবহার ও পরিবহন করতে পারেন।
এই চারটি প্রোটেকশন থাকার ফলে না তো আপনার ফোনের কোন ক্ষতি হবে আর নাই বা আপনার পাওয়ার ব্যাংকটির কোন সমস্যা হবে।
তাই কেনার আগে অবশ্যই যাচাই করে দেখুন এই গুরুত্বপূর্ণ প্রোটেকশন গুলো আছে কি না।
পয়েন্ট ৪
কিছু কিছু পাওয়ার ব্যাংককে শুধু মাত্র ১ টি সিঙ্গেল আউটপুট পোর্ট দেখতে পাওয়া যায়।
আবার কিছু পাওয়ার ব্যাংককে ৩-৪ টি আউটপুট পোর্টস দেখতে পাওয়া যায়।
এখন আপনি কোনটি পছন্দ করবেন তা সম্পূর্ণ নির্ভর করবে আপনার ব্যাবহারের উপর।
আপনি যদি একটি ডিভাইজ চার্জ করতে চান তবে সিঙ্গেল আউটপুট পোর্ট কিনতে পারেন।
আর যদি একাধিক ডিভাইজ চার্জ করতে চান তবে ৩-৪ পোর্ট ওয়ালা কিনতে পারেন।
কিছু কিছু পাওয়ার ব্যাংককে আবার দুইটি পোর্ট থাকলে একটি কম পাওয়ারের হয় আরেকটি বেশি পাওয়ারের হয় হয়ে থাকে।
তাই আপনার পছন্দ অনুসারের আউটপুট পোর্টস ওয়ালা পাওয়ার ব্যাংক আপনি কিনতে পারেন।
পয়েন্ট ৫
এখন আসা যাক কোম্পানি এর বিষয়ে, সে ক্ষেত্রে আমি বলবো শাওমি কোম্পানির পাওয়ার ব্যাংক অনেক ভালো। আমি নিজে ব্যবহার করে দেখেছি এবং করছি।
এছাড়াও হুয়ায়ে, ওয়ান প্লাস, সনি, স্যামসাং সহ আপনি যে কোনো একটি নামধারি কোম্পানির পাওয়ার-ব্যাংক কিনতে পারেন।
এতে কোন সমস্যা হবে না, আশা করা যায়।
সবশেষে আশা করছি আজকের এই পোস্ট টি আপনাদের অনেক উপকারে আসবে।
এখন থেকে বাজারে বা অনলাইনে পাওয়ার ব্যাংক কেনার সময় আপনি জানেন যে কি করতে হবে, কীভাবে নিজের প্রয়োজন অনুসারে প্রোডাক্ট নির্বাচন করতে হবে।
তাই এখন থেকে বুঝে শুনে আপনার পছন্দ মতো পাওয়ার ব্যাংকটি কিনে নিন।
ধন্যবাদ সকলকে।
Nokiar ki power bank ase?
sumsung 10000 mah ar dam koto??
ধন্যবাদ।