আশা করছি আপনারা সবাই আল্লাহর রহমতে ভালো আছেন।
আমার আগের সব পর্ব:-
ইতিহাসের সেরা কিছু মুসলিম বিজ্ঞানী আর তারা যে কারনে বিখ্যাত।পর্ব ১
ইতিহাসের সেরা কিছু মুসলিম বিজ্ঞানী আর তারা যে কারনে বিখ্যাত।পর্ব ২
ইতিহাসের সেরা কিছু মুসলিম বিজ্ঞানী আর তারা যে কারনে বিখ্যাত।পর্ব ৩
ইতিহাসের সেরা কিছু মুসলিম বিজ্ঞানী আর তারা যে কারনে বিখ্যাত।পর্ব ৪
ইতিহাসের সেরা কিছু মুসলিম বিজ্ঞানী আর তারা যে কারনে বিখ্যাত।পর্ব ৫
ইতিহাসের সেরা কিছু মুসলিম বিজ্ঞানী আর তারা যে কারনে বিখ্যাত।পর্ব ৬
[পর্ব ২০] ইতিহাসের সেরা কিছু মুসলিম বিজ্ঞানী আর তারা যে কারনে বিখ্যাত।[আলী ইবনুল-আব্বাস আল-মাজুসী:-ধাত্রীবিদ্যা এবং পেরিনেটোলজি এর অগ্রদূত]
[পর্ব ২১]ইতিহাসের সেরা কিছু মুসলিম বিজ্ঞানী আর তারা যে কারনে বিখ্যাত।[ইবনে তোফায়েল:-প্রথম দার্শনিক উপন্যাস রচয়িতা]
[পর্ব ২৬]ইতিহাসের সেরা কিছু মুসলিম বিজ্ঞানী আর তারা যে কারনে বিখ্যাত।
[পর্ব ২৮]ইতিহাসের সেরা কিছু মুসলিম বিজ্ঞানী আর তারা যে কারনে বিখ্যাত।[আল মাহানী]
[পর্ব ২৯]ইতিহাসের সেরা কিছু মুসলিম বিজ্ঞানী আর তারা যে কারনে বিখ্যাত।[ইবনে বাজা]
39.আল কারাজী
আল কারাজী ছিলেন একজন গণিতবিদ ও প্রকৌশলী।আল-কারাজি গণিত এবং ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ওপর বই লিখেছিলেন।
তিনি ৯৫৩ খ্রিস্টাব্দে তেহরানের নিকটবর্তী শহর কারাজে জন্মগ্রহণ করেছিলেন।তার পুরো নাম আবু বকর মুহাম্মাদ ইবনে আল হাসান আল-কারাজি।
তিনি অল্প বয়সেই বাগদাদে চলে যান।তিনি বাগদাদে (1010-1030) একটি সরকারী পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন, সম্ভবত উজির পদে ছিলেন।
আল-কারাজি তাঁর বেশিরভাগ সময় বাগদাদে বাস করেছিলেন এবং তাঁর প্রধান গাণিতিক রচনাগুলি সেই সময়ই তিনি রচনা করেন।
পরবর্তীতে তিনি বাগদাদে ছেড়ে অন্য শহরে চলে যান এবং সেখানে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিষয়ে মনোনিবেশ করেছেন বলে মনে হয়।
তার গণিতে মুল অবদান হলো তিনি প্রথম বীজগাণিতিক অপারেশন করেন জ্যামিতির সাহায্য ছাড়া এবং তিনি এর পরিবর্তে গাণিতিক অপারেশন যেমন:-X ব্যবহার করেন যেটি বর্তমানে বীজগণিতের প্রাণ।
যদি আল কারাজী এই কাজ না করতেন তাহলে বর্তমানে বীজগণিতিক সমীকরণ সমাধান করার জন্য জটিল জিওমেট্রি ব্যবহার করতে হতো।যা অনেক সমস্যা সৃষ্টি করতো।
তিনি নিয়মিতভাবে বীজগণিতের সূচক বিষয়ে অধ্যয়ন করেছিলেন এবং তিনিই প্রথম উপলব্ধি করেছিলেন যে X, X^2,X^3……. এই অনুক্রমটি অসীম আকারে বাড়ানো যায়।আর এর বিপরীত বা ইনভার্স হলো 1/X,1/X^2.
তিনি বীজগণিত ও বহুপদীর ওপর কাজ করেছেন।তিনি বহুপদীকে যোগ,বিয়োগ ও গুণ করার জন্য পাটিগণিতের ক্রিয়াকলাপগুলির বিধিগুলি দিয়েছেন।
যদিও তিনি বহুপদীকে একপদী দ্বারা ভাগ(dividing polynomials by monomials) করার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিলেন।
এছাড়াও তিনি প্রায় সূত্রটি দিয়েছিলেন যে,
Xm.Xn=Xm+n
যেখানে m,n পূর্ণসংখ্যা।
কিন্তু তিনি X0 এর সংজ্ঞা দিতে ব্যর্থ হন।তাই তিনি একটু ভুল করেন।
এছাড়াও তিনি যৌগিক সংখ্যাকে বর্গমূল করার একটি পদ্ধতি বর্ণনা করেন। তবে এর জন্য সহগটি ধনাত্মক হতে হবে।তবে এটি এখনও একটি উল্লেখযোগ্য অর্জন।
তাঁর গণিতের ওপর বিখ্যাত তিনটি প্রধান বেঁচে থাকা রচনাগুলি হলো: আল-বাদি ফিল হিসাব, আল-ফাখরি ফিল-জাবর ওয়াল মুকাবালা এবং আল-কাফি ফিল হিসাব।
ঐতিহাসিকদের মতে,বীজগণিতের ওপর তার সবচেয়ে বিখ্যাত বই টি হল আল-ফাখরি ফিল-জাবর ওয়াল মুকাবালা।যা কমপক্ষে চারটি অনুলিপিতে মধ্যযুগীয় যুগ থেকে বেঁচে আছে।
আল কারাজী তার “Extraction of hidden waters” বইতে বলেছিলেন যে পৃথিবী গোলাকার।
তিনি হাইড্রোলজির মূল নীতিগুলি ব্যাখ্যা করেছিলেন এবং এই বইটি বিজ্ঞানের গভীর জ্ঞান প্রকাশ করেছে এবং এই বিষয়ে এটি প্রাচীনতম বিদ্যমান পাঠ্য হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে।
বইটিতে পানির বিভিন্ন প্রকারভেদ,পানির স্তর খুঁজে বের করার পদ্ধতি, জরিপের জন্য ব্যবহৃত যন্ত্রপাতির বর্ণনা, conduits নির্মাণ, এর আস্তরণ ও ক্ষয়ের বিরুদ্ধে সুরক্ষা এবং তাদের পরিষ্কার এবং রক্ষণাবেক্ষণ সম্পর্কে এক অনন্য অধ্যয়ন সরবরাহ করা হয়েছে।
F. Woepcke প্রথম ইতিহাসবিদ যিনি আল-কারাজি র কাজের গুরুত্ব অনুধাবন করেছিলেন এবং পরবর্তীকালে ঐতিহাসিকরা তাঁর ব্যাখ্যার সাথে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে একমত হন।
আল-কারাজি দ্বিপদী সহগের প্রথম সূচনা এবং পাস্কালের ত্রিভুজের প্রথম বিবরণ দিয়েছিলেন । দ্বিপদী উপপাদ্যটি আবিষ্কার করার জন্যও তাঁকে কৃতিত্ব দেওয়া হয়।
উপরে উল্লিখিত তাঁর বইগুলি ছাড়াও, তিনি বেশ কয়েকটি অন্যান্য বিষয়ে কৃতিত্ব অর্জন করেছেন, যার মধ্যে কিছু এখন হারিয়ে গেছে।
এর মধ্যে গণিত এবং জ্যোতির্বিদ্যায় শাস্ত্রীয় বিষয়ের বেশ কয়েকটি বই অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
(আল-দাওর ওয়াল-ওসায়া ),
গণিতের একটি বই যার আমরা কেবল নাম জানি, (নাওয়াদীর আল আশকাল) (Rare theorems),
বীজগণিতের গণনার কারণসমূহের উপর একটি গ্রন্থ ( ‘ইলাল হিশাব আল-জাবর ওয়াল-মুকাবালা ),
বিল্ডিংয়ের উপর একটি বই ( ‘ উকদ আল-আবনিয়া ),
কিতাব ফী হিশাব আল হিন্দ ,
কিতাব ফি আল- ‘ইস্তিকরা বিল তাখাত,
আল-মাদখাল ইলা ইলম আল-নুজুম, কিতাব আল-মুহিত ফিল হিসাব,
কিতাব আল-আজদার,
কিতাব হাওলা তাসনিফ আল-জুধুর,
এবং রিসালাত আল-খাতা’আন ।
তিনি ১০২৯ সালে ইন্তেকাল করেন।
[এটা খুবই দুঃখজনক বিষয় যে এনার মতো একজন বড় বিজ্ঞানীর বিষয়ে ইন্টারনেটে বাংলাতে কোনো তথ্য নেই।তাই আমার তথ্যে অস্পষ্টতা ও ক্রুটি থাকতে পারে।আল কারাজীর জীবনী সম্পর্কে আরও জানতে চাইলে দেখতে পারেন উইকিপিডিয়া,
mac tutor,
Muslimheritage,
encyclopedia,
Syntaxecons
আল্লাহ হাফেজ