আশা করছি আপনারা সবাই আল্লাহর রহমতে ভালো আছেন।
আমার আগের সব পর্ব:-
ইতিহাসের সেরা কিছু মুসলিম বিজ্ঞানী আর তারা যে কারনে বিখ্যাত।পর্ব ১
ইতিহাসের সেরা কিছু মুসলিম বিজ্ঞানী আর তারা যে কারনে বিখ্যাত।পর্ব ২
ইতিহাসের সেরা কিছু মুসলিম বিজ্ঞানী আর তারা যে কারনে বিখ্যাত।পর্ব ৩
ইতিহাসের সেরা কিছু মুসলিম বিজ্ঞানী আর তারা যে কারনে বিখ্যাত।পর্ব ৪
ইতিহাসের সেরা কিছু মুসলিম বিজ্ঞানী আর তারা যে কারনে বিখ্যাত।পর্ব ৫
ইতিহাসের সেরা কিছু মুসলিম বিজ্ঞানী আর তারা যে কারনে বিখ্যাত।পর্ব ৬
[পর্ব ২০] ইতিহাসের সেরা কিছু মুসলিম বিজ্ঞানী আর তারা যে কারনে বিখ্যাত।[আলী ইবনুল-আব্বাস আল-মাজুসী:-ধাত্রীবিদ্যা এবং পেরিনেটোলজি এর অগ্রদূত]
[পর্ব ২১]ইতিহাসের সেরা কিছু মুসলিম বিজ্ঞানী আর তারা যে কারনে বিখ্যাত।[ইবনে তোফায়েল:-প্রথম দার্শনিক উপন্যাস রচয়িতা]
[পর্ব ২৬]ইতিহাসের সেরা কিছু মুসলিম বিজ্ঞানী আর তারা যে কারনে বিখ্যাত।
33.ইবনে ইউনুস(ঘড়ির পেন্ডুলাম আবিষ্কারক)
ইবনে ইউনুস ছিলেন জগদ্বিখ্যাত একজন মিশরীয় মুসলিম বিজ্ঞানী ও গণিতবিদ ও জ্যোতির্বিজ্ঞানী।তিনি ছিলেন কায়রাের দারুল হিকমাহর নেতৃস্থানীয় গণিতজ্ঞ।ইবনে ইউনূসের কর্মগুলােকে তার সময়ের তুলনায় বেশি অগ্রসর হিসাবে আখ্যা দেয়া হয়।
ইবনে ইউনুস ৯৫০ থেকে ৯৫২ সালের মধ্যে বর্তমান কায়রােতে বৈজ্ঞানিক পটভূমিসম্পন্ন এক বিখ্যাত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।তার পূর্ণ নাম আবুল হাসান আলী ইবনে আবদুল রহমান ইবনে আহমদ ইবনে ইউনূস আবুল আলা আল-সাদাফি আল-মিসরি।
তার পিতা আবদুল রহমান ইবনে ইউনূস ছিলেন মিসরের একজন বিখ্যাত ঐতিহাসিক ও বাগ্মী। তার দাদা ইউনূস আবদুল আলী ছিলেন শায়েফী মাযহাবের ইমাম শায়েফীর বন্ধু এবং হাদিসের একজন পণ্ডিত। আবদুল রহমান দু’খণ্ডে মিসরের একটি ইতিহাস রচনা করেন। একটি খণ্ড তিনি মিসরীয়দের নিয়ে আলােচনা করেন এবং আরেকটি খণ্ডে ভ্রমণকারীদের জন্য ভাষ্য লিখেন।
ইবন ইউনুসের বাল্যকাল সম্বন্ধে বেশি কিছু জানা না গেলেও এটুকু বুঝা যায় যে, খ্যাতনামা ঐতিহাসিক পিতা বেশ আদর যত্নেই তাকে বড় করে তােলেন, শিক্ষা-দীক্ষা প্রদান করেন।ব্যক্তিগত জীবনে ইবনে ইউনূস ছিলেন উদাসীন ও অন্যমনস্ক। জীর্ণ শীর্ণ পােশাক পরতেন। তার চেহারা ছিল হাস্যকর।
ইবনে ইউনূসের প্রাথমিক জীবনে ফাতেমীয় রাজবংশ মিসরের ক্ষমতায় আসে।ফাতেমীয় রাজবংশ একটি ইসলামী ও রাজনৈতিক আন্দোলন চালিয়ে যেতে থাকে। এ ধরনের আন্দোলন চালিয়ে যেতে থাকায় ফাতেমীয়রা আব্বাসীয় খলিফাদের স্বীকৃতি দানে অস্বীকৃতি জানায়। ফাতেমীয় খলিফারা দশম শতাব্দীর প্রথমার্ধে উত্তর আফ্রিকা ও সিসিলি শাসন করেন। মিসর জয়ে বেশ কয়েকটি অভিযান ব্যর্থ হওয়ার পর ৯৬৯ সালে ফাতেমীয়রা দেশটির বিরুদ্ধে বড় ধরনের অভিযান চালিয়ে নীল উপত্যকা দখল করে নেয়। বিজিত সাম্রাজ্যের রাজধানী হিসাবে তারা কায়রাে নামে একটি নয়া শহর প্রতিষ্ঠা করেন। কায়রাের পূর্ব নাম ছিল ফুসতাত।
মিসরে ক্ষমতার পালাবদলে ইবনে ইউনূসের ভাগ্য আবর্তিত হয়। ৯৭৫ সালে পিতা আল-মুয়িজের মৃত্যুর পর আল-আজিজ খলিফা হন।
অঙ্ক ও জ্যোতির্বিজ্ঞানে তাঁর পাণ্ডিত্যের কথা খলীফার কানে পৌছাতেও বেশী সময় নেয়নি। যে কারণে খলীফার দরবারে সহসায় তাঁর ডাক পড়ে এবং রাজ জ্যোতিষীর পদ প্রদান করা হয়।খলিফা আল আজিজ তাকে কিছু যন্ত্রপাতি দিয়ে সহযোগিতা করেছিলেন।
ইবনে ইউনূস ত্রিকোণমিত্রিক ও জ্যোতির্বিজ্ঞান বিষয়ক তালিকা তৈরির জন্য স্মরণীয় হয়ে রয়েছেন। ব্যক্তিগত জীবনে মুসলমান হওয়ায় ইবনে ইউনূস জ্যোতির্বিজ্ঞান নিয়ে গবেষণা চালানাের প্রয়ােজন বােধ করেছিলেন।
দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ, রােজা ও বছরে দুটি ঈদের মতাে ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলাের সঙ্গে চন্দ্র ও সূর্যের সম্পর্ক অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। এসব ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালনে চন্দ্র ও সূর্য সম্পর্কে মুসলমানদের উল্লেখযােগ্য জ্ঞান অর্জন করতে হয়। মুসলমানরা চান্দ্র পঞ্জিকা অনুসরণ করলেও চাঁদ দেখা ছাড়া তারা নয়া চান্দ্র মাস নির্ধারণ করতে পারে না। নতুন চাঁদ উদিত হয়েছে কিনা তা জানার জন্য সূর্য থেকে চাঁদের দূরত্ব এবং কখন চাঁদ দেখা যাবে ইত্যাদি তথ্য জানা একান্ত প্রয়ােজন।
জ্যোতির্বিজ্ঞান
ইবনে ইউনূস দীর্ঘ ২৬ বছর ফাতেমীয় রাজবংশের জ্যোতির্বিজ্ঞানী হিসাবে কাজ করেন। প্রথমে কাজ করেন খলিফা আল-আজিজের অধীনে এবং পরে আল-হাকিমের অধীনে। ‘আল-জিজ আল-কবির আল-হাকিমী’ হলাে ইবনে ইউনূসের জ্যোতির্বিজ্ঞান বিষয়ক বিখ্যাত গ্রন্থ। বইটি তিনি খলিফা আল-হাকিমের নামে উৎসর্গ করেন। ১০৭৯ সালে পাসী জ্যোতির্বিজ্ঞানী ওমর খৈয়াম বইটি ফারসি ভাষায় অনুবাদ করেন। এন. এম, সােয়ার্ডলাের মতে, ‘জিজ আল-কবির আল-হাকিমী হলাে এমন একটি অসাধারণ মৌলিক গ্রন্থ যার মাত্র অর্ধেকের বেশি টিকে রয়েছে। আল-কবির মানে হলাে বিশাল’। সত্যি ইবনে ইউনূসের বইটি বিশাল। এতে রয়েছে ৮১ টি অধ্যায়। গ্রন্থটিতে ইবনে ইউনূস তার নিজের এবং তার পূর্ববর্তী জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের আকাশমণ্ডল পর্যবেক্ষণের তালিকা সন্নিবেশিত করেন। হাকিমী জিজের প্রথম অধ্যায়ে মুসলিম, কপটিক, সিরীয় ও পার্সী পঞ্জিকার তালিকা দেয়া হয়। পঞ্জিকাগুলাের তারিখ পরিবর্তন এবং ইস্টারের তারিখ গণনার তালিকাও দেয়া হয়। এ গ্রন্থে গােলাকার ত্রিকোণমিতি উন্নতির শীর্ষ শিখরে পৌছে। ইবনে ইউনূস নির্ভুলভাবে ৪০টি গ্রহ সংযােগ এবং ৩০টি চন্দ্র গ্রহণের বর্ণনা দিয়েছেন। ‘কিতাব গায়াত আল-ইনতিফা হলাে ইবনে ইউনূসের জ্যোর্তিমণ্ডল বিষয়ক আরেকটি গ্রন্থ। তিনি আকাশ পর্যবেক্ষণে যেসব যন্ত্র ব্যবহার করেছিলেন সেগুলাের মধ্যে ছিল ১ দশমিক ৪ মিটার ব্যাসার্ধের একটি বিশাল এস্ট্রোল্যাব। তার বইয়ের ফরাসি সংস্করণ লাপ্লাসকে ক্রান্তিবৃত্তের তীর্যকতা এবং বৃহস্পতি ও শনি গ্রহের অসমতা নির্ধারণে অনুপ্রাণিত করে।কায়রাের মুকাতান পাহাড়ে তার বাড়ি থেকে ইবনে ইউনূস শুক্র গ্রহ পর্যবেক্ষণ করেছিলেন। তিনি পর্যবেক্ষণ চালাতেন তার প্রপিতামহ ও কারাফায় ইবনে নাসেরের মসজিদ থেকে। ৯৮১ সালের ২২ এপ্রিল এ মসজিদ থেকে তিনি চন্দ্র গ্রহণ পর্যবেক্ষণ করেন।
উনবিংশ শতাব্দীতে কানাডীয় আমেরিকান জ্যোতির্বিজ্ঞানী সাইমন নিউকম গ্রহের সংযােগ এবং চন্দ্র গ্রহণ সম্পর্কে ইবনে ইউনূসের পর্যবেক্ষণ যথেষ্ট নির্ভরযােগ্য হিসাবে দেখতে পান এবং চাদের হ্রাস বৃদ্ধি নির্ধারণে এসব পর্যবেক্ষণ তার ‘লিউনার থিওরিতে ব্যবহার করেন। ‘হাকিমী জিজ’-এ ১০০০ সালে সংঘটিত দুটি গ্রহের সংযােগের নির্ভুল বর্ণনা দিয়ে ইবনে ইউনূস লিখেছেন, A conjunction of Venus and Mercury in Gemini, observed in the western sky: The two planets were conjunction after sunset on the night of Sunday 19 May 1000. The time was approximately eight equinoctial hours after midday on Sunday… . Mercury was north of Venus and their latitude difference was a third of a degree.”
অর্থাৎ ‘পশ্চিমাকাশে মিথুনে শুক্র ও মঙ্গল গ্রহের সংযােগ পরিলক্ষিত হয়েছে। ১০০০ সালের ১৯ মে রােববার সূর্যাস্তের পর রাতে এ দু’টি গ্রহের সংযােগ ঘটে। সময়টি ছিল আনুমানিক রােববার মধ্যরাতের পর বিষুবীয় ৮টা। মঙ্গল গ্রহের অবস্থান ছিল শুক্র গ্রহের উত্তরে এবং তাদের অক্ষাংশের দূরত্ব ছিল এক ডিগ্রির এক- তৃতীয়াংশ। আধুনিক পর্যবেক্ষণে প্রমাণিত হয়েছে যে, শুক্র ও মঙ্গল গ্রহের সংযােগকালে অক্ষাংশের দূরত্ব এক ডিগ্রির এক-তৃতীয়াংশ এবং ইবনে ইউনূসের গণনা নির্ভুল। ইবনে ইউনূস ১ দশমিক ৪ মিটার ব্যাসের একটি বিশাল এস্ট্রোল্যাবের সাহায্যে ১০ হাজার বারের বেশি সূর্যের অবস্থান পর্যবেক্ষণ করেন।
জ্যোতিষ
ইবনে ইউনূস বহু ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন এবং জ্যোতিষ শাস্ত্রের ওপর ‘কিতাব বুলাগ আল-ইউমনিয়া’ (On the Attainment of Desire) শিরােনামে একটি গ্রন্থ রচনা করেন। গ্রন্থটিতে ভােরের আলাে ফোটার পূর্বাহ্নে লুব্ধকের উদয় এবং কপটিক বর্ষে সপ্তাহ শুরুর দিন সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছে।
ইবনে ইউনূস আবিষ্কৃত ঘড়ির পেণ্ডুলাম
স্বর্ণযুগের শুরুতেই মুসলমানরা ঘড়ি ব্যবহার করছিল। তবে তখন ঘড়িতে পেন্ডুলাম ছিল না। ঘড়ি আবিষ্কারের কৃতিত্ব মুসলমানদের। অন্যদিকে পেন্ডুলাম আবিষ্কার করেছেন ইবনে ইউনূস। পেন্ডুলাম আবিষ্কারের মধ্য দিয়ে যান্ত্রিক ঘড়ি নির্মাণ করা হয়। এনসাইক্লোপিডিয়া এবং ঐতিহাসিক বর্ণনায় উপর্যুপরি উল্লেখ করা হচ্ছে যে, দশম শতাব্দীর জ্যোতির্বিজ্ঞানী ইবনে ইউনূস ঘড়ির পেন্ডুলাম আবিষ্কার করেন এবং সময় নির্ধারণে তা ব্যবহার করেছেন। তবে পাশাপাশি ঘড়ির অত্যাবশকীয় এ যন্ত্র আবিষ্কারে তার অবদান অস্বীকার করার একটি প্রবণতাও লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
বলা হচ্ছে যে, ১৬৮৪ সালে ইংরেজ ঐতিহাসিক এডওয়ার্ড বারনার্ডের একটি ভুল থেকে পেন্ডুলাম আবিষ্কারে ইবনে ইউনূসের নাম উচ্চারিত হচ্ছে। কিন্তু সত্য গােপনকারীদের মুখে ছাই দিয়ে ঐতিহাসিক রজার জি. নিউটন সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে, ইবনে ইউনূসই হলেন ঘড়ির পেন্ডুলামের আবিষ্কারক। তবে তিনি ইউনূসের নামে একটু হেরফের করে তার ‘গ্যালিলিও পেন্ডুলাম: ফ্রম দ্য রিদম অব টাইম টু দ্য মেকিং অব ম্যাটার শিরােনামে বইয়ের ৫২ পৃষ্ঠায় লিখেছেন, ‘The Arab astronomer Ibn Yunis the younger was reported to have employed it as early as the tenth century.’ অর্থাৎ ‘আরবীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানী ইবনে ইউনিস দশম শতাব্দীর গােড়ার দিকে তা ব্যবহার করেছেন বলে জানা গেছে।এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানতে চাইলে এই সাইট Muslimheritage থেকে দেখে নিতে পারেন।
ত্রিকোণমিতি
কিতাব আল-জাইব’ বা সাইন টেবলেট’ হলাে ত্রিকোণমিতির ওপর লেখা ইবনে ইউনূসের একটি বই। বইটিতে ত্রিকোণমিতির কার্যক্রমগুলাে কোণের পরিবর্তে বৃত্তচাপে প্রকাশ করা হয়। তার লেখালেখিতে বৃত্তাকার ত্রিকোণমিতি উন্নতির উচ্চ শিখরে পৌছে। ইবনে ইউনূস বৃত্তাকার ত্রিকোণমিতির বেশকিছু জটিল সমস্যা সমাধান করেন। তিনি একটি ফর্মুলা নিচে উল্লেখ করা হলাে।
cos a cos b= cos(a+b)+ cos(a-b)/2
লগারিদম উদ্ভাবনের আগে ষােড়শ শতাব্দীতে ইউরােপ যে চারটি ফর্মুলা ব্যবহার করতাে সেগুলাের মধ্যে ইবনে ইউনূসের এ ফর্মুলাটি ছিল অন্যতম। বার্লিনের আহলওয়ারডাট লাইব্রেরিতে ‘কিতাব আল-জাইব শিরােনামে ইউনূসের বইটি সংরক্ষিত
রচনাবলী
হাকিমী জিজ’ ছাড়াও ইবনে ইউনূস ‘প্রপরশন বা অনুপাত (Proportion) এবং সিমিলার আর্ক’ বা সমরূপী বৃত্তচাপের (Similar arcs) ওপর দুটি বই লিখেছেন। ল্যাটিন অনুবাদে তার প্রপরশন বিষয়ক বইটির নামকরণ করা হয় ‘ডি প্রপরশনি ইট পরশনালিয়েট’ (De Proportione et Proportionaliate) এবং সিমিলার আর্ক বিষয়ক বইটির নামকরণ করা হয় ডি সিমিলিবাস আরকিউবাস’ (De Similibus arcubus)। ইবনে ইউনূসের প্রপরশন বিষয়ক বইটি ইউরােপীয় রেনেসাঁয় গভীর প্রভাব বিস্তার করে। লিওনাডে এবং জর্ডনাস নিমরেরিয়াস বইটি ল্যাটিন ভাষায় অনুবাদ করেন। ইবনে ইউনূস গ্রীক বিজ্ঞানী মেনিলাসের ত্রিভুজ খণ্ডন সম্পর্কীয় উপপাদ্য, আলকুয়াট্টা (Alquatta), সেক্টর (Sector) প্রভৃতি নিয়েও আলােচনা করেন এবং টলেমির ‘সেন্টিলকিয়াম’-এর (Centiloquium) ওপর একটি ভাষ্য রচনা করেন। লাইডেন ও অক্সফোর্ডে ইবনে ইউনূসের ‘হাকিমী জিজ’ সংরক্ষিত। ১৮০৪ সালে ডি পারসিভাল ফরাসি অনুবাদসহ বইটি প্রকাশ করেন। কার্ল স্কয়-ও বইটি অনুবাদ করেন এবং বইটির সূর্যঘড়ি ও বৃত্তাকার ত্রিকোণমিতি সংক্রান্ত কয়েকটি অধ্যায় বিশ্লেষণ করেন।
ইবনে ইউনূস তার মৃত্যুর তারিখ সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী করে বলেছিলেন, সুস্থ অবস্থায় ৭ দিনের মধ্যে তার মৃত্যু হবে।
ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী তিনি ব্যবসায়িক কাজকর্ম গুটিয়ে ফেলেন এবং বাড়ির বাইরে যাওয়া বন্ধ করে দেন। কলমের কালি মুছে ফেলেন। যেদিন তার মৃত্যু হবে বলে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন সেদিন পর্যন্ত তিনি পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করতে থাকেন। তার ভবিষ্যদ্বাণী সত্যি প্রমাণিত হয়। ১০০৯ সালে তিনি ইন্তেকাল করেন।
সম্মান
১৯৭৬ সালে ইবনে ইউনূসের নামে চাঁদের একটি গহবরের নামকরণ করা হয়। ১৪ দশমিক ১ এস দ্রাঘিমাংশ এবং ৯১ দশমিক ১ ই অক্ষাংশে এই গহ্বরের দৈর্ঘ্য ৫৮ দশমিক শূন্য পাঁচ কিলােমিটার।
3 thoughts on "[পর্ব ২৭]ইতিহাসের সেরা কিছু মুসলিম বিজ্ঞানী আর তারা যে কারনে বিখ্যাত।[ইবনে ইউনুস:-ঘড়ির পেন্ডুলাম আবিষ্কারক]"