ক্যাপসুল হল এক ধরনের ঔষধ বিতরণ ব্যবস্থা যার মাধ্যমে কঠিন, তরল বা বায়ুবীয় ঔষধ উপাদান বিতরণ করা হয়। সাধারণত, ক্যাপসুল মুখে খাওয়া হয়, তবে, পায়ুপথ, যোনিপথ ইত্যাদি পথে প্রয়োগের জন্যও বিশেষ ক্যাপসুল পাওয়া যায়। ক্যাপসুলের শক্ত অথবা স্থিতিস্থাপক আবরণ জিলাটিন নামক আমিষ (প্রোটিন) দিয়ে তৈরি।

কড লিভার ওয়েল নরম জেল ক্যাপসুল।

ব্রিটিশ ফার্মাকোপিয়া (বি.পি.) অনুযায়ী, ক্যাপসুল হচ্ছে এক ধরনের আকারে কঠিন ঔষধ বিতরন ব্যবস্থা, যার আবরণ শক্ত অথবা স্থিতিস্থাপক হতে পারে, যার আকৃতি এবং ধারণ হ্মমতা বিভিন্ন হতে পারে এবং যেটা সাধারণত একটি মাত্র ঔষধ উপাদান ধারণ করে।

ইউএস ফার্মাকোপিয়া (ইউ.এস.পি) অনুযায়ী, ক্যাপসুল হচ্ছে এক ধরনের আকারে কঠিন ঔষধ বিতরন ব্যবস্থা, যার মধ্যে ঔষধ উপাদান শক্ত অথবা স্থিতিস্থাপক আবরণ বা ধারকে আবদ্ধ থাকে এবং এই শক্ত অথবা স্থিতিস্থাপক আবরণ বা ধারক সুবিধা জনক জিলাটিন দিয়ে তৈরি।

ক্যাপসুল দুই ধরনের হতে পারে। একটি হলো শক্ত জিলাটিন ক্যাপসুল এবং অপরটি স্থিতিস্থাপক জিলাটিন ক্যাপসুল। শক্ত জিলাটিন ক্যাপসুলের ভেতরের সক্রিয় উপাদান কঠিন পদার্থ বা পাউডার হয় এবং স্থিতিস্থাপক জিলাটিস ক্যাপসুলের ভেতরকার উপাদান তরল বা আধাতারল হতে পারে।

ছবিটা দেখছেন? ক্যাপসুলের শেলের ছবি।ছোটবেলায় ভাবতাম এগুলো বোধ হয় রাবারের তৈরি।পরে জানলাম….. না, এগুলো রাবারের  নয়।

তাহলে এগুলো কিসের তৈরি??

আমরা যে ঔষধগুলো বাজার থেকে কিনি তার মধ্যে বিভিন্ন ধরণের ঔষধ বিভিন্ন রূপে পাই।যেমনঃ ট্যাবলেট,ক্যাপসুল,সিরাপ,সাসপেনশন,সাপোজিটরি,ইনজেকশন,ইনহ্যালার আরো অনেক অনেক কিছু।এগুলো কে বলা হয় ঔষধের ডোজেস ফর্ম(Dosage form)।ক্যাপসুলের ক্ষেত্রে ক্যাপসুল শেলের ভিতর ঔষধ পাউডার অথবা ক্ষুদ্র দানা রূপে পাওয়া যায়।প্রশ্নকর্তা যদি ক্যাপসুলের উপরের অংশ বলতে এই ক্যাপসুল শেলকে ই বুঝিয়ে থাকেন তাহলে ক্যাপসুলের শেলের গাঠনিক উপাদান সম্পর্কে এখন কিছু বলি।

সাধারনত বাজারে দুই ধরনের ক্যাপসুল পাওয়া যায়  তা হলোঃ

১। হার্ড শেলড ক্যাপসুল(Hard shelled capsule): এ ধরণের ক্যাপসুলের শেলের ভিতর পাউডার বা ক্ষুদ্র দানা জাতীয় কঠিন উপাদান থাকে।

২। সফট শেলড ক্যাপসুল(Soft shelled capsule): এ ধরণের ক্যাপসুলের শেলের ভিতর তরল বা তেল জাতীয় উপাদান থাকে।ভিটামিন ক্যাপসুলের ক্ষেত্রে এ ধরণের শেলের ব্যবহার বেশি লক্ষ্য করা যায়।

হার্ড বা সফট দুই ধরণের ক্যাপসুলের ক্ষেত্রেই ক্যাপসুল শেল তৈরির গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান হল জেলিং এজেন্ট। ঔষধ শিল্পের অতি পরিচিত ও বহুল ব্যবহৃত একটি জেলিং এজেন্ট এর নাম জেলাটিন।জেলাটিন হল প্রাণিদেহ থেকে প্রাপ্ত কোলাজেন থেকে তৈরি একটি বর্ণহীন,গন্ধহীন, স্বচ্ছ উপাদান।শুধু ঔষধ শিল্পে না, জেলি জাতীয় যে কোন খাবার বা পুডিং এ ও এটি ব্যবহার করা হয়।জেলাটিন ছাড়াও উদ্ভিজ্জ পলিস্যাকারাইড কারাজেনান বা কারাজেনিন থেকে ও ক্যাপসুল শেল তৈরি হতে পারে।ক্যাপসুল শেল তৈরির জন্য জেলিং এজেন্ট ছাড়া ও অন্যান্য উপাদান যেমন গ্লিসারিন,সরবিটল ইত্যাদির মাধ্যমে ক্যাপসুল শেলের কাঠিন্য নিয়ন্ত্রণ করা হয়।এছাড়া এতে কালারিং এজেন্ট,প্রিজারভেটিভস ইত্যাদিও মেশানো হয়ে থাকে।

ক্যাপসুলের জেলাটিন শেল পাকস্থলিতে উপস্থিত হাইড্রোক্লোরিক এসিডের উপস্থিতিতে গলে যায় এবং শেল থেকে ঔষধের প্রধান ঔষধী উপাদান বা একটিভ ইনগ্রিডিয়েন্টস বেরিয়ে এসে শরীরে প্রভাব বিস্তার করে।

ধন্যবাদ।

তথ্যসূত্র

  • L. Lachman, H.A. Lieberman, J.L. Kanig (১৯৮৬)। The Theory and Practice of Industrial Pharmacy (Third ed.)। Lea & Febiger, Philadelphia। আইএসবিএন 0-8121-0977-5

যদি পোস্টটি ভালো লাগে তাহলে আমার সাইটটি ঘুরে দেখুন একবার ☞ hmvai.com

3 thoughts on "বিভিন্ন ঔষধ কোম্পানিতে যে ঔষধের ক্যাপসুল তৈরি হয় তার উপরের অংশ কিসের তৈরী জেনে রাখুন"

  1. Md Al-Amin Contributor says:
    ট্রিকবিডিতে মোটামুটি এখন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার ও পাওয়া যাচ্ছে।
    1. sopon Author Post Creator says:
      পোস্টি ভালো করে দেখেছেন তো ?
      সুত্র কি আছে?

Leave a Reply