আসসালামু আলাইকুম

আশা করছি আপনারা সবাই আল্লাহর রহমতে ভালো আছেন।

আমার আগের সব পর্ব:-
ইতিহাসের সেরা কিছু মুসলিম বিজ্ঞানী আর তারা যে কারনে বিখ্যাত।পর্ব ১
ইতিহাসের সেরা কিছু মুসলিম বিজ্ঞানী আর তারা যে কারনে বিখ্যাত।পর্ব ২

ইতিহাসের সেরা কিছু মুসলিম বিজ্ঞানী আর তারা যে কারনে বিখ্যাত।পর্ব ৩

ইতিহাসের সেরা কিছু মুসলিম বিজ্ঞানী আর তারা যে কারনে বিখ্যাত।পর্ব ৪

ইতিহাসের সেরা কিছু মুসলিম বিজ্ঞানী আর তারা যে কারনে বিখ্যাত।পর্ব ৫

ইতিহাসের সেরা কিছু মুসলিম বিজ্ঞানী আর তারা যে কারনে বিখ্যাত।পর্ব ৬

[পর্ব ৭] ইতিহাসের সেরা কিছু মুসলিম বিজ্ঞানী আর তারা যে কারনে বিখ্যাত।[নাসির আল দীন আল তুসি:-ত্রিকোণমিতির স্রষ্টা,জিজ-ইলখানি উপাত্তের উদ্ভাবক]

[পর্ব ৮] ইতিহাসের সেরা কিছু মুসলিম বিজ্ঞানী আর তারা যে কারনে বিখ্যাত।[আবুল ওয়াফা:-ত্রিকোণমিতির মূল স্থপতি]

[পর্ব ৯]ইতিহাসের সেরা কিছু মুসলিম বিজ্ঞানী আর তারা যে কারনে বিখ্যাত।[আবু মারওয়ান/ইবনে জহুর:-পরভূক জীবাণু বিজ্ঞানের প্রতিষ্ঠাতা,পরীক্ষামূলক সার্জারির জনক, পরীক্ষামূলক শারীরবৃত্তীয়, মানুষের ব্যবচ্ছেদ, অটোপস এর অগ্রদূত]

[পর্ব ১০]ইতিহাসের সেরা কিছু মুসলিম বিজ্ঞানী আর তারা যে কারনে বিখ্যাত।[আল মাওয়ার্দি:-বিশুদ্ধতম গণতন্ত্রের প্রবক্তা]

[পর্ব ১১]ইতিহাসের সেরা কিছু মুসলিম বিজ্ঞানী আর তারা যে কারনে বিখ্যাত।[আল জাজারি:-মধ্যযুগের শ্রেষ্ঠ প্রযুক্তিবিদ]

[পর্ব১২]ইতিহাসের সেরা কিছু মুসলিম বিজ্ঞানী আর তারা যে কারনে বিখ্যাত।[আবুল কাসিম আল জাহারাবী:-অপারেটিভ/আধুনিক সার্জারীর জনক]

[পর্ব১৩]ইতিহাসের সেরা কিছু মুসলিম বিজ্ঞানী আর তারা যে কারনে বিখ্যাত।[আব্বাস ইবনে ফিরনাস:-বিমানের জনক,প্রথম যিনি উড়েছিলেন আকাশে]

[পর্ব ১৪]ইতিহাসের সেরা কিছু মুসলিম বিজ্ঞানী আর তারা যে কারনে বিখ্যাত।[আল-কিন্দি:-ফার্মাকোলজির অগ্রদূত, পেরিপ্যাটেটিক দর্শনের জনক,সাংকেতিক বার্তার পাঠোদ্ধারকারী,সাইকোথেরাপি ও সংগীত থেরাপির অগ্রদূত]

[পর্ব ১৫]ইতিহাসের সেরা কিছু মুসলিম বিজ্ঞানী আর তারা যে কারনে বিখ্যাত।[ফাতিমা আল ফিহরি:-বিশ্বের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছিলেন যে নারী]

[পর্ব ১৬]ইতিহাসের সেরা কিছু মুসলিম বিজ্ঞানী আর তারা যে কারনে বিখ্যাত।[আল-খৈয়াম:-বাইনমিয়েল থিওরেমের প্রথম আবিষ্কারক,এনালিটিক্যাল জ্যামিতির জনক]

পর্ব ১৭]ইতিহাসের সেরা কিছু মুসলিম বিজ্ঞানী আর তারা যে কারনে বিখ্যাত।[জাকারিয়া আল রাযি:-আরবীয় চিকিৎসাশাস্ত্রের প্রাণপুরুষ]

[পর্ব ১৮]ইতিহাসের সেরা কিছু মুসলিম বিজ্ঞানী আর তারা যে কারনে বিখ্যাত।[আল ফারাবি:-অ্যারিস্টটলের পর দর্শনের সেকেন্ড মাস্টার,পদার্থ বিজ্ঞানে শূন্যের অবস্থান নির্ণয়কারী]

[পর্ব ১৯]ইতিহাসের সেরা কিছু মুসলিম বিজ্ঞানী আর তারা যে কারনে বিখ্যাত।[আল জারকালি:-সূর্যের সর্বোচ্চ উচ্চতার গতি প্রমাণকারী]

[পর্ব ২০] ইতিহাসের সেরা কিছু মুসলিম বিজ্ঞানী আর তারা যে কারনে বিখ্যাত।[আলী ইবনুল-আব্বাস আল-মাজুসী:-ধাত্রীবিদ্যা এবং পেরিনেটোলজি এর অগ্রদূত]
[পর্ব ২১]ইতিহাসের সেরা কিছু মুসলিম বিজ্ঞানী আর তারা যে কারনে বিখ্যাত।[ইবনে তোফায়েল:-প্রথম দার্শনিক উপন্যাস রচয়িতা]

[পর্ব ২২]ইতিহাসের সেরা কিছু মুসলিম বিজ্ঞানী আর তারা যে কারনে বিখ্যাত।[আল বালখি:-যিনি সর্বপ্রথম দেহ ও আত্মা সম্পর্কিত রোগসমূহকে সফলভাবে আলোচনা করেছিলেন]

[পর্ব ২৩]ইতিহাসের সেরা কিছু মুসলিম বিজ্ঞানী আর তারা যে কারনে বিখ্যাত।[ছাবেত ইবনে কোরা:-স্টাটিক্সের প্রতিষ্ঠাতা]

[পর্ব ২৪]ইতিহাসের সেরা কিছু মুসলিম বিজ্ঞানী আর তারা যে কারনে বিখ্যাত।[আবু কামিল:-এলজাব্রায় প্রথম উচ্চতর পাওয়ার ব্যবহারকারী]

[পর্ব ২৫]ইতিহাসের সেরা কিছু মুসলিম বিজ্ঞানী আর তারা যে কারনে বিখ্যাত।[আলী ইবনে সাহল রাব্বান আত তাবারী:-চিকিৎসা বিশ্বকোষ এর অগ্রদূত]

[পর্ব ২৬]ইতিহাসের সেরা কিছু মুসলিম বিজ্ঞানী আর তারা যে কারনে বিখ্যাত।

[পর্ব ২৭]ইতিহাসের সেরা কিছু মুসলিম বিজ্ঞানী আর তারা যে কারনে বিখ্যাত।[ইবনে ইউনুস:-ঘড়ির পেন্ডুলাম আবিষ্কারক]

[পর্ব ২৮]ইতিহাসের সেরা কিছু মুসলিম বিজ্ঞানী আর তারা যে কারনে বিখ্যাত।[আল মাহানী]

[পর্ব ২৯]ইতিহাসের সেরা কিছু মুসলিম বিজ্ঞানী আর তারা যে কারনে বিখ্যাত।[ইবনে বাজা]

[পর্ব 30]ইতিহাসের সেরা কিছু মুসলিম বিজ্ঞানী আর তারা যে কারনে বিখ্যাত।[ফজলুর রহমান খান:-স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের আইনস্টাইন,Father of tubular designs]

[পর্ব ৩১]ইতিহাসের সেরা কিছু মুসলিম বিজ্ঞানী আর তারা যে কারনে বিখ্যাত।[আবু সাহাল আল কুহি:-অঙ্কনে ব্যবহৃত কম্পাসের উদ্ভাবক]

[পর্ব ৩২]ইতিহাসের সেরা কিছু মুসলিম বিজ্ঞানী আর তারা যে কারনে বিখ্যাত।[আবদুর রহমান আল-সুফি:-তিনিই প্রথম Andromeda কে গ্যালাক্সি হিসেবে চিহ্নিত করেন]

[পর্ব ৩৩]ইতিহাসের সেরা কিছু মুসলিম বিজ্ঞানী আর তারা যে কারনে বিখ্যাত।[আল কারাজী]

[পর্ব ৩৪]ইতিহাসের সেরা কিছু মুসলিম বিজ্ঞানী আর তারা যে কারনে বিখ্যাত।[হাবাশ আল-হাসিব আল-মারওয়াজী]

[পর্ব ৩৫]ইতিহাসের সেরা কিছু মুসলিম বিজ্ঞানী আর তারা যে কারনে বিখ্যাত।[উলুঘ বেগ]

[পর্ব ৩৬]ইতিহাসের সেরা কিছু মুসলিম বিজ্ঞানী আর তারা যে কারনে বিখ্যাত।[আলী জাভান:-প্রথম গ্যাস লেজারের উদ্ভাবক]

43.বানু মুসা ভ্রাতৃদ্বয়

বানু মুসা ভ্রাতৃদ্বয় বলতে তিনজন ভাইদের বোঝায়। এদের নাম হলাে যথাক্রমে- আবু জাফর মুহাম্মদ ইবনে মূসা ইবনে সাকির, আবুল কাসিম আহমদ ইবনে মূসা ইবনে সাকিরএবং আল-হাসান ইবনে মূসা ইবনে শাকীর।

তিন ভাইয়ের কাজ ছিল এত বিভিন্ন যে, তাদের নিয়ে পৃথকভাবে আলােচনা করা অসম্ভব। তিন ভাই প্রায় সব কাজই একসঙ্গে করেছেন। তাদের মধ্যে জ্যেষ্ঠ ভাই জাফর মােহাম্মদই সর্বাধিক গুণী ছিলেন। গণিতের ইতিহাসে সংক্ষেপে তারা বানু মুসা নামে পরিচিত।
নবম শতকে বাগদাদের তিন মনীষীর এই তিনজনকে একত্রে বলা হতো মেশিনারি জগতের বিস্ময়।

এদের পিতার নাম হলো ইবনে মূসা ইবনে সাকির।প্রথমে এনার সম্পর্কে কিছু জেনে নেওয়া যাক:-

মূসা বিন শাকীর ছিলেন প্রখ্যাত বিজ্ঞানী। তিনি জ্যোতির্বিজ্ঞান ও জ্যামিতিতে মৌলিক অবদান রাখার জন্য বিজ্ঞানেরর ইতিহাসে বিখ্যাত হয়ে আছেন। কিন্তু তিনি প্রথম জীবনে ছিলেন ভয়ঙ্কর একজন দস্যু। অর্থ-সম্পদের জন্য তিনি নির্দ্ধিধায় খুন-খারাবী করতে পারতেন। তার নির্দয়তার কথা সে সময় মানুষের মুখে মুখে ফিরত। এই নির্মম ডাকাত একদিন খলীফা আল মামুনের রাজকীয় বাহিনীর হাতে ধরা পড়ে এবং তার মৃত্যু দণ্ডের আদেশ হয়। তবে দস্যু মূসা এ আদেশ মেনে নেননি।

তিনি বাদশার কাছে এর প্রতিবাদ করেন যে, এ হুকুম ন্যায় বিচারের পরিপন্থী। কারণ আমি দস্যুতা করতে গিয়ে বা মানুষ খুন করার অপরাধে আপনার বাহিনীর হাতে ধরা পড়িনি। বরং প্রতিপক্ষ হিসেবে যুদ্ধে পরাজিত হয়ে বন্দী হয়েছি। অতএব আমার প্রাপ্য যুদ্ধবন্দীর মর্যাদা দস্যু সর্দারের কথায় চমৎকৃত বাদশাহ তাঁর শাস্তি সরূপ তাকে রাজকীয় মানমন্দিরের সেবায়েত নিযুক্ত করেন।

ঘটনাক্রমে এ সময়ে মানমন্দিরে গবেষণারত ছিলেন বিশ্বখ্যাত বিজ্ঞানী আল খারেজমী। পরবর্তীতে তাঁর সাহচর্যে এসে বদলে গেলেন দস্যু সর্দার মুসা ইবনে শাকীর।

আত্মনিয়ােগ করলেন বিজ্ঞান চর্চায়। আর সবচেয়ে বড় ব্যাপার হলাে এই মূসা বিন শাকীরই ছিলেন জগদ্বিখ্যাত বিজ্ঞানী বানু মূসা ভ্রাতৃত্রয়ের সম্মানিত পিতা।

বানু মুসা ভ্রাতৃদ্বয় নবম শতাব্দীতে জন্মগ্রহণ করেন।

মূসা বিন শাকীর তিনজন শিশুপুত্র রেখে ইন্তেকাল করেন।

শিক্ষা
ইয়াতিম শিশু তিনজনের লালন-পালনের দায়িত্ব পালন করেন স্বয়ং খলীফা আল মামুন।

খলিফা মামুন বাগদাদের একসময়ের গভর্নর ইসহাক ইবনে মুসাবির হাতে তিন ভাইয়ের ভার অর্পণ করেন। পরে তাদের উপযুক্ত শিক্ষায় শিক্ষিত করে তােলার দায়িত্ব দেয়া হয় তার বিজ্ঞান সভার অন্যতম সদস্য ইয়াহিয়া বিন আবি মনসুরের হাতে।

অতি শৈশবকাল থেকেই ভ্রাতৃত্রয় তৎকালীন বিখ্যাত পণ্ডিতদের সংস্রব লাভ করায় বিজ্ঞানের প্রতি তাদের ঝোঁক সৃষ্টি হয়। বাগদাদের রাজদরবারের সঙ্গে সম্পর্ক থাকায় তিন ভাই প্রচুর বিত্তের মালিক হন। ভ্রাতৃত্রয় জ্ঞান বিজ্ঞানের সন্ধানে গ্রীস, বাইজান্টাইন প্রভৃতি দেশ ভ্রমণ করে বিজ্ঞান বিষয়ক বহু গ্রন্থ সংগ্রহ করেন। বাইজান্টাইন সফর শেষে ফেরার সময় হাররানে জ্যেষ্ঠ ভাই জাফর মােহাম্মদের সঙ্গে ছাবেত ইবনে কোরার সাক্ষাৎ হয়। তিনি তাকে বাগদাদে নিয়ে এসে খলিফার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন।

বানু মুসা ভ্রাতৃদ্বয়ের মধ্যে আবু জাফর মুহাম্মদ ছিলেন সবথেকে বেশী প্রতিভাধর। বিজ্ঞানের সব শাখাতেই তিনি ছিলেন সমান দক্ষ। আবুল কাসিম আহমদ ছিলেন বৈজ্ঞানিক যন্ত্র তৈরীতে কুশলী ও যন্ত্র ব্যবহারে বিশেষজ্ঞ ব্যক্তি। আর সর্বকনিষ্ঠজন আল হাসান ছিলেন সর্বশ্রেষ্ঠ গণিতজ্ঞ।

বায়তুল হিকমায় নিযুক্তি লাভ

আল-মামুন তিন ভাইয়ের দক্ষতা দেখে তাদের বাগদাদের বিখ্যাত হাউস অফ উইজডমে একটি গ্রন্থাগার এবং একটি অনুবাদকেন্দ্রে তালিকাভুক্ত করেছিলেন।

ইয়াহিয়া ইবনে আবি মনসুরের অধীনে হাউস অফ উইজডমে অধ্যায়নরত অবস্থায় তারা প্রাচীন গ্রীক রচনাগুলিকে আরবিতে অনুবাদ করার প্রচেষ্টাতে অংশ নিয়েছিলেন।

আরব বিজ্ঞানীদের মধ্যে প্রথম যারা গ্রীক গণিত নিয়ে গবেষণা চালান এবং আরবী গণিতের ভিত্তিস্থাপন করেন বানু মুসা ছিলেন তাদের অন্যতম। এ ব্যাপারে আল-দাবাগ তার বায়ােগ্রাফি ইন ডিকশনারী অব সায়েন্টিফিক বায়ােগ্রাফি’তে

T , The Banu Musa were among the first Arabic scientists to study the Greek mathematical works and to lay the foundation of the Arabic school of mathematics. They may be called disciples of Greek mathematics, yet they deviated from classical Greek mathematics in ways that were very important to the development of some mathematical concepts.’

অর্থাৎ যেসব আরব বিজ্ঞানী গ্রীক গণিত নিয়ে গবেষণা চালান এবং আরব গণিতের ভিত্তি স্থাপন করেন বানু মুসা হলেন তাদের অন্যতম। তাদেরকে গ্রীক গণিতের শিষ্য হিসাবে আখ্যায়িত করা হলেও বহু ক্ষেত্রে তারা প্রাচীন গ্রীক গণিত থেকে বিচ্যুত হয়েছেন। গ্রীক গণিত থেকে তাদের এ বিচ্যুতি ছিল কোনাে কোনাে ক্ষেত্র গাণিতিক ধারণার উন্নয়নে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’

তারা তিন ভাই আল-বিরুনীর মতই বৈজ্ঞানিক ও পর্যটক ছিলেন। জ্ঞান আহরণে তারা নিজেদের সমস্ত ধন-সম্পদ নিয়ােজিত করেন। নিজেরাও বেরিয়ে পড়েন পূর্বতন জ্ঞান বিজ্ঞানের প্রাচীন পুঁথি-পুস্তক সংগ্রহ করার জন্য। তারা গ্রীক, রােম প্রভৃতি সভ্যতার পীঠস্থানগুলাে ঘুরে ঘুরে বিপুল গ্রন্থ সংগ্রহ করেন।

এরপরও লােক মারফত প্রচুর অর্থব্যয়ে বহু প্রাচীন জ্ঞান-গ্রন্থ সংগ্রহ করেন। বাগদাদে ফিরবার পথে হাররানে ভাগ্যান্বেষী বৈজ্ঞানিক সাবিত ইবনে কোরার সঙ্গে তাঁদের দেখা হয়।

পৃথিবীর আকার ও আয়তন নির্ধারণ

পাশ্চাত্যে পৃথিবীকে যখন চ্যাপ্টা ও সমতল হিসাবে প্রমাণ করার প্রচেষ্টা চলছিল মুসলিম বিজ্ঞানীগণ তখন পৃথিবীর আয়তন ও পরিধি পরিমাপের চেষ্টা করছিলেন। বর্তমান ভূগােলের দ্রাঘিমাংশ ও অক্ষরেখার কেন্দ্রস্থল গ্রীনউইচ ছিল তখনকার বিশ্বে অজ্ঞাত। অক্ষরেখা ও দ্রাঘিমা কল্পনা করে বানু মুসা লােহিত সাগরের তীরে ডিগ্রি মেপে নির্ভুলভাবে পৃথিবীর প্রকৃত আকার ও আয়তন নির্ণয় করেন।

বর্তমান বিজ্ঞানীদের ডিগ্রির মাপের সঙ্গে আরবদের নির্ধারিত মাপের পার্থক্য অতি সামান্য। ঐতিহাসিক গিবনের মতে, পৃথিবীর আকার ও আয়তন নির্ধারণে আরবদের পরিমাপ সম্পূর্ণ ঠিক। একসময় মুসলিম বিজ্ঞানীরা পৃথিবীর গতি সম্পর্কেও স্থির নিশ্চিত হন।

মুসলিম বিজ্ঞানীদের ৭ শ’ বছর পর টাইকো ব্রাহি ঘােষণা করেন যে, পৃথিবী সূর্যের চারদিকে ঘুরছে। একথা প্রচার করায় তাকে ইতালি থেকে পালাতে হয়। সুইজারল্যান্ড, ফ্রান্স, জার্মানি, ইংল্যান্ড প্রভৃতি দেশে পালিয়ে বেড়ানাে শেষে ইতালিতে ফিরে এলে তাকে কারাগারে নিক্ষেপ করা হয়। অবশেষে তাকে ধর্মদ্রোহী হিসাবে ঘােষণা করে জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যা করা হয়।

ব্ৰাহির পদাঙ্ক অনুসরণে গ্যালিলিও ঘােষণা করেন যে, সূর্য স্থির এবং পৃথিবী গতিশীল। এই মতবাদের জন্য তাকে বহু অপমান এবং দীর্ঘ কারা যন্ত্রণা ভােগ করতে হয়। ১৬৩৭ সালে তিনি সম্পূর্ণ অন্ধ হয়ে যান এবং কিছুদিন পর বধির হন। ১৬৪২ সালে বন্দিশালাতে তার মৃত্যু হয়।

ইউরােপীয় ইনকুয়িজিশনের নেতারা তার মৃতদেহ সমাহিত করতে নিষেধ করেন। গ্যালিলিওর বন্ধুরা সান্তাক্রুজে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করতে চাইলে পােপের আদেশে তাও নিষিদ্ধ হয়। অন্যদিকে মুসলিম বিজ্ঞানীরা ছিলেন কতই না ভাগ্যবান! তখনকার দিনে মুসলমানদের মধ্যে ধর্মীয় উন্মাদনা কম ছিল না। কিন্তু কোনাে মুসলিম বিজ্ঞানীকে বৈজ্ঞানিক মতবাদের জন্য কখনাে নিগ্রহের শিকার হতে হয়নি।

পৃথিবীর আকার সম্পর্কে মুসলিম বিজ্ঞানীদের মধ্যে কোনাে অস্পষ্টতা ছিল না। খলিফা আল-মামুনের আমলে তাদের প্রচেষ্টা থেকেই তা বুঝা যায়। ভারতবর্ষে এ সত্য আবিষ্কৃত হলেও প্রচার পায়নি। ইংরেজদের আগমনের আগ পর্যন্ত পুঁথির পাতায় তা সীমাবদ্ধ ছিল। টলেমি পৃথিবী গােলাকার বলে প্রমাণ করলেও তারপর আর এ নিয়ে কোনাে কাজ হয়নি।

মুসলিম বিজ্ঞানীদের মধ্যে বানু মুসা ভ্রাতৃত্রয় তাকে সুন্দরভাবে কাজে লাগিয়েছেন। তারা এই মতবাদের ওপর ভিত্তি করে পৃথিবীর আয়তন নিয়ে পরীক্ষা চালান। ক্রান্তিবৃত্তের তীর্যকতা (The obliquity of the ecliptic) সম্পর্কে আগেকার বিজ্ঞানীদের কোনাে ধারণা ছিল না। বানু মুসা ভ্রাতৃত্রয় প্রথম জ্যোতির্বিজ্ঞানে এ সম্পর্কে আলােচনা করেন এবং নির্ভুলভাবে তা নির্ধারণ করেন। চাঁদের হ্রাস বৃদ্ধি (Variation of the luner altitude) পর্যবেক্ষণ, সূর্যের সর্বোচ্চ উচ্চতা বা অপভূ, সূর্যের সর্বনিন্ম উচ্চতা বা অণুভূ প্রভৃতিসহ আরাে কয়েকটি নতুন আবিষ্কারের জন্য মুসা ভ্রাতৃত্রয়ের নাম বিজ্ঞান জগতে অমর হয়ে থাকবে।

বছরে দু’দিন দিন ও রাত সমান। জ্যোতির্বিজ্ঞানের সংজ্ঞা অনুযায়ী এই দু’দিন পৃথিবী বিষুবরেখা ও আয়নমণ্ডলের সংযােগস্থলে অবস্থান করে। পৃথিবীর গতির সঙ্গে সঙ্গে এ সংযােগস্থলেরও পরিবর্তন হয়। আধুনিক বিজ্ঞানে এ সত্য প্রমাণিত।

পুরাকালের বিজ্ঞানে এ সম্পর্কে কোনাে আলােচনা হয়নি। বানু মুসা ভ্রাতৃত্রয় তা প্রথম আবিষ্কার করেন। তাদের মধ্যে কে এ বিষয়ে গবেষণা করেছিলেন তা সঠিকভাবে জানা যায়নি। তিন ভাই একসঙ্গে গবেষণা করতেন।

একসঙ্গে মানমন্দিরে সূর্য, গ্রহ ও নক্ষত্রাদির গতিবিধি নিরীক্ষণ করতেন। শেষ পর্যন্ত তিন ভাইয়ের নামেই সব আবিষ্কার রেকর্ড করা হয়। সূর্যের সর্বোচ্চ উচ্চতা বা অপভূ এবং এবং সর্বনিন্ম উচ্চতা বা অনুভূ ছিল জ্যোতির্বিজ্ঞানের অত্যন্ত প্রয়ােজনীয় প্রতিজ্ঞা।

সাধারণভাবে বিশ্বাস করা হতাে যে, অপভূ ও অনুভূ স্থির। কিন্তু বিজ্ঞানীদের বিশ্বাস ছিল ভিন্ন। তাদের মতে, অপভূ ও অনুভূ একেবারে স্থির নিশ্চল নয়। তাদের পরিক্রমণ পরীক্ষিত সত্য হলেও নবম শতাব্দীর আগ পর্যন্ত বিজ্ঞানীদের এ সম্পর্কে স্পষ্ট কোনাে ধারণা ছিল না। গ্রীকদের তাে নয়ই। বানু মুসা ভ্রাতুত্রয়ই প্রথম এ বিষয়ে বিজ্ঞানীদের মনােযােগ আকর্ষণ করেন এবং সূর্যে সর্বোচ্চ ও সর্বনিন্ম উচ্চতা পরিমাপ করেন।

তারা ইরাকের সামারাকে গ্রহ নক্ষত্রাদি নিরীক্ষণের ক্ষেত্র হিসাবে বেছে নেন এবং এখানেই তাদের প্রথম গবেষণার কাজ চালান। একাদশ শতাব্দীর বিখ্যাত বিজ্ঞানী ইবনে ইউনুসের গ্রন্থে তাদের প্রণীত জ্যোতির্বিজ্ঞান বিষয়ক তালিকা এবং সূর্য সম্পর্কে বহু তথ্য উল্লেখ করা হয়।

নবম শতাব্দীর শেষভাগ পর্যন্ত বানু মুসার কাজের পরিচয় পাওয়া যায়। বিজ্ঞানের প্রায় সব শাখায় ভ্রাতৃত্রয়ের প্রতিভার নির্দশন বিদ্যমান। জ্যামিতি ও বলবিজ্ঞান বা মেকানিক্সে তারা প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন।

তাদের আগে আর কোনাে মুসলিম বিজ্ঞানী বলবিজ্ঞান নিয়ে আলােচনা করেননি। তবে গ্রীক বিজ্ঞানী পাপাস এ বিষয়ে আলােচনা করেছিলেন। বলবিজ্ঞান আলেক্সান্ড্রিয়ার হিরনের উদ্ভাবিত এবং বানু মুসা ভ্রাতৃত্রয়ের আগ পর্যন্ত তার প্রচারিত নিয়ম ও তথ্যগুলাে ছিল কিতাবী।

তাঁরা জ্যামিতি, পরিমিতি কণিক, চিকিৎসা প্রভৃতি বিষয়ের উপর মৌলিক গ্রন্থ রচনা করেন। তাদের লেখা গােলক ও সমতল ভূমির পরিমাপ সম্পর্কীয় গ্রন্থটি ল্যাটিন ভাষায় অনূদিত হয়।

গ্রিক বৈজ্ঞানিক হিরোঁ সর্বপ্রথম বলবিজ্ঞানের ধারণা দেন। তবে তাঁর ধারণা অত্যন্ত অস্পষ্ট ছিল। অত:পর বহু শতাব্দী যাবত বিষয়টি আর কারও দৃষ্টি আকর্ষণ করেনি। বিজ্ঞানের এ শাখাটিকে বনি মূসা ভাইয়েরা সুদৃঢ় ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত করেন।

তারা এর ঔপপত্তিক নিয়মকানুন ও সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম যন্ত্রপাতির নির্মাণ কৌশলের ওপর বিশদ আলােচনা করেন। স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রপাতির নির্মাণ কৌশলও তাঁরা উদ্ভাবন করেন। বলবিজ্ঞান সম্পর্কীয় তাদের যাবতীয় আবিষ্কার সম্পূর্ণ মৌলিক বলেই মনে হয়’ (সেরা ক’জন মুসলিম বিজ্ঞানী, পূ. ৬৯)।

তাদের অর্জনগুলির মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হ’ল অটোমেশনের(স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র যা নিজে থেকে কাজ করতে পারে) ক্ষেত্রে তাদের কাজ , যা তারা খেলনা এবং অন্যান্য বিনোদনমূলক সৃষ্টিতে ব্যবহার করে। তারা তাদের গ্রীক পূর্বসূরীদের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি দেখিয়েছে।

বানু মুসাকে বলা হয় জ্যোতির্বিদদের মধ্যে বিস্ময়কর একজন। কারণ আর কিছুই নয়, তার সময়ে তিনি যে উচ্চতায় পৌঁছেছিলেন তা এক কথায় অবিশ্বাস্য।

বণি মূসা ভ্রাতৃত্রয় ব্যবহারিক জ্যোতির্বিজ্ঞানে চরম সাফল্য লাভ করেন। তাঁদের আয়ত্বাধীন রাজকীয় মানমন্দির থাকা সত্ত্বেও নিজেদের কাজের সুবিধার্থে তারা তাইগ্রীস নদীর তীরে ‘বাবেল তাকে’ নামক জায়গায় আলাদা মানমন্দির নির্মাণ করেছিলেন।

তারা পিরমাপক যন্ত্রের উৎকর্ষ সাধন করেছিলেন।

তারা জ্যোতির্বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে অনেক পর্যবেক্ষণ এবং অবদান রেখেছিল, তাদের জ্যোতির্বিদ্যা সংক্রান্ত গবেষণার উপর প্রায় এক ডজন প্রকাশনা লিখেছিল।

আল-মামুন তাদেরকে দ্বারা অক্ষাংশের এক ডিগ্রী পরিমাপ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল এবং তারা উত্তর মেসোপটেমিয়ার মরুভূমিতে তাদের পরিমাপ করেছে। তারা বাগদাদ থেকে সূর্য ও চাঁদের অনেক পর্যবেক্ষণও করেছিল। মুহাম্মদ ও আহমদ এক বছরের দৈর্ঘ্য 365 দিন এবং 6 ঘন্টা পরিমাপ করেছিল।

বানু মুসা ভ্রাতৃদ্বয় ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে আছে তাদের স্বয়ংক্রিয় মেশিনের ওপর লিখিত কিতাব Book of Ingenious Devices(কিতাব আল-হিয়াল) এর জন্য।যার বেশিরভাগ করেছেন আবুল কাসিম আহমদ ইবনে মূসা ইবনে সাকির।

যেখানে তারা 100 টি আবিষ্কার পুরো চিত্র সহ বর্ণনা করেছেন ,যা নকশা হিসাবে পুনর্গঠন করা হয়েছে।

মুলত বিনোদনমূলক কাজের জন্য প্রাথমিকভাবে ডিজাইন করার সময়,তারা উদ্ভাবনী প্রকৌশল প্রযুক্তি যেমন একমুখী এবং দ্বিমুখী ভালভ নিজেরাই খুলতে এবং বন্ধ করতে সক্ষম,mechanical memories,নিজে থেকেই বাশি বাজাতে সক্ষম যন্ত্র,একটি প্রদীপ যা যান্ত্রিকভাবে ম্লান হয়ে যায়, alternating fountain নিজে থেকেই আকার পরিবর্তন করতে পারে এবং একটি clamshell grab ইত্যাদি তৈরি করেছিলেন।

এই ডিভাইসগুলির বেশিরভাগই জলচাপ দ্বারা পরিচালিত হয়েছিল।

বইটিতে বর্ণিত আশিটি ডিভাইসকে “trick vessels” হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে।

বইয়ের কিছু কিছু ডিভাইস গ্রীকদের আগের গ্রন্থগুলির প্রতিরূপ ছিল, তবে বাকীটি গ্রীকরা যা করেছে তার চেয়ে অনেক বেশি উন্নত ছিল।

বইটিতে বর্ণিত কিছু যন্ত্রাদি নিয়ে কিছু আলোচনা করা যাক:-

The Environmentally Friendly Jar

বনু মুসা এই পাত্রটি এমনভাবে নকশা করেছে যাতে ট্যাপ টি খোলার পর একটি নির্দিষ্ট পরিমাণে পানি বের হয়। পাত্রে সমস্ত জল ব্যবহৃত হওয়ার পর পানি সরবরাহ কিছুক্ষণের জন্য বন্ধ থাকবে যতক্ষণ না পাত্রটি দ্বিতীয়বার পানি দ্বারা পূর্ণ হচ্ছে।এই পদ্ধতি টি বর্তমান sink এর সাথে অনেকটা সাদৃশ্যপূর্ণ।

The Moody Jug

বানু মুসার এই ডিভাইসটির দুর্দান্ত কৌশল আছে।এটা temperamental।পানি কেবল তখনই বের হবে যখন সেই ব্যক্তি পানি প্রয়োজন হবে।বনু মুসা এই ডিভাইসটি ডিজাইনে পদার্থবিদ্যার কয়েকটি প্রাথমিক নীতি ব্যবহার করেছিল।

The Haunted Bottle

বানু মুসা ভ্রাতৃদ্বয় একটি পাত্র তৈরি করেছিলো যার দুটো মুখ ছিল।যদি একটিতে জল এবং অন্যটিতে জুস দেওয়া হয় তবে দুটি তরল মিশ্রিত হয় না এবং দুটি তরল ভিন্ন মুখ দিয়ে বের হবে।

বনু মুসা প্রায় ২০ টি বই লিখেছিলেন, যার বেশিরভাগই এখন হারিয়ে গেছে।

Automata

1.Book of Ingenious Devices

2.Qarasṭūn , ওজন ভারসাম্যের উপর একটি গ্রন্থ

3.On Mechanical Devices,বায়ুসংক্রান্ত ডিভাইসের উপর একটি কাজ,বইটি লিখেছেন আহমাদ।

4.বাদ্যযন্ত্রের বিবরণ নিয়ে একটি বই।

Astronomy

5.Book on the First Motion of the Celestial Sphere(Kitāb Ḥarakāt al‐falak al‐ūlā) বইটিতে টলেমির সিস্টেমের সমালোচনা করা হয়েছে। এই বইতে মুহাম্মদ Ptolemaic 9th sphere এর অস্তিত্ব অস্বীকার করেছেন।

6.Book on the Mathematical Proof by Geometry বইটিতে আহমদ লিখেছেন যে স্থির নক্ষত্রের গোলকের বাইরে নবম গোলক নেই।

7.Book on The Construction of the Astrolabe আল-বিরুনি দ্বারা উদ্ধৃত

8.Book on the Solar Year,প্রথমে বইটির লেখক হিসেবে বলা হয়েছিল Thābit ibn Qurra এর কথা।তবে সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে যে এটি আসলে বানু মুসারাই ছিল।

9.On the Visibility of the Crescent লিখেছেন মোহাম্মদ।

10.Book on the Beginning of the World লিখেছেন মোহাম্মদ।

11.Book on the Motion of Celestial Spheres (Kitāb Ḥarakāt al‐aflāk) লিখেছেন মোহাম্মদ।

12.Book of Astronomy (Kitāb al‐Hayʾa) লিখেছেন মোহাম্মদ।

13.A book of zij,লিখেছেন আহমাদ।

14.বনু মুসার অধীনে তালিকাভুক্ত জিজের আরেকটি বই, যা ইবনে ইউনূস উল্লেখ করেছেন ।

15.Kitāb al-Daraj(The book of degrees) লিখেছেন আহমাদ।

কিতাব আল দারাজের ( ডিগ্রির বই ) প্রচ্ছদ ।

Mathematics

16.Book on the Measurement of Plane and Spherical Figures, পরে ১৩ তম শতাব্দীতে নুর আল দিন আল তুসি কতৃক সম্পাদিত ।এই গ্রন্থের পাণ্ডুলিপিগুলি অক্সফোর্ড, প্যারিস, বার্লিন, ইস্তামবুল এবং ভারতের রামপুরে রয়েছে।

বইটির একটি লাতিন অনুবাদ ক্রিমোনার জেরার্ডে কতৃক দ্বাদশ শতাব্দীতে Liber trium fratrum de geometria and Verba filiorum Moysi filii Sekir নামে প্রকাশিত হয়েছিল।

জ্যামিতির উপর এই গ্রন্থটি মধ্যযুগে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়েছিল।থ্যাবিট ইবনে কুর্রা , ইবনে আল-হাইথাম , লিওনার্দো ফিবোনাচি (তাঁর ব্যবহারিক জ্যামিতিতে ), জর্ডানাস ডি নেমোর , এবং রজার বেকনের মতো বড় বিজ্ঞানীরা বিজ্ঞানীরা এই কিতাবের উদ্ধৃতি দিয়েছিলেন ।এই বইয়ের অন্তর্ভুক্ত কিছু উপপাদ্য গ্রীক গণিতবিদদের কোনও রচনায় পাওয়া যায় না।

বইটিতে বানু মুসা বৃত্তের ক্ষেত্রফল আর্কিমিডিসের চেয়ে পৃথক একটি পদ্ধতির মাধ্যমে বের করেছিলেন।

17.Conic Sections of Apollonius of Perga এটি গ্রীক রচনাটির একটি সংশোধিত সংস্করণ , যা হিলাল আল-আইমি এবং থ্যাবিট ইবনে কুররা প্রথম আরবীতে অনুবাদ করেছিলেন ।

18.Book on an Oblong Round Figure এতে একটি স্ট্রিং ব্যবহার করে উপবৃত্ত আঁকতে ব্যবহৃত পদ্ধতির বিবরণ রয়েছে , যাকে এখন gardener’s construction বলা হয় ।

19.Reasoning on the Trisection of an Angle,লিখেছেন আহমেদ।

20.Book on a Geometric Proposition Proved by Galen.

এই ভ্রাতৃত্রয়ের প্রথমজন আবু জাফর মুহাম্মদ ৮৭২ খৃস্টাব্দে ইন্তেকাল করেন। অল্প সময়ের মধ্যে অন্য দু’ভাইও এ দুনিয়া ছেড়ে বিদায় নেন।

Leave a Reply