ল্যান্ডের বিভিন্ন দ্বীপে লাল
হরিণের (রেড ডিয়ার) বিচরণ সেই
প্রস্তর যুগ থেকে। কিন্তু কেমন করে
সেগুলো পৌঁছাল দূরবর্তী ওই সব
দ্বীপে? তবে কি মানুষই তাদের সঙ্গে
করে নিয়ে এসব দ্বীপে বসতি
গড়েছিল। যদি তাই হয়ে থাকে তাতে
প্রমািণত হয়, প্রাচীন যুগের মানুষের
সমুদ্রযাত্রার দক্ষতাও ছিল। কারণ,
হরিণগুলোকে নিয়ে নৌকায় চড়ে
‘উল্লেখযোগ্য দূরত্ব’ পাড়ি দিতে
হয়েছিল তাদের। যুক্তরাজ্যের একদল
বিজ্ঞানী এসব কথা জানিয়েছেন।
স্কটল্যান্ডের সবচেয়ে উত্তরের
দ্বীপগুলো থেকে নব্য প্রস্তর যুগের
হরিণের কয়েকটি হাড় উদ্ধার করা
হয়েছে। সেগুলোর ডিএনএ বিশ্লেষণ
করে চমকে গেছেন ওই বিজ্ঞানীরা।
কারণ, এসব হাড়ের সঙ্গে ব্রিটেন,
আয়ারল্যান্ড, পশ্চিম ইউরোপের মূল
অংশ বা স্ক্যান্ডিনেভিয়া অঞ্চলের
হরিণের জিনগত পার্থক্য স্পষ্ট। তার
মানে, লাল হরিণগুলো আরও দূরের
কোনো জায়গা থেকে সাগর
পেরিয়ে স্কটল্যান্ডে পৌঁছেছিল। এ

বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রসিডিংস
অব দ্য রয়েল সোসাইটি বি
সাময়িকীতে গত বুধবার প্রকাশিত
হয়েছে।
কার্ডিফ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক
ডেভিড স্ট্যান্টন বলেন, নব্য প্রস্তর
যুগের
মানুষেরা অজ্ঞাত কোনো
জায়গা
থেকে হরিণ নিয়ে অনেক দূরের
অভিযাত্রায় গিয়েছিল। ব্যাপারটা
ঘটেছে প্রায় সাড়ে চার থেকে
সাড়ে পাঁচ হাজার বছর আগে। এটা
সত্যিই বিস্ময়কর। প্রমাণ হয়েছে যে
হরিণের সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক নিয়ে
এত দিন পর্যন্ত ভুল ধারণার প্রচলন ছিল।
সম্ভবত হরিণের ওপর প্রাচীন যুগের
মানুষের নিয়ন্ত্রণ ছিল। আর সে
কারণেই তারা প্রাণীগুলোকে
নিয়ে দূর সমুদ্রযাত্রা করতে
পেরেছিল।
প্রস্তর যুগের শেষ দিকে মানুষেরা
বিভিন্ন গবাদিপশু নিয়ে নৌযাত্রা
করেছিল বলে জানা গেলেও বুনো
প্রাণী নিয়ে এত দূর অবধি
পৌঁছানোর তথ্যটা নতুন। স্ট্যান্টন
বলেন, যুক্তরাজ্যে প্রায় ১১ হাজার বছর
আগে বরফ যুগের শেষ পর্যায় থেকে শুরু
করে প্রস্তর যুগের কৃষকদের আবির্ভাবের
সময় পর্যন্ত লাল হরিণের অস্তিত্বের
চিহ্ন মেলে। এদের মাংসের
পাশাপাশি চামড়া, হাড়, শিং
প্রভৃতি মানুষের কাজে লেগেছে।
এমনকি জমি চাষের কাজেও হরিণ
ব্যবহার করা হয়েছে।
বিজ্ঞানীরা বলেন, হরিণসহ যেসব
প্রাণী স্কটল্যান্ডের দ্বীপগুলোতে
এখন দেখা যায়, সেগুলো হয়তো
সমুদ্রযাত্রায় অভিজ্ঞ মানুষেরাই
নিয়ে গিয়েছিল। কেউ কেউ
ভেবেছিলেন, স্কটল্যান্ডের মূল ভূখণ্ড
বা আশপাশের কোথাও থেকে
সাঁতরেও গিয়ে থাকতে পারে
হরিণগুলো। কিন্তু ডিএনএ পরীক্ষায়
সেই ভুল ভেঙেছে। এখন প্রাণীগুলোর
মূল উৎস অনুসন্ধানেই ব্যস্ত রয়েছেন
গবেষকেরা।

Leave a Reply