কম্পিউটার ভাইরাস

আমরা সবাই মুলত এই জমের সাথে পরিচিত “আসলে জম বলতে আমি এই ভাইরাস কে বুজিয়েছি?

কম্পিটার ভাইরাসের আক্রমন এর ফলে আমাদের পিসি তে নানাবিধি সমস্যার দেখা দেয়, যদি সমস্যার কথা তুলে ধরি তাহলে একটি বই লেখার মত অবস্থা হয়ে যাবে।

যখন বাসায় নিজস্ব কোন কম্পিউটার ছিলোনা আমার তখনও কম্পিউটার বিষয়ে আমার আগ্রহের কমতি ছিলোনা। বেশ অনেকগুলো কম্পিউটার বিষয়ক ম্যাগাজিন পড়তাম। আর নানান রকম বইতো আছেই। সেগুলোর কোন একটি থেকে হয়তো কম্পিউটার ভাইরাস সম্পর্কে প্রথম ধারণা পেয়েছিলাম। রীতিমত তাজ্জব বনে গিয়েছিলাম ! মানুষের ভাইরাস হয় বলে শুনেছি কিন্তু কম্পিউটারের ভাইরাস হয় কিভাবে? এতো যন্ত্র ! যন্ত্রেরও ভাইরাস !

 

কম্পিউটার ভাইরাস কি আর তার প্রকারভেদ সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা দেয়ার চেষ্টা করবো। যথাসম্ভব টেকনিকাল টার্মগুলো এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হবে যাতে সর্বস্তরের পাঠকই বুঝে উঠতে পারেন।

কম্পিটার ভাইরাস কি?

সহজ কথায় বলতে গেলে কম্পিউটার ভাইরাস এমন একটি সফটওয়্যার বা প্রোগ্রাম যা কম্পিটারের ক্ষতি করার জন্য তৈরি করা হয়।

যেকোনো কম্পিউটার প্রোগ্রাম যা কম্পিউটারের ক্ষতি সাধন করে তাই কম্পিউটার ভাইরাস।

ধরা যাক ছোট্ট কয়েক লাইনের ব্যাচ কোড করা হলে। এর কাজ তেমন জটিল না, প্রোগ্রামে কমান্ড দেয়া থাকবে যে সে কম্পিউটারের প্রতিটি ড্রাইভে তার একটি প্রতিলিপি তৈরি করবে এবং তা রান করবে।

আর এও কমান্ড দেয়া থাকবে যাতে ব্যাচ ফাইলটা যে ড্রাইভে আছে সে ড্রাইভের সব ফাইল ডিলিট করে দেয়। অর্থাৎ ফাইলটা রান করলেই ড্রাইভের সব ফাইল ডিলিট হয়ে যাবে ! মাত্র কয়েক লাইনের ব্যাচ কোড অথচ কত বড় ক্ষতি করে ফেলতে সক্ষম ! অনেক দরকারি ফাইল-পত্র, তথ্য, ছবিসহ অনেক কিছুই থাকতে পারে যা হারালে লক্ষাধিক টাকারও ক্ষতি হতে পারে।

অর্থাৎ যেকোনো কম্পিউটার প্রোগ্রাম যা কম্পিউটারের ক্ষতি করে তাকেই কম্পিউটার ভাইরাসের আওতায় ফেলা যায়।

তবে উপরোল্লিখিত ধরণের ভাইরাসগুলো অ্যাণ্টিভাইরাস প্রোগ্রামগুলো সহজেই রুখে দিতে পারে। তাই অ্যাণ্টিভাইরাসের নিরাপত্তা বেষ্টনীকে ফাকি দিয়ে কাজ করার জন্যে নিত্য-নতুন ভাইরাস তৈরি হচ্ছে। সেগুলো নিজেকে অত্যন্ত দ্রুত গতিতে নিজেকে ছড়িয়ে দেয়ার ক্ষমতা রাখে। দেখা যাবে কোন ভাইরাস আপনার কোন বন্ধুর কম্পিউটারে আছে এবং সেটি নিজেকে মুহূর্তেই কপি করে অন্য কোথাও ছড়িয়ে দিতে সক্ষম তখন আপনি যদি আপনার কোন পেন ড্রাইভ বা অন্য কোন ইউএসবি ডিভাইস সেই কম্পিউটারে সংযুক্ত করেন তখন হয়তো সেই ভাইরাস তার একটি কপি আপনার পেন ড্রাইভে ছড়িয়ে দিবে। এভাবে সেই পেন ড্রাইভ আপনি আপনার পিসিতে সংযুক্ত করলে আপনার পিসিতেও ছড়ানোর সম্ভাবনা আছে এবং এভাবে একের পর এক কম্পিউটারে ছড়াতে থাকবে যদি না নিরাপত্তার জন্যে ভালো কোন অ্যাণ্টিভাইরাস থাকে।

কম্পিউটার ভাইরাস কয় ধরনের হতে পারে?

ভাইরাস মূলত ৭ প্রকার (যদিও ভাইরাস কত প্রকার তার কোনো স্টান্ডার্ড নেই)।

১। Boot viruses: এই জাতীয় ভাইরাসগুলো মূলত হাডড্রাইভের মাস্টার বুট রেকর্ডস (MBR) কে আক্রান্ত করে থাকে  । বুট রেকর্ড প্রোগ্রাম অপারেটিং সিস্টেমকে র্যা ম / ম্যামোরী তে লোড করে। এই ভাইরাসগুলো বুট রেকর্ডকে হার্ডডিস্কের অন্য পার্টে লিখে দেয় অথবা বুট রেকর্ড ফাইলকে ওভার রাইট করে দেয়। এসব ক্ষেত্রে দেখা যায় যে অপারেটিং সিস্টেম লোড হয়ার সময় মেমোরীতে ভাইরাস নিয়েই লোড হয়। আর ভাইরাস একবার মেমোরীতে লোড হয়ে গেলে তা তার কোড ইন্সট্রাকশন অনুসারে যে কোন কাজ করতে পারে। এখেত্রে কম্পিউটার থেকে ভাইরাস রিমুভের জন্য অন্য হার্ডডিস্ক থেকে বুট করে ম্যানুয়ালী / কোন এন্টিভাইরাস প্রোগ্রাম দিয়ে স্কান করে কাজ করতে হয়। এর জন্য মূলত HBCD / LIVE OS ব্যবহার করা হয়।

২। Program viruses: এই টাইপের ভাইরাস গুলো এক্সিকিঊটেবল ফাইলগুলোকে আক্রান্ত করে থাকে ( যেমনঃ .com , .exe, .ovl, .DRV,.SYS, .Bat) যখন আক্রান্ত ফাইলগুলো চালানোর জন্য মেমোরীতে লোড করা হয় তখন সেগুলো ভাইরাস সহ মোমোরীতে লোড হয়ে যায় , আর ভাইরাস তার কাজ করতে পারে। তবে এই ভাইরাস গুলো বুট ভাইরাসগুলো থেকে ভালো, কারন এগুলোকে ম্যানুয়ালী / এন্টিভাইরাস প্রোগ্রাম দিয়ে সহজে রিমুভ করা যায়।

৩। Multipartite viruses:এই ভাইরাসগুলোকে হাইব্রিড ভাইরাস বলা হয় , এগুলো প্রোগ্রাম ভাইরাস আর বুট ভাইরাসের সমন্ন্যয়ে গঠিত হয়ে থাকে। যখন এর প্রোগ্রাম ভাইরাসটি রান করে তখন সে মাস্টার বুট রেকর্ড কে আক্রান্ত করে ফেলে । এই ভাইরাসগুলো বেশ যন্ত্রনা দায়ক , কারন একবার রান  হয়ে গেলে এরা এক্সিকিউটেবল ফাইলগুলকে আক্রান্ত করে ফেলে , যার ফল সরুপ পুরো অপারেটিং সিস্টেম আক্রান্ত হয়ে যায়। এই জাতীয় ভাইরাস রিমুভ করার জন্য সকল ফাইল ফরম্যাট করে দিতে হয় , অথবা অন্য অপারেটিং (যেমনঃ লিনাক্স এর যে কোনো ডিস্টো ) দিয়ে এক্সিকিউটেবল ফাইলগুলো কে আর ভাইরাসের সোর্স গুলোকে ডিলেট করে দিতে হয়।

৪। Stealth viruses:এই ভাইরাস গুলো স্পেশালভাবে  তৈরি করা হয়ে থাকে যাতে এন্টিভাইরাস প্রোগ্রাম এদেরকে ডিটেক্ট করতে না পারে। এদের অধিকাংশই সাধারনত হার্ড্ডিস্কের হেডকে রিডাইরেক্ট করে দেয়। অথবা অন্য সেক্টর রিড করার জন্য ফোর্স করে। যার ফলস্রুপ যে আপডিটেক্টেবল হয়ে যায়। এই জাতীয় ভাইরাস গুলো মানুষের দ্বারা বা ম্যানুয়ালী খুজে বের করা কঠিন , এখন অনেক প্রকার ভালো কার্যোক্ষম অন্টিভাইরাস আছে যারে এদের ধরতে পারে।

৫। Polymorphic viruses:এই জাতীয় ভাইরাসগুলো তাদের সোর্স কোড একটি থেকে আরেকটিতে নিয়ে যায়। আর এর জন্য এরা আক্রান্ত ফাইলগুলো ব্যবহার করে থাকে। প্রতিটি ইনফেক্টেড ফাইলএর সোর্স কোড ভিন্ন হওয়ার কারনে এদের ডিটেক্ট করা বেশ কঠিন হয়ে পড়ে। যদিও এদেরকেও নানা এন্টিভাইরাস প্রোগ্রাম দিয়ে ডিটেক্ট করা যায়। তবে এটি এন্টিভাইরাসের ধরনের উপর নির্ভর করে।

৬। Macro viruses:এই ভাইরাস গুলো তুলনামূলক ভাবে নতুন , এরা টেম্পলেট / ডকুমেন্টের ম্যাক্রোকে আক্রান্ত করে থাকে।  তাই দেখা যায় যখন কেউ ডকুমেন্ট খুলো তখন সে  অই ভাইরাস দিয়ে আক্রান্ত হয়ে যায়। আর একবার আক্রান্ত হয়ার পর যতবার কোন ডকুমেন্ট খোলা হবে ততবারই সে ডকুম্নটগুলো আক্রান্ত হবে।

৭। Active X viruses:অধিকাংশ মানুষ ই জানে না কিভাবে ActiveX and Java controls কনফিগার করতে হয়। যার ফলে অজানা ভাবে সিকুইরিটি হোল তৈরি হয়ে যায়। এর ফলে দেখা যায় জাবা এপেলেট গুলো সহজেই কম্পিঊটারে রান করতে পারে। এবং সহকজেই ভাইরাস কোড / প্রোগ্রাম ডেলিবারী দিতে পারে। ব্রাউজারে ActiveX and Java controls ডিজেবল করে সহজেই এদের কাছ থেকে বাঁচা যায়।

 

কিভাবে এর থেকে নিরাপদ থাকবেন:

কম্পিউটার ভাইরাস থেকে নিরাপদ থাকার জন্যে অবশ্যই ভালো কোন নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখতে হবে। বাজারে অনেক কোম্পানির অ্যাণ্টিভাইরাসই পাওয়া যায়, সেগুলো থেকে চলতি বছরের নির্ভরযোগ্য কোন অ্যাণ্টিভাইরাস ব্যবহার করাটাই শ্রেয়। আর নিয়মিত আপডেট করে নেয়া সম্ভব হলে কম্পিউটার ভাইরাসের আক্রমণ থেকে কম্পিউটারকে মোটামোটি নিরাপদ বলা যেতে পারে।

কম্পিউটারকে সুরক্ষিত রাখার জন্য আমার লেখা টিউনটি দেখুন এখানে

ফেইসবুক আমি

12 thoughts on "আতঙ্কের আরেক নাম _কম্পিটার ভাইরাস_ কম্পিটার ভাইরাস কি?চলুন পরিচিত হই কিছু কম্পিউটার ভাইরাসের সাথে"

  1. Mamodul Hasan Contributor says:
    Good আরও ছবি ad করলে আরও সুন্দর হত
    1. Sajeeb Ahmed Author Post Creator says:
      ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যর জন্য ?
  2. Labib Author says:
    ভাইরাসের পরিচয় পোষ্ট হিসাবে ঠিক আছে, কিন্তু আরো কয়েকটি উদাহরণ বা বিষয় তুলে ধরলে ভালো হতো।

    এবং ফেসবুকে আশা করি রিকুয়েস্ট Accept করবেন ?

  3. Shadin Contributor says:
    ভালো লিখেছেন। 🙁 বানানের দিকে নজর দিলে ভালো হয়।
    1. Mamodul Hasan Contributor says:
      বানানে সবাই একটু সমস্য হয় “”
    2. Sajeeb Ahmed Author Post Creator says:
      বানানের দিক দিয়ে আমি ক্ষমা পার্থি,?
    3. ABUBOKOR Contributor says:
      প্রার্থী বানানও ভুল
    4. Sajeeb Ahmed Author Post Creator says:
      Ekjon author ato Word er tune Likhe Jodi apnader feedback i jodi pete thake …..tahole karoi second time post likhar iccha thakbe na ……. post er dike nojor din . amar bananer dike na ..je topic niye alocona korechi se bissoye montobbo korun … ojhotha khati bangali hote jaben na … oti bhokti curer lokkhon ..
  4. AL EMRAN Contributor says:
    Vay jar tar kothai kan diben na . Apni likhe jan
  5. Tasrif Hosen Contributor says:
    কোন এন্টিভাইরাস টা ভালো হবে ভাই..??
    1. Sajeeb Ahmed Author Post Creator says:
      kaspersy is best
    2. Tasrif Hosen Contributor says:
      এখন এটার রেট কত ভাই..?
      নতুন পিসি নিলাম তো এখনো এন্টিভাইরাস দেয়া হয়নাই

Leave a Reply