সাবাইকে জানাই আমার সালাম। আশাকরি সাবাই ভাল আছেন।
সকল ব্যস্ততাকে পিছনে ফেলে আজও লিখছি আপনাদের জন্য।

অনেকেই বলে “আমার একটা ওয়েব সাইট বানানো খুব দরকার”
আরার অনেকেই বলে “ওয়েব সাইট বানিয়ে ফেলুন মাত্র ১০ মিনিটে”
কিন্তু বাস্তবে ওয়েব সাইট ডিজাইন বা তৈরি করা এত সহজ না।
অনেক কঠিন একটা বিষয়। তাই আমি আপনাদের সামনে কিছু
গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করব।

ডোমেইনের নাম নির্বাচনঃ

ওয়েব সাইট বানাতে অবশ্যই একটা ডোমেইন নাম লাগবে।
মানে যে নামে আপনার সাইট তৈরি করবেন। ডোমেইন নাম
নির্বাচনের ক্ষেত্রে খুব ভাল করে চিন্তা করে নির্বাচন করুন।
অবশ্যই আপনাকে ইউনিক নাম নির্বাচন করতে হবে। শুধু ওই
নামটা খালি থাকলেই হবে না তারসাথে আরও কিছু থাকা
প্রয়োজন। যেমনঃ
১.যে নামে ডোমেইন নিবেন গুগলে ওই নামটি সার্চ দিয়ে
দেখুন ওই নামে কোন ফেসবুক পেজ, গুগল প্লাস, টুইটার
একাউন্ট, ইউটিউব একাউন্ট ইত্যাদি আছে কিনা। যদি থাকে
তবে সেই নাম না নেওয়াই উওম।
২.ডোমেইন নামের মদ্ধে “- বা _” হাইফেন বা হ্যস চিহ্ন
ব্যবহার করা থেকে ১০০ হাত দূরে থাকুন।
৩.ডোমেইন নামটা যত ছোট রাখা যায় তত ভাল। বেশি
বড় নাম নিবেন না।
৪.জটিল বানান এমন ডোমেইন নাম নির্বাচন করবেন না।
এতে ভিজিটরের নাম মনে রাখা কঠিন হয়ে যায়।
৫.অন্য সাইটের নামের মত ডোমেইন নাম নির্বাচন করবেন না।
যেমনঃ http://www.google.com আপনি নিয়ে নিলেন
http://www.gooooogle.com
৬.ডোমেইন নামটা উচ্চারনে সুন্দর ও সহজ শব্দ দিয়ে ডোমেইন
নাম নেবার চেষ্টা করুন।
৭.আপনি যে ধরনের সাইট বানাতে চান তার সাথে মিল রেখে
ডোমেইন নাম নির্বাচন করুন।

হোস্টিং নির্বাচনঃ

হোস্টিং হল আপনি যে সাইটটা তৈরি করবেন তার যাবতীয়

স্ক্রিপ্ট, ফাইল ও দরকারি জিনিসপত্র রাখার জন্য জায়গা।
ভিজিটর যে ওয়েব সাইটটা ভিজিট করছে তার জন্য কিছু
কে.বি খরচ হয়। সেটাকে বলা হয় ব্যান্ডউইথ। এগুলো সহ
আরও অনেক কিছু সম্বলিত থাকে হোস্টিং এর মধ্যে।
হোস্টিং কোনটা নিবেন, কতটুকু নিবেন ??
আমরা সাধারন ভাবে যে সাইট বানাব তার জন্য শেয়ার
হোস্টিং নিলেই হবে। আর দাম খুব কম। কেউ যদি একটু
ভাল স্পীড বা ভাল সার্ভিস পেতে চান তারা ভি.পি.এস
নিতে পারেন। সাধারন ভাবে আমাদের ১ জিবি Space
হলেই যথেষ্ট, এটাই সহজে খরচ হবেনা। তবে ব্যান্ডউইথটা
একটু বেশি নেওয়া ভাল কারন। যত ভিজিটর বাড়বে তত
ব্যান্ডউইথ খরচ হবে। আর কিছু জিনিস দেখবেন। যেমনঃ
কয়টা সাবডোমেইন বানানোর সুযোগ দিবে, কয়টা ডাটাবেস
তৈরি করতে দিবে,কয়টা ইমেইল তৈরি করতে দিবে ইত্যাদি।

তথ্য সংগ্রহঃ

আপনি কি ধরনের সাইট বানাতে চান। ব্লগ সাইট, পার্সোনাল
ইনফরমেশন সাইট, বিজনেস সাইট ইত্যাদি। কোনটা বানাতে চান?
যেটা বানাবেন সেইটার আনুশাঙ্গিক তথ্য সংগ্রহ করুন। যেমনঃ
বিজনেস সাইট হলে বিজনেস সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহ করুন ইত্যাদি।

প্লাটফর্ম নির্বাচনঃ

আপনি যেই ওয়েব সাইটটা বানাবেন সেটা কি দিয়ে বানাবেন HTML এ
নাকি PHP তে, নাকি কোন CMS(WordPress, Joomla, Drupal)
ব্যবহার করবেন। যদি ব্লগ সাইট হয় তবে CMS হিসাবে WordPress
ব্যবহার করতে পারেন। যদি বিজনেস সাইট হয় তবে HTML এর
মাধ্যমে করতে পারেন বা চাইলে PHP তেও করতে পারেন।

সাইট ডেভলপঃ

সাইট ডেভলপের ক্ষেত্রে কিছু জিনিস মাথায় রাখবেন।
যেমনঃ
১.ওয়েবসাইটের সুন্দর একটি লোগো বানাবেন। সেটা
সাইতে ব্যবহার করবেন।
২. সাইটের ব্যাকগ্রউন্ডে আকর্ষণী একটি ব্যাকগ্রাউন্ড
ব্যবহার করবেন যাতে সাইটটি সুন্দর ভাবে ফুতে উঠে।
তবে ব্যাকগ্রউন্ড এ এমন কোন কালার ব্যবহার করবেন
না যেটা চোখে বেশি লাগে মানে বেশি উজ্জ্বল কালার।
৩.সাইটের ফন্ট বেশি ছোট রাখবেন না। ভিজিটরের
যাতে পরতে কোন সমস্যা না হয় এমন সাইজ ব্যবহার
করবেন। ফন্ট কালার কালোই ভাল দেখা যায়।

৪.সাইটের আউটলুক সুন্দর করার চেষ্টা করবেন। যাতে
ভিজিটর ভিজিত করে শান্তি পায়।
৫.ভিজিটরকে যাতে ধরে রাখা যায় বেশিক্ষণ বা যাতে
আবার ফিরে আসে সেই বাবস্থা করুন। যেমনঃ সাইড বারে
ও পেজের / টিউনের শেষে একই রকম টিউন বা বেশি পঠিত
টিউন লিঙ্ক রাখুন। এছাড়াও প্রয়োজনীয় লিঙ্ক সাইড বারে দিন।
৬. সাইটে যদি বিজ্ঞাপন থাকে মানে এডসেন্স বা অন্য কিছু।
তবে অতিরিক্ত আঁকারে বিজ্ঞাপন দিবেন না। বিজ্ঞাপন গুলো
সাজিয়ে সঠিক জায়গায় ব্যবহার করবেন।

SEO করুনঃ

SEO বা সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন বলতে বুঝায় বিভিন্ন সার্চ
ইঞ্জিনে একটি সাইটকে তুলে ধরা, সাইটে কি আছে তা সার্চ
ইঞ্জিনকে বুঝানো। আমরা যেকোনো কিছু লিখে গুগলে সার্চ
দিলে দেখা যাবে অনেক পরিমানে ফলাফল পাওয়া যায়,
এর মধ্যে প্রথম ১/২ পেজে যে সাইট গুলো আমরা পাই
সেগুলোই আমরা দেখে থাকি। এটাই হল এসইও, মানে সাইটে
এসইও করলে সার্চ ইঞ্জিন আপনার সাইটকে আগে নিয়ে আসবে,
আগে থাকলে ভিজিটররা বেশি দেখবে। এটাই মূলত SEO এর কাজ।
এছাড়াও আরও কিছু কাজ করুন। যেমনঃ সাইটের যেই নাম ঠিক
করেছেন সেই নামেই ফেসবুকে একটি পেজ, গুগল প্লাসে একটি পেজ,
টুইটার ও ইউটিউবে একই নামে একাউণ্ট খুলুন।
এতক্ষণ ধরে পড়ার জন্য ধন্যবাদ। আশা করি এটা আপনাদের
উপকারে আসবে। আজই হাটতে শুরু করুন জীবন বদলে দেয়ার পথে।

আমার আগের টিউন.
আজই মুক্ত হোন উন্নতির পথে বাধা সৃষ্টিকারী প্রধান অভিশাপ থেকে। (Only for web developer and Designer)

One thought on "ওয়েব সাইট তৈরীর সঠিক পথচলা না দেখলে লস।"

Leave a Reply