বর্তমান সময়ে বলা যায় চারদিকে স্মার্টফোনের বিপ্লব চলছে। আইটি প্রফেশনাল, বিজনেস এক্সিকিউটিভ থেকে শুরু করে, শিক্ষক, ছাত্র, গৃহিণী কিংবা আমজনতা সকলের হাতেই এখন স্মার্টফোন শোভা পাচ্ছে। বলা যায় আধুনিক জীবনযাত্রার এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে স্মার্ট ফোন।

বাজারে বিভিন্ন অপারেটিং সিস্টেম চালিত স্মার্ট ফোন থাকলেও অ্যান্ড্রয়েড চালিত স্মার্ট ফোন গুলোই চাহিদার শীর্ষে রয়েছে। তুলনামূলক কম মূল্যে অধিক সুবিধা, বিভিন্ন ধরণের কাস্টোমাইজেশন সুবিধা থাকার কারণেই স্মার্টফোনের বাজারে অ্যান্ড্রয়েড এত জনপ্রিয়।
তবে অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীরা প্রায়ই যে ব্যাপারটি নিয়ে বিরক্তি এবং অভিযোগ করে থাকেন তা হলো অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসের ব্যাটারি ব্যাকআপ। শক্তিশালি প্রসেসর, র্যাম, হাই রেজুলেশন ডিসপ্লে এবং নানাবিধ ব্যবহারের কারণর অধিক ধারণক্ষমতা সম্পন্ন ব্যাটারি থেকেও অনেক সময় দেখা যায় ব্যবহারকারী ব্যক্তি তার কাঙ্ক্ষিত ব্যাটারি ব্যাকআপ পাচ্ছেন না।

অথচ সহজ কিছু টিপস ফলো করে সহজেই ব্যাটারি ব্যাকআপ বাড়িয়ে নেয়া সম্ভব।আজকে আপনাদের জন্য থাকছে অ্যান্ড্রয়েডে ব্যাটারি ব্যাকআপ বাড়ানোর সহজ কিন্তু অত্যন্ত কার্যকর কিছু কৌশল। চলুন তবে দেখে নেই কিভাবে কি করবেন

সাধারণ কর্মপদ্ধতি:

১) বিনা প্রয়োজনে আপনার অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসের Wifi, GPS, Bluetooth, 3G কানেক্টিভিটি অন করে রাখবেন না। Wifi, GPS, Bluetooth, 3G প্রচুর ব্যাটারি ইউটিলাইজ করে থাকে।

২) আপনার ডিভাইসটি অটো ব্রাইটনেস সমর্থিত হলে সেটি অটো করে রাখাই ভাল। অটো ব্রাইটনেস না থাকলে ম্যানুয়ালি সেট করে নিলে ভাল ব্যাকআপ পাওয়া যায়। সব সময় ডিসপ্লে ব্রাইটনেস ১০০ তে দিয়ে রাখার প্রয়োজন নেই। নিচের ডাটা অনুযায়ী ব্রাইটনেস সেট করে আমরা ব্যাটারি ব্যাকআপে বেশ উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন দেখেছি।

দিনের বেলা
ঘরের ভিতরঃ 30-40%
ঘরের বাইরেঃ 50-70%
রাস্তায়ঃ 90-100%
রাতের বেলা

ঘরের ভিতরঃ 05-30%
ঘরের বাইরেঃ 15-40%
রাস্তায়ঃ 20-40%

মোট কথা, অযথা বেশি ব্রাইটনেস ব্যবহার না করে সময় উপযোগী ব্রাইটনেস ব্যবহার করার চেষ্টা করুন। এতে আপনার দৃষ্টি শক্তি যেমন ভাল থাকবে, ব্যাটারি ব্যাকআপও বৃদ্ধি পাবে অনেক গুণ।

৩) লাইভ ওয়ালপেপার জিনিসটা ব্যবহার না করাই শ্রেয় কেননা এটি বেশ ভাল ব্যাটারি ইউটিলাইজ করে। বিশেষ কোনও প্রয়োজনে যেমন বন্ধু মহলে ডিভাইসটির আকর্ষণ বাড়াতে আপনি এটি ব্যবহার করতে পারেন তবে নিজের হাতে আসতেই সাধারণ ওয়ালপেপার সেট করে নিন। কারও কারও মতে কালো রঙের ওয়ালপেপার ব্যবহার করলে আরও ভাল ফল পাওয়া যায়।

৪) সেন্সর ব্যবহার করে কাজ করে এমন কোনও অ্যাপস বন্ধ করতে চাইলে কেবল মিনিমাইজ না করে পুরোপুরি বন্ধ করবেন। আইসক্রিম স্যান্ডউইচ এবং এর পরবর্তি অ্যান্ড্রয়েড ভার্সনগুলোতে খুব সহজেই হোম বাটন চেপে ধরে সেই এপস টাকে ডানে বামে সোয়াইপ করে বন্ধ করতে পারবেন। অন্যান্য ভার্সনের ক্ষেত্রে কোনও ভাল টাস্ক ম্যানেজার ব্যবহার করুন।

৫) একটার বেশি Antivirus কিংবা Battery Saver অ্যাপস কখনও ব্যবহার করবেন না। Juice Defender অ্যাপসটি ব্যাটারি সেভার হিসেবে বেশ কাজের। Juice Defender এপসটি ডাউনলোড করতে এখানে ক্লিক করুন

৬) রুটেড ডিভাইস ব্যবহারকারীগন অ্যাপ রান টাইম ম্যানেজমেন্ট এর জন্য Greenify অ্যাপটি ব্যাবহার করতে পারেন। এতে করে অযাচিত, অপ্রয়োজনীয় অ্যাপস আপনার ডিভাইসের ব্যাকগ্রাউন্ড এ রান করতে পারবে না, ফলে ব্যাটারি অনেক বাড়বে। Greenify এপসটি ডাউনলোড করতে এখানে ক্লিক করুন

এতক্ষন যে কৌশলগুলো অনুসরণ করতে বলা হয়েছে সেগুলো হয়তো অনেকে জানেন।এবার আসুন কিছু অ্যাডভান্সড কৌশল জেনে নেই।

অ্যাডভান্সড কর্মপদ্ধতি:

কৌশলগুলো কেবল মাত্র Li-ion ব্যাটারির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। প্রায় সব ফোনেই আজকাল Li-ion ব্যাটারি ব্যবহৃত হয়। অনেকে এ পদ্ধতিগুলোর সাথে দ্বিমত প্রকাশ করতে পারেন। কিন্তু ইন্টারনেট ঘেঁটে এবং নিজেদের অভিজ্ঞতা থেকে আমরা এ পদ্ধতিতেই ভাল ফল পেয়েছি। আশা করি আপনারাও এতে উপকৃত হবেন।
ব্যাটারিকে সহজে ১৫-২০% এর নিচে ড্রেইন হতে দিবেন না অর্থাৎ ব্যাটারি ১৫-২০% হলেই দেরি না করে চার্জে লাগাবেন।
নিতান্তই বাধ্য না হলে চার্জে লাগানো অবস্থায় ফোন চালাবেন না।
চার্জ একটানা দেয়ার চেষ্টা করবেন। খেয়াল রাখবেন একবার চার্জে লাগালে অন্তত যাতে ৩৫% চার্জ একবারেই হয়। আর পুরো একটানা দিতে পারলেতো কথাই নেই।

ব্যাটারি ১০০% হওয়ার পর এক সেকেন্ডও আর চার্জে লাগিয়ে রাখবেন না। ১০০% চার্জ হওয়ার সাথে সাথেই সেটি আনপ্লাগ করুন। মনে রাখবেন রাত্রে ফোন চার্জে লাগিয়ে কখনও ঘুমাবেন না।
ঘন ঘন আপনার ফোনটি চার্জ দিবেন না। চার্জ ৫০% এর উপর থাকলে অযথাই চার্জে দেওয়ার প্রয়োজন নেই। তবে ৩৫-৩০% এর নিচে নামার পর চার্জে দেওয়া যাবে।

যেসব অ্যাপস এর Wakelock আ করার চেষ্টা করুন।Wakelock আছে কিনা তা Better Battery Stats এই অ্যাপসটি দিয়ে দেখে নিতে পারেন।
প্রতি মাসে বা বিশ দিনে একবার ব্যাটারি সম্পূর্ণ ০% হয়ে ফোন বন্ধ হয়ে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন, বন্ধ হলে আবার চালান,কিছুক্ষন চলে আবার বন্ধ হলে একটানা কোন বিরতি ছাড়া ১০০% পর্যন্ত চার্জ দিন, ১০০% হলে ফোন চার্জ থেকে খুলুন এবং ফোন বন্ধ করুন। এবার ব্যাটারি খুলে তা আবার সেটে লাগান এবং সেট অন করুন। দেখবেন ১০-১২% চার্জ কমে গেছে। এ অবস্থায় ফোনটি আবার চার্জে দিন এবং চার্জ ১০০% হলে ডিভাইস আনপ্লাগ করুন। এই কাজটা প্রতি ২০-৩০ দিনে একবার করবেন।

উপরের টিপস গুলো যথাযথ অনুসরণ করে আপনারা আপনাদের অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসের ব্যাটারি ব্যাকআপ বাড়িয়ে নিতে পারবেন বলে আমরা বিশ্বাস করি। তো আর দেরি না করে যারা তাদের ব্যাটারি নিয়ে হতাশায় ভুগছেন, তারা কৌশলগুলো অনুসরণ করুন। আর এ সংক্রান্ত কোন মতামত আমাকে জানাতে ভুলে যাবেন না কখনো।

নিত্য নতুন টিপস পেতে অামাদের সাথেই থাকুন

5 thoughts on "অাপনার ফোনের ব্যাটারি কি দূর্বল?ফোনের ব্যাকঅাপ নিয়ে চিন্তিত?তাহলে এই পোষ্টটি অাপনার জন্য।এবার খুব সহজেই বাড়িয়ে নিন অাপনার প্রিয় Android ফোনের ব্যাকঅাপ"

  1. Bads Man Shakil Khan Author says:
    bal,agulan sobai jane.r mobile a ato niyom bujhe bujhe ki koster seta akdin babohar korei dakhen na miya.joto baler buddhi.ami 10~15%hole 100charge kori.back…..ato khatuni kormu kala???
  2. Shiblul Bari Contributor says:
    andoroid phona back camara ek satha 2 bar kmna open korbo. pls help meeeeeeeeee
    jamon hedan camara open kora rakse. eke satha main camara open kora video korbo.
  3. WapmasterArif Contributor says:
    bhay apnar post apni caliye jan. ora nana kotha bolte pare.nice post

    [url=fb.com/hd.jibon.503]fb me [/url]

  4. Buk a boro jala Contributor Post Creator says:
    থ্যাংকস ভাই
  5. Rajib chandra shil Contributor says:
    Dekhi try kore ke hoi… ai somossai sobcite ami beshi bugce.. jar karone rate phone off kore rakhi.. juce battery saver ta nie dekhi.. ke hoi

Leave a Reply