দোয়া হলো সমস্ত ইবাদতের মগজ, তাফসিরে মা’আরেফুল কোরআনে বলা হয়েছে, দোয়ার শাব্দিক অর্থ ডাকা, অধিকাংশ ক্ষেত্রে বিশেষ কোন প্রয়োজনে ডাকার
অর্থে ব্যবহৃত হয় । আল্লাহর কাছ থেকে চেয়ে নেওয়ার মাধ্যমই হলো দোয়া । দোয়া সম্পর্কে কিছু আয়্যাত ও হাদিসঃ

আয়্যাতঃ মহান আল্লাহ তায়ালা রাসুল (সা) কে সম্মুধোন করিয়া বলেন, যখন আপনার নিকট আমার বান্দাগণ আমার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেন যে, আমি
নিকটে না দূরে? তখন আপনি বলিয়া দিন যে, আমি নিকটেই আছি । দোয়া করনেওয়ালার দোয়া কবুল করি, যখন সে আমার নিকট দোয়া করে । (বাকারাহ)

আয়্যাতঃ আল্লাহ তায়ালা রাসুল (সা) কে আরো বলেন, আপনি বলিয়া দিন, যদি তোমরা দোয়া না কর তবে আমার রবও কোন পরোওয়া করিবেন না ।
(ফোরকান)

আয়্যাতঃ আল্লাহ তায়ালা বলেন, হে লোক সকল, আপন রবের নিকট বিনীত ভাবে এবং চুপি চুপি দোয়া কর । (আ’রাফ)

আয়্যাতঃ আল্লাহর তায়ালার নিকট ভীত হইয়া এবং রহমতের আশা লইয়া দোয়া করিতে থাক । (আ’রাফ)

আয়্যাতঃ এবং আল্লাহরই জন্য ভাল ভাল নামসমূহ রহিয়াছে । সুতরাং সেই নাম সমূহ দ্বারাই আল্লাহ তায়ালাকে ডাক । (আ’রাফ)

হাদিসঃ হযরত নো’মান ইবনে বশীর (রঃ) বলেন, আমি রাসুল (সাঃ) কে এই এরশাদ করিতে শুনিয়াছি, দোয়া এবাদতের মধ্যেই শামিল । অতঃপর তিনি

প্রমাণ হিসেবে কোরআন এর আয়্যাত তেলাওয়াত করেনঃ
অর্থঃ এবং তোমাদের রব এরশাদ করিয়াছেন, আমার নিকট দোয়া কর আমি তোমাদের দোয়া কবুল করিব , নিঃসন্দেহে যাহারা এবাদত করিতে অহংকার করে
তাহারা অতিসত্বর জাহান্নামে প্রবেশ করিবে । (তিরমিযী)

হাদিসঃ হযরত আবদুল্লাহ (রঃ) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা) বলেন, আল্লাহ তায়ালার নিকট দোয়া চাও । কেননা আল্লাহ তায়ালা ইহা পছন্দ করেন যে , তাহার
নিকট চাওয়া হোক । (তীরমিযী)

আহবার (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, পূর্ব যুগে কেবল নবিগণকেই বলা হত, দোয়া করুন, আমি কবুল করব । এখন এই আদেশ সকলের জন্য ব্যাপক করে
দেওয়া হয়েছে এবং উহা উম্মতে মোহাম্মাদিরই বৈশিষ্টি ।

হাদিসঃ হযরত ওয়াদাহ ইবনে সামেত (রঃ) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা) এরশাদ করিয়াছেন, জমিনের বুকে যেকোন মুসলমান আল্লাহ তায়ালার নিকট এমন
কোন দোয়া করে যাহাতে কোন প্রকার গোনাহ বা আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করার বিষয় থাকে না, আল্লাহ তায়ালা হয়ত তাহাকে উহাই দান করেন যাহা যে
চাহিয়াছে অথবা উক্ত দোয়া অনুপাতে তাহার কোন মুছিবত বা কষ্ট তাহার উপর থেকে দূর করিয়া দেওয়া হয় অথবা সেই দোয়া পরিমাণ সওয়াব তাহার জন্য
জমা করিয়া রাখেন । এক বেক্তি আরজ করিল, ব্যাপার যখন এমনই যে দোয়া করিলে অবশ্যই কবুল হইয়া থাকে তবে আমরা অনেক বেশি পরিমানে দোয়া
করিবো । তখন রাসুল (সা) বলিলেন, আল্লাহ তায়ালাও অনেক বেশি দানকারী । (তিরমিযী, মুসতাদরাকে হাকেম)

আরো অসংখ্য আয়্যাত ও হাদিস দ্বারা দোয়া করার প্রতি বলা হয়েছে এবং আল্লাহ তায়ালা যে দোয়া কবুল করবেন সে বিষয়ে ওয়াদা রহিয়াছে ।
এ পর্বে আমরা দোয়া যে বেশি বেশি পরিমানে করতে হবে এবং আল্লাহ তায়ালা যে দোয়া করার জন্য বলেছেন, আর তা কবুল করবেন বলে ওয়াদা

করিয়াছেন তা জানলাম, পরবর্তী পর্বে আমরা দোয়ার শর্ত সমূহ, আদব সমূহ ও দোয়া কবুল এর সময় গুলো জানবো ইন শা আল্লাহ ।

আল্লাহ তায়ালা আমাদের বেশি বেশি নেক আমল ও দোয়া করার তৌফিক এনায়েত করুন, আমিন ।

2 thoughts on "দোয়া পর্ব-১"

Leave a Reply